hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামের ইতিহাস ১ম খণ্ড

লেখকঃ মাওলানা আকবর শাহ খান নজিববাদী

৩৭৮
হযরত আলী (রা)-এর বিচার-মীমাংসা ও বাণীসমূহ
হযরত আলী (রা) বলেন, মহান আল্লাহর শোকর যে, ধর্মীয় বিষয়ে আমার শত্রুও আমার কাছে ফাত্ওয়া চায়। মুআবিয়া (রা) আমার কাছে লোক পাঠিয়ে জিজ্ঞেস করেছে, ‘খুনসাই মুশকিল’ (জটিল আকারের নপুংসক) পরিত্যক্ত সম্পত্তির কত অংশ পাবে? আমি তার কাছে।

লিখে পাঠিয়েছি যে, খুনসার লিঙ্গের আকার আকৃতি অনুযায়ী তার উপর উত্তরাধিকারের নির্দেশ প্রযোজ্য হবে। অর্থাৎ যদি তার লিঙ্গ পুরুষদের মত হয় তাহলে সে পুরুষ আর যদি স্ত্রী লোকের মত হয় তাহলে স্ত্রীলোক বলে গণ্য হবে। হযরত আলী (রা) যখন বসরাতে চলে যান তখন ইব্‌ন কাওয়া ও কায়স ইব্‌ন উবাদাহ তাঁর কাছে নিবেদন করেন : কোন কোন লোক বলে, হযরত রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) আপনাকেও এ মর্মে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, আমার পরে তোমাকেই খলীফা মনোনীত করা হবে। এ ব্যাপারে আপনার চাইতে বিশ্বস্ত লোক তো আর কেউ হতে পারে না। কাজেই আমরা আপনাকেই জিজ্ঞাসা করছি, কথাটা কি সত্য? হযরত আলী (রা) উত্তরে বলেন : এটা একেবারেই অমূলক কথা যে, হযরত রাসূলুল্লাহ (সাঃ) খিলাফতের ব্যাপারে আমাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। প্রকৃতপক্ষে হযরত রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) আমাকে কোন প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকলে আমি হযরত আবূ বকর (রা) ও হযরত উমর (রা)-কে মিম্বরের উপর দাঁড়াতেই দিতাম না এবং আমার পক্ষে কেউ থাক অথবা না থাক নিজ হাতেই তাঁদেরকে হত্যা করতাম। আসল ব্যাপার হযরত রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ)-এর অসুস্থতার কাল যখন প্রলম্বিত হল তখন একবার মুয়াযযিন এসে তাঁকে নামায পড়াবার জন্য ডাকলে তিনি মুয়াযযিনকে বলেন, “আবু বকরকে নিয়ে যাও। তিনি আমার স্থলে নামায পড়াবেন।” কিন্তু উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়েশা (রা) হযরত রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-কে তাঁর এ ইচ্ছা থেকে বিরত রাখতে চাইলে তিনি বলেন, “তুমি দেখছি হযরত ইউসুফ (আ)-এর যুগের স্ত্রীলোকদের মত।” হযরত আবূ বকর (রা)-কেই নিয়ে যাও।” যেদিন হযরত রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) ইনতিকাল করেন, সেদিন যখন আমি আমার স্থানগত মর্যাদা সম্পর্কে চিন্তা করলাম তখন ঐ ব্যক্তিকেই আমার পার্থিব ব্যাপারেও নেতা মেনে নিলাম, যাকে হযরত রাসূলুল্লাহ (সাঃ) আমাদের ধর্মীয় ব্যাপারে (নামাযের ইমামতির জন্য) নেতা নির্বাচন করেছিলেন। কেননা, নামায হচ্ছে আসল দীন (ধর্ম), আর হযরত রাসূলুল্লাহ (সাঃ) দীনের প্রতিষ্ঠাতা এবং দুনিয়ারও ব্যবস্থাপক। তাই আমরা হযরত আবূ বকর (রা)-কেই যোগ্য মনে করে তাঁর হাতেই বায়‘আত করি। এ ব্যাপারে আমাদের মধ্যে কেউ দ্বিমত পোষণ করেনি। কেউ কারো ক্ষতি করার কথা চিন্তা করেনি এবং কেউ হযরত আবূ বকর (রা)-এর প্রতি অসন্তুষ্টও হননি। কাজেই আমিও হযরত আবূ বকর (রা)-এর হক আদায় করেছি। তার আনুগত্য স্বীকার করেছি, তার সেনাবাহিনীর অন্তর্ভুক্ত হয়ে তাঁর পক্ষে লড়েছি, তিনি আমাকে যা কিছু দিয়েছেন তাই গ্রহণ করেছি, যেখানে আমাকে লড়তে হুকুম করেছেন সেখানেই এবং শরীআতের বিধান মতে যাকেই শাস্তি দিতে বলেছেন তাকেই শাস্তি দিয়েছি। তিনি ইনতিকালের সময় হযরত উমর (রা)-কে তাঁর খলীফা বা প্রতিনিধি মনোনীত করে যান। তার পর আমি হযরত উমর (রা)-এর সাথেও সেরূপ ব্যবহার করেছি, যেরূপ ব্যবহার হযরত আবূ বকর (রা)-এর সাথে করতাম। যখন হযরত উমর (রা)-এর শাহাদতের সময় ঘনিয়ে এল, তখন আমি মনে মনে চিন্তা করলাম যে, ইসলাম গ্রহণে আমার অগ্রবর্তিতা, রাসূলে পাকের সাথে আমার নিকটাত্মীয়তা এবং অন্যান্য বৈশিষ্ট্যের কথা বিবেচনা করে হযরত উমর (রা) আমার জন্যই খিলাফতের নির্দেশ দিয়ে যাবেন। কিন্তু তিনি এ ভয়ে যে, না জানি এমন কোন ব্যক্তিকে আবার মনোনীত করে যাবে যার পরিণাম ভাল নয় (আমাকে মনোনীত করেননি)। এই একই কারণে তিনি তাঁর সন্তানকেও খিলাফত থেকে বঞ্চিত করে যান। হযরত উমর (রা) যদি দান ও অনুগ্রহের আদর্শ অনুসরণ করতেন তাহলে তিনি আপন সন্তানের চাইতে কাউকেই যোগ্য মনে করতেন না। যাহোক, শেষ পর্যন্ত নির্বাচনের দায়িত্ব কুরায়শের হাতে আসে এবং আমিও ছিলাম তাদের একজন। যখন লোকেরা খলীফা নির্বাচনের জন্য একত্রিত হয় তখন আমি ধারণা করি যে, তারা আমাকে ছাড়িয়ে যাবে না। হযরত আবদুর রহমান ইব্‌ন আউফ (রা) আমার কাছ থেকে এ মর্মে প্রতিশ্রুতি নেন যে, যাকেই খলীফা নির্বাচিত করা হয় আমি যেন তারই আনুগত্য স্বীকার করি। তারপর যখন তিনি হযরত উসমান (রা)-এর হাত ধরেন তখন আমি বুঝতে পারি যে, আমার কাছ থেকে যে প্রতিশ্রুতি নেওয়া হয়েছে তা অন্য ব্যক্তির আনুগত্যের জন্যই নেওয়া হয়েছে। তাই আমি হযরত উসমান (রা)-এর হাতেই বায়‘আত করলাম এবং তার সাথে সেই ব্যবহারই করলাম যা হযরত আবূ বকর (রা) ও হযরত উমর (রা)-এর সাথে করতাম। যখন হযরত উসমান (রা)-এরও শাহাদত লাভ হল তখন আমি চিন্তা করলাম যে, ঐ সব ব্যক্তি তো গত হয়ে গেছেন যাদেরকে হযরত রাসূলুল্লাহ (সাঃ) আমাদের ইমাম বানিয়েছিলেন এবং ঐ ব্যক্তিও গত হয়ে গেছেন যার আনুগত্যের জন্য আমার কাজ থেকে প্রতিশ্রুতি নেওয়া হয়েছিল। কাজেই এবার আমি (নিজের জন্য) বায়‘আত গ্রহণের প্রস্তুতি নিলাম। ‘আহলে হারামাইন’ (মক্কা-মদীনার অধিবাসীবৃন্দ) এবং কূফা-বসরার অধিবাসীরাও আমার হাতে বায়‘আত করে। এখন খিলাফতের ব্যাপারে এমন এক ব্যক্তি আমার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন যিনি (হযরত রাসূলের সাথে) আত্মীয়তা, জ্ঞান-প্রজ্ঞা, ইসলামে অগ্রবর্তিতা কোন দিক দিয়েই আমার সমকক্ষ নন। এমতাবস্থায় আমিই খিলাফতের যোগ্য।

জনৈক ব্যক্তি হযরত আলী (রা)-কে জিজ্ঞাসা করল, আপনি আপনার এক ভাষণে বলেছিলেন, “হে আমার প্রতিপালক! আমাকে সেরূপ যোগ্যতা দান করুন যেরূপ যোগ্যতা আপনি খুলাফা-ই-রাশিদীনকে দান করেছিলেন”—তাহলে আপনার মতে খুলাফা-ই-রাশিদীন কারা? একথা শুনে হযরত আলী (রা)-এর চক্ষু অশ্রুতে ভরে উঠলো। তিনি বললেন, তাঁরা আমার বন্ধু হযরত আবূ বকর (রা) ও হযরত উমর (রা)। তারা উভয়েই ‘ইমামুল হুদা’ (পথ প্রদর্শনের নেতা) ও শায়খুল ইসলাম (ইসলামের গণ্যমান্য ব্যক্তি)। কুরায়শগণ হযরত রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর পর দু’জনকে অনুসরণ করেছে এবং যারা এদেরকে অনুসরণ করেছে তারা মুক্তি পেয়েছে। হযরত আলী (রা) মিথ্যাচারিতাকে অত্যন্ত ঘৃণা করতেন। একবার তিনি কিছু বলছিলেন এমন সময় এক ব্যক্তি তার কোন কথার প্রতি মিথ্যা আরোপ করে। তখন তিনি তার জন্য বদদু‘আ করলেন। তারপর দেখা গেল, মজলিস থেকে উঠার পূর্বেই ঐ ব্যক্তি তার দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলেছে।

একবার দু’ব্যক্তি খেতে বসল। তাদের একজনের কাছে ছিল পাঁচটি রুটি এবং অন্যজনের কাছে তিনটি। ইতিমধ্যে অপর এক ব্যক্তি এল এবং তারা দু’জন ঐ তৃতীয় ব্যক্তিকে তাদের সাথে খেতে বসাল। খাওয়া-দাওয়ার পর তৃতীয় ব্যক্তি তাদের কাছ থেকে বিদায় নেবার সময় তাদের দু’জনকে আট দিরহাম দিয়ে বলল, আমি যা খেয়েছি এটা তারই বিনিময় মনে কর। তৃতীয় ব্যক্তি চলে যাবার পর দিরহামগুলো ভাগ করতে গিয়ে তাদের দু’জনের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দিল। যার পাঁচটি রুটি ছিল সে অপর ব্যক্তিকে বলল, আমি এ থেকে পাঁচ দিরহাম পাব এবং তুমি পাবে তিন দিরহাম। কেননা, আমার রুটি ছিল পাঁচটি এবং তোমার রুটি ছিল তিনটি। তিন রুটির অধিকারী বলল, আমি দিরহামগুলোর অর্ধেক (অর্থাৎ চার দিরহাম) ছাড়া কোন মতেই রাযী হব না। এ কলহ শেষ পর্যন্ত এ পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছল যে, তারা উভয়ে বিচারপ্রার্থী হয়ে হযরত আলী (রা)-এর দরবারে গিয়ে হাযির হল। তিনি তাদের উভয়ের বক্তব্য শুনে তিন রুটির অধিকারী ব্যক্তিকে বললেন, তোমার রুটির পরিমাণ ছিল কম। তিন দিরহাম দিলেও তোমার ভাগে বেশি পড়ে। কাজেই তুমি তিন দিরহামেই রাযী হয়ে যাও। সে বলল, যতক্ষণ পর্যন্ত আমি আমার প্রাপ্য না পাব, ততক্ষণ কিছুতেই রাযী হব না। হযরত আলী (রা) বললেন, তাহলে শেষ পর্যন্ত তোমার ভাগে পড়বে মাত্র এক দিরহাম। একথা শুনে এ ব্যক্তি বিস্ময় ভরা কণ্ঠে বলল, আপনিও দেখছি আশ্চর্য ধরনের রায় দিলেন। এবার আমাকে বুঝিয়ে বলুন তো, আমার ভাগে মাত্র একটি এবং তার ভাগে বাকি সাতটি পড়ে কিভাবে? হযরত আলী (রা) বললেন, তাহলে শোনো। সর্বমোট আটটি রুটি ছিল এবং তোমরা লোক ছিলে তিনজন। যেহেতু এগুলো সমানভাগে ভাগ করা সম্ভব নয়, তাই প্রত্যেকটি রুটি তিন টুকরা করলে মোট চব্বিশ টুকরা হয়। তা তো জানা সম্ভব নয় যে, কে কম খেয়েছে বা কে বেশি খেয়েছে। কাজেই, তা ধরে নিতে হবে যে, তিনজনই সমান সমান খেয়েছে অর্থাৎ প্রত্যেকে খেয়েছে আট টুকরা করে। তাহলে তোমার তিন রুটির নয় টুকরা থেকে তৃতীয় ব্যক্তি খেয়েছে মাত্র এক টুকরা এবং তুমি খেয়েছ আট টুকরা। আর তোমার সঙ্গীর পাঁচ রুটির পনর টুকরা থেকে সে খেয়েছে আট টুকরা এবং বাকি সাত টুকরা খেয়েছে ঐ তৃতীয় ব্যক্তি। যেহেতু তৃতীয় ব্যক্তি খেয়েছে তোমার এক টুকরা এবং তোমার সঙ্গীর সাত টুকরা, তাই আট দিরহামের মধ্যে সে পাবে সাত দিরহাম এবং তুমি পাবে মাত্র এক দিরহাম। একথা শুনে লোকটি বলল, হাঁ, এখন আমি রাযী হলাম। একদা জনৈক ব্যক্তি তাঁর কাছে এ মর্মে অভিযোগ পেশ করল যে, অমুক ব্যক্তি বলে, সে স্বপ্নের মধ্যে আমার মায়ের সাথে ব্যভিচার করেছে। তিনি তখন রায় দিলেন, ঐ ব্যক্তিকে রোদে দাঁড় করিয়ে তার ছায়ার উপর বেত্রাঘাত কর।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন