hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামের ইতিহাস ১ম খণ্ড

লেখকঃ মাওলানা আকবর শাহ খান নজিববাদী

২৪৩
উসামা বাহিনীর যুদ্ধযাত্রা
হযরত নবী করীম (সাঃ)-এর ওফাতের কয়েক মাস পূর্বে ইয়ামন ও নজ্‌দ এলাকায় আসওয়াদ ও মুসায়লামার ফিতনা দেখা দিয়েছিল। ঐসব দেশের অধিবাসীরা ছিল সদ্য ইসলাম গ্রহণকারী। এখনো তারা পূর্ণরূপে ইসলাম এবং ইসলামের মূলতত্ত্ব সম্পর্কে জ্ঞাত হতে পারেনি। ইতিমধ্যে ভণ্ড নবীদের শয়তানী ফিতনা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে এবং এই নও-মুসলিমরা তাদের প্রতারণার শিকার হয়। নজ্‌দ অঞ্চলের অবস্থাও ছিল তথৈবচ। কিন্তু হযরত নবী করীম (সাঃ)-এর ওফাতের পূর্বেই আসওয়াদ আনাসীর দফা রফা হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ইয়ামান অঞ্চলের বিষাক্ত ক্রিয়া ও ফিতনার কারণ তখনো সম্পূর্ণ দূরীভূত হয়নি। হযরত নবী করীম (সাঃ)-এর ওফাতের খবর সারা আরব উপমহাদেশে অতি দ্রুত ও তড়িৎ গতিতে ছড়িয়ে পড়লো এবং ছড়াতে লাগলো। এই খবর একদিকে নতুন ইসলাম ও শিক্ষার মুখাপেক্ষী গোত্রগুলোর ধ্যান-ধারণায় পরিবর্তন সৃষ্টি করলো, অপরদিকে ভণ্ড নবীদের দুঃসাহস ও হিম্মত বাড়িয়ে তাদের কর্মকাণ্ডে শক্তি ও তরী দান করলো। সকল দেশ ও সকল জাতির মধ্যে যুদ্ধপ্রিয় ও ফিতনাবাজ লোকেরাও যুগে যুগে ইন্ধনই যুগিয়েছে। এই ধরনের লোকদের নতুনভাবে তাদের দুষ্টামির জন্য উপযুক্ত সুযোগ মেলে। খ্যাতি অন্বেষী ব্যক্তিবর্গ ও ক্ষমতালোভী গোত্রগুলোও তাদের স্বেচ্ছাচারিতা ও বিলাসিতার জন্য সুযোগ সন্ধান করতে লাগলো। ফলে, সব দিক থেকেই ধর্মত্যাগের খবর আসা শুরু হলো। এইসব খবরাখবর এতো উপর্যুপরি ও অধিক মাত্রায় মদীনায় এলো যে, যেগুলো শুনে শুনে সাহাবায়ে কিরামের চোখের সামনে যেনো ঘোর বিপদ ও দুঃখ-বেদনার পাহাড় ছিল। আর তাদের মন-মস্তিষ্কের উপর এতই বোঝা চেপেছিল যে তারা যদি হযরত নবী করীম (সাঃ)-এর শিক্ষালয় ও তাঁর তত্ত্বাবধানে ধৈর্য ও দৃঢ়তার শিক্ষা না পেতেন, তাহলে তাদের ও ইসলামের ধ্বংস ছিল বাহ্যত নিশ্চিত। মদীনা, মক্কা ও তায়িফ এই তিনটি স্থান ছাড়া অবশিষ্ট সমস্ত আরব উপমহাদেশে ধর্মত্যাগের অগ্নিশিখা প্রচণ্ড আকার ধারণ করেছিল। একই সাথে এ খবরও পৌঁছলো যে, মদীনা মুনাওয়ারার উপর সবদিক থেকে হামলা করার প্রস্তুতি চলছে। হযরত নবী করীম (সাঃ) হযরত উসামা ইব্‌ন যায়দ (রা)-কে তার অন্তিম মুহুর্তে সিরিয়া অভিমুখে রোমানদের মুকাবিলা করার জন্য মুসলিম বাহিনীসহ প্রেরণ করেছিলেন এবং হযরত নবী করীম (সাঃ)-এর রোগ বৃদ্ধির কারণে এই বাহিনী যাত্রা বিরতি করেছিল। এক্ষণে হযরত নবী করীম (সাঃ)-এর ওফাতের পর হযরত আবূ বকর সিদ্দীক (রা) এই বাহিনী প্রেরণ করতে চাইলেন। কিন্তু সাহাবায়ে কিরাম সব দিকে ধর্ম ত্যাগের খবর শুনে এবং মদীনার উপর হামলা করার আশংকা দেখা দেয়ায় এই বাহিনী প্রেরণ স্থগিত রাখার জন্য হযরত আবূ বকর সিদ্দীক (রা)-এর নিকট অনুরোধ করেন। সিদ্দীকে আকবর (রা)-এর ঈমানী শক্তি, মনোবল, হিম্মত ও সাহসিকতা, উদ্যম ও দৃঢ়তা পরিমাপ করুন! তিনি সবাইকে সাফ জবাব দিলেন, আমাকে যদি কেউ এ ব্যাপারে নিশ্চয়তাও প্রদান করে যে, এই বাহিনী প্রেরণ করার পর আমাকে মদীনায় কোন হিংস্র জন্তু একাকী পেয়ে ছিঁড়ে ফেলবে তবু আমি একটি বাহিনী প্রেরণ কখনো মুলতবি করবো না। কারণ এ বাহিনী স্বয়ং নবী করীম (সাঃ) প্রেরণ করেছিলেন। অতএব তিনি এই মর্মে নির্দেশ জারি করলেন যে, উসামা বাহিনীতে যেসব লোক অন্তর্ভুক্ত ছিল, তারা যেন যুদ্ধযাত্রার প্রস্তুতি গ্রহণ করে এবং মদীনার বাইরে সেনা শিবিরে দ্রুত সমবেত হয়।

এই নির্দেশ পালনার্থে সাহাবায়ে কিরাম হযরত উসামার ঝাণ্ডার নিচে সমবেত হন। হযরত উসামা (রা)-এর পিতা যায়দ ইব্‌ন হারিছা (রা) ছিলেন নবী (সাঃ)-এর মুক্ত গোলাম। তাই কোন কোন লোকের মনে তার নেতৃত্ব সম্পর্কে কুণ্ঠাবোধ ছিল। হযরত উসামা (রা)-এর বয়স ছিল তখন সতের বছর। তাই কারো কারো ইচ্ছা বয়স্ক কোন কুরায়শী নেতা নির্ধারণ করা হোক। যখন সমস্ত লশকর মদীনার বাইরে সমবেত হলো, তখন হযরত উসামা (রা) হযরত উমর ফারূক (রা)-কে (তিনিও এই বাহিনীর একজন সৈন্য ছিলেন) হযরত সিদ্দীক আকবর (রা)-এর নিকট এই পয়গাম দিয়ে প্রেরণ করেন যে, বড় বড় লোক সবই আমার সঙ্গে রয়েছেন, আপনি তাদেরকে আপনার কাছে ডেকে নিন এবং আপনার কাছে রেখে দিন। কেননা, আমি আশংকা করছি যে, মুশরিকরা হামলা করে আপনাকে এবং মুসলমানদেরকে কষ্ট দেবে। হযরত উমর (রা) সেনা ছাউনী থেকে সেনাপতির পয়গাম নিয়ে যখন রওয়ানা করছিলেন, তখন আনসাররাও একটি পয়গাম হযরত উমর (রা)-এর মাধ্যমে খলীফার নিকট প্রেরণ করেন। পয়গামটি ছিল এরূপ : আপনি এই বাহিনীর অধিনায়ক এমন কোন ব্যক্তিকে নির্ধারণ করুন, যিনি হবেন উসামা থেকে বয়সে বড় ও শরীফ বংশের। হযরত উমর (রা) এসে সর্বপ্রথম আনসারদের পয়গাম পেশ করলেন। তখন হযরত সিদ্দীক আকবর (রা) বললেন, এই বাহিনী প্রেরণ করার দরুন যদি সমস্ত বস্তি খালি হয়ে যায় এবং আমি স্বয়ং একাকী থেকে যাই আর হিংস্র জন্তুরা আমাকে তুলে নিয়ে যায়, তবুও এই বাহিনী প্রেরণ মুলতবি হতে পারে না। তারপর আনসারদের পয়গাম শুনে বললেন, তাদের অন্তরে এখন পর্যন্ত গর্ব ও অহংকারের চিহ্ন অবশিষ্ট রয়ে গেছে। একথা বলে তিনি উঠে দাঁড়ালেন এবং ঐ বাহিনীকে বিদায় করার জন্য পায়ে হেঁটে মদীনার বাইরে সেনা নিবাস পর্যন্ত চলে গেলেন। হযরত উসামাকে বাহিনীসহ বিদায় করলেন এবং নিজে হযরত উসামা (রা)-এর ঘোড়ার পাশে থেকে আলাপ করতে করতে চললেন। হযরত উসামা (রা) বললেন, হয়তো আপনি আরোহণ করুন অথবা আমি সওয়ারী থেকে নেমে পায়ে হেঁটে চলবো। সিদ্দীকে আকবর (রা) বললেন, আমি আরোহণ করবো না এবং তোমারও সওয়ারী থেকে নিচে নামার প্রয়োজন নেই। আর আমি যদি কিছু দূর আল্লাহর রাস্তায় বিদায় সম্বর্ধনাকারী হিসাবে তোমাদের ঘোড়ার সাথে পায়ে হেঁটে চলি, তাতে আমার কি ক্ষতি হবে? সিদ্দীকে আকবর (রা)-এর এই কার্য পদ্ধতিই ছিল আনসারদের উপরোক্ত পয়গামের মোক্ষম জবাব। উসামা (রা)-এর ঘোড়ার পাশাপাশি তাকে এইভাবে পায়ে হেঁটে চলতে দেখে গোটা বাহিনীই হতবাক হয়ে পড়লো এবং সবার অন্তরের সেই কুণ্ঠাবোধ দূর হয়ে তদস্থলে আনুগত্য ও একনিষ্ঠতার প্রেরণা সৃষ্টি হয়ে গেলো।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন