hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামের ইতিহাস ১ম খণ্ড

লেখকঃ মাওলানা আকবর শাহ খান নজিববাদী

৪৩১
ইমাম হাসান (রা)-এর উপর কুফরী ফতওয়া
এই বক্তৃতা শুনে খারিজী ও মুনাফিকরা সঙ্গে সঙ্গে সমগ্র বাহিনীতে একথা প্রচার করে দিল যে, হাসান (রা) মুআবিয়ার সাথে সন্ধি করতে চান। সেই সাথে তারা তার উপর কুফরী ফতওয়া জারি করে। এ থেকে জানা যাচ্ছে যে, মুসলমানদের উপর কুফরী ফতওয়া জারি করার রীতি মুনাফিক ও সাবাঈদেরই আবিষ্কৃত। তারাই হযরত আলী (রা)-এর বিরুদ্ধে কুফরী ফতওয়া জারি করেছিলো। বিস্ময়ের ব্যাপার যে, আজ আমাদের যুগের আলিম ও ফাযিল বলে কথিত এক শ্রেণীর জুব্বাধারী মুফতী মুনাফিক ও মুসলিম নামধারী ইয়াহূদীদের ঐ অপবিত্র রীতিকে জীবিত রাখতে এবং উম্মতে মুহাম্মাদীয়ার কটিবন্ধনকে কুফরী ফতওয়ার খড়গের আঘাতে ছিন্নভিন্ন করে ফেলতে যেন সব সময় তৈরি হয়ে রয়েছে। যাহোক, ঐ কুফরী ফতওয়া ইমাম হাসানের বাহিনীতে এক মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। কেউ বলতে লাগল, ইমাম হাসান (রা) কাফির হয়ে গেছেন, আবার কেউ বলতে লাগল তিনি কাফির হননি। শেষ পর্যন্ত কুফরীর ফতওয়াদানকারীদের দলই ভারী হয়ে গেল এবং তারা তাদের বিরুদ্ধবাদীদের উপর বাড়াবাড়ি শুরু করে দিল। শেষ পর্যন্ত তাদেরই একটি বিরাট দল ইমাম হাসান (রা)-কে কাফির বলতে বলতে তাঁর তাঁবুতে ঢুকে পড়ল এবং চারদিক থেকে তার পরনের পোশাক ধরে টানাটানি শুরু করল। ফলে তার সমস্ত পোশাক ছিন্নভিন্ন হয়ে গেল। তাঁর কাঁধের উপর থেকেও চাদর টেনে নেওয়া হল এবং লুণ্ঠন করা হল তার তাঁবুর যাবতীয় সামগ্রী। এ অবস্থা দেখে তিনি সঙ্গে সঙ্গে নিজের ঘোড়ায় আরোহণ করলেন এবং তাকে সাহায্য করার জন্য রাবীআ ও হামদান গোত্রকে আহ্বান জানালেন। ঐ দুই গোত্রের লোক সঙ্গে সঙ্গে তাঁর আহ্বানে সাড়া দিল এবং ঐ দুষ্কৃতিকারীদেরকে তাঁর কাছ থেকে হটিয়ে দিতে সক্ষম হল। কিছুক্ষণ পর, বাহিনীর মধ্যে ইতিপূর্বে যে হৈ চৈ শুরু হয়েছিল তাও বন্ধ হল। সেখান থেকে তিনি মাদায়েন নগরীর দিকে রওয়ানা হন। জাররাহ ইব্‌ন কাবীসাহ্ নামীয় জনৈক খারিজী পথিমধ্যে সুযোগ বুঝে তার উপর বর্শা নিক্ষেপ করে। এতে তাঁর এক রানে আঘাত লাগে। তাঁকে একটি খাটিয়ায় তুলে মাদায়েনের ‘কাসরে আবয়াদে নিয়ে আসা হয় এবং সেখানেই তিনি অবস্থান করেন। আবদুল্লাহ ইব্‌ন হানযালা ও আবদুল্লাহ্ ইব্‌ন যুবয়ান জাররাহকে হত্যা করেন। চিকিৎসকরা ‘কাসরে আবয়াদেই তার ক্ষতের চিকিৎসা করেন এবং তিনি শীঘ্রই আরোগ্য লাভ করেন। কায়স ইব্‌ন সা‘দ যে বার হাজার সৈন্য নিয়ে অগ্রযাত্রা করেছিলেন তারা ‘আনবার’ নামক স্থানে পৌঁছলে মুআবিয়া এসে তাদের ঘেরাও করে ফেলেন এবং আবদুল্লাহ ইব্‌ন আমরকে আপোস-চুক্তির ব্যাপারে প্রাথমিক আলাপ-আলোচনার জন্য একটি বাহিনীসহ মাদায়েনে প্রেরণ করেন। অপর দিকে মাদায়েন পৌঁছার পর নিজ বাহিনীর অসদাচরণের প্রেক্ষিতে ইমাম হাসান নিজ থেকেই আপোস চুক্তি সম্পাদনের সংকল্প গ্রহণ করেছিলেন এবং দূত হিসাবে আমীরে মুআবিয়ারই এক ভাগ্নে আবদুল্লাহ ইব্‌ন হারিছ ইব্‌ন নাওফালকে সন্ধিচুক্তির একটি আবেদনসহ ইতিপূর্বেই আমীরে মুআবিয়ার কাছে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন।

আবদুল্লাহ ইব্‌ন আমের মাদায়েনের নিকট এসে পৌঁছেছেন শুনে তাঁর মুকাবিলার জন্য ইমাম হাসান (রা) তাঁর বাহিনী নিয়ে অগ্রসর হন। আবদুল্লাহ ইব্‌ন আমের এই পরিস্থিতি লক্ষ্য করে ইরাকী বাহিনীর একেবারে নিকটবর্তী হয়ে তাদেরকে সম্বোধন করে বললেন, আমি যুদ্ধ করার জন্য আসিনি। আমি হচ্ছি আমীরে মুআবিয়ার অগ্রবর্তী বাহিনীর অধিনায়ক। তিনি (মুআবিয়া) তার মূল বাহিনী নিয়ে আনবারে অবস্থান করছেন। তোমরা হাসান (রা)-এর কাছে আমার সালাম পৌঁছিয়ে দাও এবং বলো, আবদুল্লাহ আল্লাহর দোহাই দিয়ে বলছে যে, যুদ্ধের হাত রুখে রাখ, যাতে মুসলমানরা ধ্বংস থেকে রক্ষা পায়। যখন ইমাম হাসান (রা) এই কথা শুনলেন তখন তিনি মাদায়েনে ফিরে এলেন এবং আবদুল্লাহ কাছে এই মর্মে পয়গাম পাঠালেন: আমি আমীরে মুআবিয়ার সাথে সন্ধি করতে এবং খিলাফত ছেড়ে দিতে রাযী আছি, আর এই শর্তে যে, আমীরে মুআবিয়া কিতাব ও সুন্নাহর উপর কায়েম থাকবেন, পূর্ববর্তী সব মতবিরোধ ভুলে যাবেন এবং কারো জানমালের ক্ষতি করবেন না। তিনি এই মর্মে প্রতিশ্রুতি দেবেন যে, তিনি আমার পক্ষের লোকদের প্রাণের নিরাপত্তা প্রদান করবেন? সন্ধি নিশ্চিতভাবেই ভালো। আবদুল্লাহ্ ইব্‌ন আমের এই সংবাদ নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে আমীরে মুআবিয়ার কাছে ফিরে যান এবং বলেন, ইমাম হাসান (রা) কতিপয় শর্ত সাপেক্ষে খিলাফত ছেড়ে দিতে প্রস্তুত রয়েছেন। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, শর্তগুলো কি? আবদুল্লাহ্ বললেন, প্রথম শর্ত এই যে, যখন আপনি ইনতিকাল করবেন তখন হযরত হাসান (রা) খিলাফতের অধিকারী হবেন। দ্বিতীয় শর্ত এই যে, যতদিন আপনি জীবিত থাকবেন ততদিন প্রতিবছর পাঁচ লক্ষ দিরহাম করে ইমাম হাসান (রা)-কে বায়তুল মাল থেকে প্রদান করবেন। তৃতীয় শর্ত এই যে, আহওয়ায ও ফারিস এলাকার খারাজ ব্যক্তিগতভাবে ইমাম হাসান (রা) পেতে থাকবেন।

আবদুল্লাহ্ স্বয়ং ইমাম হাসান (রা)-এর পক্ষ থেকে এই তিনটি শর্ত পেশ করার পর সেই শর্তগুলোও মুআবিয়া (রা)-কে শুনিয়ে দেন, যা তিনি ব্যক্তিগতভাবে তাকে বলেছিলেন। মুআবিয়া (রা) বলেন, এই সমস্ত শর্ত আমি মঞ্জুর করব। কেননা আমি বুঝতে পারছি যে, তার নিয়্যত পবিত্র এবং তিনি মুসলমানদের মধ্যে আপোস-মীমাংসার পক্ষপাতী। এরপর মুআবিয়া (রা) একটি সাদা কাগজে স্বাক্ষর দিয়ে এবং তার উপর নিজের মোহর লাগিয়ে আবদুল্লাহ ইব্‌ন আমেরের কাছে তা হস্তান্তর করে বলেন, এই কাগজ হাসানের কাছে নিয়ে যাও এবং তাঁকে বল, “আপনি যে যে শর্ত চান এই কাগজের উপর লিপিবদ্ধ করুন, আমীর মুআবিয়া (রা) আপনার সব শর্তই পূরণ করতে প্রস্তুত আছেন।” ইমাম হুসায়ন ও আবদুল্লাহ্ ইব্‌ন জা‘ফর (রা) যখন জানতে পারলেন যে, হাসান (রা) সন্ধি স্থাপনের সংকল্প নিয়েছেন তখন তারা তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করে ঐ সংকল্প থেকে তাঁকে বিরত রাখার চেষ্টা করেন। কিন্তু হাসান (রা) তাঁদের পরামর্শ গ্রহণ করেননি। কেননা তিনি আলী (রা)-এর যুগ থেকে কূফাবাসী ও ইরাকবাসীদের অস্থিরচিত্ততা প্রত্যক্ষ করে আসছিলেন। তাছাড়া মুআবিয়া (রা)-এর রাষ্ট্র পরিচালনার দক্ষতা ও প্রখর প্রতিভার দিকটিও তাঁর সামনে ছিল। অতএব তিনি সন্ধি স্থাপনেই সুদৃঢ় থাকেন।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন