hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলাম ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ

লেখকঃ ড. এম উমর চাপরা

৬১
মিথ্যা স্বপ্ন
শ্রেণীহীন, বৈষম্যহীন, ভ্রাতৃত্বমূরক যে সমাজের স্বপ্ন কালমার্ক দেখেছিলেন, তা এভাবে ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। শ্রমিক শ্রেণী মজুরি দাসত্বের নিগড়ে বাঁধা পড়ে যায়। সামাজিক শ্রেণীবিভেদও অব্যাহত গতিতে চলতে থাকে। ‘সর্বহারার একনায়কতন্ত্র’ প্রতিষ্ঠা লাভ করল না। রাষ্ট্রের অস্তিত্ব বিলুপ্তির মার্কসীয় ধারণার কোনো লক্ষণও কোথাও দৃষ্টিগোচর হলোনা, বরং রাষ্ট্র তার নিপীড়নমূলক অস্ত্র নিয়ে আরো জেঁকে বসল।

এ ব্যর্থতার কারণ সুস্পষ্ট। লক্ষ্যের সাথে দর্শন ও কৌশলের কোনো মিল ছিলনা। লক্ষ্য ছিলো ‘মানবতাবাদের প্রতিষ্ঠা’ একটি শ্রেণীহীন সমাজ, যেখানে কেউ কাউকে শোষণ করবে না, যেখানে সবাই সামষ্টিক কল্যাণের জন্যে কাজ করবে এবং সবার প্রয়োজন পূর্ণ হবে, যেখানে আয় ও সম্পদের কোনো বৈষম্য থাকবে না, ফলে এলিনেশন বা বিচ্ছিন্নকরণেরও কোনো প্রক্রিয়া থাকবেনা। কিন্তু এ উদ্দেশ্য সাধনের জন্যে ব্যবহৃত দর্শন ও কৌশল এ উদ্দেশ্যের সাথে সংগতিপূর্ণ ছিলনা। এ দর্শন দ্বান্দ্বিক মতবাদের প্রবক্তা, যাতে ঘৃণা, শ্রেণী সংঘাত ও উৎখাতের কথা বলা হয়েছে, ব্যক্ত হয়েছে সমগ্র উৎপাদন উপকরণের নিয়ন্ত্রণ কতিপয় ব্যক্তির হাতে সমর্পনের মতবাদ। গুটিকয়েক ব্যক্তিবর্গের হাতে বিশাল নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা অর্পন, অথচ তাদের ব্যক্তিস্বার্থ ও শ্রেণীস্বার্থকে নিয়ন্ত্রণ করার কোনো নৈতিক বা আধ্যাত্মিক প্রেরণা বা ব্যবস্থার অস্তিত্ব নেই। সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া নির্ধারণকারী সামাজিকভাবে সম্মত কোনো নীতিমালা নেই -এমন ব্যবস্থা ক্ষমতা ও সুবিধাভোগী শ্রেণীর স্বার্থে তাদের অবস্থান অক্ষুন্ন রাখার লড়াইয়ে রূপান্তরিত হতে বাধ্য। এরূপ ব্যবস্থায় কোনোরূপ গণতন্ত্রায়নের প্রচেষ্টা সফল হতে পারেনা, কেননা শক্তিধর আমলাতন্ত্র তাদের সুবিধাভোগী অবস্থান অক্ষুন্ন রাখার স্বার্থে একে স্বভাবতই বাধা দেবে। ক্ষমতার ভাগবাটোয়ারাদার, তাদের তল্পীবাহক ও চাটুকাররাই শুধুমাত্র এ ধরণের একনায়তান্ত্রিক ব্যবস্থায় সুযোগ সুবিধার প্রত্যাশা করতে পারে।

তাই প্রথম থেকেই এ ব্যবস্থা সঠিক পন্থায় অগ্রসর হতে পারেনি। ত্রিশ দশকের মাঝামাঝি সময়ে লিও ট্রটস্কি সোভিয়েত ব্যবস্থাকে সমালোচনা করে বলেছিলেন, ‘প্রকৃত সমাজতন্ত্র শুধুমাত্র উৎপাদন উপকরণের মাধ্যমে আপনাআপনি অর্জন করা সম্ভব নয়; এর জন্যে প্রয়োজন অধিকতর গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার বিকাশ, চর্চা ও অধিকতর ন্যায়পরতা সৃষ্টির উদ্যোগ’। ট্রটস্কির গণতন্ত্র চর্চার এ আকাঙ্খা সোভিয়েত ব্যবস্থায় বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি; কেননা পলিটব্যুরোর মুষ্টিমেয় সদস্যই এখানে সকল মানুষের জীবিকার হর্তাকর্তা এবং শ্রমিক শ্রেণীকে ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু হতে দূরে রাখার মাঝেই তাদের স্বার্থ নিহিত। সম্পদশালী বুর্জোয়া হতে ক্ষমতাশালী পলিটব্যুরোর সদস্যদের ভিন্নতর আচরণ করার কোনো কারণ নেই। নিজের স্বার্থসিদ্ধি লাভ করার স্বভাবজাত মানব প্রবণতাকে সীমারেখা মেনে চলতে বাধ্য করার কোনো কার্যকর পন্থা না থাকলে মার্কসের ‘প্রত্যেকে সাধ্যমতো কাজ করবে, প্রয়োজন অনুযায়ী ভোগ করবে’ -এই নীতির উপর ভিত্তিশীল সমাজের স্বপ্ন বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। বিনিময় মূল্য প্রাপ্তির আশা ছাড়া মানুষ সর্বশক্তি নিয়োগ করে না। তারা সর্বোচ্চ কাজের বিনিময়ে সর্বোচচ্চ প্রাপ্তিই আশা করবে। তাই এমন কোনো পন্থা থাকা দরকার, যাতে তারা সর্বোচ্চ কাজ করতেও অনুপ্রাণিত হবে; আবার বিনিময়ে তাদের প্রাপ্ত দাবিও সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্য সীমার মধ্যে থাকবে। কিন্তু বল প্রয়োগ ছাড়া মানুষের স্বার্থচিন্তাকে নিয়ন্ত্রণ করার আর কোনো পন্থা মার্কস দেখাতে পারেননি। তাই পুঁজিবাদের শক্তিশালী সমালোচনা উপস্থাপন করা সত্ত্বে মার্কস কোনো গঠনমূলক ও কার্যকর বিকল্প ব্যবস্থা পেশ করতে পারেননি। তা মানুষের স্বার্থপরতাকে সীমারেখা লঙ্ঘন করতে না দিয়ে একটি আদর্শ সমাজব্যবস্থা গঠন করার জন্যে প্রয়োজন শ্রেণী সংঘাতের বদলে প্রত্যেক মানবসত্তাকে ভ্রাতৃভাবে দেখা ও একটি সর্বসম্মত মূল্যবোধের শক্ত কাঠামোর মধ্যে থেকে সবাই সামষ্টিক কল্যাণের জন্যে কাজ করবে এমন চিন্তাধারায় সৃষ্ট একটি মতাদর্শ। পরবর্তী আলোচনায় দেখা যাবে, একমাত্র ধর্মই এ ধরনের চিন্তাধারা ভিত্তিক দর্শন ও ব্যবস্থাপনা প্রদান করতে পারে। কিন্তু মার্কস সকল ধর্ম ও ধর্মীয় মূল্যবোধকে প্রত্যাখ্যানো আহবান জানিয়েছিলেন। মানবিক মূল্যবোধে সমৃদ্ধশালি ঐতিহ্য ধ্বংসের পর যা মার্কস উপস্থাপন করেছিলেন তা হলো সমস্ত উৎপাদন উপকরণের উপর কর্তৃত্বশীর একটি একনায়কতান্ত্রিক রাষ্ট্র, যেখানে নীতিনির্ধারণের জন্যে কোনো সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা নেই, ব্যক্তিস্বার্থের লেলিহান শিখাকে নিয়ন্ত্রণের কোনো উপায় নেই। শুধু রয়েছে এক নিষ্ঠুর, ক্ষমাহীন প্রচণ্ড শক্তি। এমনকি একটি একনায়কতান্ত্রিক রাষ্ট্র আবার ইতিহাসের এক পর্যায়ে এসে আপনাআপনি বিলুপ্ত হয়ে যাবে বলে মার্কস বিশ্বাস করতেন। কিন্তু কিভাবে এ বিলুপ্তি ঘটবে মার্কস তা ব্যাখ্যা করেননি। যদি বুর্জোয়াগণ স্বেচ্ছায় ক্ষমতা ত্যাগে প্রস্তুত না হয়, তবে কিভাবে ধারণা করা যেতে পারে যে, প্রলেতারিয়েত পলিটব্যুরোর সদস্য হবার মাধ্যমে ক্ষমতা লাভের পর সে ক্ষমতা ত্যাগ করবে? বাস্তব সত্য হলো কমিউনিস্ট দেশসমূহে রাষ্ট্র বিলুপ্ত না হয়ে বরং উৎপীড়নের আরো শক্তিশালী যন্ত্রে পরিণত হয়েছে। ‘প্রকৃতির সাথে সংগতিপূর্ণ সমাজব্যস্থা’ আর বাস্তবতা লাভ করেনি। প্রলেতারীয় শ্রেণী সেই মজুর দাসই রয়ে গেল। মার্কসীয় বিপ্লব দ্বারা তারা কি পেলো? তাদের আয়ের বৃদ্ধি কিন্তু তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, পশ্চিম জার্মানীর মতো দেশে সোভিয়েত রাশিয়া, পূর্ব ইউরোপ ও চীনের চেয়ে বেশি পাচ্ছে, যদিও তা বুর্জোয়া শ্রেণীর আয়ের মতো নয়। ফলত পুঁজিবাদের অবশ্যম্ভাবী পতন সম্পর্কিত মার্কসের ভবিষ্যদ্বানী ভুল বলে প্রমাণিত হয়েছে। সোভিয়েত নিরীক্ষা হতে লদ্ধ প্রায় সকল অভিজ্ঞতাই নেতিবাচক -যেমন, মজুরি প্রথাহীন রাষ্ট্রের কর্তৃত্ব মুক্তসমাজ, মুদ্রা ও শ্রেণী বৈষম্যহীন ব্যবস্থা সবই মরীচিকায় পরিণত হয়েছে। সর্বস্তরে গণতন্ত্রের অস্তিত্বহীনতা, সমালোচনা, নিষ্ঠুর দমন -এসবের দিকে তাকালে হতাশা আরো তীব্রতর হয়।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন