hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামের ইতিহাস ১ম খণ্ড

লেখকঃ মাওলানা আকবর শাহ খান নজিববাদী

৩৩৬
খিলাফতে রাশিদার প্রথমার্ধ
হযরত সিদ্দীক আকবর (রা) ও হযরত ফারূকে আযম (রা)-এর খিলাফতকালীন যুগকে ইসলামের দীনী ও মাযহাবী রাষ্ট্রের অর্থাৎ খিলাফতে রাশিদার প্রথমার্ধ বলা যেতে পারে। এর শেষার্ধ হযরত উসমান গনী (রা), হযরত আলী (রা) ও হযরত ইমাম হাসান (রা)-এর খিলাফতকালে। খিলাফতে রাশিদার প্রথমার্ধের অবস্থা ইতিপূর্বে বর্ণিত হয়েছে। এ সময় কালের এক উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য এখানে কোথাও দীনকে দুনিয়ার উপর প্রাধান্য দেওয়া হয় নি। মহান আল্লাহর কালিমা তথা ইসলাম প্রচার করতে গিয়ে অজান্তে ও ব্যক্তিস্বার্থের প্রতি সামান্যমাত্র ঝুঁকে পড়ে নি বরং বিশুদ্ধ ইসলামী রং, নিখুঁত ইসলামী আচার-আচরণ, বিশুদ্ধ আরবী ও সংস্কৃতি সর্বত্রই মুসলমানগণের মধ্যে বিদ্যমান ছিল। হযরত রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর সাথে উঠাবসা করেছেন, তাঁর সাথে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন এমন সাহাবায়ে কিরামের সংখ্যা তখন ছিল প্রচুর। তারা সকলের কাছেই ছিলেন শ্রদ্ধার পাত্র। তাঁদের নমুনা বা আদর্শ ছিল সকলেরই অনুকরণীয়। তখন মুসলমানদের মধ্যে পরস্পর অনৈক্য বা মতবিরোধের নাম-নিশানাও ছিল না। যুদ্ধক্ষেত্রে, মসজিদে, সেনাছাউনিতে, দেশ ভ্রমণের কাফেলাসমূহে মোটকথা সর্বত্রই মুসলমানগণ ছিল পারস্পরিক ঐক্য ও স্নেহ ভালবাসার প্রকৃষ্ট নমুনা। ঈর্ষা, শত্রুতা ও স্বার্থপরতা তখন ইসলামী সমাজের কোথাও দৃষ্টিগোচর হতো না। তখন মুসলমানগণ সব কাজই শুধুমাত্র মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে করত। তাঁদের জীবন এত সাদাসিধে ছিল যে, তারা রোমান ও ইরানীদের আড়ম্বরপূর্ণ আসবাব-সামগ্রী ও জাঁকজমকপূর্ণ জীবনোপকরণসমূহকে অবজ্ঞার চোখেই দেখতেন। মুসলমানগণের মধ্যে মতবিরোধের সৃষ্টি করতে পারে, এমন কোন বিষয়ের উদ্ভব তখনো হয়নি। প্রত্যেক লোকই তখন নিজেকে মহান আল্লাহর সামনে হাযির জ্ঞান করত। মোটকথা তা ছিল এমন এক যমানা, যেখানে সর্বত্র শুধু পুণ্য, শুভেচ্ছা ও সদিচ্ছা ব্যতীত কিছুই দৃষ্টিগোচর হত না। খিলাফতে রাশিদার শেষার্ধও নিঃসন্দেহে সততা ও সৌভাগ্যের যুগ। কিন্তু তা প্রথমার্ধের সমকক্ষ বা সমতুল্য নয়। কেননা, প্রথমার্ধের মধ্যে রাসূল-জীবনের পরিপূর্ণ নমুনা ও স্বচ্ছ প্রতিচ্ছবি যেভাবে পাওয়া যায় দ্বিতীয়ার্ধে সেরূপ পাওয়া যায় না।

মুসলমানগণের সাহস ও বীরত্ব মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন তথা ইসলামের মর্মবাণী প্রচারের চেষ্টায় নিয়োজিত থাকত। পার্থিব ধনসম্পদ ও দৈহিক সুখ-সম্ভোগের পিছনে তাদেরকে কখনো ছোটাছুটি করতে দেখা যায় নি। খলীফা তাঁর খিলাফত লাভের পূর্বেও তাকে ঐ একই কাপড় পরিধান করতে দেখা যেত। খিলাফতের উচ্চ মর্যাদা খলীফাগণের খাওয়া-পরা ও চলাফেরার মধ্যে কোনরূপ তারতম্যের সৃষ্টি করতে পারে নি। মুসলমানগণ ইরাক, সিরিয়া ও মিসরের উর্বর ও সবুজ শ্যামল এলাকা এবং বিলাস সামগ্রীতে ভরপুর ইরানী শহরসমূহ জয় করেন কিন্তু হযরত ফারুকে আযম (রা)-এর খিলাফতের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তারা সিরিয়ার খ্রিস্টান বা ইরানের অগ্নি-উপাসকদের জাঁকজমকপূর্ণ জীবন দ্বারা এতটুকুও প্রভাবিত হয় নি। যে মুসলমানগণ ইরাক ও পারস্য জয় করেন তাদের অবস্থান ছিল কূফা ও বসরার কয়েকটি ছাপড়া ও তাঁবুর মধ্যে। অনুরূপভাবে সিরিয়াস্থ ইসলামী বাহিনী ও সিরিয়ার শহরসমূহকে নিজেদের অবস্থানস্থল হিসাবে বেছে নেন নি বরং তারা মোসেল ও দামিশকের পাহাড়-প্রান্তরে ছাউনি তৈরী করে সেখানেই অবস্থান করতেন। শহর ও শহুরে জীবনের প্রতি তাঁহাদের কোন মোহ-ছিল না। তারা নিজেদের সৈনিক জীবন এবং সে জীবনের কষ্ট সহিষ্ণুতা নিয়েই সন্তুষ্ট ছিলেন। যে ইসলামী বাহিনী মিসর জয় করে, তারা সেখানকার জাঁকজমকপূর্ণ শহরে জীবন পরিত্যাগ করে ফুসতাতের সেনা ছাউনিকেই (পরবর্তী কালে কায়রো শহরে রূপান্তরিত হয়েছে) নিজেদের অবস্থানস্থল হিসাবে বেছে নেয়। হযরত সিদ্দীকে আকবর (রা) ও হযরত ফারূকে আযম (রা) মানুষকে শুধু সহজ সরল জীবন যাপনের প্রতি উদ্বুদ্ধই করেন নি, বরং ব্যক্তিগতভাবে নিজেরাও প্রতিটি ক্ষেত্রে সহজ সরল ও অনাড়ম্বর জীবনের অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন।

বায়তুল মালের একটি পয়সাও তারা অযথা খরচ করতেন না এবং অপরকেও অপব্যয় করার অনুমতি দিতেন না। খলীফা সকল মুসলমানকে সমভাবে ভালবাসতেন। এতে বর্ণ-গোত্রের মধ্যে কোন বৈষম্য করা হত না। দোষী ব্যক্তি—চাই সে যে কোন বংশের বা যে কোন গোত্রের হোক, খলীফা তাকে উচিত শাস্তিই দিতেন। কখনো কোন ব্যক্তি খলীফার দৃষ্টি আকর্ষণ করে একথা বলতে পারে নি যে তিনি নিজের আর্থিক অবস্থা সচ্ছল করার দিকে ঝুঁকে পড়েছেন। প্রচুর ধন-সম্পদ অর্জন করে নিজেকে বিত্তশালী করে তোলার প্রতি সে যুগের সাধারণ মানুষের কোন ঝোঁক ছিল না।

পরবর্তীতে আমরা খিলাফতে রাশিদার শেষার্ধ নিয়ে আলোচনা করবো। তখন লক্ষ্য করলে দেখা যাবে যে, প্রথমার্ধের বৈশিষ্ট্যসমূহ ক্রমে ক্রমে লোপ পেতে শুরু করেছে। আর খিলাফতে রাশিদার আমল শেষ হওয়ার সাথে সাথে সেগুলোর অস্তিত্বও সম্পূর্ণরূপে বিলীন হয়ে গেছে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন