hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামের ইতিহাস ১ম খণ্ড

লেখকঃ মাওলানা আকবর শাহ খান নজিববাদী

২৫০
তুলায় আসাদী
তুলায়হা ছিল একজন গণক ও জাদুকর। এই অবস্থায় সে ইসলাম গ্রহণ করে। কিন্তু হযরত নবী করীম (সাঃ)-এর শেষ জীবনে সে বিশ্বাসঘাতকতা করে স্বয়ং নিজে নবী হওয়ার দাবীদার সাজে। বনী ইসরাঈলের কোন কোন গোত্রও তার দলে শামিল হয়। তাকে দমন করার জন্য হযরত যিরার ইবনুল-আযওয়ার (রা) গমন করেছিলেন। তিনি তার কাজ সম্পন্ন না করতেই হযরত নবী করীম (সাঃ)-এর ওফাতের খবর ছড়িয়ে পড়ে। তাই হযরত যিরার (রা) এই অভিযান অসম্পূর্ণ রেখে তার সঙ্গী-সাথীদের নিয়ে মদীনায় ফিরে আসেন। তুলায়হা এই অবসরে তার শক্তি সংহত ও দলবল বৃদ্ধি করার সুবর্ণ সুযোগ পায়। গাত্‌ফান ও হাওয়াযিন প্রভৃতি গোত্র যারা যুল-কিসসা ও যুল-খাশাব-এ হযরত আবূ বকর সিদ্দীক (রা) দ্বারা পরাজিত হয়ে পলায়ন করেছিল– তুলায়হার নিকট গিয়ে তার দলভুক্ত হয়েছিল। নজ্‌দের বিখ্যাত বাযাখা কূপের কাছে তুলায়হা তার ক্যাম্প স্থাপন করে। তার আশপাশে গাত্‌ফান, হাওয়াযিন, বনূ আমির, বনূ তাঈ প্রভৃতি গোত্রের বিরাট সমাবেশ ঘটে।

হযরত আবূ বকর সিদ্দীক (রা) যখন একাদশ দলপতি নির্বাচিত করে প্রেরণ করতে চাইলেন, তখন হযরত আদী ইব্‌ন হাতিম (রা) মদীনা মুনাওয়ারায় উপস্থিত ছিলেন। তিনি হযরত খালিদ ইব্‌ন ওয়ালীদ (রা)-এর রওয়ানার পূর্বে তাঁর তাঈ গোত্রের দিকে রওয়ানা হন এবং তাদেরকে বুঝিয়ে ইসলামের দিকে ফিরিয়ে আনেন। এই গোত্রের যেসব লোক তুলায়হার দলভুক্ত হয়েছিল, তাদের নিকট তাঈ গোত্রের লোক পাঠিয়ে বলেন, তোমরা খালিদ (রা)-এর হামলার পূর্বে নিজ গোত্রের লোকদের সেখান থেকে ডেকে নিয়ে আসো। সুতরাং বনূ তাঈ’র সমস্ত লোক তুলায়হার দল থেকে চলে এলো এবং সবাই ইসলামে ফিরে এসে হযরত খালিদ ইব্‌ন ওয়ালীদ (রা)-এর দলে যোগ দিলো। হযরত খালিদ ইব্‌ন ওয়ালিদ (রা) বাযাখার ময়দানে পৌঁছে তুলায়হা বাহিনীর উপর হামলা করেন। ব্যাপক যুদ্ধ শুরু হওয়ার পূর্বে মুসলিম বাহিনীর দুই বাহাদুর হযরত উক্কাশা ইব্‌ন হিসন (রা) ও হযরত ছাবিত ইব্‌ন আকরাম আনসারী যারা নৈশ প্রহরায় রত ছিলেন শত্রুর হাতে শহীদ হয়েছিলেন। হযরত খালিদ ইব্‌ন ওয়ালীদ (রা) ছাবিত ইব্‌ন কায়স (রা)-কে এবং বনূ তাঈর মধ্যে আদী ইব্‌ন হাতিমকে দলপতি নিয়োগ করে শত্রুর উপর হামলা করেন। তুলায়হা বাহিনীর সেনাপতি ছিল তার ভাই। আর তুলায়হা একটি চাদর মুড়ি দিয়ে লোকদের ধোঁকা দেয়ার জন্য আলাদা এক পাশে ওয়াহীর অপেক্ষায় বসেছিল। লড়াই খুব জোরেশোরে শুরু হলো।

মুরতাদ বাহিনীর উপর যখন বিপর্যয়ের চিহ্ন ফুটে উঠলো, তখন তুলায়হা বাহিনীর জনৈক নেতা উয়ায়মা ইব্‌ন হিসন তুলায়হার নিকট এসে জিজ্ঞাসা করলো, কোন ওয়াহী নাযিল হয়েছে কিনা? তুলায়হা বললো, এখনো হয়নি। কিছুক্ষণ পর উয়ায়মা আবার জিজ্ঞেস করলো এবং ঐ একই জবাব পেলো। তারপর ময়দানে গিয়ে সে যুদ্ধ করতে লাগলো। তখন প্রতি মুহূর্তে মুসলমানদের বিজয় সূচিত হতে যাচ্ছিল এবং মুরতাদদের কদম দুলে উঠছিল। উয়ায়মা তৃতীয় বার পুনরায় তুলায়হার নিকট গেলো এবং ওয়াহী সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করলে সে বললো, হাঁ, জিবরাঈল আমার নিকট এসেছিলেন। তিনি বলে গেলেন যে, তোমার জন্য তাই হবে, যা তোমাদের ভাগ্যে লেখা আছে।” উয়ায়মা একথা শুনে বললো, লোক সকল! তুলায়হা মিথ্যাবাদী! আমি চলে গেলাম। একথা শোনামাত্রই মুরতাদরা তৎক্ষণাৎ পলায়ন করলো। অনেকে নিহত, অনেকে পলাতক ও অনেকে বন্দী হলো। অনেকে তখনই মুসলমান হয়ে গেলো। তুলায়হা সস্ত্রীক ঘোড়ায় সওয়ার হয়ে সেখান থেকে পলায়ন করলো এবং সিরিয়া গমন করে খুযাআ গোত্রে আশ্রয় নিলো। কিন্তু ধীরে ধীরে যখন সমস্ত গোত্র মুসলমান হয়ে গেলো এবং স্বয়ং তার গোত্রও ইসলাম গ্রহণ করলো, তখন তুলায়হাও মুসলমান হয়ে হযরত উমর ফারুক (রা)-এর খিলাফতকালে মদীনায় আগমন করলো এবং তাঁর হাতে বায়‘আত গ্রহণ করলো। উয়ায়না ইব্‌ন হিসনও বন্দী হয়ে হযরত খালিদ ইব্‌ন ওয়ালীদ (রা)-এর সামনে এলো। তাকে হযরত খালিদ (রা) সিদ্দীকে আকবর (রা)-এর নিকট মদীনায় প্রেরণ করলেন। হযরত সিদ্দীকে আকবর (রা) ইসলাম পেশ করলেন। সে অত্যন্ত রূঢ়ভাবে তা প্রত্যাখ্যান করলো। ফলে নিহত হলো।

তুলায়হা বাহিনী যখন বাযাখা নামক স্থানে পরাজিত হয়ে পলায়ন করলো, তখন পলায়নকারীদের মধ্যে গাত্‌ফান, সুলায়ম, হাওয়াযিন প্রভৃতি গোত্রের লোক হাওয়াব নামক স্থানে গিয়ে সমবেত হলো। সেখানে তারা সালমা বিন্‌তে মালিক ইব্‌ন হুযায়ফা ইব্‌ন বদর ইবন জা‘ফরকে তাদের নেত্রী বানালো এবং মুকাবিলার প্রস্তুতি গ্রহণে আত্মনিয়োগ করলো। হযরত খালিদ ইব্‌ন ওয়ালীদ (রা) এ ঘটনা অবগত হয়ে সেদিকে রওয়ানা হলেন। সালমাও তার বাহিনী নিয়ে মুকাবিলার জন্য এগিয়ে এলো এবং একটি উটনীর উপর সওয়ার হয়ে স্বয়ং সেনাপতির দায়িত্ব পালন করতে লাগলো। হযরত খালিদ ইব্‌ন ওয়ালীদ (রা) হামলা করলেন। ঘোর যুদ্ধ হলো। সালমার উটনী রক্ষা করতে গিয়ে একশ’ মুরতাদ নিহত হলো। শেষে সালমার উটনী যখমী হয়ে ভূমিতে পতিত হলো এবং সালমা নিহত হলো। তার নিহত হওয়ার সাথে সাথে মুরতাদরা পলায়ন করলো এবং নিমেষের মধ্যে ময়দান শূন্য হয়ে গেলো।

এদিকে এই হাঙ্গামা চলছিল, আর ওদিকে মদীনা মুনাওয়ারায় বনু সুলায়মের এক দলপতি আল-ফুজাত ইব্‌ন আব্‌দ ইয়ালীল হযরত আবূ বকর সিদ্দীক (রা)-এর নিকট উপস্থিত হয়ে বললো যে, আমি একজন মুসলমান। আপনি যুদ্ধাস্ত্র দিয়ে আমাকে সাহায্য করুন। আমি মুরতাদদের সাথে যুদ্ধ করবো। হযরত সিদ্দীকে আকবর (রা) তাকে এবং তার সঙ্গীদেরকে যুদ্ধোপকরণ প্রদান করে মুরতাদদের মুকাবিলায় প্রেরণ করেন। কিন্তু সে মদীনা থেকে বের হয়ে স্বীয় মুরতাদ হওয়ার কথা ঘোষণা করলো এবং বনূ সুলায়ম ও বনূ হাওয়াযিনের যেসব লোক মুসলমান হয়েছিল, তাদেরকে হত্যা করার জন্য অগ্রসর হলো। হযরত আবূ বকর সিদ্দীক (রা) এই সংবাদ অবগত হয়ে আবদুল্লাহ ইব্‌ন কায়সকে প্রেরণ করেন। তিনি এই ধোঁকাবাজ মুরতাদদেরকে পথিমধ্যেই পাকড়াও করলেন এবং সংঘাত ও সংঘর্ষের পর আল-ফুজাত ইব্‌ন আবদ ইয়ালীলকে বন্দী করে সিদ্দিকে আকবর (রা)-এর নিকট মদীনায় হাযির করা হলো এবং তাকে প্রাণদণ্ড প্রদান করা হলো।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন