hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামের ইতিহাস ১ম খণ্ড

লেখকঃ মাওলানা আকবর শাহ খান নজিববাদী

৩৪৭
কাবরিস (সাইপ্রাস) ও রোডস বিজয়
হযরত আবদুল্লাহ ইব্‌ন সা‘দ (রা) কার্থজানাহ (কার্থেজ) এলাকা তথা আফ্রিকা থেকে প্রত্যাবর্তন করেন এবং ঐ বছর (হিজরী ২৭ সনে) তার স্থলে আবদুল্লাহ্ ইব্‌ন নাফি (রা) মিসরের গভর্নর নিযুক্ত হন। তখন থেকে কনস্টানটাইন আবার যুদ্ধের প্রস্তুতি শুরু করেন। হিজরী ২৮ সনে তিনি একটি নৌবাহিনী আফ্রিকার দিকে প্রেরণ করেন। ঐ বাহিনী আফ্রিকার সমুদ্র উপকূলে অবতরণ করে আফ্রিকানদের কাছে ঐ রাজস্ব দাবী করে যা তারা কায়সারকে প্রদান করত। আফ্রিকানরা রাজস্ব প্রদানে অস্বীকৃতি জানায়। তারা বলে, যখন মুসলমানগণ আমাদের দেশ আক্রমণ করে তখন তো কায়সার আমাদেরকে কোন সাহায্য করতে পারেননি। কাজেই এখন তার অধীনতা স্বীকার করা এবং তাকে কর দেওয়া আমাদের জন্য অপরিহার্য নয়। শেষ পর্যন্ত এ বিষয়কে কেন্দ্র করে আফ্রিকান ও রোমান বাহিনীর মধ্যে লড়াই বাঁধে এবং আফ্রিকানরা রোমানদের হাতে পরাজিত হয়।

তারপর রোমানরা ইসকান্দারিয়ার দিকে অগ্রসর হয়। এখানে হযরত আবদুল্লাহ ইব্‌ন নাফি‘ (রা) রোমানদের প্রতিরোধ এবং তাদের সাথে মুখোমুখি যুদ্ধের প্রস্তুতি নেন। রোমান নেতা যখন আফ্রিকা থেকে ইসকান্দারিয়ার দিকে আসে, তখন ‘কায়সারে রূম’ স্বয়ং ছয়শ’ যুদ্ধ জাহাজ নিয়ে ইসকান্দারিয়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। মোটকথা, উভয় দিক থেকেই রোমান সৈন্যরা ইসকান্দারিয়া দখলের পায়তারা চালায়। ইসলামী বাহিনী এক সাথে উভয় সেনাদলের মুকাবিলা করে। ঘোরতর যুদ্ধ আরম্ভ হয়। শেষ পর্যন্ত কনস্টানটাইন ও তার বাহিনী ইসকান্দারিয়া থেকে পলায়ন করে সাইপ্রাসের দিকে চলে যায়। সাইপ্রাসকে তিনি তার নৌবাহিনীর দফতর এবং যুদ্ধ সরঞ্জাম তৈরীর কেন্দ্রস্থলে পরিণত করেছিলেন। আমরা এ ধারা বর্ণনাটি এখানে স্থগিত রেখে এ সুযোগে হযরত মুআবিয়া (রা) সম্পর্কে কিঞ্চিৎ আলোচনা করা অত্যন্ত জরুরী মনে করছি, যাতে মুসলমানগণের বিজয় অভিযানসমূহের বর্ণনার মধ্যে একটি সামঞ্জস্য বিধান করা সম্ভব হয়।

হযরত ফারূকে আযম (রা)-এর ওফাতকালে হযরত আমীর মুআবিয়া (রা) দামিশক ও জর্দানের গভর্নর ছিলেন। আর হিমস ও কিন্নাসরীনের শাসনকর্তা ছিলেন উমায়র ইব্‌ন সাঈদ আনসারী (রা)। ফারূকে আযম (রা)-এর ওফাতের পর হযরত উমায়র ইব্‌ন সাঈদ (রা) পদত্যাগ পত্র পেশ করলে হযরত উসমান গনী (রা) হিম্‌স ও কিন্নাসরীন এলাকাকেও হযরত আমীরে মুআবিয়া (রা)-এর শাসনাধীন এলাকার অন্তর্ভুক্ত করেন। তারপর যখন ফিলিস্তীনের শাসক হযরত আবদুর রহমান ইব্‌ন আলকামা (রা) ইন্তিকাল করেন, তখন হযরত উসমান গনী (রা) ফিলিস্তীন রাজ্যকেও হযরত আমীর মুআবিয়ার শাসনাধীনে দিয়ে দেন। এভাবে ধীরে ধীরে হিজরী ২৭ সনে আমীরে মুআবিয়া (রা) সিরিয়ার সমগ্র জেলাসমূহের একক শাসকে পরিণত হন। হযরত আমীরে মুআবিয়া ফারূকী খিলাফতের শেষ দিকে হযরত ফারূকে আযম (রা)-এর কাছে সিরিয়া উপকূল থেকে আরম্ভ করে সাইপ্রাস দ্বীপ পর্যন্ত সমগ্র এলাকাব্যাপী আক্রমণ পরিচালনার অনুমতি প্রার্থনা করেছিলেন। কিন্তু হযরত ফারূকে আযম (রা) সেই আক্রমণের অনুমোদন প্রদানের বিষয়টি গভীরভাবে বিচার বিবেচনা করছিলেন। শেষ পর্যন্ত অনুমোদন প্রদানের পূর্বেই তিনি শাহাদত বরণ করেন। তারপর হযরত আমীরে মুআবিয়া (রা) পরবর্তী খলীফা হযরত উসমান গনী (রা)-এর কাছে এ ব্যাপারে অনুমোদন প্রার্থনা করলে তিনি কয়েকটি শর্তের অধীনে অনুমোদন প্রদান করেন। এর অন্যতম শর্ত এ ছিল যে, ঐ নৌযুদ্ধে যার ইচ্ছা সে অংশ গ্রহণ করবে, এজন্য কাউকে বাধ্য করা যাবে না।

হযরত মুআবিয়া (রা)-এর আন্দোলন ও প্রচেষ্টার ফলে সাইপ্রাস আক্রমণের জন্য একদল সেনা তৈরী হয়ে গেল। তাদের মধ্যে হযরত আবূ যর গিফারী (রা), আবূ দারদা (রা), হযরত শাদ্দাদ ইব্‌ন আওফ (রা), হযরত উবাদা ইব্‌ন সামিত (রা) এবং তাঁর স্ত্রী উম্মে হারাম বিন্‌ত মিলহান (রা) ছিলেন অন্যতম। এ মুজাহিদ দলের নেতৃত্ব হযরত আবদুল্লাহ ইব্‌ন কায়স (রা)-কে প্রদান করা হয়। মুজাহিদরা নৌকাযোগে সাইপ্রাসের দিকে রওয়ানা হন। রোম সম্রাট কনস্টানটাইন ইসকান্দারিয়া পরাজিত হয়ে সাইপ্রাসে চলে এসেছিলেন এবং তাকে পশ্চাদ্ধাবন করে মিসরের ইসলামী বাহিনীও নৌকাযোগে সেখানে এসে পৌঁছেছিল। ঠিক সেই সময় সিরিয়া থেকে প্রেরিত ইসলামী বাহিনীও সাইপ্রাস উপকূলে অবতরণ করে। উম্মে হারাম (রা) যখন নৌকা থেকে তীরে নামেন, তখন তার ঘোড়া হঠাৎ ভীত চকিত হয়ে পালাতে শুরু করে। ফলে তিনি ঘোড়া থেকে পতিত হয়ে ঘটনাস্থলেই প্রাণ ত্যাগ করেন। হযরত রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) একদা তার সম্পর্কে এ ভবিষ্যদ্বাণীই করেছিলেন, যা অক্ষরে অক্ষরে সত্য প্রমাণিত হলো। কনস্টানটাইন সাইপ্রাসেও মুসলমানগণের মুকাবিলায় দাঁড়াতে পারেন নি। তাই অনেক ক্ষয়ক্ষতি স্বীকার করে কনস্টানটিনোপলে গিয়ে পৌঁছান এবং সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। অপর বর্ণনা মতে, সাইপ্রাসবাসীরা যখন দেখল যে, কনস্টানটাইন মুসলমানদের কাছে বার বার পরাজিত হয়ে চলেছে, তখন একদিন সুযোগ বুঝে তারা তাকে স্নানরত অবস্থায় হাম্মামের (বাথরূমের) মধ্যে হত্যা করে। যা হোক, অতি সহজেই সাইপ্রাস মুসলমানগণের দখলে চলে আসে। তারপর হযরত মুআবিয়া (রা)-ও একটি বাহিনী নিয়ে সাইপ্রাসে গিয়ে পৌঁছেন। সেখানকার শাসনব্যবস্থা সুসংহত করে তিনি রোড্‌স দ্বীপের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। রোড্‌সবাসীরা অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথে মুসলমানগণের মুখোমুখি হয়। কিন্তু বেশ কয়েকটি রক্তাক্ত সংঘর্ষের পর ইসলামী বাহিনী রোডস দ্বীপের উপর নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়। ঐ দ্বীপে তাম্র নির্মিত একটি মূর্তি ছিল। মূর্তিটির এক পা ছিল দ্বীপের উপকূলে এবং অপর পা ছিল উপকূলের নিকটবর্তী দ্বীপে। তার দু’পায়ের মধ্যবর্তী ফাঁক এতই চওড়া ছিল যে, তার নীচ দিয়ে অনায়াসে সামুদ্রিক জাহাজ আসা-যাওয়া করতে পারত। হযরত আমীরে মুআবিয়া (রা) ঐ মূর্তিটি ভেঙ্গে তার তাম্র খণ্ডসমূহ মুসলিম বাহিনীর সাথে ইসকান্দারিয়ায় পাঠিয়ে দেন। জনৈক ইয়াহূদী ব্যবসায়ী ঐ খণ্ডগুলো মুসলমানদের কাছ থেকে ক্রয় করছিল। সাইপ্রাস ও রোডস জয়ের ফলে হযরত আমীরে মুআবিয়া (রা)-এর খ্যাতি ও জনপ্রিয়তা অনেক বৃদ্ধি পায়। কেননা, এ নৌ বিজয়ের ফলে মুসলমানদের সামনে কনস্টাটিনোপল ও অন্যান্য রাজ্য জয়ের যেন একটি সিংহদ্বার খুলে গিয়েছিল। হিজরী ২৮ সনের শেষভাগে অথবা হিজরী ২৯ প্রথম ভাগে এ ঘটনাগুলো ঘটে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন