hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামের ইতিহাস ১ম খণ্ড

লেখকঃ মাওলানা আকবর শাহ খান নজিববাদী

১০৫
বয়কট
হযরত উমর (রা)-এর ইসলাম গ্রহণে কুরায়শরা দারুণ আঘাত পেলো। এদিকে মুসলমানরা প্রকাশ্যে খানায়ে কা‘বায় সালাত আদায় করতে লাগলেন। অনেক মুসলমান নাজাশীর দেশে চলে গিয়েছিলেন যাদের উপর কুরায়শের কোন জারিজুরিই চলতো না। হযরত হামযা (রা) ও হযরত উমর (রা)-এর বর্তমানে মক্কার মুসলমানদের গায়েও নির্বিবাদে হাত দেয়ার সাধ্য ছিলো না। এ অবস্থা দেখে নবুওয়াতের সপ্তম বছরের প্রথম মাসে অর্থাৎ মুহাররম মাসে কুরায়শরা একটি পরামর্শ সভায় মিলিত হলো। মুসলমানদের ক্রমবর্ধমান শক্তি যে একটা সংকটরূপে দেখা দিয়েছে তাও মজলিসকে অবহিত করা হলো এবং সে সংকট থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্যে কী কী ব্যবস্থা অবলম্বন করা যায় সে সম্পর্কে যথেষ্ট চিন্তা-ভাবনা ও সলা-পরামর্শ করা হলো। অবশেষে সকলে একমত হলো যে বনী হাশিম ও বনী আবদুল মুত্তালিবের সকলেই যদিও মুসলমান হয়নি, তবু হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর পক্ষ সমর্থন ও পাশে দাঁড়ানো থেকে বিরত থাকবে না। তাই প্রথমে আবূ তালিবকে বলা হোক যে, আপনি আপনার ভাতিজা মুহাম্মদ (সাঃ)-এর পাশ থেকে সরে দাঁড়ান এবং তাকে আমাদের হাতে তুলে দিন! যদি তিনি তাতে সম্মত না হন, তাহলে বনী হাশিম ও বনী আবদুল মুত্তালিবের সাথে বিয়ে-শাদী, মেলামেশা, সালাম-কালাম সব বন্ধ করে দিতে হবে। তাদের কাছে কোন বস্তু বেচাকেনা করা বা তাদের কাছে কোনরূপ খাদ্যদ্রব্য পৌঁছতে দেয়া চলবে না। যতদিন পর্যন্ত তারা মুহাম্মদকে আমাদের হাতে তুলে না দেবে ততদিন পর্যন্ত এ প্রাণান্তকর বয়কট চলতেই থাকবে।

এ বয়কট সম্পর্কে একটা চুক্তিনামাও লেখা হলো। কুরায়শ সরদারদের সবাই প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে তাতে সই করলো। সইকৃত চুক্তিপত্র খানায়ে কা‘বায় ঝুলিয়ে রাখা হলো। আবূ তালিব বনূ হাশিম ও বনূ আবদুল মুত্তালিবের সবাইকে নিয়ে মক্কার অদূরবর্তী এ গিরিসংকটে স্বেচ্ছাবন্দী হলেন। ইতিমধ্যে যারা মুসলমান হয়েছিলেন, তারাও তাদের সাথে যোগ দিলেন। বনূ হাশিমের একটি মাত্র লোক এর ব্যতিক্রম ছিল, সে হচ্ছে আবূ লাহাব। সে কুরায়শদের পক্ষে ছিল। বনূ হাশিম যে খাদ্যদ্রব্যাদি সাথে নিয়ে গিয়েছিলেন তা অল্প কয়েক দিনেই নিঃশেষিত হলো। দারুণ খাদ্যাভাবে তাদের ভীষণ কষ্ট হতে লাগলো। গিরি-সংকট থেকে বেরোনোর একটি মাত্র সংকীর্ণ গিরিপথ ছিল। কারো বাইরে যাওয়ার সাধ্য ছিলো না।

বনী হাশিমের লোকজন ও মক্কার মুসলমানগণ দীর্ঘ তিন বছর ভীষণ কষ্টে অতিবাহিত করেন। শি’বে আবী তালিব নামক উক্ত গিরিসংকটে তারা সে সময় যে অবর্ণনীয় কষ্ট স্বীকার করেন তা কল্পনা করতেও গা শিউরে ওঠে। কেবল হজ্জের মওসুমে এ অবরুদ্ধ লোকগুলো বাইরে আসতে পারতেন। আরবের চিরাচরিত প্রথা অনুসারে ঐ সময়টিতে পূর্ণ শান্তি বিরাজ করতো। কেউ কারো সাথে যুদ্ধবিগ্রহে লিপ্ত হতো না। ঐ সুযোগে তারা নিজেদের আহার্য ও পানীয় দ্রব্যাদি ক্রয় করে সঞ্চয় করে নিতেন। ঐ সুযোগে হুযূর (সাঃ) বাইরে বের হতেন এবং বহিরাগত লোকদের কাছে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছাতেন। কিন্তু কুরায়শরাও তার সাথে সাথে লেগে থাকতো এবং যেখানেই তিনি যেতেন সেখানেই লোকদেরকে তার কথা শোনা থেকে বারণ করতো। তারা তাকে পাগল ও যাদুকর বলে আখ্যায়িত করে তার দিকে কাউকে মনোযোগী হতে দিতো না। শি’বে আবূ তালিবের তিন বছর ব্যাপী নির্যাতনের কথাটি চিন্তা করলে এ কথাটি বোধগম্য হয় যে, গোত্রীয় টান ও বংশের নৈকট্যানুভূতিও এমনি একটি শক্তি যে বনূ হাশিমের লোকেরা মুসলমান না হওয়া সত্ত্বেও শুধু এ টানের জন্যে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর সমর্থন ও সাহায্য করতে এতদূর কষ্ট বরণ করতে বাধ্য করেছিল। অপর দিকে গিরিসংকটে ঐ বন্দিত্বের সময়টাতে তারা হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-কে অতি নিকট থেকে অবলোকনের এবং তার চারিত্রিক সৌন্দর্য দর্শনে প্রভাবান্বিত ও ইসলামকে জানার সুযোগ পায়। এ বংশগত আভিজাত্যবোধ এভাবে তাদেরকে (বনূ হাশিমকে) সঙ্গতভাবেই সম্মানের যোগ্য করে তোলে। তিন বছরের এ নিবর্তনমূলক বন্দিত্ব এবং বনূ হাশিমের দুঃখকষ্ট অবশেষে কুরায়শদের কোন কোন ব্যক্তির উপরও প্রভাব বিস্তার করে।

বনী হাশিমের ছোট ছোট বাচ্চাদের ক্ষুধার্ত অবস্থায় ছটফট করা এবং ক্ষুধার্ত পিতামাতার সম্মুখে তাদের কচি সন্তানদের আর্ত চীৎকার সেই অসহনীয় অবস্থা মক্কার কুরায়শরা মর্মে মর্মে উপলব্ধি করতো। যুবায়র ইব্‌ন উমাইয়া ইব্‌ন মুগীরা বনী হাশিমের-এ যাতনা এজন্যে সর্বপ্রথম উপলব্ধি করল যে, আবূ তালিব ছিলেন তার মামুজান। যুবায়র প্রথমে মুত‘ঈম ইব্‌ন আদী ইব্‌ন নাওফিল ইব্‌ন আবদে মানাফকে আত্মীয়তা বন্ধনের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে এ চুক্তি ভঙ্গের জন্যে তাকে উদ্বুদ্ধ করেন। তারপর আবুল বুখতরী ইব্‌ন হিশাম এবং যুমআ ইব্‌ন আসওয়াতকে তিনি তার সমর্থক বানান। মোটকথা, বনী হাশিমের সাথে ঘনিষ্ঠ আত্মীয়তা বন্ধনে আবদ্ধ কয়েক ব্যক্তি বনী হাশিমের ভোগান্তির কথা উপলব্ধি করে এ ব্যাপারে বলাবলি শুরু করেন। এমনি একদিন হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) আবূ তালিবকে বললেন, আমাকে আল্লাহর পক্ষ থেকে অবহিত করা হয়েছে যে, ঐ চুক্তিপত্রে লেখাগুলো পোকায় খেয়ে ফেলেছে। কেবল যেখানে যেখানে আল্লাহর নাম আছে, সে স্থানগুলো অক্ষত অবস্থায় আছে। আল্লাহ নাম ছাড়া বাকী সমস্ত অক্ষর নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। একথা শুনে আবূ তালিব ঘাঁটি থেকে বেরোলেন এবং কুরায়শদেরকে লক্ষ্য করে বললেন, আমাকে তো মুহাম্মদ (সাঃ) এরূপ অবহিত করেছেন। তোমরা চুক্তিপত্র পরীক্ষা করে দেখো। যদি তার দেয়া সংবাদ যথার্থ হয়ে থাকে, এবং সত্যি সত্যি চুক্তিপত্র নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়ে থাকে তবে এ বয়কটের অবসান হওয়া উচিত। তার কথা শুনে কুরায়শরা তৎক্ষণাৎ খানায়ে কা‘বায় গিয়ে উপস্থিত হলো এবং লক্ষ্য করলো যে, সত্যি সত্যি পোকায় চুক্তিপত্রটি খেয়ে নষ্ট করে দিয়েছে, কেবল আল্লাহ শব্দটি যেখানে যেখানে লিখিত ছিল তাই অক্ষত রয়েছে। তাদের বিস্ময়ের সীমা-পরিসীমা রইলো না এবং তৎক্ষণাৎ তারা বয়কট অবসানের কথা ঘোষণা করে দিল। বনী হাশিম এবং মুসলমানরা দীর্ঘ তিন বছর বেরিয়ে এসে মক্কায় নিজ নিজ ঘরে পুনরায় বসবাস শুরু করেন। শি’বে আবূ তালিবে অধিকাংশ সময়ই মুসলমানদেরকে ক্ষুধার জ্বালায় অস্থির হয়ে গাছের পাতা খেতে হতো। কারো কারো অবস্থা এমন সংগীন হয়ে উঠে যে, কোথাও একটু শুকনো চামড়া পাওয়া গেলে তাই ধুয়ে একটু নরম করে আগুনে সিদ্ধ করে চিবুতেন। হাকীম ইব্‌ন হিযাম মাঝে মাঝে নিজ গোলামকে দিয়ে আপন ফুফু হযরত খাদীজা (রা)-এর জন্যে গোপনে খাদ্য পাঠাতেন। একবার আবূ জাহেল তা জানতে পেরে গোলামের হাত থেকে খাবার ছিনিয়ে নেয় এবং কঠোর প্রহরা বসিয়ে দেয়।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন