hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামের ইতিহাস ১ম খণ্ড

লেখকঃ মাওলানা আকবর শাহ খান নজিববাদী

৩০১
বুয়াইবের পরাজয়
মাহরান হত্যা এবং দুর্ধর্ষ ইরানী বাহিনীর বিপর্যস্ত হওয়ার সংবাদ শুনে শুধু ইরানী রাজদরবার নয় বরং সমগ্র ইরান সাম্রাজ্য প্রকম্পিত হয়ে উঠে। এক লক্ষ ইরানী এবং মাত্র একশ’ আরব নিহত হয়েছে এ সংবাদ শুনে ইরানী মাত্রই হতভম্ব হয়ে পড়ে। মোটকথা, আরবদের বীরত্ব ও দুঃসাহসিকতা ইরানীদের অন্তরে দারুণ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। ঐ সময় সাম্রাজ্যের পরিচালনার ভার রুস্তম ইব্‌ন ফাররূখ যাদের হাতে ন্যস্ত থাকলেও, ‘নামকে ওয়াস্তে ইরানের রাজসিংহাসনে অধিষ্ঠিত ছিলেন সেখানকার রাজপরিবারেরই জনৈক মহিলা। এ শোচনীয় পরাজয় ও বিরাট ক্ষয়ক্ষতির সংবাদ শুনে ইরানীরা বলাবলি করতে শুরু করল যে, মহিলার রাজত্বে সেনাবাহিনীর জয়লাভ করা খুবই কঠিন। কাজেই দেশের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ ও সভাসদবৃন্দ ইয়ায্‌দেজিরদ নামক শাহী বংশের জনৈক যুবককে খুঁজে বের করে উক্ত মহিলার স্থলে তাকেই সিংহাসনে অধিষ্ঠিত করেন। রাজদরবারে রুস্তম ও ফিরূয নামক দু’ব্যক্তির প্রভাব ছিল অত্যন্ত বেশী। তবে তারা ছিল পরস্পর বিরুদ্ধাভাবাপন্ন এবং একে অন্যের কট্টর প্রতিদ্বন্দ্বী। তাদের মধ্যে একটি সমঝোতার ভাব গড়ে তোলা হলো। সিংহাসনে আরোহণকালে ইয়ায্‌দেজিরদের বয়স ছিল একুশ বছর। ইয়ায্‌দেজিরদ সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হওয়ার সাথে সাথে নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ ও সভাসদবৃন্দ নিজেদের মধ্যকার শত্রুতা ও বিরোধিতার কথা ভুলে গিয়ে দেশ তথা সাম্রাজ্য রক্ষার প্রতি মনোনিবেশ করেন। ইরানী রাজদরবারের অব্যবস্থা ও বিশৃঙ্খলার কারণে যে সমস্ত প্রাদেশিক শাসনকর্তা ইতিমধ্যে নৈরাজ্যের শিকারে পরিণত হয়েছিলেন তারা আবার আশায় উদ্দীপ্ত হয়ে উঠলেন। মোটকথা, ইরান সাম্রাজ্য আরবদের বিরুদ্ধে বেশ আলোড়ন দেখা দিল। ইতিমধ্যে যে সমস্ত প্রদেশ ও শহর মুসলমানগণের অধিকারে চলে গিয়েছিল সেগুলোতে বিদ্রোহের আগুন জ্বলে উঠলো। ইরানী সেনানিবাসসমূহ সেনাবাহিনীতে ভরে উঠলো। দুর্গসমূহ সুদৃঢ় করা হলো। ইরানীদের প্রশ্রয় পেয়ে যে সমস্ত এলাকা ইতিমধ্যে মুসলমানগণের দখলে চলে গিয়েছিল সেখানকার অধিবাসীরাও মুসলমানগণের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করল।

ইরানীদের বিরুদ্ধে স্বয়ং ফারূকে আযম (রা)-এর সরাসরি যুদ্ধে অংশ গ্রহণের সংকল্প

যুলকাদা মাসে হযরত ফারূকে আযম (রা) উপরোক্ত পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত হন। তিনি তক্ষুনি হযরত মুছান্না ইব্‌ন হারিছা (রা)-এর নামে এ মর্মে এক নির্দেশ পাঠান : রাবীআ ও মুদার গোত্র, যারা ইরাক ও মদীনা শরীফের মধ্যস্থলে বসবাস করে তাদেরকে তোমার কাছে সোজাসুজি ডেকে পাঠাও এবং তাদের মাধ্যমে তোমার বাহিনীকে শক্তিশালী করে তোল। আর যে সমস্ত এলাকায় কিছু গণ্ডগোল দেখা দিয়েছে সেখান থেকে আরব সীমান্তের দিকে পিছিয়ে এসো। এর সাথে তিনি সকল সরকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারীর নামেও এ মর্মে নির্দেশ পাঠান : ‘প্রত্যেক এলাকা থেকে যোদ্ধা লোক বাছাই করে মহান আল্লাহর পথে জিহাদের জন্য অবিলম্বে পাঠাবার ব্যবস্থা কর। এ সমস্ত নির্দেশ পাঠানোর পর তিনি হজ্জে বায়তুল্লাহ শরীফের উদ্দেশ্যে মদীনা শরীফ থেকে মক্কার দিকে রওয়ানা হন। হজ্জ সমাপনের পর তিনি যখন মদীনা শরীফে ফিরে আসেন, তখন দেশের চতুর্দিক থেকে দলে দলে লোক মদীনায় আসতে শুরু করে। মদীনা শরীফের মাঠ-প্রান্তর লোকে লোকারণ্য হয়ে উঠে। হযরত ফারূকে আযম (রা) হযরত তালহাকে অগ্রবর্তী বাহিনীর, হযরত যুবায়র ইব্‌ন আওয়ামকে ডান পাশের বাহিনীর এবং হযরত আবদুর রহমান ইব্‌ন আউফ (রা)-কে বাম পাশের বাহিনীর নেতা মনোনীত করেন এবং নিজে প্রধান সেনাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করে সরাসরি যুদ্ধে অংশ গ্রহণের সংকল্প নেন। তিনি হযরত আলী (রা)-কে ডেকে পাঠিয়ে মদীনায় তার স্থলাভিষিক্ত করেন। তার সেনাবাহিনী নিয়ে মদীনা মুনাওয়ারা থেকে রওয়ানা হয়ে চাশমে যারায়ে এসে অবস্থান গ্রহণ করেন। সমগ্র বাহিনীর মধ্যে অত্যন্ত উৎসাহ-উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়। কেননা, খোদ খলীফাই যে হচ্ছেন মুসলিম বাহিনীর প্রধান সেনাপতি। কিন্তু উসমান ইব্‌ন আফফান (রা) হযরত ফারূকে আযম (রা)-এর খিদমতে হাযির হয়ে নিবেদন করেন : স্বয়ং আপনার ইরানে গমন আমার কাছে সমীচীন মনে হয় না। তখন ফারূকে আযম (রা) বাহিনীর সকল সেনাপতি এবং সাধারণ যোদ্ধার এবং বিরাট বাহিনীর সভায় সকলের কাছে এ ব্যাপারে পরামর্শ চান। দেখা যায়, সংখ্যাগরিষ্ঠ লোক খলীফারই অনুরূপ মত পোষণ করে। অর্থাৎ মুজাহিদগণ প্রধান সেনাপতিরূপে খোদ খলীফার ইরান গমনকে সমীচীন মনে করেন। কিন্তু হযরত আবদুর রহমান ইব্‌ন আউফ (রা) বললেন, আমি এ মতের বিরোধিতা করি। কেননা, খোদ খলীফার মদীনা তায়্যিবাহ ছেড়ে যাওয়াটা নিরাপদ নয়। কারণ যুদ্ধক্ষেত্রে কোন সেনাপতি পরাজিত হলে খলীফা অতি সহজেই তা তদারক করতে পারেন। কিন্তু মহান আল্লাহ না করুন, যদি যুদ্ধে খোদ খলীফার একটা কিছু হয়ে যায় তখন মুসলমানগণের শাসনকার্য পরিচালনা কঠিন হয়ে পড়বে। একথা শুনে হযরত ফারূকে আযম (রা) হযরত আলী (রা)-কেও মদীনা তাইয়িবা থেকে ডেকে পাঠান এবং নেতৃস্থানীয় সকল সাহাবায়ে কিরামের সাথেও এ সম্পর্কে সলা-পরামর্শ করেন। হযরত আলী (রা) এবং সকল গণ্যমান্য সাহাবায়ে কিরাম হযরত আবদুর রহমান ইব্‌ন আউফ (রা)-এর অভিমতকেই গ্রহণ করেন। তখন ফারূকে আযম (রা) পুনরায় সেনাবাহিনীকে সম্বোধন করে বলেন, “আমি তোমাদের সাথে ইরাকে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিলাম, কিন্তু গণ্যমান্য সাহাবায়ে কিরাম মাত্রই আমার এ উদ্যোগকে অপছন্দ করেন। কাজেই আমি অনন্যোপায়। এবার অন্য কোন ব্যক্তি সেনাপতি হয়ে তোমাদের সাথে যাবেন।” এবার সাহাবায়ে কিরামের বৈঠকে এ বিষয়টি উত্থাপন করা হয় যে, এখন কাকে সেনাপতি করে ইরাকে পাঠানো হবে। হযরত আলী (রা) সে দায়িত্ব গ্রহণ করতে অস্বীকার করেন। হযরত আবূ উবায়দা এবং হযরত খালিদ (রা) তখন সিরিয়ায় যুদ্ধরত ছিলেন।

এ আলাপ-আলোচনা চলাকালে হযরত আবদুর রহমান ইব্‌ন আউফ (রা) বলেন, “আমি আপনাদের কাছে এমন এক ব্যক্তির নাম বলছি, যার চাইতে শ্রেষ্ঠ কোন ব্যক্তির কথা কেউ বলতে পারবে বলে আমি মনে করি না।” তিনি হযরত সা‘দ ইব্‌ন আবূ ওয়াক্কাস (রা)-এর নাম উল্লেখ করেন। উপস্থিত সকলেই তাঁর প্রস্তাব সমর্থন করেন। হযরত উমর (রা)-ও এ কথায় সায় দেন। সা‘দ ইব্‌ন আবূ ওয়াক্কাস (রা) ছিলেন হযরত রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর মামা এবং অতি উচ্চমর্যাদা সম্পন্ন একজন সাহাবী। ঐ সময়ে হযরত সা‘দ হাওয়াযিন গোত্রে সাদকা আদায়ের কাজে নিয়োজিত ছিলেন। তক্ষুণি তাঁর কাছে পত্র লিখে অবিলম্বে তাঁকে মদীনায় আসার নির্দেশ দেওয়া হয়। তিনি কয়েক দিন পর মদীনা শরীফে এসে হযরত ফারূকে আযম (রা)-এর খিদমতে হাযির হন। সেনাবাহিনী তখন যারার নামক স্থানে অবস্থান করছিল। হযরত ফারূকে আযম (রা) হযরত সা‘দ ইব্‌ন আবূ ওয়াক্কাস (রা)-কে সেনাপতি মনোনীত করেন এবং প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়ে তাঁকে ইরাকে প্রেরণ করেন। রওয়ানা হওয়ার পূর্ব মুহূর্তে তাঁকে বার বার স্মরণ করিয়ে দেন যেন তিনি সেখানে পৌঁছে সেখানকার যাবতীয় ঘটনা সম্পর্কে তাঁকে (ফারূকে আযমকে) অবহিত রাখেন। সা‘দ ইব্‌ন আবূ ওয়াক্কাস (রা) চার হাজার সৈন্য নিয়ে রওয়ানা হন। তিনি আঠারো মনযিল পথ অতিক্রম করে ছা‘লাবাহ নামক স্থানে অবতরণ করেন। হযরত সা‘দ (রা) রওয়ানা হওয়ার পর পরই হযরত ফারূকে আযম (রা) দু’হাজার ইয়ামানী ও দু’হাজার নজদী মুজাহিদের এক বাহিনী তার সাহায্যে প্রেরণ করেন। তারা অবিলম্বে তার সাথে গিয়ে মিলিত হন। মুছান্না ইব্‌ন হারিছা (রা) আট হাজার সৈন্যের এক বাহিনী নিয়ে ‘যীকার’ নামক স্থানে হযরত সা‘দ ইব্‌ন আবূ ওয়াক্কাস (রা)-এর আগমন প্রতীক্ষায় ছিলেন। তার লক্ষ্য ছিল, সম্মিলিত বাহিনী নিয়ে ফুরাতের দিকে অগ্রসর হওয়া। হযরত মুছান্না ইব্‌ন হারিছা (রা) জাস্‌রের ঘটনায় (পুলের যুদ্ধে) আহত হয়েছিলেন। তাঁর ক্ষতস্থানগুলোর অবস্থা দিনের পর দিন শোচনীয় আকার ধারণ করতে থাকে। শেষ পর্যন্ত হযরত সা‘দ ইব্‌ন আবূ ওয়াক্কাস (রা) যখন ছা‘লাবাহ্ নামক স্থানে পৌঁছেন তখন এ দুঃসংবাদ আসে যে, হযরত মুছান্না ইব্‌ন হারিছা (রা) আর ইহজগতে নেই।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন