hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামের ইতিহাস ১ম খণ্ড

লেখকঃ মাওলানা আকবর শাহ খান নজিববাদী

৩৬১
হিজরী ৩৪ সনের ঘটনাসমূহ
এ বছর কূফার যে অবস্থা ছিল তা তো উপরে বর্ণিত হয়েছে। হযরত উসমান গনী (রা) রাষ্ট্রের অন্যান্য কর্মকর্তার নামেও এ মর্মে নির্দেশ পাঠান যে, এবারকার হজ্জের পর যেন তারা সবাই মদীনা শরীফে এসে তার সাথে পরামর্শ সভায় অংশগ্রহণ করেন। অতএব, সিরিয়া থেকে হযরত মুআবিয়া (রা), মিসর থেকে হযরত আবদুল্লাহ্ ইব্‌ন সাঈদ ইব্‌ন আবী সারাহ (রা), কূফা থেকে সাঈদ ইব্‌ন ‘আস (রা), বসরা থেকে আবদুল্লাহ্ ইব্‌ন আমের (রা) এবং কয়েকটি ছোট ছোট প্রদেশের কর্মকর্তারাও মদীনা শরীফের গণ্যমান্য ব্যক্তিদেরকে পরামর্শ সভায় অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ জানান। তিনি উপস্থিত সবাইকে বলেন, কেন আমার বিরুদ্ধে এ বিক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে তার কারণ নির্ধারণ করে আমাকে সে সম্পর্কে অবহিত করুন এবং বলুন, এখন আমার করণীয় কি? আবদুল্লাহ্ ইব্‌ন আমের বলেন, আমার মতে এ লোকদেরকে জিহাদে নিয়োজিত রাখাই এর শ্রেষ্ঠতম প্রতিকার। নিষ্কর্মা বসে থাকার দরুনই তাদের মাথায় এ ধরনের ফাসাদ ও কুবুদ্ধির উদয় হয়। যখন তারা জিহাদে লিপ্ত হবে তখন আপনা আপনি এসব বিক্ষোভ-বিশৃঙ্খলার অবসান ঘটবে। সাঈদ ইব্‌ন ‘আস বলেন, এ দুষ্ট লোকদের নেতাদেরকে অর্থাৎ দুষ্কৃতির হোতাদেরকে তাদের প্রত্যেকটি কথার উপর যুক্তিভিত্তিক পাকড়াও করতে হবে। তারপর তাদেরকে ছিন্নভিন্ন করে দিতে হবে। ফলে তাদের অনুসারীরাও আপনাআপনি ছিন্ন ভিন্ন হয়ে যাবে। খলীফা হযরত উসমান গনী (রা) বলেন, এ অভিমতটি নিঃসন্দেহে যুক্তিসঙ্গত, কিন্তু তাকে কার্যকরী করা সহজ নয়। আমীরে মুআবিয়া (রা) বলেন, আমাদের মধ্যে যিনি যে প্রদেশের গভর্নর আছেন, তিনিই সে প্রদেশ সামলাবেন। এভাবে প্রত্যেকটি প্রদেশ এ দুষ্কৃতিকারীদের থেকে পবিত্র করে নিতে হবে। আবদুল্লাহ্ ইব্‌ন সা‘দ (রা) বলেন, তাদের সব লোকই লোভী ও প্রতাপশালী। কাজেই তাদেরকে ধন-সম্পদ দিয়ে আপন করে নেওয়াই যুক্তিসঙ্গত।

এই পরামর্শ সভায় বিক্ষোভ ও বিশৃঙ্খলার প্রকৃত অবস্থা ও কারণ সম্পর্কে আলোচনা পর্যালোচনার পর দেখা গেল, এসব বিক্ষোভের খবর একেবারে কাল্পনিক ও অনুমান ভিত্তিক; এতে সভ্যতার লেশ মাত্র নেই। এ প্রেক্ষিতে কেউ কেউ পরামর্শ দিলেন, যারা এ ধরনের বিশৃঙ্খলা ও বিদ্রোহে অংশ নেয়, তাদের সবাইকে খুঁজে বের করে হত্যা করে ফেলা উচিত। যারা প্রকৃতই দোষী তাদের প্রতি কোন ভাবেই কৃপা প্রদর্শন সঙ্গত নয়। হযরত উসমান গনী (রা) বলেন, আমি শুধু ঐ পরিমাণ শাস্তি দিতে পারি যা পাক কুরআন ও হাদীস নির্ধারণ করে দিয়েছে। যতক্ষণ পর্যন্ত আমি কোন লোককে প্রকাশ্যে মুরতাদ হতে না দেখব, ততক্ষণ পর্যন্ত আমি কী করে তাকে হত্যা করতে পারি? যে অপরাধের যে শাস্তি নির্ধারিত আছে, সে অপরাধের জন্য আমি শুধু সে শাস্তিই দিতে পারি। তাছাড়া আমার বিরুদ্ধে যে বিক্ষোভের সূত্রপাত করা হয়েছে তা সহ্য করার মত যথেষ্ট ধৈর্য ও মনোবল আমার রয়েছে। এ ধরনের আলাপ-আলোচনা ও কথাবার্তার পর ঐ দিনের পরামর্শ বৈঠক সমাপ্ত হয়। তাতে কোন বিশেষ প্রস্তাব বা কর্মপন্থা গৃহীত হয় নি। অবশ্য এ ব্যবস্থা নেওয়া হয় যে, জিহাদের উদ্দেশ্যে কোন কোন এলাকায় সেনাবাহিনী প্রেরণের জন্য কোন কোন কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়। তারপর গভর্নর ও কর্মকর্তাবৃন্দ মদীনা শরীফ থেকে নিজ নিজ এলাকার দিকে রওয়ানা হন। সাঈদ ইব্‌ন ‘আস (রা) তার যাত্রাপথে যখন জার’আ নামক স্থানে গিয়ে পৌঁছেন তখন তিনি দেখতে পান যে, ইয়াযীদ ইব্‌ন কায়সের নেতৃত্বে একটি বিরাট সেনাবাহিনী সেখানে অবস্থান করছে। সাঈদ ইব্‌ন ‘আস সেখানে পৌঁছতেই ইয়াযীদ অন্তত কঠোর ভাষায় বলে, তুমি এখান থেকে অবিলম্বে ফিরে যাও। আমরা তোমাকে কুফায় কখনো প্রবেশ করতে দেব না। একথা শুনে সাঈদ ইব্‌ন ‘আস (রা)-এর ভৃত্য বলল, সাঈদের এখান থেকে ফিরে যাওয়া অসম্ভব। একথা শোনা মাত্র মালিক আশতার আগে বেড়ে সাঈদের ভৃত্যকে উটের পিঠ থেকে টেনে নামিয়ে সঙ্গে সঙ্গে হত্যা করে ফেলে এবং সাঈদ ইব্‌ন ‘আস (রা)-কে কূফার পাঠিয়ে দেয়। সাঈদ বাধ্য হয়ে সেখান থেকে মদীনায় ফিরে যান এবং হযরত উসমান গনী (রা)-এর কাছে আদ্যোপান্ত ঘটনা বিবৃত করেন। তখন উসমান গনী (রা) হযরত আবূ মূসা আশআরীকে ডেকে পাঠিয়ে তাকে কূফার গভর্নর নিয়োগ করেন। আবূ মূসা আশআরী (রা) গভর্নর হিসাবে মদীনা শরীফ থেকে কূফায় গিয়ে পৌঁছেন। তিনি সঙ্গে করে হযরত উসমান গনী (রা)-এর একটি পত্র নিয়ে যান, যা কূফাবাসীদের উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছিল। তাতে বলা হয়েছিল : তোমরা যে ব্যক্তিকে নিজেদের প্রশাসক হিসাবে পছন্দ করেছো ও মনোনীত করেছো আমি তাকেই নিয়োগ করে তোমাদের কাছে পাঠালাম। তাতে এও বলা হয়েছিল : যে পর্যন্ত শরীআত আমাকে অনুমতি দেবে আমি তোমাদের মনোবাঞ্ছা পূরণ করে যাব। সেই সাথে তোমাদের যাবতীয় বাড়াবাড়ি সহ্য করে তোমাদেরকে সংশোধন করার চেষ্টা করবো।

আবু মূসা (রা) কূফায় পৌঁছে জুমু‘আর দিন মিম্বরে আরোহণ করে সকলের উদ্দেশ্যে এক ভাষণ দেন। তাতে মুসলমানদের মধ্যকার দলাদলির বিলোপ সাধন এবং আমীরুল মু’মিনীন হযরত উসমান গনী (রা)-এর আনুগত্যের উপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়। আবূ মূসা (রা)-এর এ ভাষণ প্রদানের ফলে কূফার অবস্থা কিছুটা শান্ত হয় এবং সাধারণ লোক, যারা সাবাঈ দলের সাথে কোন ভাবেই সম্পর্কিত ছিল না, তাদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসে। কিন্তু আবদুল্লাহ্ ইব্‌ন সাবার দল এবং যারা হযরত উসমান গনী (রা)-এর প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করত তারা সাধারণভাবে হযরত উসমান গনী (রা) কর্তৃক নিযুক্ত কর্মকর্তাবৃন্দ এমন কি তৎকর্তৃক কূফার আশেপাশে জেলাসমূহে নিযুক্ত ছোট খাটো কর্মচারীদের সম্পর্কেও পাইকারী হারে অভিযোগ উত্থাপন করতে শুরু করে। তারা চিঠি পত্রের মাধ্যমে মদীনা শরীফের গণ্যমান্য ব্যক্তিগণকেও হযরত উসমান গনী (রা)-এর বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তোলার অপচেষ্টা চালায়। মদীনা শরীফের অধিবাসীদের কাছে যখন বাইরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত বিভিন্ন অভিযোগ সম্বলিত চিঠিপত্রাদি পৌঁছত, তখন তারা অত্যন্ত ব্যথিত হতেন এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে শাস্তি প্রদান অথবা পদচ্যুত করার জন্য হযরত উসমান গনী (রা)-এর উপর চাপ প্রয়োগ করতেন। তদন্তের পর যেহেতু হযরত উসমান গনী (রা) সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে নির্দোষ পেতেন, তাই তাকে শাস্তি প্রদান বা পদচ্যুত করতে ইতস্তত করতেন। ফলে মদীনা শরীফেও খোদ হযরত উসমান গনী (রা)-কে সাধারণ লোকেরা প্রকাশ্যে দোষারোপ করতে শুরু করে এবং এখানেও খলীফার বিরুদ্ধে কানাঘুষা শুরু হয়ে যায়। এ অবস্থা দেখে আবূ উসায়দ সাঈদী, কা‘ব ইব্‌ন মালিক, হাসসান ইব্‌ন ছাবিত (রা) প্রমুখ জনসাধারণকে পরস্পর গালাগালি ও দোষারোপ করা থেকে বিরত রাখতেন এবং ইসলামের দৃষ্টিতে খলীফার আনুগত্য যে একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তা সবাইকে বোঝাবার চেষ্টা করতেন। কিন্তু তাদের কথায় সাধারণ মানুষ খুব একটা প্রভাবিত হচ্ছে বলে মনে হত না। কারণ তা ছিল ঐ যুগ যখন আবদুল্লাহ্ ইব্‌ন সাবার এজেন্টরা ইসলামী রাষ্ট্রের সকল বড় বড় শহর এবং জনবসতিতে পৌঁছে গিয়েছিল এবং সর্বত্রই নিজেদের কমবেশী অনুসারী তৈরী করে নিয়েছিল।

ইসলামী রাষ্ট্রের তখন পাঁচটি বড় কেন্দ্র ছিল। মদীনা তাইয়িবা ছিল রাজধানী এবং সূচনাকাল থেকেই তা ছিল ইসলামী শক্তি ও শৌর্য-বীর্যের উৎসস্থল ও কেন্দ্রভূমি। কূফা ও বসরা উভয় শহরেই ছিল বিরাট বিরাট সেনাছাউনি। সেখানে যোদ্ধা আরব গোত্রসমূহের বসতি গড়ে উঠেছিল। উভয় স্থানেই ইসলামী শক্তি এতই মজবুত ও সুদৃঢ় ছিল যে, তার প্রভাবে ইরান থেকে আরম্ভ করে তুর্কিস্তান, আর্মেনিয়া, জর্জিয়া, এমন কি প্রশান্ত মহাসাগর ও কৃষ্ণসাগরের উপকূল পর্যন্ত সর্বত্র শান্তি-শৃঙ্খলা বিরাজ করছিল। ফুসতাত বা কায়রোয়ও সেনাছাউনি ছিল এবং মিসর ছাড়াও আলেপ্পো ও ফিলিস্তীন পর্যন্ত তার প্রভাব বিস্তৃত ছিল। দামিশকও ছিল ইসলামী রাষ্ট্রের একটি কেন্দ্রভূমি। এখানেও মুসলমানদের এ পরিমাণ সমর শক্তি বিদ্যমান ছিল যে, রোম সম্রাট তাতে ভীত-সন্ত্রস্ত ছিলেন। কেননা, যখনি দামিশকের মুসলিম সেনাবাহিনীর সাথে রোমান সেনাবাহিনীর মুকাবিলা হয়েছে, তখনি রোমান সেনাবাহিনী পরাজিত হয়েছে। সুচতুর আবদুল্লাহ ইব্‌ন সাবা প্রথম থেকেই এ পাঁচটি কেন্দ্রের গুরুত্ব উপলব্ধি করছিল। সে এটাও ভালভাবে বুঝে নিয়েছিল যে, মুসলিম বিশ্বে এগুলোর মত সামরিক দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আর কোন কেন্দ্র নাই। কাজেই সে সর্বপ্রথম মদীনা শরীফে আসে। সেখান থেকে বসরাতে গিয়ে পৌঁছে। দামিশকে হযরত মুআবিয়া (রা)-এর কারণে সে খুব একটা সুবিধা করতে পারে নি। বাকী সব জায়গায়ই সে সাফল্যের সাথে মানুষের আকীদা-বিশ্বাস নষ্ট করেছে, ছোট হোক অথবা বড় হোক সব কেন্দ্রেই নিজের দল গঠন করেছে অথবা এজেন্ট তৈরি করে রেখে এসেছে। দামিশকে আর কিছু না পারলেও হযরত আবূ যর (রা)-এর ঘটনা থেকে সে বেশ কিছু ফায়দা লুটেছে। সে মানুষের মধ্যে এ ধারণা প্রচার করেছে যে হযরত আবূ যর (রা) সত্যি কথা বলছেন এবং তিনি সঠিক পথেই আছেন। কেননা, বায়তুল মালকে হযরত মুআবিয়া মহান আল্লাহর মাল আখ্যা দিয়ে অন্যায়ভাবে নিজের দখলে বা এখতিয়ারে রাখতে চান। প্রকৃতপক্ষে তা মুসলিম জাতির সম্পদ এবং সমগ্র মুসলমান তাতে অংশীদার। কাজেই, মুসলমানদের মধ্যে তা বন্টন করে দেওয়া উচিত। এ প্রসঙ্গে হযরত উসমান গনী (রা)-কে সে সব অভিযোগের উৎস বলে আখ্যা দেয় এবং জনসাধারণকে তার বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তোলে। তারপর আবদুল্লাহ ইব্‌ন সাবা হযরত আবূ দারদা (রা)-এর কাছে যায় এবং অত্যন্ত সতর্কতা ও চাতুর্যের সাথে তার সামনে নিজের বাতিল আকীদাসমূহ তুলে ধরতে শুরু করে। তার কথাবার্তা শুনে হযরত আবূ দারদা (রা) বলে উঠেন, তোমাকে ইয়াহূদী বলে মনে হচ্ছে। তুমি ইসলামের মুখোশ পরে মুসলমানদের পথভ্রষ্ট করছ। সেখানে তার চালাকি খাটে নি দেখে সে হযরত উবাদা ইব্‌ন সামিত (রা)-এর কাছে যায়। তিনিও যখন তার কথাবার্তা থেকে তার বাতিল চিন্তাধারা সম্পর্কে একটা ধারণা করে নেন, তখন সঙ্গে সঙ্গে তাকে পাকড়াও করে হযরত মুআবিয়া (রা)-এর কাছে নিয়ে যান এবং বলেন, আমার মনে হয় এ হচ্ছে সেই ব্যক্তি যে আবূ যর (রা)-কে বিভ্রান্তির মধ্যে ফেলেছে এবং আপনার সাথে তার লড়াই বাঁধিয়ে দিয়েছে। হযরত মুআবিয়া (রা) সঙ্গে সঙ্গে তাকে দামিশক থেকে বের করে দেন। তারপর সে মিসরে গিয়ে আপনার ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তারে পুরোপুরি আত্মনিয়োগ করে।

যখন দেশের প্রতিটি অঞ্চল থেকে মদীনা মুনাওয়ারাতে অনবরত অভিযোগ পত্র আসতে থাকে এবং সেখানেও কানাঘুষা শুরু হয় তখন মদীনা শরীফের কিছু সংখ্যক গণ্যমান্য ব্যক্তি হযরত উসমান গনী (রা)-এর সাথে দেখা করে অনুরোধ করেন যেন তিনি তাঁর নিযুক্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সম্পর্কে তদন্ত চালান এবং জনসাধারণের অভিযোগসমূহ দূর করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেন। হযরত উসমান গনী (রা) কয়েকজন নির্ভরযোগ্য সাহাবীকে বাছাই করে তাদের এক-একজনকে এক-এক প্রদেশে পাঠান যেন তারা সংশ্লিষ্ট এলাকার অবস্থা তদন্ত করে তার কাছে এসে রিপোর্ট প্রদান করেন। তিনি মুহাম্মদ ইব্‌ন মাসলামা (রা)-কে কূফায়, উসামা ইব্‌ন যায়দ (রা)-কে বসরায় এবং আবদুল্লাহ্ ইব্‌ন উমর (রা)-কে সিরিয়ায় প্রেরণ করেন। এভাবে প্রত্যেকটি ছোট বড় প্রদেশে এক একজন তদন্তকারীকে পাঠানো হয়। কিছুদিন পর তারা ফিরে এসে রিপোর্ট দেন যে, তাঁদের কেউ কোন এলাকায় কোন গভর্নর বা কর্মচারীকে আপত্তিকর কিছু করতে দেখেন নি বরং তারা সংশ্লিষ্ট এলাকায় সুষ্ঠভাবে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। কোন কর্মকর্তা কর্মচারীকে শরীআত বিরোধী কোন কাজ করতেও দেখা যায় নি এবং গণ্যমান্য ও বিবেক বুদ্ধিসম্পন্ন কোন লোকও তাদের কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ উত্থাপন করেন নি। এসব কথা শুনে মদীনাবাসীগণ অনেকটা স্বস্তি লাভ করে। কিন্তু কিছু দিন যেতে না যেতেই আবার ঐ অবস্থার সৃষ্টি হয়। তখন হজ্জের মওসুম ছিল আসন্ন। হযরত উসমান গনী (রা) প্রত্যেকটি শহর ও জনবসতিতে জনসাধারণের নামে একটি সাধারণ বিজ্ঞপ্তি প্রচার করেন, যার বিষয়বস্তু ছিলো নিম্নরূপ :

আমার কাছে এ মর্মে সংবাদ আসছে যে,আমার কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা জনসাধারণকে বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে এবং তাদের উপর জুলুম-অত্যাচার চালাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে আমি সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে নির্দেশ দিয়েছি যেন তারা এবারকার হজ্জে অবশ্যই অংশ গ্রহণ করে। কাজেই, আমার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে যার যে অভিযোগ আছে, সে যেন হজ্জের সময় তা আমার সামনে পেশ করে এবং আপন প্রাপ্য, যদি তা প্রমাণিত হয় তাহলে আমার কাছ থেকে অথবা আমার কর্মকর্তা-কর্মচারীর কাছ থেকে আদায় করে নিয়ে যায়।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন