hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলাম ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ

লেখকঃ ড. এম উমর চাপরা

২১১
ব্যর্থ কর্মকৌশলসমূহ
ধনতন্ত্র

সম্পদ বরাদ্দে দক্ষতা ও ন্যায়পরায়ণতা অর্জন এবং সার্বিক চাহদা ও সরবরাহের মধ্যে সমন্বয় সাধনের জন্য বিশোধক কর্মপদ্ধতি ও উদ্বুদ্ধকারী শক্তি হিসেবে মূলত মূল্য ও ব্যক্তিগত মুনাফার উপর ভর করা ছাড়া ইহুদী-খৃস্টিয় মূল্যবোধ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর ধনতন্ত্রের কোনো গত্যন্তর ছিল না। যুক্তি দেখানো হয় যে, বাজার-নির্ধারিত মূল্য শুধু সার্বিক চাহিদাই নিয়ন্ত্রণ করে না, অসমতার সঙ্গে মুনাফাকে প্রভাবিত করার মাধ্যমে অপেক্ষাকৃত কম লাভজনক ক্ষেত্র থেকে অধিকতর লাভজনক ক্ষেত্রে সম্পদ স্থানান্তর করে। দাবি করা হয় যে, বাজার শক্তিসমূহের মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যমে আনীত চাহিদা ও সরবরাহের এ সমন্বয় একটি নতুন ভারসাম্য সৃষ্টি করে এবং এতে সরকারি হস্তক্ষেপ বা মূল্য বিচারের প্রয়োজনীয়তা ছাড়াই সর্বোচ্চ দক্ষতা ও ন্যায়পরায়ণতা অর্জন করা যায়।

সম্পদ বরাদ্দের একমাত্র কর্মকৌশল হিসেবে মূল্য পদ্ধতির ব্যবহার ব্যক্তিগত স্বাধীনতা রক্ষা করে, তবে আয় ও সম্পদের সমবণ্টন ও নির্ভেজাল প্রতিযোগিতাসহ কতিপয় পূর্বশর্ত পূরণ না হলে দক্ষতা ও ইনসাফ অর্জন সম্ভব হয় না। যেহেতু এসব শর্তসমূহ স্বাভাবিক অবস্থায় পূরণ হয় না এবং হতে পারে না, সেহেতু ব্যক্তিগত অগ্রাধিকার অনুসারে চাহিদার সর্বোচ্চ পরিতৃপ্তির স্বাধীনতা দুর্লভ সম্পদ ব্যবহারের ক্ষেত্রে ধনীদের অধিকতর প্রভাব বিস্তারের সুযোগ করে দেয়, যদিও সম্পদের উপর তাদের দাবি নিয়ন্ত্রণ করতে মূল্য ছাড়া আর কোনো কর্মপদ্ধতি ব্যবহৃত না হয়। চাহিদার সর্বোচ্চ পরিতৃপ্তির দ্বন্দ্ব থেকে সৃষ্ট সম্পদের উপর চাপের ফলে সকল প্রকার জিনিস ও সেবার তুলনামূলক উচ্চ মূল্য অর্থনীতিতে একটি ভারসাম্য প্রতিষ্ঠার প্রবণতা সৃষ্টি করে। এ উচ্চ মূল্য প্রয়োজন পূরণের জন্য যেসব জিনিস ও সেবা আছে তার ক্ষেত্রে ঘটে।

ধনীরা যখন যা ইচ্ছা তা পয়সা দিয়ে কিনতে পারে। কিন্তু গরীবরা সাধারণত তাদের অপর্যাপ্ত আয় নিয়ে মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে সমতালে চলতে পারে না। এভাবে প্রয়োজনীয় পণ্য ও সেবায় মূল্য পরিশোধে তাদের ক্ষমতা আরো হ্রাস পায়। ফলে চাহিদা পূরণ অপর্যাপ্ত থেকে যায়। এতে তাদের দক্ষতা ও বঞ্চনার অভিশপ্ত চক্রে আরো বেশি আবদ্ধ হতে হয়। যদি ভারসাম্যহীনতা অপসারণে ও সম্পদ বিতরণে কেবলমাত্র মূল্য পদ্ধতির উপর নির্ভর করা হয়, তাহলে আয় ও সম্পদের বৈষম্য যত বেশি হবে, গরীবদের চাহিদা পূরণ থেকে সম্পদ অন্যত্র অপসারণে ধনীদের ক্ষমতা তত ব্যাপক হবে। গতানুগতিক সুদভিত্তিক ব্যবস্থায় এ অবস্থার আরো অবনতি ঘটে। কারণ এ ব্যবস্থা সমাজের সঞ্চয়সমূহ প্রধানত ধনীদের কাছেই দেয়া হয়, কেননা তারা জামানত দিতে পারে। ফলে তারা আরো ধনী ও আরো ক্ষমতাধর হয় এবং প্রয়োজন পূরণ থেকে দুর্লভ সম্পদ আরো দূরবর্তী স্থানে সরিয়ে নিতে পারে। প্রত্যেক সমাজেই যেখানে সম্পদের অসম বিতরণ বিরাজ করছে, সেখানে ন্যায়ভিত্তিক বিতরণ ব্যবস্থা চালু করার যে কোনো উদ্যোগ ধনীদেরকে আহত করতে বাধ্য। ধনীরা কেন ‘প্যারেটো অপটিমালিটি’ শক্তির প্রতি অঙ্গীকারাবদ্ধ একটি সেকুলার, মূল্যবোধমুক্ত সমাজে খারাপ থাকতে রাজি হবে? অন্যদের কল্যাণের স্বার্থে অপেক্ষাকৃত খারাপ থাকতে তাদের উদ্বুদ্ধকরণের জন্য সমাজসম্মত মূল্যবোধ, যার প্রতি প্রত্যেকেই নিবেদিত থাকবে, কেবল প্রয়োজন তাই নয়, বরং এমন একটি উদ্বুদ্ধকারী ব্যবস্থা দরকার, যাতে তাদেরকে যে ত্যাগ স্বীকার করতে বলা হচ্ছে, তার একটি আকর্ষণীয় প্রতিদান নিশ্চিত করা যায়।

সেকুলার মতবাদ যদি নীতিনির্ধারক দর্শন হয় তবে সমাজসম্মত মূল্যবোধ পাওয়া সম্ভব নয়। সেকুলার মতবাদ যা করে তা হচ্ছে, ধর্ম প্রদত্ত সামষ্টিক বিধিনিষেধের মূল্যবোধ থেকে বঞ্চিত করা। এ ধরনের বিধিনিষেধ ছাড়া কোনো সমাজ বা রাষ্ট্রের পক্ষে একটি সামাজিক ঐকমত্যে পৌঁছানো কঠিন। আর এ ঐকমত্য দুর্লভ সম্পদ ব্যবহারে সেসব সামাজিক অগ্রাধিকারের একটি পর্যায়ে লক্ষ্য ও মূল্যবোধ উপনীতকরণে প্রয়োজন, সে অগ্রাধিকার জনগণ তাদের ব্যক্তিগত স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া সত্ত্বেও মেনে নিতে প্রস্তুত। উপরন্তু সেকুলার মতবাদের স্বল্পমেয়াদী, ইহজাগতিক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলা এবং ইন্দ্রিয় পরিতৃপ্তিই মানব জীবনের প্রাথমিক লক্ষ্য বলে বিবেচিত হয়। যদি সে ইহজাগতিক আত্মস্বার্থ ছাড়া অন্য কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করে, তবে তার পক্ষে অপেক্ষাকৃত খারাপ থাকতে সম্মত হওয়া যুক্তিসম্মত হবে না।

পুঁজিবাদ যদিও বহিরাবরণে ধর্মের মানবিক লক্ষ্যসমূহ অবুণ্ণ রাখে, কিন্তু কর্মকৌশলের কারণে তাকে গুলিয়ে ফেলেছে। দুর্লভ সম্পদ বিতরণ ও বণ্টনে নৈতিক মূল্যবোধের ভূমিকা মূল্য পদ্ধতির উপর প্রাথমিক নির্ভরতা ও ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দের উপর অসংগত গুরুত্ব প্রদানের ফলে ভোঁতা হয়ে গেছে। এভাবে বাজার শক্তির অন্ধ সক্রিয়তা যত রকমের বৈষম্য সৃষ্টি করতে সক্ষম, তা করার বাধাহীন সুযোগ পেয়েছে। লক্ষ্য ও কর্মকৌশলের মধ্যে সংঘর্ষ এভাবে মানবতাবাদী নিষ্পাপ ছদ্মাবরণে সামজিক দ্বান্দ্বিকতার জন্ম দিয়েছে।

এভাবে বাজারব্যবস্থার কর্মকৌশল ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের সুযোগ প্রদান করে। ব্যক্তিগত উদ্যোগ ও প্রচেষ্টা এবং উচ্চতর প্রবৃদ্ধির হার অর্জনে সক্ষম হলেও সামাজিক স্বার্থ পূরণ করতে সক্ষম হবেনা, যদি ব্যক্তিগত স্বার্থ ও সামজিক স্বার্থ এক না হয়। এতে আংশিকভাবে বোঝা যায় যে, বাজারব্যবস্থা কেন দক্ষতা ও ন্যায়পরতা উভয় মানদণ্ডে ব্যর্থ হয়েছে। এ ব্যবস্থা তার নিজের শক্তিবলে সকলের প্রয়োজন পূরণ করতে পারে কোথাও তেমন আকারের পণ্য ও সেবা উৎপাদন

অথবা আয় ও সম্পদের ইনসাফ ভিত্তিক বিতরণ করতে সক্ষম হয়নি। অতএব কেউ একথা বলতে পারে যে, সেকুলার মতবাদ যে নৈতিক শূন্যতার সৃষ্টি করেছে, তার ফলে বাজারব্যবস্থার পক্ষে পূর্ণ বণ্টনসহ প্রবৃদ্ধি অর্জন করা সম্ভব হবে না, যতক্ষণ না সার্বিক পটভূমির পরিস্থিতি সৃষ্টিতে শক্তি প্রয়োগ করা হয়, যেমনটি দখলদার বিদেশী শক্তি জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও তাইওয়ানে করেছিল। এমনকি এ ধরনের ক্ষেত্রে অর্জিত সাফল্য স্বল্প হতে পারে, যদি তা টিকিয়ে রাখার জন্য একটি কর্মকৌশল অনুসৃত না হয়।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন