hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলাম ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ

লেখকঃ ড. এম উমর চাপরা

১৬০
যাকাত: সামাজিক আত্মসাহায্য কর্মসূচি
ইসলাম তার বিশ্বাস কাঠামোতে সামাজিক আত্মসাহায্য ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করেছে। এতে প্রত্যেকে ‘আল্লাহর খলিফা’ ও উম্মাহর সদস্য হিসেবে নিজস্ব বৈশিষ্ট্যের কারণেই মর্যাদা ও যত্নের সমন্বয়ে ভ্রাতৃবোধ গড়ে তোলার সুদূরপ্রসারী লক্ষ্য অর্জনের জন্য তার সমর্থ্য অনুযায়ী অবদান রাখবে। প্রত্যেক মুসলমানের জন্য তার জীবিকা উপার্জন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে; যারা নিজস্ব নিয়ন্ত্রণের বাইরে অবমতার শিকার এবং নিজেদের সাহায্য করতেও অবম তাদের চাহিদা পূরণ করা মুসলিম সমাজের সমাষ্টিক দায়িত্ব। এত বাধ্যবাধকতা সত্ত্বেও প্রাচুর্যের পাশাপাশি যদি দারিদ্র্য বিরাজ করে, তাহলে সে সমাজকে প্রকৃত মুসলিম সমাজ বলা যায় না। মহানবী (ﷺ) ঘোষণা করেছেন, ‘সে ব্যক্তি প্রকৃত মুসলমান নয়, যে তার প্রতিবেশীকে অভুক্ত রেখে নিজের উদরপূর্তি করে’। মহানবী (ﷺ) আরো জোর দিয়ে বলেছেন, ‘যে জনপদে একজন লোক ক্ষুধার্ত অবস্থায় ঘুমায়, সে জনপদ আল্লাহর হেফাজত থেকে বঞ্চিত হয়’। চতুর্থ খলিফা হযরত আলী (রা) একটু ভিন্ন আঙ্গিকে এ বিষয়টির উপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন, ‘গরীবদের জন্য যা পর্যাপ্ত প্রয়োজন, তা তাদেরকে প্রদান করা ধনীদের জন্য আল্লাহ বাধ্যতামূলক করেছেন। যদি গরীবরা অভুক্ত থাকে অথবা বস্ত্রহীন থাকে বা কষ্টভোগ করে তার কারণ ধনীরা তাদের বঞ্চিত করে। এমতাবস্থায় সর্বশক্তিমান ও মহামহিম আল্লাহর জন্য এটাই যথোপযুক্ত যে, তিনি এদের হিসাব নেবেন এবং শাস্তি প্রদান করবেন।

যাকাত ব্যবস্থার মাধ্যমে মুসলমানদের এ দায়িত্ব পালনের জন্য একটি পন্থা বাতলিয়ে দেয়া হয়েছে। আর এটা হচ্ছে ইসলামী বিশ্বাসের অলঙ্ঘনীয় অংশ। যাকাতের বিধান হচ্ছে, ঐশী প্রত্যাশার সুষ্পষ্ট ও দ্ব্যর্থহীন সংকেত এবং তা এটা নিশ্চিত করার জন্য যে যাতে কেউ প্রয়োজনীয পণ্য ও সেবার চাহিদা পূরণের উপায় প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত না হয়। শাব্দিক অঢ়ের্থ যাকাত হচ্ছে পরিশুদ্ধতা (তাহারাত), প্রবৃদ্ধি, বরকত এবং স্বীকৃতি এবং পারিভাষিক অর্থে যাকাত হচ্ছে একজন মুসলমানের মোট আয় বা কৃষি উৎপাদন যদি নিসাব পরিমাণ হয়, তাহলে তার অংশ বিশেষ প্রদান করা তার জন্য আর্থিকভাবে বাধ্যতামূলক এবং অপরিহার্য ধর্মীয় কর্তব্য। এটা হচ্ছে ইসলামের পাঁচ স্তম্বের অন্যতম এবং এর মধ্য দিয়ে সমাজকে পরিশুদ্ধ করার, দারিদ্র্য দূরীকরণ এবং বিত্তবানদের সম্পদ পবিত্রকরণের ক্ষেত্রে ইসলামের দৃঢ় প্রতিফলন ঘটায়। প্রত্যেকের মৌলিক চাহিদা পূরণ না হলে তা ইসলামী আদর্শের বিরুদ্ধে একটি অপরাধ। যাকাতের মাধ্যমে আল্লাহর রিজিকের প্রতি ব্যক্তির কৃতজ্ঞতার বহিঃপ্রকাশ ঘটে এবং তাঁর রহমতও কামনা করা হয়, যার ফলশ্রুতিতে সকলের কল্যাণ ও সম্পদ বৃদ্ধির কারণ ঘটে। এভাবে সকলের চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে মুসলমানদের অপরিহার্য আর্থ-সামাজিক অঙ্গীকারের আর্থিক বহিঃপ্রকাশ ঘটে এতে সরকারি কোষাগারে কোনো বোঝা আরোপ করা হয় না।

যাকাতের মাধ্যমে যে সামাজিক আত্মসাহায্যের ব্যবস্থা করা হয়, তা কর প্রদানের মতো নাগরিক দায়িত্ব নয়। এটা হচ্ছে মহান সৃষ্টিকর্তার নিজের পক্ষ থেকে আরোপিত ধর্মীয় দায়িত্ব এবং তার দেয়া যে সম্পদ বান্দার কাছে গচ্ছিত রয়েছে, তা থেকে যারা অস্বচ্ছল তাদে সাথে ভাগ করে নেয়া (আল-কোরআন ৫৮:৭)।

এটা হচ্ছে এক প্রকার নির্ধারিত ইবাদত যা ইসলাম শুধুমাত্র সালাত, সিয়াম বা হজ্জ পালনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ করেনি; এতে একক ও সমপ্রসারিত পরিবার, বন্ধু-বান্ধব ও প্রতিবেশীসহ মানবতার প্রতি দায়িত্ব পালনের উপর জোর দিয়েছে। বিবেকবুদ্ধিসঞ্জাত যাকাত পরিশোধের উপর আল্লাহতায়ালা কর্তৃক তার প্রার্থনা গ্রহণ করার এবং যে পরকালে তার কল্যাণ নির্ভরশীল, সেদিন আল্লাহর প্রতি দায়িত্ব পালনের চেয়েও অন্য মানুষের প্রতি দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে ব্যর্থতাকে বড় ধরনের ব্যর্থতা হিসেবে গণ্য করা হবে। কর ফাঁকি দেয়ার বিষয়টি হয়ত রাষ্ট্র কর্তৃক উদঘাটিত নাও হতে পারে এবং তার শাস্তি নাও পেতে পারে। কিন্তু যাকাত পরিশোধ না করলে তা হতে পারে না। আল্লাহ সব কিছু দেখেন এবং জানেন। কৌশলে পরিহার করার প্রশ্নই ওঠে না। যদি সে তা করে, তাহলে সে তার নিজ স্বার্থকেই ক্ষুণ্ণ করে।

ধনীদের আয়ায়কৃত যাকাত গরীবদের প্রতি তাদের কোনো আনুকূল্য নয়। ধনীরা তাদের সম্পদের প্রকৃত মালিক নয়, তারা কেবলমাত্র জিম্মাদার (ট্রাস্টি) (আল-কোরআন ৫৭:৭)। তাদেরকে অবশ্যই ট্রাস্টের শর্তানুযায়ী ব্যয় করতে হবে।

ধনীরা যদি যাকাত পরিশোধ করতে যেয়ে গরীবদের প্রতি কোনো আনুকূল্য প্রদর্শনের চেষ্টা করে, তাহলে তা হবে গরীবদের অনুভূতির প্রতি আঘাত করা, তাদের আন্তরিকতার অভাবের পরিচায়ক এবং এর ফলে তারা আখেরাতে তাদের পুরস্কারকে ধ্বংস করবে (আল-কোরআন ২:২৬১-২৭৪)। দরিদ্ররাও যাকাত গ্রহণ করে এটা মনে করবে না যে, তাদের প্রতি ব্যক্তিগত করুণা করা হলো, কারণ তারা কেবল ধনীদের কাছ থেকে আল্লাহ নির্ধারিত প্রাপ্যই গ্রহণ করে মাত্র (আল-কোরআন ৫১:৯ এবং ৭০:২৫)। অধিকন্তু তারা যাকাত গ্রহণেরপর তা কিভাবে ব্যয় করবে, সে বিষয়ে স্বাধীন। এটা তাদের অর্থ এবং তারা তাদের অগ্রাধিকার অনুযায়ী তা ব্যয় করতে পারে, অবশ্য মুসলিম সমাজে তা শরীয়াহ দ্বারা সীমিত। অবশ্য যে ব্যক্তি নিজে ব্যয়সংস্থান করতে পারে এবং যাকাত লাভের উপযুক্ত নয়, কিন্তু তা সত্ত্বেও গ্রহণ করে, তাহলে শেষ বিচারে দিন তাকে জবাবদিহি করতে হবে, কারণ সে অন্যায়ভাবে তা গ্রহণ করেছে এবং অন্যদের অধিকার লঙ্ঘন করেছে। অতএব মর্যাদাহানিকর, ব্যয়বহুল, সময় সাপেক্ষ ও অসুবিধাজনক হতে পারে, এমন কোনো ব্যাপকতর পদ্ধতি প্রবর্তনের প্রয়োজন হবে না। অবশ্য প্রাথমিক অবস্থায় তহবিলের অপব্যবহার ও বৈষম্য যাতে না হয়, সে জন্য সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। নৈতিকতা দ্বারা চালিত মুসলিম সমাজের আনুষ্ঠানিক সামাজিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা সীমালঙ্ঘনকারীদের উচ্ছেদ করবে। যারা নিজেরাই নিজেদের ব্যাপারে সচেতন, তারা কার্যকরভাবে ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে প্রকৃতপক্ষে অভাবী লোকদের জন্য অর্থবহ সহায়তা প্রদানে সমর্থ হবে।

এট আশা করা যায় যে, যে মুসলিমান তার ধর্মীয় দায়িত্ব পালনের ব্যাপারে সচেতন এবং তার স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী স্বার্থ তথা পার্থিব সম্পদে আল্লাহর রহমত এবং পরকালীন জীবনে তারই সন্তুষ্টি কামনা করেন, তিনি যাকাত আদায়ে ব্যর্থ হবেন না। মহানবী (ﷺ) বলেছেন যে, ‘যাকাত আদায়ে কোনো ব্যক্তির সম্পদ হ্রাস পায় না’। যাকাতের বিনিময়ে আল্লাহর অনুগ্রহে তার সম্পদ পরিণামে বৃদ্ধি পায়। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে:

“আল্লাহ তাদেরকে নিজের অনুগ্রহে যা দান করেছেন তাতে যারা কৃপণতা করে এ কার্পণ্য তাদের জন্য মঙ্গলকর হবে বলে তারা যেন ধারণা না করে বরং এটা তাদের পক্ষে একান্তই ক্ষতিকর প্রতিপন্ন হবে। যাতে তারা কার্পণ্য করে, সে সমস্ত ধন-সম্পদকে কিয়ামতের দিন তাদের গলায় বেড়ি বানিয়ে পরানো হবে। আর আল্লাহ হচ্ছেন আসমান ও যমীনের পরম স্বত্বাধিকারী, আর যা কিছু তোমরা কর, আল্লাহ সে সম্পর্কে জানেন।” (আল-কোরআন ৩:১৮০)।

অবশ্য এতসব শাস্তির বিধান সত্ত্বেও এমন মুসলিমানও রয়েছে, যারা যাকাত আদায় করে না। ইসলামী রাষ্ট্রের কর্তব্য হবে এমন জবরদস্ত শক্তি প্রয়োগ করা, যাতে তারা যাকাত পরিশোধে বাধ্য হয়। রসূল (ﷺ) এর তিরোধানের পর যারা যাকাত দিতে অস্বীকার করে, হযরত আবুবকর (রা) তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। মুসলিমানদের সাধারণ অনুভূতি হচ্ছে যে, ইসলামী মূল্যবোধসঞ্জাত যথাযথ শিক্ষা এবং ইসলামী শিক্ষার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ সামাজিক পরিবেশ সৃষ্টি করা হলে অধিকাংশ মুসলমানই যাকাত আদায় করতে চেষ্টা করবে, উপরন্তু যারা যাকাত আদায় করে না, তাদের কাছ থেকে তা আদায়ের জন্য সরকারকে পূর্ণ সহযোগিতা দেবে।

যাকাতের ভিত্তি সম্পর্কে ফিকাহর বিভিন্ন চিন্তাবিদদের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। এ বিষয়ে হানাফী মাজহাবের ধারণা হচ্ছে অত্যন্ত ব্যাপক এবং জাহিরিয়া মাজহাবের ধারণা সবচেয়ে সংকীর্ণ। অবশ্যই বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে এ নিয়ে বড় ধরনের কোনো পার্থক্য হওয়া সমীচীন নয়। এটা এ কারণে যে, জাহিরিয়াসহ অধিকাংশ ফকীহ মনে করেন, যদি শুধু যাকাত দ্বারা দরিদ্রদের অভাবে পূরণ করা সম্ভব না হয়, সে ক্ষেত্রে রাষ্ট্র তাদের মৌলিক প্রয়োজন পূরণের জন্য অতিরিক্ত লেভি (কর) আরোপ করতে পারবে। সবচেয়ে সংকীর্ণ বলে বিবেচিত ইবন হাযম-আল-জাহিরের এরূপ ধারণাকে যাকাতের ভিত্তি হিসেবে ধরা হয়। তিনি বলেন, প্রতিটি দেশের ধনীদের কর্তব্য হচ্ছে দরিদ্রদের চাহিদা পূরণ করা এবং যাকাত যদি এ উদ্দেশ্য পূরণে যথেষ্ট না হয়, তাহলে শাসকের কর্তব্য হলো দরিদ্রদের খাদ্যের চাহিদা পূরণ করা, শীত ও গ্রীষ্মে বস্ত্র প্রদান করা এবং রৌদ্র, তাপ ও বৃষ্টি থেকে রক্ষার জন্য বাসস্থানের ব্যবস্থা করা; এছাড়া তাদেরকে একান্ত পরিবেশ প্রদান করা।

গরীবের চাহিদা পূরণের জন্য ধনীরা যাকাত, নাকি বিশেষ করের (লেভির) মাধ্যমে সম্পদ প্রদান করলো তাতে বিশেষ কোনো পার্থক্য নেই। যারা তাদের ধর্মীয়

কর্তব্যের অংশ হিসেবে স্বেচ্ছায় যাকাত আদায় করে তারা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করে, অপরদিকে যারা অনিচ্ছায় তা পরিশোধ করে তারা আল্লাহর কাছ থেকে পুরস্কার ও তার অুগ্রহ থেকে বঞ্চিত হয়। একথা মনে রাখতে হবে যে, আধুনিক সমাজে যেমন কর্মচারীদের বেতন কর্তন ও চাঁদা থেকে বেকারত্ব, দুর্ঘটনা, বৃদ্ধ বয়স ও স্বাস্থ্যের জন্য সামাজিক বীমার ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে, যাকাতে সেরূপ কোনো স্বঅর্থায়নের ব্যবস্থা নেই। দুর্যোগের সময় সরকারের ত্রান ও কল্যাণ ও কল্যাণমূলক কাজের জন্য যাকাত থেকে বাজেট বরাদ্ধের কোনো সুযোগ নেই। এমনকি ইসলামী রাষ্ট্রের রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় আয় পুনর্বণ্টন প্রকল্প এবং কর্মসংস্থান ও আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির সুযোগ প্রদানের জন্যও যাকাত তহবিল ব্যবহার করা যাবে না। যাকাত হচ্ছে এমন পূর্ণ ধর্মীয় আঙ্গিকে একটি সামাজিক আত্মসহযোগিতার ব্যবস্থা, যাতে উল্লিখিত কর্মসূচি বাস্তবায়নের পরও যারা নিজেদের সাহায্য করতে পারে না সেরূপ গরীব ও দু:স্থদের সাহায্য করা হয়, যাতে মুসলিম সমাজ থেকে দারিদ্র্য ও কৃপণতা দূর হয়। যদি কাতাত আদায়ের পরিমাণ গরীবদের চাহিদা পূরণের জন্য যথেষ্ট না হয়, তাহলে সমাজের অপরিহার্য কর্তব্য হচ্ছে, কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনের জন্য অন্য উপায় বের করা।

যেহেতু একজন মুসলমানের দায়িত্ব হচ্ছে নিজের উপার্জন নিজে করা, সেহেতু এটাই সমীচীন হবে যে, যাকাত এমনভাবে বিতরণ করতে হবে যাতে দরিদ্ররা নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে সক্ষম হয়। যাকাত হচ্ছে কেবলমাত্র তাদের জন্যই স্থায়ী ব্যবস্থা, যারা নিজেদের প্রচেষ্টায় নিজের পায়ে দাঁড়াতে অক্ষম। অন্যদের জন্য যাকাত হবে একটা অস্থাঈ ব্যবস্থা, যা দ্বারা তাদেরকে পর্যপ্ত উপার্জনের জন্য প্রশিক্ষণ, যন্ত্রপাতি ও উপকরণ সরবরাহ করা হবে। আত্ম-কর্মসংস্থান বৃদ্ধির যে সকল ব্যবস্থা নবম অধ্যায়ে আলোচনা করা হয়েছে, সে সকল ব্যবস্থাসহ যদি এমন এক আর্থ-সামাজিক পরিবেশ সৃষ্টি করা যায় যেখানে ক্ষুদ্র ও ব্যষ্টিক শিল্পের বিকাশে উৎসাহ দেয়া হয়, সেখানে লোকদের নিজেদের পায়ে দাঁড়ানোর জন্য যাকাত ব্যবহৃত হতে পারে। সুতরাং মুসলিম দেশগুলোতে বিরাজমান বেকরত্ব, দারিদ্র্য ও বৈষম্য হ্রাসে যাকাত সফল না হওয়ার কোনো কারণ নেই।

মুসলিম সমাজে যাকাতের আরো একটি কল্যাণকর প্রভাব রয়েছে। এতে বিনিয়োগের জন্য তহবিল বৃদ্ধি হয়। স্বর্ণ, রৌপ্য ও অব্যবহৃত অর্থসহ সকল সম্পদের উপর যে যাকাত আরোপিত হয়, তা পরিশোধের সুবিধার্থে ঐ সম্পদের মালিকরা আয় বৃদ্ধির জন্য সচেষ্ট থাকে যাতে যাকাত প্রদানের ফলে তাদের সম্পদ হ্রাস না পায়। এভাবে যে সমাজে ইসলামী মূল্যবোধ পরিপূর্ণ আত্মীকৃত হয়, সেখানে স্বর্ণ, রৌপ্যও অলস সঞ্চয়ের পরিমাণ কমে যেয়ে বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে এবং ফলশ্রুতিতে অধিকতর অগ্রগতি সাধিত হবে। যাকাত ব্যবস্থা কী যাকাত আদায় এড়ানোর জন্য সীমালঙ্ঘনকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি করবে, নাকি যাকাত গ্রহীতাদের সংখ্যা কমাবে? যে সমাজে সাদাসিধে জীবনযাপন করাই আদর্শ জীবন হিসেবে গণ্য এবং যেখানে সীমালঙ্ঘনকারী ও মর্যাদা প্রতীকবোধের বরদাশত করা হয় না এবং যে সমাজে নিজ শ্রমের উপর জীবিকা নির্বাহ করা বাধ্যতামূলক, সে সমাজের চিত্র এটা নয়। এতদসত্ত্বেও ‘মাকাসিদ’ হাসিলের লক্ষ্যে যাকাতের কার্যকর পরিপূরক হিসেবে আর্থ-সামাজিক পরিবেশের পুনর্গঠন এবং ইসলামী মূল্যবোধের ব্যাপ্তি লাভের বিষয়ে ইসলামী রাষ্ট্রকে গরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন