hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামের ইতিহাস ১ম খণ্ড

লেখকঃ মাওলানা আকবর শাহ খান নজিববাদী

২২
সাম্রাজ্যের ইতিহাস
পশুর তুলনায় মানুষের একটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এই যে, পশুকে যেখানে সীমাবদ্ধ শক্তি-সামর্থ্য দেয়া হয়েছে যা সহজাতভাবে তার নিজের মধ্যেই বিদ্যমান, সেখানে মানুষকে এমন সম্ভাবনার অধিকারী করা হয়েছে যে, সে তার শক্তিকে যতই বৃদ্ধি করতে চায় ততই তার শক্তির ক্ষেত্র প্রশস্ত থেকে প্রশস্ততর হতে থাকে। এ কথাটি এভাবেও বলা যায়, মানুষ সর্বদা ঊর্ধ্বগামী। সে সর্বদা নীচ থেকে উপরের দিকে আরোহণ করার জন্যেই সৃষ্ট হয়েছে। মানুষের মধ্যে যে অনেক বেশী উর্ধ্বে সমাসীন হয়ে যায়, অন্যদেরকে সে যেহেতু অনেক নীচে দেখতে পায়, তাই নিজে পরিপূর্ণ না হলেও আপেক্ষিকভাবে নিজেকে অনেক পরিপূর্ণ দেখতে পায়। কিন্তু সাথে সাথে তার এ পূর্ণতা যেহেতু আপেক্ষিক এবং তার উন্নতির অবকাশ থেকেই যায় তাই তার চাইতে অপেক্ষাকৃত পূর্ণতর লোকদের তুলনায় নিজেকে সে অপূর্ণই দেখতে পায়। অপর কথায় বলা যায়, মানুষের মধ্যে সহজাতভাবেই উবুদিয়্যত বা দাস্যভাব বিরাজমান। সে তার শক্তি সামর্থ্যদাতা উপকারী সত্তার কাছে স্বভাবজাতভাবেই বিনীত।

وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنْسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونِ .

আমি জিন ও মানব জাতিকে সৃষ্টিই করেছি ইবাদত করার জন্যে। (৫১: ৫৬)

যে মানুষটিকে সকলের শীর্ষে ও ঊর্ধ্বদেশে সমাসীন দেখা যায় তাই স্বভাবত অন্যরা তার কাছে মাথা নত করে তার প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করে। এটাই হচ্ছে বাদশাহীর মৌল দর্শন আর এ থেকেই সেই বহুল প্রচলিত প্রবাদ বাক্যটির তাৎপর্য বোধগম্য হয়, যাতে বলা হয়ে থাকে যে, বাদশাহ্ বা শাসক হচ্ছে রূপকভাবে আল্লাহর ছায়াস্বরূপ। এখানে একথা বিস্মৃত হলে চলবে না যে, বাদশাহ্ বা শাসক প্রকৃতই কামেল বা পরিপূর্ণ সত্তা নয়, এ কেবল আপেক্ষিক পূর্ণ মাত্র-যাকে কেবল রূপক অর্থেই পূর্ণ বলা চলে। কেননা, প্রকৃত পূর্ণ সত্তা-কেবল তিনিই হতে পারেন যিনি সকল সীমাবদ্ধতা, সমকক্ষতা, নশ্বরতা ও অপূর্ণতার ঊর্ধ্বে সমাসীন একক অবিনশ্বর স্বয়ম্ভু ও অপরিহার্য সত্তা, সমস্ত গুণের আঁধার। তিনিই প্রকৃত বাদশাহ, শাসক, হাকিম, সার্বভৌমত্বের অধিকারী একক বিধানদাতা। মোটকথা মানুষ যেহেতু স্বভাবজাতভাবে সর্বদা তার আপন সত্তায় অনেক দীনতা ও অপূর্ণতা দেখতে পায়, তাই আনুগত্য ও মাথা নত করার সহজাত প্রবৃত্তিও তার মধ্যে নিহিত এবং এর স্বভাবজাত প্রবৃত্তির বিরুদ্ধাচরণ করতে তাকে বারণ করা হয়েছে :

أَطِيعُوا اللَّهَ وَأَطِيعُوا الرَّسُولَ وَأُولِي الْأَمْرِ مِنْكُمْ .

আল্লাহর আনুগত্য কর ও রাসূলের আনুগত্য কর এবং তোমাদের মধ্যকার শাসকেরও। (৪ : ৫৯)

রূপকভাবে আইন ও সার্বভৌমত্বের অধিকারী কেবল সেই বাদশাহ বা রাজন্যই হতে পারেন, যিনি আপেক্ষিকভাবে অন্যদের তুলনায় পূর্ণত্বের অধিকারী। তাই বলা যায়, প্রত্যেক পূর্ণ ও শক্তিমানই তার চাইতে অপেক্ষাকৃত অপূর্ণ এবং শক্তিহীনকে তার কর্তৃত্বাধীন বা প্রভুত্বাধীন দেখতে চাইবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু যেহেতু মানব চরিত্রে তার স্বভাব-বিরোধী কাজ করার এবং আপন প্রতিভা ও শক্তির বিকাশের পরিবর্তে অধঃপতনের দিকে ধাবিত হওয়ার এবং শক্তির অপচয়ের প্রবণতা ও সুযোগও বিদ্যমান রয়েছে, এজন্যে এটাও অপরিহার্য ছিল যে, কখনও দেখা যাবে, কোন ব্যক্তি এক সময়ে অন্যদের তুলনায় অনেক অপরিপূর্ণ ও পশ্চাৎগামী হওয়া সত্ত্বেও আপন স্বভাবধর্মের বিপরীতে সে সেই ক্ষমতা ও যশই কামনা করবে যা কোনমতেই তার প্রাপ্য নয়, বরং তা কেবল পূর্ণ সত্তারই প্রাপ্য হতে পারে। বিভিন্ন সাম্রাজ্য ও সম্রাটের মধ্যে দ্বন্দ্বের মূল কারণ এখানেই নিহিত। কর্তৃত্ব ও শাসন ক্ষমতার অধিকারী হওয়ার প্রধান হেতু দু’টিই হতে পারে; প্রথমটা রূহানী বা আধ্যাত্মিক, অপরটি দৈহিক বা বাহ্যিক। অন্য কথায় প্রথমটি হচ্ছে নবুওয়াত এবং দ্বিতীয়টি সালতানাত বা রাজত্ব।

সালতানাত বা জড়বাদী রাজত্বের সহিত সংশ্লিষ্ট পূর্ণতার বর্ণনা তালূত এবং হযরত দাউদ (আ)-এর রাজত্বের বর্ণনায় এভাবে রয়েছে :

وَقَالَ لَهُمْ نَبِيُّهُمْ إِنَّ اللَّهَ قَدْ بَعَثَ لَكُمْ طَالُوتَ مَلِكًا .

তাদের নবী তাদেরকে বললেন, আল্লাহ্ তা‘আলা তোমাদের জন্যে তালূতকে বাদশাহ্ মনোনীত করেছেন। (২: ২৪৭)

বনী ইসরাঈল তালূতকে বাদশাহ মনোনীত হওয়ার সংবাদে প্রতিবাদ বা আপত্তি উত্থাপন করলে জবাবে বলা হলো :

إِنَّ اللَّهَ اصْطَفَاهُ عَلَيْكُمْ وَزَادَهُ بَسْطَةً فِي الْعِلْمِ وَالْجِسْمِ .

নিঃসন্দেহে আল্লাহ্ তালুতকে তোমাদের উপর রাজত্বের জন্যে মনোনীত করেছেন এবং তাকে বিদ্যাবুদ্ধি ও দেহাবয়বে তোমাদের মধ্যে সেরা ব্যক্তি করেছেন। (২: ২৪৭)

তারপর দাউদ (আ) সম্পর্কে বললেন :

وَقَتَلَ دَاوُودُ جَالُوتَ وَآتَاهُ اللَّهُ الْمُلْكَ وَالْحِكْمَةَ وَعَلَّمَهُ مِمَّا يَشَاءُ .

এবং দাউদ জালূতকে হত্যা করলো এবং আল্লাহ তাকে রাজত্ব দান করলেন এবং তার অভিপ্রায় অনুযায়ী তাকে জ্ঞান দান করলেন। (২: ২৫১)

ইতিহাস পাঠে প্রতীয়মান হয় যে, যে ব্যক্তি কোন জাতির গোত্রপ্রীতি ও জাত্যাভিমানের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হতে পেরেছে এবং জ্ঞানবুদ্ধি, স্বাস্থ্য বা দেহসৌষ্ঠবে অন্যদের তুলনায় প্রাধান্য অর্জন করেছে সে-ই-তার জাতির নেতা ও রাজন্যপদে অনায়াসে বরিত হয়েছে। আজ থেকে তিন হাজার বছর পূর্বেও দৈহিক শক্তিমত্তা রাজত্ব লাভের জন্য প্রয়োজনীয় বিবেচিত হয়েছে—যার সাথে জ্ঞান ও বুদ্ধিগত প্রাধান্যও অপরিহার্য উপাদানরূপে বিবেচিত হয়েছে। তারপর শনৈ শনৈ মানব জাতির মধ্যে যতই নতুন নতুন গুণাবলী সৃষ্টি হয়েছে ততই রাজন্যের গুণাবলী ও পূর্ব শর্তের পরিধিও বিস্তৃত থেকে বিস্তৃততর হয়ে চলেছে। মোদ্দাকথা চিরকালই রাজা-বাদশাহ্ বা রাজন বলতে মূল্যবান ও গুণধর ব্যক্তিরাই বিবেচিত হয়ে এসেছেন। আর যখনই এর ব্যতিক্রমে অযোগ্য লোকেরা এ শীর্ষ পদে অধিষ্ঠিত হয়েছে তখনই নানারূপ ফিতনা-ফাসাদ ও বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়মের ব্যতিক্রম কোথাও পাওয়া যায় না। প্রতিটি মানুষ যেহেতু জন্মগত ও স্বভাবগতভাবে সমান অধিকার ও মর্যাদার অধিকারী, সুতরাং অধ্যবসায় সাপেক্ষে লভ্য যে মাহাত্ম্য ও গুণাবলী মানুষকে রাজা-বাদশাহর মর্যাদায় উন্নীত করে তাতে সকলেরই সমান অধিকার।

ليس للانسان الا ما سعی .

যে যতটুকু চেষ্টা করবে সে ততটুকুই কর্ম লাভ করবে।

প্রতিটি জাতির সবচেয়ে গুণধর ব্যক্তি তার স্বীয় গুণাবলী ও মাহাত্ম্যের দ্বারা আপন সমগোত্রীয় বা সমজাতীয়দের রাজার আসনে সমাসীন হয়েছে। প্রতিটি গ্রামের মোড়ল তার গ্রামের রাজাস্বরূপ। আর এটা হচ্ছে আদি মানবগোষ্ঠীর রাজত্বের নমুনা-যা আজো আমাদের চোখের সম্মুখে রয়েছে। আজো আমরা এ ব্যবস্থার কোন ত্রুটি নির্দেশ করতে পারবো না। হাঁ, তা তখনই পারবো যখন যোগ্যতর ব্যক্তির স্থলে অযোগ্য ব্যক্তি শাসক পদে বরিত হয় বা কোন গ্রাম বা মহল্লার মোড়ল-মাতব্বর (মেম্বার-চেয়ারম্যান) সেই গ্রাম বা জনপদের যোগ্যতর ব্যক্তিটি না হবে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন