hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামের ইতিহাস ১ম খণ্ড

লেখকঃ মাওলানা আকবর শাহ খান নজিববাদী

১৪২
উহুদের যুদ্ধ
(হিজরী তৃতীয় বর্ষ)

বদর যুদ্ধের পর একদিকে তো স্বয়ং মক্কাবাসীদের অন্তরে প্রতিশোধ বহ্নি দাউ দাউ করে জ্বলছিলো, অপর দিকে মদীনার ইয়াহূদী ও মুনাফিকরা তাদেরকে উত্তেজিত করতে বিন্দুমাত্র ত্রুটি করেনি। অপরদিকে আবূ সুফিয়ানের পত্নী হিন্দাও তাকে ভর্ৎসনা করে উত্তেজিত করে চলেছিল,-যার পিতা ও ভাই বদর যুদ্ধে মুসলমানদের হাতে নিহত হয়েছিল। মক্কার সমস্ত বড় বড় সরদার নিহত হওয়ার পর আবূ সুফিয়ান তখন মক্কার প্রধান সরদার। সে যুদ্ধের প্রস্তুতি গ্রহণে লিপ্ত হলো। শামের যে বাণিজ্য কাফেলা আবূ সুফিয়ানের নেতৃত্বে নিরাপদে মক্কায় পৌঁছেছিল তাতে পাঁচ হাজার মিছকাল স্বর্ণ ও এক হাজার উট মুনাফা স্বরূপ পাওয়া গিয়াছিল। এ মুনাফা মালিকদের মধ্যে বন্টন করা হলো না এবং এর পুরোটাই যুদ্ধ প্রস্তুতিতে ব্যয়িত হলো। আরবের বিভিন্ন গোত্রে কবিদেরকে প্রেরণ করে তাদেরকে কুরায়শদের সাহায্যার্থে এগিয়ে আসতে উদ্বুদ্ধ করা হলো। এর চমৎকার ফলও পাওয়া গেলো। গোটা বনী কিনানা এবং তিহামাবাসী কুরায়শদের সাথে মিলিত হলো। কুরায়শদের সমস্ত মিত্র গোত্র তাদের সাহায্যার্থে এগিয়ে এলো। মক্কার হাবশী গোলামদেরকেও সৈন্যবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করা হলো। বীর গাথা গায়ক পুরুষ এবং বীরত্বের জন্যে উদ্বুদ্ধকারিণী নারীদেরকেও সাথে নেয়া হলো। মোটকথা, পূর্ণ একটি বছর মক্কাবাসীরা যুদ্ধ প্রস্তুতিতে ব্যয় করলো। এ প্রস্তুতি গ্রহণে মদীনায় ইয়াহূদী ও মুনাফিকরা গোপনে গোপনে সংবাদ সরবরাহ করে এবং পরামর্শ দিয়ে দিয়ে কুরায়শদের সর্বাধিক সাহায্য-সহযোগিতা প্রদান করে।

মোটকথা তিন হাজার দুর্ধর্ষ সৈন্যের একটি বাহিনী শাওয়াল মাসের প্রথম দিকে রওয়ানা হয়ে পড়লো। বদর যুদ্ধে নিহত সরদারদের জায়া-কন্যারাও এ উদ্দেশ্যে সাথে রওয়ানা হলো যে, তাদের প্রিয়জনদের হত্যাকারীদের নিহত হওয়ার দৃশ্য স্বচক্ষে অবলোকন করবে। কবিরাও সাথে চললো। তারা তাদের কবিতাদি শুনিয়ে গোটা রাস্তায় সৈন্যদেরকে যুদ্ধের জন্য প্রেরণা দান করছিলো। কুরায়শদের অভিজাত মহিলাদের মধ্যে আবূ সুফিয়ানের স্ত্রী হিন্দা বিন্‌ত উত্‌বা মহিলাদের সেনাপতিরূপে যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করে, যেমনটি আবূ সুফিয়ান ছিল পুরুষদের সেনাপতি। জুবায়র ইব্‌ন মুতঈম-এর ওয়াহ্‌শী নামক একটি হাবশী ক্রীতদাস ছিলো। ছোট বল্লম চালনায় সে ছিল অত্যন্ত দক্ষ। তাকেও সাথে নেয়া হলো। তার লক্ষ্য বড় একটা ভ্রষ্ট হতো না। জুবায়র ইব্‌ন মুতঈম তাকে বলে যে, তুই যদি হামযাকে হত্যা করতে পারিস, তা হলে তোকে আমি মুক্ত করে দেবো। আবূ সুফিয়ান-পত্নী ও উতবা-তনয়া হিন্দা বললো, তুই যদি আমার পিতার হন্তা হামযাকে হত্যা করতে পারিস তাহলে তোকে আমার সমস্ত গহনা খুলে দিয়ে দেবো। কোন কোন ইতিহাসে এ বাহিনীর সৈন্যসংখ্যা পাঁচ হাজার ছিলো বলে উল্লেখ আছে। কিন্তু বিশুদ্ধ বর্ণনা হচ্ছে এটা যে, বাহিনী তিন হাজার যোদ্ধা নিয়েই গঠিত হয়েছিলো। ললনার এবং যুদ্ধ শিক্ষার্থীদের সংখ্যা তার অতিরিক্ত হয়ে থাকবে।

কাফির বাহিনী মক্কা থেকে বেরিয়ে মদীনার উপকণ্ঠে এসে উপনীত হলো। হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এ সংবাদ পেয়েই সাহাবায়ে কিরামকে নিয়ে পরামর্শ সভায় বসলেন। মুসলমানদের মধ্যে গণ্য বলে পরিচিত আবদুল্লাহ ইব্‌ন উবায়্য মুনাফিকও সে মজলিসে উপস্থিত ছিলো। রাসূল আকরাম (সাঃ)-এর অভিমত ছিল এই যে, আমরা মদীনার শহরাভ্যন্তরে অবস্থান করেই আক্রমণ প্রতিরোধ করবো। তাঁর এ অভিমতের একটি কারণ এও ছিল যে তিনি স্বপ্নে দেখেছিলেন, তলোয়ারের কিছুটা ধার কমে গিয়েছে। তাই তিনি (সাঃ) এ যুদ্ধে মুসলমানদের কিছুটা ক্ষতির আশংকা করছিলেন। তারপর তিনি দেখেছিলেন যে, তিনি তাঁর পবিত্র হাত তার বর্মের মধ্যে রাখলেন। বর্মের ব্যাখ্যা তিনি মদীনা শহর বলে স্থির করেন। আবদুল্লাহ্ ইব্‌ন উবায়্যরও অভিমত ছিল এই যে, মদীনার অভ্যন্তরে থেকেই প্রতিরোধ করতে হবে। সম্ভবত নিজের বিশেষ কোন স্বার্থে সে এ অভিমত পোষণ করতো। কিন্তু অধিকাংশ সাহাবী শত্রুরা যেন মুসলমানদের মধ্যে দুর্বলতা দেখা দিয়েছে বলে সন্দেহ না করে এজন্যে শহরের বাইরে গিয়ে শত্রুদের মুকাবিলা করার পক্ষপাতী ছিলেন। প্রবীণ সাহাবায়ে কিরামের অধিকাংশই মদীনার শহরাভ্যন্তর থেকে আক্রমণ প্রতিরোধের পক্ষপাতী ছিলেন। কিন্তু যুবকদের তা মোটেই মনপূত ছিলো না। এটা হচ্ছে ১৪ই শাওয়াল শুক্রবারের কথা। এ পরামর্শ অনুষ্ঠানের পর তিনি জুমুআর নামায আদায় করেন। নামায পড়ে তিনি ঘরে চলে যান এবং সেখান থেকেই বর্ম পরিহিত অবস্থায় যুদ্ধাস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বেরিয়ে আসেন। তারপর যুবক সাহাবায়ে কিরামের ভাবনা হলো, আমরা নবী করীম (সাঃ)-এর মতের বিরুদ্ধাচরণ করায় তার অবাধ্য বলে না গণ্য হয়ে যাই। তখন তারা আরয করলেন : আপনি যদি মদীনার অভ্যন্তর থেকে আক্রমণ প্রতিরোধ করাই সমীচীন মনে করেন তবে তাই করুন, এতে আমাদের পক্ষ থেকে কোনই আপত্তি নেই। কিন্তু তিনি সংখ্যাগরিষ্ঠের মত এবং পরামর্শ সভার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কিছু করাটা এজন্যে সমীচীন বোধ করেন নি যে, এ মর্মে তিনি ওয়াহীযোগে আল্লাহ্‌র পক্ষ থেকে নির্দেশপ্রাপ্ত হননি। বদর যুদ্ধে যারা অংশ গ্রহণ করতে পারেননি তাদের মনরক্ষাও এর একটা উদ্দেশ্য ছিলো। কেননা, তারা তাদের বীরত্ব প্রদর্শনের একটা সুযোগ লাভের জন্যে উন্মুক্ত ছিলেন।

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) জুমুআর নামাযের অব্যবহিত পরেই সদলবলে মদীনা থেকে বেরিয়ে পড়লেন। মদীনায় তার অনুপস্থিতিতে নামাযের ইমামতির ও মদীনার দেখাশোনা করার জন্য আবদুল্লাহ্ ইব্‌ন উম্মে মাকতূম সাহাবীকে রেখে গেলেন। এক হাজার লোক হযরত নবী করীম (সাঃ)-এর সাথে মদীনা থেকে রওয়ানা হলেন।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন