hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামের ইতিহাস ১ম খণ্ড

লেখকঃ মাওলানা আকবর শাহ খান নজিববাদী

৩৯৮
আপোস প্রচেষ্টা
আলী (রা) কা‘কা‘ ইব্‌ন আমরকে বসরায় এজন্য প্রেরণ করেন যাতে তিনি সেখানে উম্মুল মু’মিনীন আয়িশা, তালহা ও যুবায়র (রা)-এর সাথে ব্যক্তিগতভাবে আলাপ-আলোচনা করে সেখানে তাদের আগমনের কারণ সম্পর্ক অবহিত হন এবং যথাসম্ভব বুঝিয়ে আপোস মীমাংসার মাধ্যমে তাদেরকে নতুনভাবে বায়‘আতের জন্য উদ্বুদ্ধ করেন। কা‘কা‘ ইব্‌ন আমর (রা) ছিলেন সুবক্তা, বিচক্ষণ ও অত্যন্ত প্রভাবশালী ব্যক্তি। তিনি ছিলেন রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ)-এর সাহচর্য লাভে ধন্য। তিনি বসরায় পৌঁছে তাদের সাথে সাক্ষাৎ করেন। তিনি আয়িশা (রা)-এর কাছে নিবেদন করেন : কোন বস্তুটি আপনাকে এ কাজে উদ্বুদ্ধ করেছে আর আপনার লক্ষ্যই বা কি? তিনি বলেন, আমার একমাত্র লক্ষ্য হচ্ছে মুসলমানদের সংস্কার সাধন এবং কুরআনের উপর আমল করার জন্য তাদেরকে অনুপ্রেরণা দান। হযরত তালহা এবং যুবায়র (রা)-ও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তিনি তাদেরও অনুরূপ প্রশ্ন করলে তারাও ঠিক একই উত্তর দেন। একথা শুনে হযরত কা‘কা‘ ইব্‌ন আমর (রা) বলেন, আপনাদের লক্ষ্য যদি সংশোধন ও কুরআনের উপর আমল করার জন্য মুসলমানদেরকে অনুপ্রেরণা দান হয়ে থাকে, তাহলে তো এভাবে তা অর্জন করা যাবে না, যেভাবে আপনারা চাচ্ছেন। তারা বলেন, কুরআনে ‘কিসাসের’ হত্যার পরিবর্তে হত্যার নির্দেশ রয়েছে। আমরা উসমান হত্যার কিসাস নিতে চাই। কা‘কা‘ (রা) বলেন, এভাবে তো কোথাও কিসাস নেওয়া হয় না। প্রথমে ইমামত ও খিলাফত কায়েম এবং তা সুদৃঢ় করা জরুরী যাতে দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হয়। তারপর উসমান হত্যাকারীদের থেকে তো সহজেই কিসাস নেওয়া যেতে পারে। কিন্তু দেশে যখন আইন-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত নেই তখন কিসের ভিত্তিতে কিসাস গ্রহণ করা হবে? দেখুন, আপনারা এই বসরায়ই বহু লোককে উসমান-হত্যার কিসাসে ইতিমধ্যে হত্যা করেছেন, কিন্তু হারকুস ইব্‌ন যুহায়রকে ধরতে পারেন নি। যখন আপনারা তার পশ্চাদ্ধাবন করেছেন তখন ছয় হাজার লোক তার পক্ষ নিয়ে আপনাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে তৈরি হয়ে গেছে। ফলে অগ্রপশ্চাৎ বিবেচনা করে আপনারা তার পশ্চাদ্ধাবন থেকে বিরত রয়েছেন। অনুরূপভাবে হযরত আলী (রা) যখন বিশৃঙ্খলা দমন ও অধিকতর শক্তি সঞ্চয়ের উদ্দেশ্যে বাধ্য হয়ে সঙ্গে সঙ্গে ‘কিসাস’ নিতে সক্ষম হয় নি তখন আপনাদের আরো কিছুক্ষণ অপেক্ষা করা উচিত ছিল। এটা কি করে আপনাদের জন্য বৈধ হবে যে, আপনারা নিজেরাও নিয়ম-শৃঙ্খলা ভংগ করবেন। এভাবে তো শুধু বিশৃঙ্খলাই বাড়বে, মুসলমানদের মধ্যে আরো রক্তারক্তি হবে এবং এই সুযোগে উসমান (রা)-এর হত্যাকারীরাও ‘কিসাস’ থেকে নিষ্কৃতি পেয়ে যাবে।

এই সমস্ত কথা বলার পর কা‘কা‘ ইব্‌ন আমর অত্যন্ত মর্মস্পর্শী ভাষায় বলেন, হে মান্যবর ব্যক্তিবৃন্দ! এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় সংস্কারকর্ম হচ্ছে বিষয়টির আপোস রফা করা যাতে মুসলমানরা শান্তি ও নিরাপত্তা লাভ করতে পারে। আপনারা হচ্ছেন, শান্তিদূত হিদায়াতের বাহক। আপনারা আল্লাহর দিকে চেয়ে আমাদেরকে বিপদের মধ্যে ফেলবেন না। অন্যথায় আপনারাও বিপদে পতিত হবেন এবং এতে উম্মতে মুহাম্মাদীও ভীষণ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

কাকার এই কথায় উম্মুল মু’মিনীন আয়িশা (রা), তালহা ও যুবায়র (রা) অত্যন্ত প্রভাবান্বিত হন। তারা বলেন, আপনার বক্তব্য অনুযায়ী যদি আলীর চিন্তাধারা এই হয় এবং তিনি যদি প্রকৃতই উসমানের হত্যাকারীদের থেকে কিসাস গ্রহণের ইচ্ছা রাখেন তাহলে তো যুদ্ধ ও বিরোধের কোন কারণই বাকী থাকে না। আমরা তো এতদিন যাবত মনে করে আসছিলাম, উসমানের হত্যাকারীদের প্রতি তাঁর সহানুভূতি রয়েছে। তাই উসমানের হত্যাকারীরা তাঁর বাহিনীতে রয়েছে এবং তার প্রত্যেকটি গুরুত্বপূর্ণ কাজেই হস্তক্ষেপ করছে। কা‘কা‘ বলেন, আমি যা কিছু বলেছি আলী (রা)-ও তাই চিন্তা করছেন। তাঁরা বলেন, তাহলে তো তার সাথে আমাদের কোন বিরোধ নেই। এই কথোপকথনের পর কা‘কা‘ (রা) বসরা থেকে বিদায় নিয়ে আলী (রা)-এর বাহিনীর উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। বসরার একদল প্রভাবশালী ব্যক্তিও তার সফর সঙ্গী হন। তাদের উদ্দেশ্য ছিল হযরত আলী এবং কূফাবাসীরা কি চিন্তা করছেন এবং তারা প্রকৃতই আপোস মীমাংসায় রাযী কিনা সে সম্পর্কে সরাসরি জ্ঞাত হওয়া। কেননা এই মর্মে একটি গুজব ছড়িয়ে পড়েছিল যে, হযরত আলীর সংকল্প হচ্ছে, বসরা জয় করে সেখানকার যুবকদের হত্যা করা এবং শিশু ও স্ত্রীলোকদের দাসদাসীতে পরিণত করা। আবদুল্লাহ্ ইব্‌ন সাবার লোকেরা যারা হযরত আলীর বাহিনীতে ঢুকে পড়েছিল তারাই বসরায় এই গুজব রটনা করেছেন। কা‘কা‘ ইব্‌ন আমর (রা) হযরত আলী (রা)-এর দরবারে হাযির হয়ে যাবতীয় পরিস্থিতি সম্পর্কে তাকে অবহিত করেন এবং তিনি অত্যন্ত সন্তুষ্ট হন। এরপর বসরার প্রতিনিধিদল, যারা কা‘কা‘র সাথে এসেছিলেন কূফাবাসীদের সাথে, যারা আলী (রা)-এর বাহিনীতে যোগদান করেছিলেন, অবাধে মিলিত হয়ে তাদের মতামত জানতে চাইলে তারা সকলেই আপোস-নিষ্পত্তিকে অগ্রাধিকার দেন। এরপর হযরত আলী (রা)-ও ঐ প্রতিনিধিদলকে নিজের কাছে ডেকে তাদেরকে সর্বতোভাবে সান্তনা প্রদান করেন। ফলে তারা অত্যন্ত সন্তুষ্ট চিত্তে সেখান থেকে বসরায় ফিরে যায় এবং আপোস-নিষ্পত্তির প্রস্তাব যে সঠিক সে সম্পর্কে সকলকে অবহিত করে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন