hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামের ইতিহাস ১ম খণ্ড

লেখকঃ মাওলানা আকবর শাহ খান নজিববাদী

২৭৯
ইয়ারমুক যুদ্ধ
হযরত খালিদ ইব্‌ন ওয়ালীদ (রা) একজন অভিজ্ঞ সেনাধ্যক্ষ হিসাবে গোটা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করলেন। একদিন রাতে তিনি অনুভব করলেন যে, ভোর বেলা রোমক বাহিনী সম্মিলিতভাবে আক্রমণ চালাবে। তিনি রাতের বেলায়ই সমস্ত মুসলিম সৈন্যকে-যাদের সংখ্যা বর্ণনা করা হয়েছে চল্লিশ থেকে ছেচল্লিশ হাজার—বহু ক্ষুদ্র দলে বিভক্ত করে প্রত্যেক দলের জন্য এক একজন অভিজ্ঞ বাহাদুর ব্যক্তিকে প্রধান কর্মকর্তা নিয়োগ করলেন এবং বাছা বাছা বাহাদুরদের একটি ছোট্ট দল স্বীয় সাহচর্যের জন্য নির্ধারিত করে অতি সুনিপুণভাবে প্রত্যেক কর্মকর্তাকে তার কর্তব্য সম্পর্কে উপযুক্ত পরামর্শ প্রদান করলেন। রোমক বাহিনীর পক্ষ থেকে প্রথম চল্লিশ হাজার অশ্বারোহীর একটি বাহিনী আক্রমণ করলো। হযরত খালিদ ইব্‌ন ওয়ালীদ (রা) তার মুষ্টিমেয় সহচরসহ সামনে অগ্রসর হয়ে ঐ বাহিনীটি বিতাড়িত করলেন। এরপর জর্জ ইব্‌ন যায়দ নামক রোমক সেনাপতি এগিয়ে এলো এবং খালিদ ইব্‌ন ওয়ালীদ (রা)-কে কিছু কথা বলার জন্য আহবান করলো। হযরত খালিদ ইব্‌ন ওয়ালীদ (রা) তাঁর নিকট গেলেন। তিনি খালিদ ইব্‌ন ওয়ালীদ (রা)-কে ইসলাম সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন জিজ্ঞেস করলেন। হযরত খালিদ ইব্‌ন ওয়ালীদ (রা) তাঁকে অতি সুন্দরভাবে ইসলামের মূলতত্ত্ব বুঝিয়ে দিলেন। তিনি তৎক্ষণাৎ মুসলমান হয়ে একা খালিদ ইব্‌ন ওয়ালীদ (রা)-এর সঙ্গে ইসলামী লশকরে চলে এলেন এবং মুসলমানদের সাথে শরীক হয়ে রোমক বাহিনীর উপর হামলা করলেন। ঐ যুদ্ধেই জর্জ (র) ইব্‌ন যায়দ অতি বীরত্বের সাথে লড়াই করে শহীদ হন।

উভয় দিক থেকে তুমুল যুদ্ধ শুরু হলো। মুসলিম সেনাপতিদের বিস্ময়কর বীরত্ব মুসলমানদের সংখ্যাল্পতা সত্ত্বেও কোন সৈন্যের অন্তরে হিম্মতহারা ও হতোদ্যম হওয়ার কল্পনা পর্যন্ত উদয় হতে দিলো না। উৎসাহ উত্তেজনার অবস্থা এরূপ ছিল যে, ইসলামী লশকরের নারীরাও লড়াই করে কাফিরদের হত্যা করতে যোগ দিলো। আবূ সুফিয়ান রাজায (যুদ্ধের কবিতা) পাঠ করে করে-অন্তরে জোশ ও যুদ্ধের উন্মাদনা সৃষ্টি করছিলেন। হযরত ইকরামা (রা) উচ্চকণ্ঠে বললেন : কে আছো আমার হাতে মৃত্যুর জন্য বায়‘আত করবে? তৎক্ষণাৎ যিরার ইব্‌ন আযওয়ার ও অন্যান্য চারশ’ লোক বায়‘আত করলেন যে, হয়তো আমরা শহীদ হয়ে যাবো, অথবা বিজয়ী বেশে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে ফিরে আসবো। এরপর এই দলটি রোমক বাহিনীর মধ্যে ক্ষুধার্ত নেকড়ের ন্যায় ঝাঁপিয়ে পড়লেন। হযরত মিকদাদ (রা) উচ্চকণ্ঠে সূরা আনফাল তিলাওয়াত করে মুসলিম যোদ্ধাদের মনে শাহাদতের উদ্দীপনা সৃষ্টি করছিলেন। খালিদ ইব্‌ন ওয়ালীদ (রা), আবূ উবায়দা (রা) ইব্‌ন জাররাহ, শুরাহবীল ইব্‌ন হাসানা (রা), আমর ইব্‌ন ‘আস (রা), হারিছ (রা), যিরার (রা), জর্জ (রা) ইব্‌ন যায়দ প্রমুখ মুসলিম বীর যে কীর্তি আঞ্জাম দিলেন, তা আজ পর্যন্ত আকাশের সূর্য অবলোকন করেনি। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তলোয়ার ও খঞ্জর এবং তীর ও বর্শার ব্যবহার অতি তীব্র ও ক্ষিপ্রতার সাথে চালু ছিল। জুহর ও আসরের নামায মুসলিম যোদ্ধারা নিছক ইশারা-ইঙ্গিতেই যুদ্ধক্ষেত্রে যুদ্ধ করতে করতে আদায় করেছেন। দিন শেষ হয়ে গেলো, কিন্তু যুদ্ধ শেষ হলো না।

অবশেষে রোমকরা সারা দিনের কষ্ট-ক্লেশে ক্লান্ত ও শ্রান্ত হয়ে মুসলমানদের মুকাবিলায় তিষ্টিতে পারলো না। পিছনে হটলো এবং হটতে হটতে পাহাড়ের পাদদেশে গিয়ে পৌঁছলো। কিন্তু মুসলমানরা তাদের সাথে সাথে অগ্রসর হতে হতে এবং ঠেলতে ঠেলতে সামনে চলে গেলেন। যখন পিছনে হটা ও পলায়ন করার জায়গা রইল না, তখন এদিক-ওদিক দিয়ে চুয়ে চুয়ে তাদের স্রোত বইলো। তবু মুসলমানরা তাদের পেছন ছাড়লো না। বহু পানিতে ডুবে, বহু খানা-খন্দকে পড়ে মারা গেলো। এক লাখ ত্রিশ হাজার রোমক প্রাণ হারালো। অন্যরা তাদের প্রাণ নিয়ে পলায়ন করলো। পলায়নকারীদের মধ্যে অশ্বারোহীই বেশী ছিল। পদাতিকরা প্রায় সবই মারা গেলো। যুদ্ধ সারা দিন ও সারা রাত চালু থেকে পরদিন ভোর বেলা মুসলমানদের বিজয় আকারে শেষ হলো। রোমক সৈন্য থেকে ময়দান সম্পূর্ণ শূন্য দেখা গেলো। রোমক বাহিনীর প্রধান সেনাপতি হিরাক্লিয়াসের সহোদর তাযারুকও মারা গেলো। আরও কতিপয় সেনাপতি মারা গেলো। মুসলমানদের তিন হাজার বাহাদুর শহীদ হলেন। এই তিন হাজারের মধ্যে নও-মুসলিম জর্জ (রা), ইব্‌ন যাযদ ইকরামা (রা), আমর ইব্‌ন ইকরামা (রা), সালামা ইব্‌ন হিশাম (রা), আমর ইব্‌ন সাঈদ (রা), আবান ইব্‌ন সাঈদ (রা), হিশাম, ইবনুল আসী (রা), হিবার ইব্‌ন সুফিয়ান (রা), তুফায়ল ইব্‌ন আমর (রা) প্রমুখ শহীদের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ইয়ারমুক যুদ্ধ ১৩ হিজরীর রবীউল আউয়াল বা রবীউস সানীতে সংঘটিত হয়েছে বলে বর্ণনা করা হয়। কিন্তু এটা সঠিক বলে মনে হয় না। ইয়ারমুক যুদ্ধ নির্ঘাত জুমাদিউস ছানীর শেষ দিনগুলোতে সংঘটিত হয়েছে। রোমক সৈন্য ইয়ারমুকে আসার আগে মুসলমানরা বসরা প্রভৃতি স্থান জয় করেছিলেন। হযরত আবূ বকর সিদ্দীক (রা)-এর ইনতিকাল পর্যন্ত ইয়ারমুক বিজয়ের খবর মদীনায় পৌঁছেনি। ইয়ারমুক বিজয়ের খবর দুই আড়াই মাস পর্যন্ত মদীনায় না পৌঁছা অসম্ভব ছিল।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন