hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামের ইতিহাস ১ম খণ্ড

লেখকঃ মাওলানা আকবর শাহ খান নজিববাদী

১৫০
শঠতা ও বিশ্বাসঘাতকতা হিজরতের চতুর্থ বছর
চতুর্থ হিজরীর পয়লা মুহাররম হযরত নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামের নিকট খবর পৌঁছলো যে, কুতন নামক স্থানে বনূ আসাদ গোত্রের বহু সন্ত্রাসী সমবেত হয়েছে। তারা মুসলমানদের উপর হামলা করার পায়তারা করছে। তালহা ইব্‌ন খুওয়ায়লিদ ও সালামা ইব্‌ন খুওয়ায়লিদ তাদের দলপতি। এই খবর পেয়ে নবী (সাঃ) আবূ সালামা মাখযুমীকে দেড়শত মুসলমান সমভিব্যাহারে তাদের শাস্তি বিধানকল্পে প্রেরণ করেন। আবূ সালামা (রা) কুতনে পৌঁছে জানতে পেলেন যে, শত্রুপক্ষ মুসলমানদের আগমন সংবাদ পেয়ে পূর্বেই পলায়ন করেছে। শত্রুপক্ষের কিছু গবাদিপশু মুসলমানদের হস্তগত হলো। সেগুলো নিয়ে আবূ সালামা (রা) মদীনায় ফিরে এলেন। আরাফাত উপত্যকার অদূরে আরাফা নামক একটি স্থান আছে। সেখানে সুফিয়ান ইব্‌ন খালিদ হাযলী নামক এক কট্টর কাফির বাস করতো। সে কাফিরদের একত্রিত করে মদীনা আক্রমণের প্রস্তুতি শুরু করলো। তাদের এই প্রস্তুতির খবর হযরত নবী করীম (সাঃ)-এর নিকট ধারাবাহিকভাবে পৌঁছতে শুরু করলো। তিনি চতুর্থ হিজরীর ৫ই মুহাররম সুফিয়ান ইব্‌ন খালিদ হাযলীর উদ্দেশ্যে হযরত আবদুল্লাহ্ ইব্‌ন উনায়স (রা)-কে প্রেরণ করেন। হযরত আবদুল্লাহ্ ইব্‌ন উনায়স (রা) দিবাভাগে লুকিয়ে থেকে এবং রাতের বেলায় চলতে চলতে আরাফায় গিয়ে উপস্থিত হন। সেখানে উপস্থিত হয়ে কৌশলে তার মস্তক কর্তন করেন এবং সেই মস্তক নিয়ে নিরাপদে চলে আসেন। আঠার দিন পর চতুর্থ হিজরীর ২৩ শে মুহাররম তিনি মদীনায় পৌঁছেন এবং মস্তকটি হযরত নবী করীম (সাঃ)-এর কদম মুবারকের কাছে রেখে দেন। চতুর্থ হিজরীর সফর মাসে মক্কার কুরায়শরা ‘আযাল ওকারা‘র (বনূ আসাদের ভ্রাতৃ গোষ্ঠী) সাত ব্যক্তিকে অপকৌশল এঁটে হযরত নবী করীম (সাঃ)-এর নিকট প্রেরণ করে। তারা মদীনায় পৌঁছে নবী করীম (সাঃ)-কে বললো যে, আমাদের গোটা গোত্র ইসলাম গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আপনি আমাদের সাথে কয়েকজন মুআল্লিম (শিক্ষক) প্রেরণ করুন যাতে তারা আমাদেরকে ইসলাম সম্পর্কে শিক্ষা দান করতে পারেন। তিনি দশজন সাহাবী এবং ইব্‌ন খালদূনের মতে ছয়জন সাহাবীকে তাদের সাথে পাঠান। মারছাদ ইব্‌ন আবী মারছাদ গানাবী বা আসিম ইব্‌ন ছাবিত ইব্‌ন আবিনে আফলাহকে এই শিক্ষক দলের নেতা নিযুক্ত করেন। চলতে চলতে যখন তারা হুযায়ল গোত্রের রাজী নামক পুকুর পাড়ে পৌঁছেন, তখন ঐ বিশ্বাসঘাতকরা হুযায়ল গোত্রের দু’শ’ যুবককে ডেকে আনলো। এই গোত্রটিও প্রথম থেকেই ষড়যন্ত্রকারীদের অন্তর্ভুক্ত ছিল। মুসলমানগণ যখন নিজেদেরকে কাফিরদের দ্বারা অবরুদ্ধ দেখতে পেলেন, তখন তারা সহসা সাহস সঞ্চার করে নিকটবর্তী পাহাড়ে উঠে গেলেন এবং সেখান থেকেই তাদের মুকাবিলা শুরু করেন। কাফিররা এই দশ ব্যক্তিকে সহজে বন্দী করা কঠিন ভেবে প্রতারণার আশ্রয় নিলো। তারা বললেন, আমরা তোমাদের পরীক্ষা করে দেখলাম যে, মক্কাবাসী যদি তোমাদের সাথে যুদ্ধে রত হয়, তবে তোমরা তাদের মুকাবিলায় টিকে থাকতে পারবে, কি পারবে না। মুসলমানরা তাদের উক্তি ও অঙ্গীকার বিশ্বাস করলো না। অবশেষে মুসলমানদের দুই ব্যক্তিকে জীবিত বন্দী করতে সক্ষম হয়। অন্যরা কাফিরদের সাথে লড়াই করে শাহাদত বরণ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলায়হি রাজিউন)।

এই দু’জন বন্দী সাহাবীর নাম ছিল হযরত খুবায়ব ইব্‌ন আদী ও হযরত যায়দ ইব্‌ন দাছনা (রা)। এই দু’জনকেই তারা মক্কায় নিয়ে গেলো। কুরায়শরা গ্রেফতারকারীদেরকে যথোপযুক্ত পুরস্কার দিয়ে দু’জনকেই হারিছ ইব্‌ন আমিরের গৃহে কয়েক দিন অভুক্ত অবস্থায় আবদ্ধ করে রাখলো। একদিন হারিছের একটি ছোট্ট শিশু ছুরি নিয়ে খেলতে খেলতে হযরত খুযায়ব (রা)-এর কাছে এসে পৌঁছলো। তিনি শিশুটিকে তার উরুর উপরে বসালেন এবং ছুরিটিকে একটু দূরে সরিয়ে রাখলেন। শিশুর মা যখন দেখলো যে, শিশুটি তাদের বন্দীর নিকট পৌঁছে গেছে এবং ধারালো ছুরিও সেখানে বিদ্যমান, তখন সে জ্ঞানহারা হয়ে চিৎকার দিয়ে কান্না শুরু করলো। হযরত খুবায়ব (রা) বললেন, আমি তোমার শিশুকে কস্মিনকালেও হত্যা করবো না। তুমি নিশ্চিত থাক। এর কয়েক দিন পর হযরত যায়দ (রা)-কে সাফওয়ান ইব্‌ন উমাইয়া নিয়ে গেলেন এবং তার পিতার (যে বদরের যুদ্ধে নিহত হয়েছিল) রক্তের বদলা নেয়ার জন্য তার গোলাম নিসতাসের হাতে দিয়ে বললো, যাও, একে হরম এলাকার বাইরে নিয়ে হত্যা করবে। সে হযরত যায়দ (রা)-কে বাইরে নিয়ে গেলো। কুরায়শ ও মক্কাবাসী এই হত্যালীলা উপভোগ করার জন্য দলে দলে এসে সমবেত হলো। উপভোগকারীদের মধ্য থেকে আবূ সুফিয়ান সামনে অগ্রসর হয়ে বললো, যায়দ! এখন তুমি ক্ষুধার্ত ও পিপাসার্ত অবস্থায় নিহত হতে যাচ্ছ। তুমি কি এটা পছন্দ করবে যে, এ সময় তুমি তোমার পরিবার-পরিজনের মধ্যে আরামে থাকবে, আর আমরা তোমার পরিবর্তে মুহাম্মদ (সাঃ)-এর গর্দান মারবো (নাউযুবিল্লাহ)। হযরত যায়দ (রা) অতি ইস্পাত কঠিন ভাষায় ও বীরদর্পে জবাব দিলেন : আল্লাহর কসম! আমি এটা কখনো পছন্দ করবো না যে, আমি আমার পরিবার-পরিজনের মধ্যে থাকবো আর হযরত নবী করীম (সাঃ)-এর শরীরে একটি কাটাও বিদ্ধ হবে। আবূ সুফিয়ান বললেন, আল্লাহর কসম! আমি আজ পর্যন্ত কারো এমন কোন বন্ধু দেখিনি যেমনটি দেখলাম মুহাম্মদ (সাঃ)-এর বন্ধুকে। এরপর হযরত যায়দ (রা)-কে শহীদ করা হলো। হযরত খুবায়ব (রা)-কে নিয়েছিল হুজায়র ইব্‌ন আবী আবাব।

হযরত যায়দ (রা)-এর পর হযরত খুবায়র (রা) বধ্যভূমিতে নীত হলেন। তিনি দু’রাকআত সালাত আদায় করার অনুমতি চাইলেন এবং অনুমতি লাভ করলেন। তিনি উযূ করেন এবং দু’রাকাআত সালাত আদায় করেন। সালাতের পর তিনি মুশরিকদের বললেন : আমার সালাত অনেক দীর্ঘ করার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু তোমরা বলবে যে, আমি মৃত্যুকে ভয় করছি এবং মৃত্যুভয়ে সালাতকে বাহানা হিসাবে দীর্ঘায়িত করছি। তাই আমি দ্রুত সালাত শেষ করে ফেলেছি। মুশরিকরা হযরত খুবায়ব (রা)-কে শূলের উপর ঝুলিয়ে দিল এবং চতুর্দিক থেকে বল্লম দিয়ে তার শরীরকে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে ছিদ্র করতে থাকলো। এইভাবে ক্ষত-বিক্ষত হতে হতে এক সময় তাঁর প্রাণবায়ু নশ্বর দেহ ত্যাগ করলো। হযরত খুবায়ব (রা) যে বীরত্বের সাথে জীবন দান করলেন, তার দৃষ্টান্ত বিশ্ব ইতিহাসের কোথাও পাওয়া যাবে না।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন