hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামের ইতিহাস ১ম খণ্ড

লেখকঃ মাওলানা আকবর শাহ খান নজিববাদী

১৬৩
বনু কুরায়যার বিশ্বাসঘাতকতার পরিণাম
হযরত সা‘দ ইব্‌ন মুআয (রা)-যিনি খন্দকের যুদ্ধের সময় বনূ কুরায়যাকে বুঝিয়ে-সুঝিয়ে সঠিক পথে রাখার জন্য তাদের নিকট তাদের দুর্গের মধ্যে প্রেরিত হয়েছিলেন এবং তারা অত্যন্ত রুক্ষভাবে তাকে বিমুখ করে ফিরিয়ে দিয়েছিল—বনূ কুরায়যার সাথে চুক্তিবদ্ধ ও তাদের সুহৃদ ছিলেন। তিনি খন্দকের যুদ্ধের সময় তীরের আঘাতে যখম হয়েছিলেন। তাঁকে মসজিদে নববীর নিকটে তাঁবুর মধ্যে অবস্থান করার অনুমতি দেয়া হয়েছিল। তাই তিনি বনূ কুরায়যার মহল্লার দিকে মুসলিম মুজাহিদদের সাথে যেতে পারেন নি। হযরত আলী (রা)-কে হযরত নবী করীম (সাঃ) ঝাণ্ডা দান করেন এবং অগ্রবর্তী দল হিসাবে আগে পাঠিয়ে দেন। মদীনায় ইব্‌ন উম্মে মাকতুম (রা)-কেই যথারীতি শাসক হিসাবে বহাল রাখেন। হযরত আলী (রা) যখন বনূ কুরায়যার দুর্গের কাছে পৌঁছেন, তখন তিনি শুনতে পেলেন যে, বনু কুরায়যা রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-কে গালি-গালাজ করছে। মোটের উপর সন্ধ্যা পর্যন্ত এমনকি ইশার সালাত পর্যন্ত সাহাবায়ে কিরাম আসতে থাকেন। যাদের কোন কারণে রওয়ানা হতে দেরী হয়ে যায়, তারা ইশার সময় এসে পৌঁছেন। তারাও আসরের সালাত বনু কুরায়যার মহল্লায় গিয়ে ইশার সময়ই আদায় করলেন। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) তাদের এ কাজকে জাইয রাখেন। বনূ কুরায়যার দুর্গে হুই ইব্‌ন আখতাবও উপস্থিত ছিল। আবূ সুফিয়ান ও আরব কাফিররা যখন খন্দকের যুদ্ধ থেকে পলায়ন করলো, তখন হুই ইব্‌ন আখতাব বনূ কুরায়যার দুর্গে চলে এসেছিল। সে তাদেরকে মুসলমানদের সাথে লড়াই ও মুকাবিলার জন্য উস্কানি দিয়েছিল। মুসলমানরা বনূ কুরায়যার দুর্গ অবরোধ করেছিলেন। এই অবরোধ পঁচিশ দিন স্থায়ী হয়েছিল। বনূ কুরায়যার সরদার ছিলেন কা‘ব ইব্‌ন আসাদ। হুই ইব্‌ন আখতাব বনু কুরায়যার সাথে অবরুদ্ধ ছিল। কা‘ব ইব্‌ন আসাদ যখন দেখলেন, তার গোত্র মুসলমানদের মুকাবিলা করতে পারছে না, তখন তিনি তার গোত্রকে এক স্থানে সমবেত করে বললেন, মুহাম্মদ (সাঃ) যে আল্লাহর নবী তাতে কোন সন্দেহ নেই। কেননা, তার সম্পর্কে আমাদের আসমানী কিতাব তাওরাতে পরিষ্কার ভবিষ্যদ্বাণী রয়েছে এবং তিনিই হচ্ছেন আমাদের প্রতীক্ষিত নবী। কাজেই তাকে মেনে নিয়ে আমাদের জান-মাল ও সন্তান-সন্ততিকে রক্ষা করাই শ্রেয়। বনু কুরায়যা এ পরামর্শের বিরোধিতা করলো এবং ইসলাম গ্রহণ করতে অস্বীকার করলো। এরপর কা‘ব ইব্‌ন আসাদ বললেন : আমার দ্বিতীয় পরামর্শ হচ্ছে এই যে, তোমরা তোমাদের স্ত্রী-পুত্র-পরিজনদের মেরে ফেলো এবং দুর্গ থেকে বের হয়ে খোলা ময়দানে মুসলমানদের সাথে প্রাণপণ যুদ্ধ করো। বিজয় লাভ করলে বিবি-বাচ্চা আবার যোগাড় হয়ে যাবে। মারা গেলে লজ্জা-শরমের দিক থেকে নিশ্চিন্ত হয়ে মারা যাবে। বনু কুরায়যা এ পরামর্শও গ্রহণ করলো না। কা‘ব ইব্‌ন আসাদ বললেন, আমার তৃতীয় পরামর্শ হচ্ছে, শনিবার রাতে মুসলমানদের উপর হামলা করো। কেননা, ঐ দিন আমাদের কাছে হত্যা ও হামলা করা নাজাইয। মুসলমানরা ঐ রাতে আমাদের তরফ থেকে সম্পূর্ণ নিশ্চিন্ত ও গাফিল থাকবে। তাই আমাদের আক্রমণ সফল হবে এবং আমরা মুসলমানদের সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দেবো। এ ব্যাপারেও বনু কুরায়যা সম্মত হলো না-এবং বলল, আমরা শনিবারের সম্ভ্রম হানিও করতে চাই না। বনু কুরায়যার তিনজন শরীফ ব্যক্তি ছা‘লাবা ইব্‌ন সাঈদ, আসাদ ইব্‌ন উবায়দ ও উসায়দ ইব্‌ন সাঈদ ইসলাম গ্রহণ করলেন। আমর ইব্‌ন সা‘দ নামক এক ব্যক্তি বললেন, আমার গোত্র বনূ কুরায়যা বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। আমি এই বিশ্বাসঘাতকতায় তাদের অংশীদার হতে চাই না। এই কথা বলে তিনি দুর্গের বাইরে চলে যান। মুসলিম বাহিনীর অন্যতম নেতা মুহাম্মদ ইব্‌ন মাসলামা (রা)-যিনি প্রহরার কাজে নিয়োজিত ছিলেন—তাকে দুর্গ থেকে বের হতে দেখলেন। তার পরিচয় ও অভিপ্রায় জ্ঞাত হওয়ার পর বের হতে দিলেন এবং গ্রেফতার করলেন না। শেষে একদিন সকালে বনু কুরায়যা হযরত নবী করীম (সাঃ)-এর নিকট বার্তা পাঠালো : আমরা আমাদেরকে আপনার হাতে এই শর্তে সোপর্দ করছি যে, সা‘দ ইব্‌ন মুআয (রা) আমাদের জন্য যে শাস্তির বিধান করবেন, আমরা তাই মাথা পেতে নেবো। তিনি এই শর্ত কবূল করলেন। বনূ কুরায়যা যখন নিজেদেরকে মুসলমানদের হাতে সোপর্দ করলো, তখন বনু আওসের আনসার মুসলমানগণ রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর কাছে এসে বললেন যে, জাহিলিয়া যুগে যখন আওস ও খাযরাজের মধ্যে লড়াই হতো, তখন বনূ কুরায়যা আমাদের অর্থাৎ বনূ আওসের পক্ষ সমর্থন করতো। আপনি বনূ কায়নুকাকে বনূ খাযরাজের আনসারদের মর্যীর উপর ছেড়ে দিয়েছিলেন, এবার আমাদের পালা। সুতরাং বনূ কুরায়যা সম্পর্কে আপনি আমাদেরকে বিচারক নিযুক্ত করুন। তিনি বললেন, আমরা প্রথমেই তোমাদের বনূ আওসের নেতা সা‘দ ইব্‌ন মুআযকে বিচারক মেনে নিয়েছি। বনূ কুরায়যাও সা‘দ ইব্‌ন মুআযকে তাদের তরফ থেকে একমাত্র প্রতিনিধি বানিয়েছে। একথা শুনে বনূ আওসের সকল আনসার খুশী হলেন এবং ঐ সময়ই আনসারগণ মসজিদে নববীর দিকে রওয়ানা হয়ে গেলেন। সা‘দ ইব্‌ন মুআয (রা) আহত ও চিকিৎসাধীন ছিলেন। তাকে পাল্কি বা ঐ ধরনের কোন বাহনে করে মুসলিম বাহিনীর দিকে আনয়ন করা হলো। পথে তাঁকে লোকেরা বলতে বলতে আসছিল যে, আপনার রায়ই চূড়ান্ত সাব্যস্ত হবে। এখন বনূ কুরায়যার প্রতি কৃপা প্রদর্শন করার সুযোগ আপনার হাতে এসেছে। সা‘দ ইব্‌ন মুআয (রা) যখন এই রকম কথাবার্তা তার গোত্রের লোকদের মুখে শোনলেন, তখন তিনি বললেন, আমি ইনসাফ ও ন্যায়বিচার অনুযায়ী ফায়সালা করবো এবং কারো নিন্দা ও ভর্ৎসনার পাত্র হবো না। হযরত সা‘দ ইব্‌ন মুআয (রা)-এর বাহন যখন অদূরে এসে পৌঁছলো, তখন নবী (সাঃ) উপস্থিত আনসারদের বললেন যে, তোমাদের নেতার সম্মানার্থে উঠে দাঁড়াও। সবাই তাঁকে স্বাগত জানালেন। এরপর হযরত সা‘দ ইব্‌ন মুআয (রা)-কে বলা হলো যে, নবী করীম (সাঃ) আপনার পুরানো বন্ধুদের অর্থাৎ বনূ কুরায়যার ব্যাপারটি আপনার হাতে ন্যস্ত করেছেন। হযরত সা‘দ (রা) তাঁর গোত্রের লোকদের দিকে তাকিয়ে বললেন, তোমরা সবাই আল্লাহ তা‘আলাকে হাযির-নাযির জেনে অঙ্গীকার করো যে, আমার ফায়সালা তোমরা সন্তুষ্টচিত্তে মেনে নিবে এবং কোন উচ্চবাচ্য করবে না। সবাই অঙ্গীকার করলো যে, আমরা আপনার রায়ের উপর সন্তুষ্ট থাকবো। তারপর হযরত সা‘দ ইব্‌ন মুআয (রা) একই অঙ্গীকার হযরত নবী করীম (সাঃ) ও মুহাজিরদের নিকট থেকেও নিলেন। নবী (সাঃ) সা‘দ ইব্‌ন মুআয (রা)-এর রায় মেনে নেয়ার অঙ্গীকার করলেন। এরপর হযরত সা‘দ ইব্‌ন মুআয (রা) বললেন : আমি নির্দেশ দিচ্ছি যে, বনু কুরায়যার সকল পুরুষ লোককে হত্যা করা হোক। তাদের বিবি-বাচ্চাদের সাথে যুদ্ধবন্দীদের মতো ব্যবহার করা হোক এবং তাদের ধন-সম্পত্তি মুসলমানদের মধ্যে বন্টন করে দেয়া হোক। এই রায় ঘোষণার পর বনু কুরায়যাকে দুর্গ থেকে বের হওয়ার নির্দেশ দেয়া হলো এবং তাদেরকে পাহারা দিয়ে মদীনায় আনয়ন করা হলো। তাদের পুরুষদের হত্যা করা হলো এবং তাদের আবাসগৃহগুলো মুসলমানদের বাস করার জন্য দেয়া হলো।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন