hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামের ইতিহাস ১ম খণ্ড

লেখকঃ মাওলানা আকবর শাহ খান নজিববাদী

৪০৩
সাবাঈ দলের আর একটি দুষ্কর্ম
হযরত আয়িশা (রা)-কে বসরা অভিমুখে রওয়ানা করার পর হযরত আলী (রা) বসরার বায়তুলমাল খুলেন এবং তাতে যে নগদ অর্থ ছিল তা সৈন্যদের মধ্যে বন্টন করে দেন, যারা জামাল যুদ্ধে তাঁর পতাকাতলে লড়েছিল। প্রত্যেক ব্যক্তির ভাগে পাঁচশ দিরহাম করে পড়ে। এই অর্থ বণ্টন করার পর তিনি বলেন, যদি তোমরা সিরিয়া আক্রমণ করে জয়যুক্ত হতে পার তাহলে নির্দিষ্ট ভাতা ছাড়াও এই পরিমাণ অর্থ তোমাদের দেওয়া হবে। আবদুল্লাহ ইব্‌ন সাবার দল, যাদেরকে ‘ফিরকা-ই সাবাইয়া’ নামে অভিহিত করা হয় জামাল যুদ্ধ শেষ হতেই হযরত আলীর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে অশিষ্ট কথাবার্তা বলতে শুরু করে। তাদের এই অশিষ্ট কথাবার্তা, দোষারোপ ও তিরস্কার-ভর্ৎসনার আসল কারণ হল হযরত আলী বিপক্ষ দলের মাল-আসবাব লুণ্ঠন করতে তাদেরকে কড়া ভাষায় নিষেধ করে দিয়েছিলেন। তারা এখন পর্যন্ত কটুক্তি করে আসছিল, কিন্তু যখন তিনি প্রত্যেক যোদ্ধাকে পাঁচ দিরহাম করে দেন তখন এর উপরও তারা নানা ধরনের আপত্তি উত্থাপন করতে শুরু করে। শেষ পর্যন্ত তাদের এই বিরোধিতা এমন এক পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছে যে, তাদেরকে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখা তার পক্ষে কঠিন হয়ে পড়ে। তিনি তাদেরকে যতই সদুপদেশ দিতেন, যতই বোঝাতেন ততই তাদের বক্রতা ও অসদাচরণ বৃদ্ধি পেত। শেষ পর্যন্ত অবস্থা এই পর্যায়ে গড়ায় যে, একদিন তারা সবাই বসরা ছেড়ে চলে যায়। আলী (রা)-এর আশংকা হলো, এরা দেশের কোথাও না কোথাও গিয়ে বিশৃংখলা সৃষ্টি করবে। তাই তিনি ওদের পশ্চাদ্ধাবনের জন্য বসরা থেকে একটি সেনাবাহিনী নিয়ে বের হন। কিন্তু তাদের নাগাল পাওয়া যায় নি। এখানে একটি কথা মনে রাখা দরকার যে, আবদুল্লাহ ইব্‌ন সাবা নিজেকে এমনভাবে যাহির করত যেন সে আলী (রা)-এর একজন অন্ধ ভক্ত এবং তার জন্য উৎসর্গিতপ্রাণ। আলী (রা)-এর ভালোবাসার অন্তরালেই সে হযরত উসমান (রা)-কে হত্যার যাবতীয় ষড়যন্ত্র করেছিল। নিজেকে আলী প্রেমিক ঘোষণা করে সে জনসাধারণকে পথভ্রষ্ট করত। কিন্তু জামাল যুদ্ধ ও বসরা বিজিত হওয়ার পর ঐ সাবাঈ দল বুঝতে পারল যে, এবার হযরত আলীর বিরোধিতা করলেই ইসলামের অধিকতর ক্ষতি সাধন করা সম্ভব হবে। তাই তারা অত্যন্ত জোরেসোরে আলী (রা)-এর বিরোধিতা করতে লাগল। এ দলটি প্রকৃতপক্ষে মুসলমানদের নামধারী ইয়াহূদী ও ইসলাম-দুশমনদের একটি দল ছিল যা পরবর্তীকালে ‘খারিজী সম্প্রদায়’ নামে আত্মপ্রকাশ করে।

হযরত উমর ফারূক (রা)-এর শাহাদত লাভের পর থেকে ইসলামে শত্রুদের নতুন ষড়যন্ত্র উদ্ভাবন এবং গোপন সমিতি গঠনের যে ধারার সূচনা হয় তা আজো বিশ্বের সর্বত্র অব্যাহত রয়েছে। এমন একটি যুগও পাওয়া যাবে না যখন ইসলামের এই শত্রুরা কোন না কোন গোপন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল না। কখনো তারা আবূ লূ‘ লূ‘ ও তার প্ররোচকরূপে আত্মপ্রকাশ করেছে, কখনো দেখা দিয়েছে আবদুল্লাহ ইব্‌ন সাবা এবং সাবায়ী ফিরকারূপে, আবার কখনো চিহ্নিত হয়েছে খারিজী ফিরকা নামে। কখনো তারা বনূ উমাইয়ার বিরুদ্ধে আব্বাসী ও আরবীদের হয়ে ষড়যন্ত্র করেছে, কখনো আব্বাসীদের উপর আরবীদের তুলে ধরার চেষ্টা করেছে, কখনো তারা উৎসর্গিতপ্রাণ ইসমাঈলীয়া নাম ধারণা করেছে, কখনো ফ্রিম্যাসনের রূপ ধারণ করেছে, আবার কখনো তাদের এই গোপন সোসাইটি নৈরাজ্যবাদী ও বিচ্ছিন্নতাবাদীরূপে আত্মপ্রকাশ করেছে। কখনো তারা কূটনীতির পোশাক পরেছে, আবার কখনো রাজা-বাদশাহদের পররাষ্ট্র দফতরের অফিসসমূহে নিজেদের স্থান করে নিয়েছে। এভাবে রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর জীবনের শেষ দিনগুলো বাদে আর সব সময়েই এই গোপন ষড়যন্ত্রকারী দলের অস্তিত্ব ছিল। এরা কখনো বাবিলে (ব্যাবিলনে) হারূত-মারূত এবং হযরত হিযকীল ও দানিয়ালের তদবীরসমূহ সফল করার কাজে নিয়োজিত ছিল, আবার কখনো নিয়োজিত ছিল হিন্দুস্থানে বৌদ্ধ মহাযান বংশের বিরাট সাম্রাজ্যকে ধ্বংস করে ব্রাহ্মণ চানক্যের মাধ্যমে চন্দ্রগুপ্তকে বিজয়ী করে তোলার কাজে। কখনো এই দল রুস্তমকে হত্যা করে কায়ানীদের বিখ্যাত রাজবংশের ধ্বংস ডেকে এনেছে। কখনো এরা শুধু বৌদ্ধ ধর্মকে নয় বরং বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সাম্রাজ্য এবং সংস্কৃতি ও সভ্যতাকেও হিন্দুস্তান থেকে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে, আবার কখনো জুলিয়াস সিজারকে হত্যা করিয়ে রোমান সাম্রাজ্যের প্রভাব-প্রতিপত্তি মিটিয়ে দিয়েছে, মোটকথা, বিশ্বে শুধু বিশ পঁচিশটি বছরের একটি যুগ এমনভাবে কেটেছে, যখন গোপন ষড়যন্ত্রকারী এই দলের কোন অস্তিত্ব ছিল না। আর থাকলেও তা অজ্ঞাত ছিল। আর এই যুগটি হচ্ছে রাসূলুল্লাহ (সাঃ), আবূ বকর সিদ্দীক (রা) এবং উমর ফারূক (রা)-এর যুগ। এই যুগের পূর্বে এবং পরেও বিশ্বে সব সময়ই এই ষড়যন্ত্রকারীদের অস্তিত্ব ছিল। অতএব এই ইতিহাসের পাঠক এবং খিলাফতে রাশিদার ইতিহাসের শেষাংশের পাঠককে গোপন ষড়যন্ত্রকারী এই ইসলাম-শত্রুদের উৎসুক দৃষ্টিতে দেখা উচিত নয়।

সাবাঈ ফিরকা, যারা প্রকাশ্য বিরোধিতা করে বসরা থেকে পলায়ন করে তারা দ্রুত ইরাকে ও আরবের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে এবং লম্পট লোকদেরকে নিজেদের সাথে শামিল করে একটি বিরাট দল গড়ে তোলে। তারা সর্বপ্রথম সিজিস্তান অভিমুখে যাত্রা করে। তাদের উদ্দেশ্য ছিল, তারা একের পর এক ইরানের প্রদেশসমূহে বিদ্রোহের আগুন জ্বালিয়ে এমন এক পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটাবে যাতে মুসলমানদের খলীফা (হযরত আলী) গোটা দেশকে পুনরায় একটি স্থায়ী রাষ্ট্রে পরিণত করার অবকাশ না পান। ইরানের প্রদেশসমূহে বিদ্রোহ সৃষ্টি করে তারা আলী (রা)-কে এমনভাবে ব্যতিব্যস্ত রাখতে চাচ্ছিল যাতে তিনি সিরিয়া আক্রমণ করার এবং জয়যুক্ত হওয়ার সুযোগই না পান। তাদের সিজিস্তানের দিকে যাত্রার কথা জানতে পেরে আলী (রা) তাদেরকে দমনের জন্য হযরত আবদুর রহমান তাঈকে প্রেরণ করেন। কিন্তু তাদের মুকাবিলা করতে গিয়ে আবদুর রহমান তাঈ শাহাদাত বরণ করেন। এই সংবাদ পাওয়ার পর আলী (রা) চার হাজার সৈন্যের একটি বাহিনীসহ রিবঈ ইব্‌ন কাসকে সেখানে প্রেরণ করেন। তিনি তাদেরকে পরাজিত করে একেবারে ছিন্ন ভিন্ন করে দেন। ইতিমধ্যে সিফফীন যুদ্ধের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছিল। এই পরিস্থিতিতে মুসলিমরূপী ইয়াহূদীরা অর্থাৎ সাবাঈ গোষ্ঠী নিজেদের লক্ষ্য হাসিলের জন্য আলী (রা)-এর বাহিনীর অন্তর্ভুক্ত হওয়াকেই সমীচীন মনে করে এবং সুযোগ বুঝে ব্যক্তিগত বা গোষ্ঠীগতভাবে একের পর এক তাতে যোগ দেয়।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন