hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামের ইতিহাস ১ম খণ্ড

লেখকঃ মাওলানা আকবর শাহ খান নজিববাদী

২৭৮
সিরিয়ায় খারিদ ইব্‌ন ওয়ালীদ (রা)
ইরানীদের তরফ থেকে মোটামুটি নিশ্চিন্ত হওয়া গিয়েছিল এবং খুব শীঘ্র তারা মদীনা মুনাওয়ারায় সৈন্য চালনার স্বপ্ন দেখবে সে আশংকাও ছিল না। আরবের সর্বত্র যখন মুরতাদ সমস্যা দমিত হলো এবং ইরানী আশংকার গুরুত্বও কোন দ্রুততার দাবী করলো না, তখন সর্বপ্রথম ও সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল সিরিয়ার শৃংখলা বিধান ও ঐদিক থেকে রোমক ও গাস্‌সানী আশংকা প্রতিরোধ করা। শুরাহবীল ইব্‌ন আমর নামক গাস্‌সানী বাদশাহ হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর রাষ্ট্রদূতকে শহীদ করে ফেলেছিল, যার পর মু‘তা যুদ্ধ সংঘটিত হয়। তারপর রোমক ও গাস্‌সানীরা মিলে মদীনা মুনাওয়ারায় সৈন্য পরিচালনার প্রস্তুতি নেয়। সেই খবর শ্রবণ করে স্বয়ং হযরত নবী করীম (সাঃ) সৈন্য-সামন্ত নিয়ে তাবূক পর্যন্ত গমন করেন। কিন্তু তখনো পর্যন্ত খ্রিস্টানরা পূর্ণভাবে এতবড় আরবী ও ইসলামী লশকরের মুকাবিলা করার সাহস করতে পারেনি। তাই হযরত নবী করীম (সাঃ) সিরীয় সীমান্তে ভীতিসঞ্চার করে প্রত্যাগমন করেন। এরপর পুনরায় খবর এলো যে, সিরীয় সীমান্তে সামরিক প্রস্তুতি চলছে। তখন হযরত নবী করীম (সাঃ) হযরত উসামা ইব্‌ন যায়দ (রা)-কে প্রেরণ করেন। তিনি হযরত নবী করীম (সাঃ)-এর ওফাতের পর সিরীয় সীমান্তে গমন করেন এবং মুকাবিলাকারীদের পরাস্ত করে দ্রুত প্রত্যাবর্তন করেন কেননা, দেশের অভ্যন্তরে তখন মুরতাদ সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছিল। মুরতাদ সমস্যা নিরসন করার জন্য হযরত আবূ বকর সিদ্দীক (রা) যে এগারটি বাহিনী গঠন করে পাঠান তার একটি বাহিনী হযরত খালিদ ইব্‌ন ওয়ালীদ (রা)-কে দিয়ে বলে দিলেন যে, তুমি সিরীয় সীমান্ত অভিমুখে গমন কর। হযরত আবূ বকর সিদ্দীক (রা)-ও সিরীয় আশংকা উপলব্ধি করেছিলেন। তাই তিনি মুরতাদ সমস্যা মিটানোর ক্ষেত্রে সিরীয় আশংকাকে খুব দৃষ্টিগোচর রেখেছিলেন। তারপর মুরতাদ সমস্যা থেকে যখন নিশ্চিত হওয়া গেলো, তখন ইরানী আশংকা থেকে নিশ্চিন্ত হওয়ার জন্য তিনি খালিদ ইব্‌ন ওয়ালীদ (রা)-কে ইরাকে প্রেরণ করেন। আর আরবের সর্বত্র রাষ্ট্রদূত প্রেরণ করে যুদ্ধের জন্য প্রত্যেক গোত্র থেকে সৈন্য তলব করেন। উদ্দেশ্য ছিল, আরবের সম্মিলিত শক্তি দ্বারা রোমক ও ইরানী সম্রাটের মুকাবিলা করা-যাতে চিরতরে খ্রিস্টীয় ও মজুসী আশংকা থেকে আরবরা মুক্তি পায়। দ্বিতীয়ত, আরবের যেসব যুদ্ধবাজ গোত্র চুপ করে বসে থাকায় অভ্যস্ত ছিল না, তাদেরকে দেশের সর্বত্র থেকে খুঁজে এনে অমুসলিম শত্রুদের মুকাবিলায় সিরিয়া ও ইরাকে পাঠিয়ে দেয়া—যাতে আরবের ঐক্য ও শক্তি এবং ইসলামের কেন্দ্রীয় শক্তির জন্য কোন অভ্যন্তরীণ গোলযোগের আশংকা অবশিষ্ট না থাকে। এই প্রেক্ষিতে বলা যায় যে, মুরতাদ সমস্যাও ইসলামের বিজয় অভিযানের একটি বড় কারণ ছিল। আর আবূ বকর সিদ্দীক (রা)-এর বুদ্ধি-কৌশল ইসলামের শ্রেষ্ঠত্ব ও মহত্ত্ব বিকাশের সেই কাজটিই করেছিলেন, যা একজন অভিজ্ঞ বুদ্ধিমান মালি তার ফুল বাগানের সজীবতা ও শ্যামলিমার জন্য করতে পারেন।

হযরত খালিদ ইব্‌ন ওয়ালীদ (রা)-এর সাথে খুব কম লোক ছিল। কিন্তু তিনি পথিমধ্যে হযরত আবূ বকর সিদ্দীক (রা)-এর নির্দেশ অনুযায়ী যত মুসলমান সম্ভব সঙ্গে নিয়ে চললেন। হযরত খালিদ ইব্‌ন ওয়ালীদ (রা)-কে নির্দেশ দান করা হয়েছিল যে, যতটা সম্ভব মুরতাদদের শায়েস্তা করবে। খ্রিস্টান বাহিনী মুকাবিলা করতে এলে যতটা সম্ভব ঝটিকা আক্রমণ করবে। এক জায়গায় স্থির হয়ে যুদ্ধ করবে না। এরপর নির্দেশ দানের কারণ ছিল, সিদ্দীকে আকবর (রা) সর্বপ্রথম আরবকে আয়ত্তে আনতে চেয়েছিলেন এবং যে পর্যন্ত মুরতাদ সমস্যা পুরোপুরি মিটে না যায়, তখন পর্যন্ত হিরাক্লিয়াস ও কিসরা বাহিনীর সাথে যুদ্ধ করা সমীচীন মনে করতেন না। যেমনিভাবে অন্যান্য সেনাপ্রধানের সাথে খলীফার দরবার থেকে পত্র-বিনিময় চলছিল, তেমনি খালিদ ইব্‌ন ওয়ালীদ (রা)-এর গতিবিধি সম্পর্কেও সিদ্দীকে আকবর (রা) ওয়াকিফহাল ছিলেন এবং নিয়মিত হযরত খালিদ (রা)-এর কাছে মদীনা মুনাওয়ারা থেকে নির্দেশাবলী পৌঁছতে থাকতো।

হিরাক্লিয়াস সিরীয় সীমান্তে ইসলামী লশকরের উপস্থিতির কথা শুনে প্রথমে সীমান্তবর্তী গোত্রসমূহ ও রঈসদেরকে মুকাবিলার জন্য উস্কানি দিলেন। কিন্তু এই ছোট ছোট রঈস ও আরব খ্রিস্টান গোত্রগুলো যখন ইসলামী লশকরের মুকাবিলায় হেরে যাচ্ছিল, তখন রোমের কায়সার হিরাক্লিয়াস মাহান নামক রোমক সেনাপতিকে এক বিরাট বাহিনীসহ মুকাবিলার জন্য পাঠান। যখন খ্রিস্টান ও ইসলামী লশকরের মুকাবিলা হলো, তখন মাহান বাহিনী পরাজিত হলো এবং বহু মালে গনীমত মুসলমানদের হস্তগত হলো। এই পরাজয়ের খবর শুনে হিরাক্লিয়াস স্বয়ং কনস্টানটিনোপল সাম্রাজ্য থেকে রওয়ানা হয়ে সিরিয়ায় এলেন এবং সমুদয় সৈন্য একত্রিত করে যুদ্ধ পরিচালনার ভার তিনি সরাসরি নিজের হাতে তুলে নিলেন। হযরত খালিদ ইব্‌ন ওয়ালীদ (রা)-এর পত্র মারফত এই সমুদয় বৃত্তান্ত সিদ্দীক আকবর (রা) অবগত হলেন, যা তিনি পূর্ব থেকেই অনুমান করেছিলেন। ঘটনাক্রমে যেদিন এই পত্র মদীনায় এসে পৌঁছলো, ঐ দিন হযরত ইকরামা ইব্‌ন আবূ জাহেল তাঁর অভিযান শেষ করে মদীনায় পৌঁছেছিলেন। একই সঙ্গে দেশের সর্বত্র আল্লাহর পথে জিহাদ করার জন্য প্রস্তুত হয়ে বিভিন্ন গোত্রের আগমন আরম্ভ হয়ে গিয়েছিল। সিদ্দীকে আকবর (রা) ইকরামা (রা)-কে তৎক্ষণাৎ হযরত খালিদ ইব্‌ন ওয়ালীদ (রা)-এর সাহায্যে প্রেরণ করলেন। তার পর হযরত আমর ইবনুল ‘আস (রা)-কে একটি বাহিনী দিয়ে প্রেরণ করলেন খালিদ ইব্‌ন ওয়ালীদ (রা) ও তাঁর সহচরদের সঙ্গে নিয়ে ফিলিস্তীনের পথে আক্রমণ করার জন্য। এরপর আগত গোত্রসমূহের একটি বাহিনী গঠন করে ইয়াযীদ ইব্‌ন আবূ সুফিয়ানকে অধিনায়ক করে প্রেরণ করলেন এবং নির্দেশ দিলেন যে, তোমরা দামেশকের দিক থেকে আক্রমণ করবে। এরপর আরেকটি বাহিনী গঠন করে তার অধিনায়ক বানালেন হযরত আবূ উবায়দা ইবনুল জাররাহ (রা)-কে। তাঁকে নির্দেশ দিলেন যে, তুমি হিমসের দিকে গমন করে হামলা করবে। ঐ সময়ই শুরাহবীল ইব্‌ন হাসানা (রা) ইরাক থেকে মদীনা মুনাওয়ারায় আগমন করেছিলেন। সিদ্দীকে আকবর (রা) আরেকটি বাহিনী গঠন করে তার অধিনায়ক নিযুক্ত করেন শুরাহবীল ইব্‌ন হাসানা (রা)-কে। তিনি তাকে নির্দেশ দিলেন যে, তুমি জর্দানের দিক থেকে আক্রমণ করবে। এইভাবে সিদ্দীকে আকবর (রা) সিরিয়া আক্রমণ করার জন্য ১৩ হিজরীর মুহাররম মাসে চারটি বাহিনী গঠন করে চার দিক থেকে প্রেরণ করলেন।

এই চারটি বাহিনী যখন সিরীয় সীমান্তে পৌঁছলো এবং হিরাক্লিয়াস জানতে পারলো যে, আরবরা চার ভাগে বিভক্ত হয়ে চার জায়গায় হামলা করার সংকল্প করেছে, তখন তিনিও তার চারজন সেনাপতিকে চারটি বিরাট বাহিনী দিয়ে পৃথক পৃথকভাবে প্রেরণ করলেন। হযরত আমর ইবনুল ‘আস (রা)-এর মুকাবিলার জন্য তিনি তাঁর সহোদর তাযারুককে নব্বই হাজার সৈন্য দিয়ে ফিলিস্তীনের দিকে প্রেরণ করলেন। জর্জ ইব্‌ন নুযারকে চল্লিশ হাজার সৈন্য দিয়ে ইয়াযীদ ইব্‌ন আবূ সুফিয়ানের মুকাবিলায় দামেশকের দিকে প্রেরণ করলেন। রাকিস নামক অধিনায়ককে পঞ্চাশ হাজার সৈন্যসহ শুরাহবীল ইব্‌ন হাসানার মুকাবিলায় জর্দানের দিকে এবং বফীকার ইব্‌ন নিস্তরাসকে ষাট হাজার সৈন্যসহ আবূ উবায়দা ইবনুল জাররাহর মুকাবিলায় হিমসের দিকে প্রেরণ করলেন। হিরাক্লিয়াস তার চারজন সেনাপতির অধীনে সর্বমোট দুই লাখ চল্লিশ হাজার সৈন্য মুসলমানদের মুকাবিলার উদ্দেশ্যে প্রেরণ করলেন। অথচ মুসলমানদের বাহিনী চতুষ্টয়ের সর্বমোট সৈন্য ছিল ত্রিশ হাজারের কাছাকাছি। এতেই প্রতীয়মান হয় যে, হিরাক্লিয়াস মুসলমানদের মূলোচ্ছেদ করার জন্য পূর্ব থেকেই কত বিরাট আয়োজন করে রেখেছিলেন। কিন্তু এতে সন্দেহ নেই যে, স্বয়ং হিরাক্লিয়াস ব্যক্তিগতভাবে মুসলমানদের সাথে যুদ্ধ করার আকাঙ্ক্ষী ছিলেন না। তিনি যুদ্ধ পরিহার ও যতটা সম্ভব মুসলমানদের সাথে সম্পর্কহীন থাকতে চাইতেন। কিন্তু তাঁর সমুদয় সভাসদ, মন্ত্রীবর্গ, সেনাপতিগণ ও গভর্নরগণ ছিলেন আরবদেশ আক্রমণ করার জন্য আপাদমস্তক প্রস্তুত। অন্য কথায়, হিরাক্লিয়াস যুদ্ধ করতে না চাইলেও রোমান সরকার পরিপূর্ণরূপে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত ছিল। সুতরাং রোমান সরকারের শাহানশাহ হিসাবে হিরাক্লিয়াসকে সব রকম উদ্যোগ আয়োজন একজন বুদ্ধিমান ও অভিজ্ঞ পরিচালকের মতই করতে হয়েছিল।

মুসলিম সেনাপতিগণ যদিও পরস্পর থেকে পৃথক হয়ে অভিযাত্রা করেছিলেন, কিন্তু সিদ্দীকে আকবর (রা)-এর নির্দেশ অনুযায়ী একে অপরের অবস্থা অবহিত ও পারস্পরিক খবরাখবর আদান-প্রদানের ব্যবস্থা চালু রেখেছিলেন। সিরীয় সীমান্তে প্রবেশ করার পর যখন তারা জানতে পারলেন যে, প্রতিটি মুসলিম বাহিনীর মুকাবিলায় তার আটগুণ রোমক সৈন্য সব রকম অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আগমন করছে, তখন একদিকে সিদ্দীকে আকবর (রা)-কে এ সংবাদ প্রদান করলেন, অপরদিকে তারা এক জায়গায় একত্রিত হয়ে শত্রুর মুকাবিলা করা সমীচীন মনে করলেন। ঘটনাক্রমে এদিকে চারজন সেনাপতিই নিজ নিজ বাহিনী নিয়ে ইয়ারমুকের এক জায়গায় সমবেত হলেন। ওদিকে সিদ্দীকে আকবর (রা) রোমক সৈন্যের আধিক্য ও প্রস্তুতির কথা শুনে একদিকে সেনাপতি চতুষ্টয়কে এক জায়গায় জমায়েত হয়ে মুকাবিলা করার নির্দেশ পাঠালেন, অপর দিকে হযরত খালিদ ইব্‌ন ওয়ালীদ (রা)-কে লিখে পাঠালেন যে, তুমি হীরা প্রদেশে তোমার স্থলে মুছান্না ইব্‌ন হারিছা (রা)-কে ওখানকার দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বানিয়ে অর্ধেক সৈন্য মুছান্নার কাছে রেখে বাকী অর্ধেক সৈন্য নিয়ে সিরিয়া গমন করো এবং সেখানকার সমস্ত ইসলামী সৈন্যের দায়িত্বভার প্রধান সেনাপতি হিসাবে তুমি নিজ হাতে গ্রহণ করো। সিদ্দীকে আকবর (রা) দেখেছিলেন খালিদ ইব্‌ন ওয়ালীদ (রা) ইরানী বাহিনীকে কিভাবে পরাভূত করে এক বিশাল এলাকা ইরান সাম্রাজ্য থেকে ছিনিয়ে এনেছিলেন। তাঁর দৃষ্টিতে এই ভয়াবহ অবস্থায় সার্থকভাবে রোমকদের মুকাবিলা করার জন্য খালিদের চেয়ে উপযুক্ত লোক আর কেউ ছিল না। তিনি এ কথাও জানতেন যে, খালিদের সবচেয়ে বড় ও সর্বপ্রথম কীর্তি ছিল মূতা যুদ্ধ। তিনি মূতা যুদ্ধে ইসলামী সৈন্যের বিক্ষিপ্ত অবস্থাকে সামলে নিয়েছিলেন, যার প্রতিদানস্বরূপ আল্লাহর পক্ষ থেকে তিনি ‘সায়ফুল্লাহ্’ (আল্লাহর তলোয়ার) উপাধি লাভ করেছিলেন। তাই সিদ্দীকে আকবর (রা) অতি জাদরেল সেনাপতি চতুষ্টয়ের কাছে সায়ফুল্লাহকে প্রেরণ করা এবং তাদের উপর তাকে প্রধান সেনাপতি করা অতীব ফলপ্রদ হবে বলে মনে করলেন। সেমতে খালিদ ইব্‌ন ওয়ালীদ (রা) দশ হাজার সৈন্য মুছান্না ইব্‌ন হারিছা (রা)-এর নিকট রেখে বাকী দশ হাজার সৈন্য নিয়ে সিরিয়া রওয়ানা হলেন।

ওদিকে হিরাক্লিয়াস যখন দেখলেন যে, ইসলামী বাহিনী চতুষ্টয় এক জায়গায় জমায়েত হয়েছে, তখন তিনিও তার সেনাপতি চতুষ্টয়কে নির্দেশ দিলেন এক জায়গায় হয়ে মুকাবিলা করার। রোমক বাহিনী চতুষ্টয় একত্রিত হয়ে ইয়ারমুক প্রস্রবণের অপর পাড়ে এমন এক ডিম্বাকার ময়দানে তাঁবু ফেললো, যা পশ্চাৎ দিক থেকে পাহাড় ও সম্মুখ দিক থেকে পানি বেষ্টিত ছিল। এই দুই লাখ চল্লিশ হাজার রোমক সৈন্যের প্রধান সেনাপতি ছিল হিরাক্লিয়াসের সহোদর তাযারুক। হিরাক্লিয়াস তাকে লিখলেন যে, আমি আরো একটি বড় বাহিনী তোমার সাহায্যার্থে প্রেরণ করছি। সে মতে মাহান নামক সেনাপতিকে ইয়ারমুকের দিকে প্রেরণ করলেন। ইসলামী লশকর ইয়ারমুকের এপারে খোলা ময়দানে পড়েছিল। তারা স্বীয় সংখ্যাল্পতার দরুন রোমকদের উপর আক্রমণ করতে পারছিল না। ওদিকে এক প্রাকৃতিক প্রাচীরে ঘেরা রোমক বাহিনীও বাইরে বের হয়ে মুসলমানদের উপর আক্রমণ করতে দ্বিধাগ্রস্ত ছিল।

ইয়ারমুকে যখন উভয় লশকর একত্রিত হলো, তখন ছিল সফর মাস। ঐ সময় কিংবা তার দু’চার দিন পর হযরত খালিদ ইব্‌ন ওয়ালীদ (রা) ইরাক থেকে তাঁর দশ হাজার সৈন্য নিয়ে ইয়ারমুক অভিমুখে রওয়ানা করলেন। পথিমধ্যে হযরত খালিদ ইব্‌ন ওয়ালীদ (রা)-কে কয়েক স্থানে শত্রু গোত্র ও শত্রু রঈসদের সেনাবাহিনী বাধা দিলো : প্রত্যেক স্থানেই খালিদ (রা) লড়াই করে শত্রুদেরকে বিতাড়িত ও সামনে থেকে অপসারিত করে ১৩ হিজরীর রবীউল আউয়াল মাসে ইয়ারমুকে পৌঁছলেন। ইয়ারমুকে হিরাক্লিয়াসের পক্ষ থেকে আরো কয়েকজন সেনাপতি সামরিক সাহায্য সহকারে রোমানবাহিনীতে যোগদান করেছিল। হযরত খালিদ (রা)-এর আগমনের পূর্বে যদিও ছোট খাটো ঠোকাঠুকি উভয় বাহিনীর মধ্যে বেঁধে গিয়েছিল, কিন্তু তেমন কোন উল্লেখযোগ্য বড় যুদ্ধ তখনো হয়নি।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন