hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামের ইতিহাস ১ম খণ্ড

লেখকঃ মাওলানা আকবর শাহ খান নজিববাদী

১৭৮
খায়বার বিজয়ের পর
খায়বার জয় করে ফেরার সময় একটি মনযিলে ভোর বেলা হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ও সাহাবায়ে কিরামের কারোই ঘুম ভাঙ্গলো না। সকল মুসলিম মুজাহিদ ঘুমিয়ে রইলেন। এদিকে সূর্য উপরে উঠে গেলো। সবার আগে হযরত নবী করীম (সাঃ)-এরই ঘুম ভাঙ্গল। তিনি সবাইকে জাগালেন এবং সেখান থেকে একটু দূরে সরে গিয়ে তিনি ও সকল সাহাবা ফজরের সালাত আদায় করলেন। তিনি বললেন, এইভাবে যদি তোমাদের ঘুম না ভাঙ্গে, তবে যখন ঘুম ভাঙ্গবে, তখনই তোমরা সালাত আদায় করবে।

ইয়াহূদীরা খুব বিত্তশালী ছিল। খায়বারের যেসব জমি ইয়াহূদীদের অধিকারে ছিল, তাও ছিল খুব উর্বর ও মূল্যবান। খায়বার জয়ের মালে গনীমত ও কৃষিজমি মুসলমানদের মধ্যে বণ্টিত হওয়ার পর মুহাজিরদের দুরবস্থা ও দারিদ্র্য দূর হয়ে গেল। মুহাজিরগণ সম্পদশালীও হয়ে গেলেন এবং আনসারদের আর্থিক সাহায্য দ্বারাও তারা অভাবমুক্ত হয়ে গেলেন। হযরত নবী করীম (সাঃ) তখনো পর্যন্ত তাঁর ব্যক্তিগত খরচপত্র ও পরিবার-পরিজনদের জন্য কোন সাহাবীকে কষ্ট দেননি। আনসার বা মুহাজিরদের তরফ থেকে কোন হাদিয়া আসলে তিনিও নিজের পক্ষ থেকে তাদেরকে হাদিয়া পাঠাতেন। খায়বারের যমীন থেকে হযরত নবী করীম (সাঃ)-এর ভাগে পড়েছিল ফাদাকের সম্পত্তি। এর দ্বারা তিনি তার মেহমানদের মেহমানদারী এবং বনু কুরায়যার যমীন থেকে তার আত্মীয়-স্বজন, ইয়াতীম-মিসকীন ও গরীব মুসলমানদের প্রতিপালন করতেন। মক্কার মুশরিকরা যখন মুসলমানদের খায়বার আক্রমণের খবর পেলো, তখন তারা অধীর হয়ে এই যুদ্ধের ফলাফল প্রত্যক্ষ করার অপেক্ষায় রইল। হাজ্জাজ ইব্‌ন ইলাত সালমী (রা) নামক জনৈক মক্কাবাসী খুব বিত্তশালী ছিলেন। তিনি ভ্রমণের অজুহাতে বের হয়ে হযরত নবী করীম (সাঃ)-এর নিকট হাযির হয়ে ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন এবং খায়বারের যুদ্ধে তাঁর সঙ্গে ছিলেন। বিজয়ের পর তিনি তাঁকে বললেন, এখন পর্যন্ত মক্কাবাসী আমার ইসলাম গ্রহণ সম্পর্কে কিছু জানতে পারেনি। আপনি অনুমতি দিলে আমি মক্কায় গিয়ে আমার স্ত্রীর কাছে রক্ষিত অর্থ এবং লোকদের দেয়া ঋণ আদায় করে নিয়ে আসতে পারি। তিনি অনুমতি দিলেন। হাজ্জাজ ইব্‌ন ইলাত (রা) মক্কায় পৌঁছে দেখতে পেলেন যে, মক্কাবাসী খায়বারের খবর জানার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। তিনি মক্কাবাসীদের সাথে এক আজব কৌতুক করলেন। তাদের কাছে খায়বারের আসল খবর বর্ণনা না করে তার অর্থ আদায় করার ক্ষেত্রে সবার সাহায্য নিলেন। সমস্ত অর্থ বুঝে নিয়ে এবং কেবল হযরত আব্বাস ইব্‌ন আবদুল মুত্তালিব (রা)-কে বিদায়ের সময় খায়বার বিজয়ের আসল সংবাদ শুনিয়ে মক্কা থেকে রওয়ানা দিলেন। এরপর কাফিররা যখন হাজ্জাজের মুসলমান হওয়া এবং খায়বারে মুসলমানদের জয় লাভ করার খবর জানতে পারলো, তখন তারা আফসোসে হাত কচলাতে লাগলো এবং হাজ্জাজের এইভাবে সকল সম্পদসহ নির্বিঘ্নে কেটে পড়ার দরুন আরো হা-পিত্যেশ করতে লাগলো।

খায়বার থেকে মদীনায় ফিরে এসে হযরত নবী করীম (সাঃ) যেসব গোত্র মুসলমানদের মূলোচ্ছেদ করার অপচেষ্টা ও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছিল, তাদের উচিত শিক্ষাদান ও ভীতির সঞ্চারের জন্য বিভিন্ন দিকে ভিন্ন ভিন্ন সেনাদল প্রেরণ করলেন; যাতে কোন বড় বিদ্রোহ ও ভয়ানক ষড়যন্ত্র পল্লবিত হতে না পারে। নজদের ফাযারা গোত্রের দিকে হযরত আবূ বকর সিদ্দীক (রা)-কে সালামা ইবনুল আকওয়া (রা) ও অন্যান্য সাহাবার সাথে প্রেরণ করলেন। হাওয়াযিন সম্প্রদায়ের প্রতি হযরত উমর ফারূক (রা)-কে ত্রিশজন আরোহীর সাথে প্রেরণ করা হলো। হযরত আবদুল্লাহ্ ইব্‌ন রাওয়াহা (রা)-কে ত্রিশজন উষ্ট্রারোহীর সাথে বাশীর ইব্‌ন দারাম ইয়াহূদীকে গ্রেফতার করার জন্য পাঠানো হলো। এই ব্যক্তিই খায়বারের ইয়াহূদীদেরকে বিদ্রোহ করতে উদ্বুদ্ধ করেছিল। বাশীর ইব্‌ন সাআদ আনসারী (রা) ত্রিশজন আরোহীর সাথে বনূ মুর্‌রাকে দমন করার জন্য প্রেরিত হলেন। হযরত উসামা ইব্‌ন যায়দ (রা)-কে একটি দলের সাথে জুহায়না সম্প্রদায়ের হাররাকাত গোত্রের প্রতি পাঠানো হলো। হযরত গালিব ইব্‌ন আবদুল্লাহ কুলায়নীকে একটি দলের সাথে বনূ মালূহকে শাস্তিদানের জন্য পাঠানো হলো। হযরত আবূ দারদা সাল্‌মী (রা)-কে মাত্র তিনজন লোকের সাথে জু‘শাম ইব্‌ন মুআবিয়া গোত্রের সরদার রিফাআ ইব্‌ন কায়সকে দমন করার জন্য প্রেরণ করলেন। হযরত আবূ কাতাদা (রা) ও মুহাল্লাম ইব্‌ন জুছামাকে আন-নাআম’ নামক স্থানে প্রেরণ করা হলো। এই সবগুলো সেনাদলই জয় লাভ করে ফিরে এলো এবং সর্বত্রই মুসলমানদের বিজয় ও সাফল্য অর্জিত হলো। হযরত উসামা ইব্‌ন যায়দ (রা) যখন যুদ্ধকালে একজন ব্যক্তিকে হত্যা করার জন্য অসি উত্তোলন করলেন, তখন সে ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ পাঠ করলো। কিন্তু হযরত উসামা (রা) তাকে হত্যা করলেন। হযরত নবী করীম (সাঃ)-এর নিকট এই ঘটনা বর্ণিত হলো। তিনি খুব নাখোশ হলেন। হযরত উসামার নিকট কৈফিয়ত তলব করা হলো। তিনি বললেন, ঐ ব্যক্তি ভণ্ডামি ও জান বাঁচানোর জন্য কালেমা পাঠ করেছিল। হযরত নবী করীম (সাঃ) বললেন, তুমি কি তার অন্তর চিরে দেখেছিলে সে ভণ্ডামি করে কালেমা পড়েছিল? হযরত উসামা (রা) তাওবা করলেন এবং ভবিষ্যতে আর কখনো এই ধরনের ভুল করবেন না বলে ওয়াদা করলেন। অনুরূপভাবে হযরত আবূ কাতাদা (রা) ও মুহাল্লাম ইব্‌ন জুছামা পথ চলছিলেন। এমন সময় আশজা‘ সম্প্রদায়ের আমির ইব্‌ন আযবাত নামক জনৈক ব্যক্তিকে তার মালপত্রসহ যেতে দেখলেন। আমির ইব্‌ন আযবাত এই মুসলিম বাহিনীকে দেখে ইসলামী কায়দায় আসসালামু আলায়কুম বলে সালাম দিলো। মুসলমানরা শত্রু সম্প্রদায়ের লোককে এইভাবে সালাম করতে দেখে মনে করলেন যে, সে তার জান বাঁচানোর জন্য আসসালামু আলায়কুম থেকে ফায়দা হাসিল করতে চায়। তাই তার জবাব দান ও ওয়া আলায়কুমুস সালাম বলতে সবাই ইতস্তত করলেন এবং মুহাল্লাম ইব্‌ন জুছামা তার উপর হামলা করে তাকে হত্যা করলেন। এই যুদ্ধযাত্রীরা যখন মদীনায় ফিরে এলো এবং নবী করীম (সাঃ) এই ঘটনা জানতে পারলেন, তখন তিনি ভীষণ অসন্তুষ্ট হলেন এবং মুহাল্লামকে বললেন যে, তুমি একজন মু‘মিন ব্যক্তিকে কেন হত্যা করলে? তারপর তিনি আমির ইব্‌ন আযবাতের ওয়ারিশদের পঞ্চাশটি উট রক্তপণ দিয়ে সন্তুষ্ট করলেন এবং মুহাল্লাম ইব্‌ন জুছামা (রা) কিসাস হতে অব্যাহতি পেলেন।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন