hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামের ইতিহাস ১ম খণ্ড

লেখকঃ মাওলানা আকবর শাহ খান নজিববাদী

২৩১
কোন জাতি, গোত্র বা পরিবারের সাথে খিলাফতের সম্পর্ক
কুরআনুল করীমে পরিষ্কারভাবে আল্লাহ্ পাক ইরশাদ করেন :

يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّا خَلَقْنَاكُمْ مِنْ ذَكَرٍ وَأُنْثَىٰ وَجَعَلْنَاكُمْ شُعُوبًا وَقَبَائِلَ لِتَعَارَفُوا ۚ إِنَّ أَكْرَمَكُمْ عِنْدَ اللَّهِ أَتْقَاكُمْ ۚ إِنَّ اللَّهَ عَلِيمٌ خَبِيرٌ .

হে মানুষ! আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি এক পুরুষ ও এক নারী হতে, পরে তোমাদেরকে বিভক্ত করেছি বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে, যাতে তোমরা একে অপরের সাথে পরিচিত হতে পারো। তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তিই আল্লাহর নিকট অধিক মর্যাদাসম্পন্ন, যে অধিক মুত্তাকী। আল্লাহ্ সবকিছু জানেন, সমস্ত খবর রাখেন। (৪৯ : ১৩)

ইসলাম দুনিয়ায় মানুষের খান্দানী অহমিকা এবং গোত্রীয় শ্রেষ্ঠত্ব ও আভিজাত্য দূর করে একই জাতি বানাতে চেয়েছে। إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ إِخْوَةٌ (মু’মিনগণ পরস্পর ভাই ভাই) বলে সমস্ত ভ্রাতৃসংঘকে একই ভ্রাতৃসংঘ এবং সমস্ত জাতিকে একই জাতি বানিয়ে দিয়েছে। আর এ জাতির নাম হচ্ছে মুসলমান বা মু’মিন জাতি।

সারা দুনিয়ায় জাতি গোষ্ঠী ইসলামী শিক্ষা অনুসারে কেবল দুটিই হতে পারে : এক, মু‘মিন ও মুসলিম, দ্বিতীয় কাফির ও মুশরিক। তাওহীদের গণ্ডির মধ্যে প্রবেশ করে জাতিগত বিভিন্নতা তাৎপর্যহীন হয়ে যায়। জাতি ও গোত্র-গোষ্ঠীর বিভিন্নতা দ্বারা আমাদের পরস্পরের মধ্যে চিনা-পরিচয়ের সুবিধা হয়—এ ছাড়া এর ভিন্ন কোন তাৎপর্য নেই। ইযযত, সম্মান, রাষ্ট্রক্ষমতা ও শ্রেষ্ঠত্ব আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে সর্বদা ইযযত-সম্মানের যোগ্য লোকদেরই প্রদত্ত হয়ে থাকে। সে যে কোন গোত্র, গোষ্ঠী ও জাতিরই হোক না কেন। সম্মানের অধিকারী হওয়ার জন্য শর্ত হচ্ছে তাকওয়া ও ঈমান। রাষ্ট্রক্ষমতা ও খিলাফতের জন্যও আল্লাহ্ তা‘আলা জ্ঞান, স্বাস্থ্য, দৈহিক শক্তি (কেননা, সুস্থ জ্ঞান সর্বদা সুস্থ শরীরেই থাকে), তাকওয়া, সুবিচার, সংস্কার প্রভৃতি শর্ত জরুরী সাব্যস্ত করেছেন। কোন বিশেষ জাতি-গোষ্ঠীর শর্ত কখনো আরোপ করেননি। ইসলাম আনসারকে মুহাজিরদের ভাই বানিয়েছে। ইসলাম আবূ জাহেলের মতো কুরায়শকে মদীনাবাসী যুবকদের দ্বারা নিহত করিয়েছে। ইসলাম হাবশী বিলালকে আরব অভিজাতদের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছে। ইসলাম উসামা ইব্‌ন যায়দকে উমর ফারুক (রা)-এর নেতা ও অনুসরণীয় বানিয়েছে। ইসলাম বাদশাহ ও গোলামকে পাশাপাশি এক কাতারে দাঁড় করিয়েছে।

ইসলাম নবী করীম (সাঃ)-এর দ্বারা ঘোষণা করিয়েছে যে, ফাতিমা বিন্‌ত রাসূলুল্লাহ (সাঃ) দ্বারাও যদি চৌর্যবৃত্তি সংঘটিত হতো, তবে তাঁর হাতও তেমনিভাবে কাটা হতো, যেমনিভাবে অন্য কোন নারীর। ইসলাম হযরত নবী করীম (সাঃ)-এর দ্বারা ঘোষণা করিয়েছে যে, জনমণ্ডলী! কোন সাধারণ হাবশী গোলামও যদি তোমাদের শাসক বা খলীফা নিযুক্ত হয়, তবে তোমরা তার আনুগত্য করবে। ইসলামই হযরত উমর ফারূক (রা)-এর দ্বারা তাঁর জীবনের শেষ মুহূর্তগুলোতে বলিয়েছে যে, আজ যদি আবূ হুযায়ফার গোলাম সালিম জীবিত থাকতো, তবে আমি তাকে আমার স্থলাভিষিক্ত নিযুক্ত করতাম। মোটকথা, ইসলাম গোত্রীয় ও বংশীয় অহমিকার প্রতিমাকে টুকরো টুকরো ও চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দিয়েছে। এটা নিতান্তই বিরাট ও মূল্যবান খিদমত ছিল যা ইসলাম মানব জাতির জন্য আঞ্জাম দিয়েছে। আজ ইসলাম দুনিয়ার সমস্ত ধর্মমত ও আইন-কানুনের কাছে এই মর্মে গর্ব করতে পারে যে, তার কোনটি থেকেই খান্দানী অহমিকার ভয়ানক প্রতিমা তার স্থান থেকে হঠানো হয়নি। কিন্তু ইসলাম তাকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে তার ধূলি বাতাসে উড়িয়ে দিয়েছে।

কি আশ্চর্যের ব্যাপার! আজ ইসলাম ও ইসলামী আইন অনুসরণের দাবীদার কিছু মুসলমানকে বলতে শোনা যাচ্ছে যে, ইসলাম নির্দেশ দিয়েছিল এবং হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর নির্দেশ ও কামনা ছিল খিলাফত কেবল কুরায়শ বংশ বা বনূ হাশিম গোত্র কিংবা হযরত আলী ও আলীর সন্তানদের মধ্যে সীমিত থাকবে, অপর অন্য কোন গোত্রের কোন ব্যক্তি কোন অবস্থায়ই খিলাফতের হকদার হতে পারে না। এমন যদি হতো, তবে সর্বপ্রথম আল্লাহ্ তা‘আলা কুরআনুল মজীদে তা পরিষ্কারভাবে বলে দিতেন এবং নবী (সাঃ) সে সম্পর্কে সুস্পষ্ট আহকাম ঘোষণা করে যেতেন। যদি বলা হয় যে, কুরআন মজীদে আল্লাহ্ এ সম্পর্কীয় আহকাম নাযিল করেছিলেন এবং সে আহকাম চালাকী করে খিলাফত ছিনতাইকারীরা গোপন করে ফেলেছে, তাহলে আল্লাহ্ তা‘আলা মিথ্যাবাদী (নাউযুবিল্লাহ) প্রতিপন্ন হন। যিনি ওয়াদা করেছিলেন যে,

إِنَّا نَحْنُ نَزَّلْنَا الذِّكْرَ وَإِنَّا لَهُ لَحَافِظُونَ ﴿٩﴾

আমিই কুরআন অবতীর্ণ করেছি এবং আমিই তার সংরক্ষক। (১৫:৯)

আর নাউযুবিল্লাহ! নবী করীম (সাঃ)ও ফরয প্রচারকার্যকে কখনো পূর্ণভাবে আঞ্জাম দেননি। বিদায় হজ্জের ভাষণেও স্বীয় স্থলাভিষিক্ত ও খিলাফত বনূ হাশিমের মধ্যে সীমিত থাকা সম্পর্কে কিছু বলেননি। অথচ এই ভাষণ শেষে তিনি সোয়া লাখ মানুষের সমাবেশে স্বীয় প্রচারকার্য পরিপূর্ণ করে দেয়ার ঘোষণা করেন। উপস্থিত জনতার কাছে তার সত্যায়ন চান। তারপর অন্তিমকালে তিনি প্রয়োজনীয় ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র বিষয় সম্পর্কেও ওসীয়ত করেছেন। কারো কাছে এক দিরহাম বা এক দীনার ঋণী থাকলেও তিনি তা পরিশোধ করেন। কিন্তু খিলাফত সম্পর্কে এই বিরাট খিলাফত-ঋণটি পরিশোধ করেননি।

বস্তুত তিনি জানতেন যে, খলীফা বানানোর কাজ হচ্ছে আল্লাহ্ তা‘আলার এবং এ কাজটির জন্য তিনি নবীকে আদৌ কষ্ট দেননি। হাঁ, নবী করীম (সাঃ) আল্লাহ তা‘আলার নিকট থেকে জ্ঞান লাভ করে এটা অবশ্যই জ্ঞাত হয়েছিলেন যে, আমার পর আল্লাহ্ তা‘আলা কাকে তার খলীফা বানাবেন। তাই তিনি তাঁর অন্তিম রোগাক্রান্ত অবস্থায় হযরত আবূ বকর সিদ্দীক (রা)-কে সালাতের ইমামতির জন্য স্বীয় স্থলাভিষিক্ত বানান এবং ওসীয়ত প্রসঙ্গে মুহাজিরদের বলেন যে, তোমরা আনসারদের সাথে সৎ ব্যবহার করবে। মুহাজিরদের প্রতি আনসারদের জন্য এইভাবে সুপারিশ করাই প্রমাণ করে যে, তিনি অবগত হয়েছিলেন তার পরে তাঁর খিলাফত আনসাররা নয়, বরং মুহাজিররা লাভ করবে। তিনি এও বলেন যে, الخلافة بعدى ثلاثون سنة ثم ملك بعد ذلك (আমার পরে ত্রিশ বছর খিলাফত, তারপর রাজতন্ত্র।) তারপর তিনি আল্লাহ্ তা‘আলার নিকট থেকে জ্ঞান লাভ করে এও অবগত হন যে, الا ئمت من قريش (ইমাম কুরায়শের মধ্য থেকে হবে)। এসব ছিল তাঁর পরবর্তী ঘটনাবলী সম্পর্কে তার ভবিষ্যদ্বাণী, নির্দেশ ছিল না। এখন কেউ যদি الخلافة بعدى ثلاثون سنة ثم ملك بعد ذلك (আমার পরে খিলাফত থাকবে ত্রিশ বছর। তারপর রাজতন্ত্র চালু হবে।)-কে নির্দেশ সাব্যস্ত করে, তবে সেটা হবে একটি মস্ত প্রতারণা। প্রকৃত সত্য নয়। الا ئمت من قريش -এর অবস্থাও তদ্রুপ। নিঃসন্দেহে সেখানে কুরায়শের মধ্যেই সমুন্নত মেধা ও সমুন্নত জ্ঞান ও তাকওয়া বিদ্যমান ছিল এবং এই সব সৎ গুণের মধ্যেই নিহিত ছিল অন্যদের উপর তাদের শ্রেষ্ঠত্ব। তাই আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে খিলাফতের জন্য নির্বাচিত করেন। তারপর যখন তাদের সেই অবস্থা আর থাকলো না, তখন অন্য লোকদের মধ্য থেকে যাকে খিলাফত পদের জন্য উত্তম মনে হতো আল্লাহ্ তা‘আলা তাকে খিলাফত ও রাষ্ট্রক্ষমতা দান করেন। সে যা হোক, খিলাফত বা রাষ্ট্র ও সালতানাত কোন বিশেষ খান্দানের সম্পত্তি নয়, এটি আল্লাহ তা‘আলার একটি দান। এটি সচরাচর তারাই লাভ করে, যারা নিজেদেরকে তার উপযুক্ত প্রমাণ করতে পারে। আবার তারা যখন অযোগ্য ও অনুপযুক্ত হয়ে যায়, আল্লাহ্ তা‘আলা তাদের নিকট থেকে ঐ দান ছিনিয়ে নেন এবং অন্যদেরকে দান করেন। আর এটাই আল্লাহর কাছে আমাদের প্রত্যাশা করা উচিত ছিল।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন