hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলাম ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ

লেখকঃ ড. এম উমর চাপরা

১৩৩
অর্থনৈতিক পতন
সামাজিক সমতা ও ভ্রাতৃত্ববন্ধন দুর্বল হয়ে পড়ার মুসলিম সমাজ অধিকতর বিভক্ত ও পদমর্যাদামুখী হয়ে পড়ল। সত্যিকার মুসলিম সমাজের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য আর্থ- সামাজিক ন্যায়নীতি হলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। সমান সুযোগ লাভের মধ্য দিয়ে উন্নতি লাভের দ্বার হলো প্রবলভাবে সংকুচিত। বিবেকসম্মত কঠোর পরিশ্রমের পুরস্কার প্রাপ্তি ও যোগ্যতার স্বীকৃতির সম্ভাবনা হলো তিরোহিত। ফলে যোগ্য ও দক্ষ লোকের সৃজনশীল কঠোর পরিশ্রম করার স্পৃহা হ্রাস পেল। সমাজের সকল ক্ষেত্রে প্রবিষ্ট বিলাসী জীবন ও নানা ভোগলিপ্সা পূরণ, এমনকি দৈনন্দিন জীবিকা অর্জনের জন্যও মানুষ ঝুঁকে পড়ল দুর্নীতি ও নানা অবৈধ পন্থার দিকে। সমগ্র সমাজ জীবনে দুর্নীতির সয়লাব বয়ে চলল।

ফলে শুধুমাত্র সমাজ জীবনের সংহতি ও নৈতিক বুননই দুর্বল হলো না, ধনী ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর সঞ্চয় ক্ষমতাও হ্রাস পেল। শোষণের কারণে দরিদ্র শ্রেণী নিম্নতম জীবিকা হতেও বঞ্চিত হলো। পুঁজি গঠনের পরিমাণ দাঁড়ালো খুবই অপর্যাপ্ত। আর্থ-সামাজিক ন্যায়নীতির অবক্ষয়ের সাথে সাথে উদ্যোগ, আবিষ্কার ও সৃজনশীলতা বিপুলভাবে ব্যাহত হলো।

অধিকাংশ মুসলিম দেশের প্রধান অর্থনৈতিক খাত কৃষিতে উদ্যোগ গ্রহণের সম্ভাবনাময় বর্গাচাষী ও ভূমিহীন কৃষক শ্রেণী বস্তুত ভূস্বামীদের ক্রীতদাসে পরিণত হলো। এসব সমানত্ম অধিপতিগণ কোনো মূল্যের বিনিময়ে নয়; বরং নানা কারসাজি ও ঔপনিবেশিক প্রভুদের আনুগত্যের মাধ্যমে বিশাল ভূমির মালিকানা লাভ করে। এসব অনুপস্থিত ভূমির মালিকরা উৎপাদিত পণ্যের অধিকাংশ আত্মসাৎ করত। ফলে কৃষকদের উদ্যম ও উৎসাহ হারিয়ে গেল। উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য ভূমি উন্নয়ন ও উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারে কৃষক শ্রেণী কোনো উৎসাহ পেল না। বস্তুত বিনিয়োগ উদ্যোগ গ্রহণে তাদের সামর্থ্যই ছিল না। অধিকন্তু ভূস্বামী ও মহাজনদের নিকট হতে নেয়া ঋণের ভারে তারা ছিল পর্যুদনত্ম। অনুপস্থিত ভূস্বামীরা নিজেরাও কৃষিতে উন্নত বীজ, সার কীটনাশক, প্রশিক্ষণ তথা উন্নত প্রযুক্তিতে কোনো বিনিয়োগ করত না। উপরন্তু তারা বর্গাচাষী ও ভূমিহীন কৃষকদের শিক্ষা ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের যে কোনো পদড়্গেপকে বাধাদান করত। ফলে কৃষি খাত ছিল খুবই পশ্চাৎপদ।

ঐতিহাসিকভাবে সকল দেশে কৃষি বিপস্নব শিল্প বিপস্নবের পূর্বে বা একই সাথে সংঘটিত হয়েছে। কিন্তু মুসলিম দেশসমূহে কৃষির দূরবস্থা টেকসই দ্রুত উন্নয়নের সম্ভাবনাকে তিরোহিত কেও দেয়। এ প্রসঙ্গে বিশ্বব্যাংকের ভাষ্য, ‘ভাষ্য, ‘বস্তুত যেসব দেশে কৃষি সমৃদ্ধি লাভ করেছে, সেসব দেশ অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি লাভ করেছে, সেসব দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত হয়েছে। যদিও শত শত বছর যাবত উন্নয়নে কৃষির ভ্থমিকা নিয়ে বিতর্ক চলছে, তবু ঐতিহাসিক ও সমসাময়িক সাক্ষ্য প্রমাণ এ বিষয়ে সুস্পষ্ট। উদাহরণস্বরূপ ইউরোপ, জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রে একটি গতিশীল সমৃদ্ধ কৃষি খাত শিল্পায়ন ও প্রবৃদ্ধিও ধারা সূচনা করেছে অথবা নিদেনপক্ষে এর সহগামী হয়েছে।’

মুসলমানদের গৌরব যুগে শিল্প কারখানায় কারুশিল্পী ও দক্ষ শ্রমিকবৃন্দ সমৃদ্ধি লাভ করেছিল। ঔপনিবেশিক শাসকদেও মূল ভূখ- হতে উপনিবেশসমূহে রপ্তানি বৃদ্ধির নীতির দ্বারা তারা হতদরিদ্র হয়ে পড়ে। ঔপনিবেশিক শক্তিসমূহ মিরডালের ভাষায়, ‘তাদের শিল্পদ্রব্যের বাজার হিসেবে উপনিবেশসমূহকে ব্যবহার করে এবং দেশীয় শিল্পের বিকাশ রুদ্ধ করা, জন্য সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করে। হস্তশিল্প এভাবে বিলুপ্ত হয়ে যায়। ভূমির উপর চাপ বৃদ্ধি পায়। কৃষক শ্রেণী কৃষি আয়ের সাথে কুটির শিল্পের আয় হতে বঞ্চিত হওয়ায় দরিদ্রতর হয়ে পড়ে। বাধ্য হয়ে তারা স্বজন পরিজন ভিটেমাটি ত্যাগ করে শহরাঞ্চলে পাড়ি জমায়। শহরেও তারা শোষণের শিকার হয় এবং মানবেতর জীবনযাপন করতে থাকে।

মুসলিম দেশের কৃষক, কারুশিল্পী ও শ্রমিকবৃন্দ অন্যান্য দেশের মানুষের মতোই যৌক্তিক আচরণ করে। অর্থনৈতিক প্রণোদনায় সাড়া দেয়। উদ্যম, সৃজনশীলতা, সচেতনতা, দক্ষতা ও উৎপাদনশলিতার যে অভাব বর্তমানে তাদের মাঝে পরিলড়্গিত হয়, তা তাদের চরিত্রের অনত্মর্গত বৈশিষ্ট্য নয়। এগুলো তাদের উপর জোর করে চাপিয়ে দিয়েছে বিরূপ রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিবেশ ও পরিস্থিতি। উপরন্তু কঠিন পরিশ্রম সত্ত্বেও সম্মানজনক জীবিকা অর্জনের ব্যর্থতাবোধের তাড়না এগুলোকে আরো ঘনীভ্থত করেছে। একটি সমাজের মনোবল, উদ্যম ও সৃজনশলিতার উপর দারিদ্র্য ও অবিচারের চেয়ে বড় ক্ষয়িষ্ণু প্রভাব আর অন্য কোনো কিছুর নেই। তাই কোনোরকম উপদেশ বা ধর্মীয় সানত্ম্বনার প্রলেপে কোনো কাজ হবে না। তাদের প্রতি ন্যায়বিচার করা হোক, কাজের জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও সরঞ্জাম সরবরাহ করা হোক, তাদের কর্মক্ষমতা শতগুণ বেড়ে যাবে। আর যদি ন্যায়বিচার করা না হয়, তবে তাদের কাছ থেকে ইতিবাচক কোনো সাড়া আশা করা যায় না।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন