hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামের ইতিহাস ১ম খণ্ড

লেখকঃ মাওলানা আকবর শাহ খান নজিববাদী

৪০৬
মুআবিয়া (রা)-এর কাছে আমর ইবনুল ‘আস (রা)-এর উপস্থিতি
ফারূকী খিলাফত আমলে হযরত আমর ইবনুল ‘আস (রা) মিসর জয় করে তা ইসলামী রাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্ত করেন। যখন বিদ্রোহীরা মদীনায় প্রবেশ করে হযরত উসমান (রা)-কে অবরোধ করে তখন তিনি মদীনায় ছিলেন। বিদ্রোহীদের অবাঞ্ছিত আচরণ এবং তাদের এই বিশৃংখলার অশুভ পরিণামের কথা চিন্তা করে তিনি মদীনা থেকে চলে যাওয়া সমীচীন মনে করেন। শেষ পর্যন্ত তিনি আপন দুই পুত্র আবদুল্লাহ এবং মুহাম্মদকে সঙ্গে নিয়ে মদীনা থেকে সোজা বায়তুল মুকাদ্দাসে চলে যান। তিনি সেখান থেকে অত্যন্ত গভীরভাবে দেশের পরিস্থিতির উপর লক্ষ্য রাখেন এবং দৈনন্দিন ঘটনাবলীরও খোঁজ-খবর নিতে থাকেন। তিনি প্রথমে উসমান (রা)-এর শাহাদতের সংবাদ পান। এরপর জানতে পারেন যে, আলী (রা)-এর হাতে বায়‘আত নেওয়া হয়েছে। কিন্তু তিনি (আলী) উসমানের হত্যাকারীদের কিসাস গ্রহণে ইতস্তত করছেন। তিনি আরও শুনতে পান যে, তালহা এবং যুবায়র (রা) আয়িশা (রা)-কে সঙ্গে নিয়ে বসরার দিকে যাত্রা করেছেন এবং আমীরে মুআবিয়া বায়‘আত গ্রহণে অস্বীকার করে উসমান হত্যার কিসাস দাবী করেছেন। তিনি আরও শুনতে পান যে, আলী (রা)-ও বসরার দিকে যাত্রা করেছেন। এর পর পরই সংবাদ পান যে, তালহা, যুবায়র (রা) উভয়ই জামাল যুদ্ধে শাহাদতবরণ করেছেন এবং আলী (রা) বসরার উপর তার অধিকার প্রতিষ্ঠা করে আবদুল্লাহ ইব্‌ন আব্বাস (রা)-কে সেখানকার গভর্নর নিয়োগ করে নিজে কুফায় চলে গেছেন এবং সেখান থেকে সিরিয়া আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তিনি এও শুনতে পান যে, আমীরে মুআবিয়া (রা)-ও আলী (রা)-এর আক্রমণ প্রতিহত করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

এই সংবাদ শুনে হযরত আমর ইবনুল ‘আস (রা) তাঁর পুত্রদ্বয়ের সাথে পরামর্শ করেন। তিনি তাদের বলেন, এখনি যথার্থ সময় যে, আমি আমীরে মুআবিয়ার কাছে চলে যাব এবং খিলাফতের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে এর একটা প্রতিবিধান করবো। জামাল যুদ্ধের পূর্বে চার ব্যক্তি খিলাফতের দাবীদার ছিলেন। প্রথমত আলী (রা)। তিনি তো খলীফা নির্বাচিতই হয়েছিলেন এবং লোকেরা তাঁর হাতে বায়‘আতও করেছিল। দ্বিতীয়ত হযরত তালহা (রা)। বসরাবাসীরা ছিল তার সমর্থক ও সাহায্যকারী। তাঁরা তাঁকে খলীফার পদের যোগ্য মনে করত। তৃতীয়ত হযরত যুবায়র (রা)। তার ভক্ত এবং তাকে খলীফা পদের যোগ্য বিবেচনাকারীর সংখ্যা কূফায় ছিল সবচেয়ে বেশী। চতুর্থত আমীরে মুআবিয়া (রা)। তিনি সিরিয়ার গভর্নর ছিলেন এবং হযরত আবূ বকর (রা)-এর আমল থেকে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন ছিলেন। দীর্ঘদিন থেকে সিরিয়ার শাসনভার তাঁর হাতে ন্যস্ত ছিল। হযরত উসমান (রা)-এর আত্মীয় স্বগোত্রীয় এবং উত্তরাধিকারী হওয়ার কারণে তিনি (মুআবিয়া) তার হত্যা প্রতিশোধ ‘কিসাস’ গ্রহণের দাবী উত্থাপন করেছেন। এবার হযরত তালহা ও যুবায়র (রা)-এর শাহাদত বরণের পর শুধুমাত্র দু’ব্যক্তিই খিলাফতের দাবীদার রয়ে গেছেন। আমীরে মুআবিয়া বলেছেন, হযরত আলী (রা) হলেন বিদ্রোহীদের নির্বাচিত খলীফা যারা উসমান (রা)-কে শহীদ করেছে। এমন শীর্ষস্থানীয় অনেক সাহাবী তখন মদীনার বাইরে ছিলেন, খলীফা নির্বাচন বা ইতিপূর্বেকার খলীফাদের বায়‘আতের ক্ষেত্রে যাদের অংশগ্রহণকে অপরিহার্য বিবেচনা করা হয়েছে। অথচ এই নির্বাচনে তাদের কাছ থেকে কোন পরামর্শও গ্রহণ করা হয়নি। আর সবচেয়ে বড় কথা হলো, আলী (রা) হযরত উসমানের হত্যাকারীদেরকে তারই বাহিনীতে আশ্রয় দিয়ে রেখেছেন। অপর দিকে তিনি বলছেন, মুআবিয়া (রা) ইসলামের জন্য ত্যাগ স্বীকার এবং রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর নিকটাত্মীয় ও ইসলাম গ্রহণে অগ্রণী হওয়ার ক্ষেত্রে কোন মতেই আমার সাথে মুকাবিলা করতে পারবে না। মোটকথা, তারা একে অন্যের বিরুদ্ধে অগ্রগণ্যতার দাবী করছেন। এমতাবস্থায় আমি নিজেকে এসব ব্যাপার থেকে বিচ্ছিন্ন রাখা সমীচীন মনে করি না। আবদুল্লাহ ইব্‌ন আমর (রা) পিতাকে পরামর্শ দেন : রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ), হযরত আবূ বকর, হযরত উমর ও উসমান (রা) সকলেই তাদের জীবনের অন্তিম সময় পর্যন্ত আপনার উপর সন্তুষ্ট ছিলেন। অতএব আমি এটাই সমীচীন মনে করি যে, আপনি ঘরের দরজা বন্ধ করে একেবারে চুপচাপ বসে থাকুন, যতক্ষণ না লোকেরা কোন এক ব্যক্তি সম্পর্কে ঐকমত্যে পৌঁছে। কিন্তু অপর পুত্র মুহাম্মদ বললেন, আপনি হচ্ছেন আরবের গণ্যমান্য, প্রভাবশালী ও বিচক্ষণ ব্যক্তিদের অন্যতম। অতএব আপনি যতক্ষণ পর্যন্ত হস্তক্ষেপ না করবেন ততক্ষণ এ বিষয়টির কোন চূড়ান্ত ফায়সালা হবে না।

আমর ইবনুল ‘আস (রা) তাঁর উভয় পুত্রের বক্তব্য শুনে বলেন, আমি আবদুল্লাহ্‌র পরামর্শের মধ্যে ধর্মের মঙ্গল এবং মুহাম্মদের পরামর্শের মধ্যে দুনিয়ার মঙ্গল লক্ষ্য করছি। অতঃপর তিনি এ সম্পর্কে আরো কিছুটা ভেবে-চিন্তে বায়তুল মুকাদ্দাস থেকে রওয়ানা হন এবং দামিশকে হযরত আমীরে মুআবিয়ার কাছে চলে যান। আমীরে মুআবিয়া তাঁর উপস্থিতিকে একটি বিরাট সৌভাগ্যের লক্ষণ বলে মনে করেন। আমর ইবনুল ‘আস আমীরে মুআবিয়ার সাথে সাক্ষাৎ করে সর্বপ্রথম যে কথাটি বলেন তা হলো মজলুম খলীফার হত্যার প্রতিশোধ অবশ্যই গ্রহণ করতে হবে। আপনি এ ব্যাপারে যে দাবী উত্থাপন করেছেন তা ঠিক ও যথার্থ। প্রথম প্রথম আমীরে মু‘আবিয়া (রা) অত্যন্ত সতর্কতার সাথে তাঁর সঙ্গে মেলামেশা করেন। এরপর তার উপর পরিপূর্ণ আস্থা স্থাপন করে তাকে তার উপদেষ্টা নিয়োগ করেন। হযরত আমর (রা) আমীরে মুআবিয়াকে পরামর্শ দেন : হযরত উসমান (রা)-এর রক্তাক্ত জামা এবং তাঁর স্ত্রী নায়লার কর্তিত অঙ্গুলীসমূহ এভাবে প্রতিদিন জনসমুদ্রে দর্শনের প্রয়োজন নেই। অন্যথায় এ ব্যাপারে মানুষের আগ্রহ উচ্ছ্বাস ক্রমে ক্রমে অবদমিত হয়ে যাবে। অতএব শুধু বিশেষ বিশেষ উপলক্ষে এগুলো প্রদর্শন করা উচিত। আমীরে মু‘আবিয়া তার এই অভিমত পছন্দ করেন। ফলে জামা ও অঙ্গুলী সামনে রেখে প্রতিদিন যে আহাজারির রোল উঠত তা বন্ধ হয়ে যায়। আমর (রা) আমীরে মু‘আবিয়াকে এটাও বোঝান যে, জামাল যুদ্ধের কারণে প্রকৃতপক্ষে হযরত আলী (রা)-এর সামরিক শক্তি অনেকটা দুর্বল হয়ে পড়েছে। কেননা জামাল যুদ্ধে কম করে হলেও আট নয় হাজার লোক নিহত হয়েছে। এই নিহতদের মধ্যে অনেক নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিও রয়েছেন। এখন যখন বসরাবাসীরা হযরত আলীর হাতে বায়‘আত করেছেন তখন তারা কূফাবাসীদের সাথে মিশে যাবে এবং এই মিশ্রিত বাহিনী স্বাভাবিকভাবেই মনেপ্রাণে কখনো যুদ্ধ করবে না। তাদের মধ্যে সব সময়ই অনৈক্য বিরাজ করবে। আমর ইবনুল ‘আস (রা)-এর এই অনুমান অমূলক ছিল না। অবশ্যই এই রহস্য সম্পর্কে সাবাঈ দলও অবহিত ছিল।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন