hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামের ইতিহাস ১ম খণ্ড

লেখকঃ মাওলানা আকবর শাহ খান নজিববাদী

২৮১
সিদ্দীকে আকবর (রা)-এর শেষ ভাষণ
যখন এই ইচ্ছাপত্র (Will) লিপিবদ্ধ হলো, তখন হযরত আবূ বকর সিদ্দীক (রা) সেটি জনগণকে পাঠ করে শোনাতে বললেন। তারপর তিনি সেই মারাত্মক পীড়িতাবস্থায়ই বাইরে বেরিয়ে এলেন এবং মুসলিম জনতাকে উদ্দেশ্য করে বললেন :

“আমি আমার কোন প্রিয় আত্মীয়কে খলীফা বানাইনি। আর আমি কেবল আমার নিজের মত অনুসারেই হযরত উমর ফারূক (রা)-কে খলীফা বানাইনি বরং বিজ্ঞজনদের পরামর্শ নিয়েই খলীফা বানিয়েছি। এখন তোমরা কি এই ব্যক্তির খলীফা হওয়াতে সন্তুষ্ট, যাকে আমি তোমাদের জন্য নির্বাচন করেছি? একথা শুনে জনতা বললো, আমরা আপনার নির্বাচন ও আপনার রায় পছন্দ করছি। তারপর সিদ্দীকে আকবর (রা) বললেন : তোমাদের কর্তব্য হচ্ছে উমর ফারূকের কথা শোনা ও তার আনুগত্য করা। সবাই তা মেনে নিলো।

এরপর উমর ফারুক (রা)-কে উদ্দেশ্য করে তিনি বললেন :

হে উমর! আমি তোমাকে রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর সাহাবীদের জন্য আমার প্রতিনিধি বানালাম। তুমি আল্লাহ্ তা‘আলাকে প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে ভয় করতে থাকবে। হে উমর! আল্লাহ্ তা‘আলার কিছু হক আছে, যা রাতের সাথে সম্পর্কযুক্ত তা তিনি দিনে কবুল করবেন না। অনুরূপ কিছু হক দিনের সাথে সম্পৃক্ত—যা তিনি রাতে কবুল করবেন না। আল্লাহ্ তা‘আলা নফলসমূহ কবুল করবেন না, যে পর্যন্ত ফরযসমূহ আদায় করা না হবে। হে উমর! যার সৎকর্ম কিয়ামতে ভারী হবে, সে-ই মুক্তি পাবে। আর যার সৎকর্ম কম হবে, সে বিপদগ্রস্ত হবে, হে উমর! মুক্তির পথ কুরআন মজীদের উপর আমল ও ন্যায়ের অনুসরণ দ্বারা লাভ করা যায়। হে উমর! তুমি কি জান না যে, উৎসাহ দান ও ভয় দেখান এবং ভীতি প্রদর্শন ও সুসংবাদদানের আয়াতসমূহ কুরআন মজীদে পাশাপাশি নাযিল হয়েছে। যাতে মু‘মিনরা আল্লাহ্ তা‘আলাকে ভয় করে এবং তাঁর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকে। হে উমর! কুরআন তিলাওয়াতের সময় যখন জাহান্নামীদের আলোচনা আসিবে, তখন তুমি দু‘আ করবে-হে আল্লাহ! তুমি আমাকে তাদের অন্তর্ভুক্ত করো না। আর যখন জান্নাতীদের আলোচনা আসবে, তখন দুআ করবে—হে আল্লাহ! তুমি আমাকে তাদের মধ্যে শামিল করো। হে উমর! তুমি যখন আমার এই উপদেশগুলো অনুসরণ করবে, তখন আমাকে যেনো তোমার কাছেই বসা দেখতে পাবে।

এই ইচ্ছাপত্র ও উপদেশ প্রভৃতি কার্যক্রম ১৩ হিজরীর ২২ শে জমাদিউস-সানী সোমবার অনুষ্ঠিত হয়। ২২ শে এবং ২৩ শে জমাদিউস-সানীর মধ্যবর্তী রাতে অর্থাৎ মঙ্গলবার রাত বাদ মাগরিব ৬৩ বছর বয়সে তিনি ইনতিকাল করেন। ইশার পূর্বেই তাকে দাফন করা হয়। সোয়া দু’বছর তিনি খিলাফত চালান। মক্কার গভর্নর আত্তাব ইব্‌ন উসায়দ (রা)-ও মক্কায় ঐদিনই ইনতিকাল করেন। যেদিন আবূ বকর সিদ্দীক (রা) হযরত উমর ফারুক (রা)-এর খিলাফতের জন্য ইচ্ছাপত্র লিপিবদ্ধ করান এবং মুসলমানদেরকে তা অবহিত করেন সেটি ছিল তার জীবনের শেষ দিন। এদিনই ইচ্ছাপত্র লেখার পর হযরত মুছান্না ইব্‌ন হারিছা যিনি হীরা (ইরাক) থেকে মদীনা অভিমুখে রওয়ানা করেছিলেন, মদীনা মুনাওয়ারায় পৌঁছেন। সেখানকার (ইরাকের) অবস্থা এই দাঁড়িয়েছিল যে, হযরত খালিদ ইব্‌ন ওয়ালীদ (রা) স্বয়ং অর্ধেক সৈন্য নিয়ে এবং অর্ধেক মুছান্না ইব্‌ন হারিছার নিকট রেখে যখন সিরিয়া গমন করেছিলেন, তখন ইরানী সিপাহসালার বাহমান জাদুওয়ায়ং খালিদ ইব্‌ন ওয়ালীদের অনুপস্থিতিতে মুসলমানদেরকে ঐ দেশ থেকে বিতাড়িত করা সহজ ভেবে এক বিরাট বাহিনী নিয়ে এলো। হযরত মুছান্না ইব্‌ন হারিছা (রা) হীরা থেকে অগ্রসর হয়ে ব্যাবিলনের নিকট ঐ ইরানী বাহিনীর সম্মুখীন হলেন। তুমুল যুদ্ধ হলো। বহু রক্তারক্তি ও হতাহতের পর ইরানীরা চরম পরাজয় বরণ করলো। হযরত মুছান্না ইব্‌ন হারিছা (রা) মাদায়েনের কাছাকাছি পর্যন্ত ইরানীদের ধাওয়া করে হীরায় প্রত্যাবর্তন করলেন। এই পরাজয়ের পর ইরানীরা তাদের অভ্যন্তরীণ ঝগড়া মুলতবি রেখে এবং ইরানী সেনাপতি ও মন্ত্রিবর্গ তাদের শত্রুতা ভুলে গিয়ে পুনঃপ্রস্তুতি আরম্ভ করলো। সারা দেশ ও প্রদেশসমূহে রণ-উন্মাদনা উথলে উঠলো। ইরানী জাতি-গোষ্ঠী ও দেশের নেতৃবর্গ সম্মিলিতভাবে মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধক্ষেত্রে যেতে এবং লড়াই করে মরার জন্য প্রস্তুত হয়ে গেলো। হযরত মুছান্না (রা) যখন ইরানীদের সামরিক প্রস্তুতি সম্পর্কে অবগত হলেন, তখন তিনি তাঁর সৈন্য-স্বল্পতা চিন্তায় বিচলিত হলেন। তিনি বাশীর ইব্‌ন খাসাসা (রা)-কে তাঁর স্থলবর্তী করে স্বয়ং মদীনা ছুটে গেলেন। উদ্দেশ্য, খলীফাতুর-রাসূলকে মৌখিকভাবে সমস্ত বৃত্তান্ত খুলে বলা এবং পরিস্থিতির গুরুত্ব ও নাযুকতাকে উপলব্ধি করানো। হযরত মুছান্না (রা) যখন মদীনায় পৌঁছলেন, তখন সিদ্দীকে আকবর (রা)-এর জীবনের মাত্র কয়েকটি ঘণ্টা অবশিষ্ট ছিল। তিনি মুছান্নার নিকট সমস্ত বৃত্তান্ত শুনলেন এবং হযরত উমর ফারূক (রা)-কে বললেন, তুমি সৈন্য সমবেত করে মুছান্নার সাথে অবশ্য এবং দ্রুত রওনা করবে। হযরত উমর (রা) যখন তার নিকট থেকে বাইরে গেলেন, তখন সিদ্দীকে আকবর (রা) বললেন : হে আল্লাহ! আমি উমরকে মুসলমানদের কল্যাণ ও ফিতনা-ফাসাদের আশংকা দূর করার জন্য আমার পরে খলীফা নির্বাচিত করেছি। আমি যা করেছি, মুসলমানদের মঙ্গলের জন্য করেছি। তুমি অন্তর্যামী। অন্তরের অবস্থা সম্পর্কে সম্যক ওয়াকিফহাল। আমি মুসলমানদের পরামর্শও নিয়েছি এবং তাদের মধ্য থেকে সবচেয়ে উত্তম, শক্তিমান, মঙ্গলকামী বিশ্বস্ত ব্যক্তিকে তাদের শাসক বানিয়েছি। অতএব, তুমি আমার খলীফাকে তাদের মধ্যে কায়েম রাখো। তারা তোমার বান্দা এবং তাদের কপাল তোমার হাতে। তাদের শাসকদেরকে সৎ বানিও। আর উমরকে উত্তম খলীফা বানিও এবং তার প্রজাদেরকে তার জন্য উত্তম প্রজা বানিও।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন