hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামের ইতিহাস ১ম খণ্ড

লেখকঃ মাওলানা আকবর শাহ খান নজিববাদী

১২৩
সফরের আয়োজন
আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে হিজরতের নির্দেশ পাওয়া মাত্র হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ভরা-দুপুরে ঘর থেকে বেরিয়ে পড়লেন। গ্রীষ্মের মওসুমে দুপুর বেলা লোক রৌদ্রের উত্তাপ ও লু-হাওয়া থেকে আত্মরক্ষার জন্যে ঘরের কোণে আশ্রয় নেয়। রাস্তা-ঘাট থাকে জনশূন্য ও নিরিবিলি। হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) হযরত আবূ বকর (রা)-এর ঘরে গিয়ে উপস্থিত হলেন। এই অসময়ে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-কে আসতে দেখেই হযরত আবূ বকর (রা)-এর বুঝতে বাকী রইলো না যে, হিজরতের আদেশ নাযিল হয়ে গেছে। হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) তাকে জিজ্ঞেস করলেন : ঘরে বাইরের কেউ নেই তো? যখন জানতে পারলেন যে, আবূ বকর (রা) এবং তাঁর কন্যাদ্বয় আসমা ও আয়িশা ছাড়া অপর কেউই এখন ঘরে নেই তখন তাঁকে তিনি বললেন যে, ইয়াছরিবে (মদীনায়) হিজরতের হুকুম এসে গেছে।

হযরত আবূ বকর সিদ্দীক (রা) তখন জিজ্ঞেস করলেন : সফরসঙ্গী কে হবে? হযরত নবী করীম (সাঃ) বললেন : তুমিই হবে আমার সফরসঙ্গী। শুনে আবূ বকর (রা) এতই আনন্দিত হলেন যে, খুশিতে তার চোখ দু’টি থেকে টপটপ করে আনন্দাশ্রু ঝরতে লাগলো। তিনি বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি পূর্ব থেকেই দু’টি উটনী খরিদ করে খুব ভাল করে খানা-দানা দিয়ে মোটা তাজা করে রেখেছি। তার একটি আমি আপনার হাতে তুলে দিচ্ছি। হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বললেন, আমি তার মূল্য শোধ করবো। অগত্যা হযরত আবূ বকর (রা) মূল্য নিতে বাধ্য হলেন। ঠিক তক্ষুণি হিজরত করার আয়োজন শুরু হয়ে গেলো। হযরত আসমা বিন্‌ত আবূ বকর (রা) ছাতুর থলে এবং খাবার-দাবার ঠিক করতে লেগে গেলেন। হযরত আয়িশা (রা)-র বয়স তখন খুবই কম। হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) হযরত আবূ বকর (রা)-কে সংবাদ দিয়েই নিজ ঘরে ফিরে আসলেন। সামনের রাতটিই ছিলো মুশরিকদের আগের রাতের প্রস্তাব বাস্তবায়নের জন্য নির্ধারিত রাত। আজই তারা তাকে হত্যা করবে। সন্ধ্যার সময়ই তারা তাঁর বাড়ি অবরোধ করলো। তারা অপেক্ষায় রইলো যে, যখন তিনি রাতের বেলা নামাযের উদ্দেশ্যে বের হবেন তখন একযোগে হামলা করে তাকে হত্যা করবে। তিনি ওয়াহীর নির্দেশ অনুসারে হযরত আলী (রা)-কে তার বিছানায় শুইয়ে দিয়ে চাদর দিয়ে তাঁকে ঢেকে দিলেন। মক্কাবাসীদের যেসব গচ্ছিত দ্রব্য তার কাছে রাখা ছিলো তাও তিনি হযরত আলী (রা)-কে বুঝিয়ে দিলেন এবং বললেন যে, সকালে উঠেই এ গচ্ছিত দ্রব্যগুলো মালিকদের বুঝিয়ে দিও। তারপর তুমিও মদীনায় চলে এসো। এসব সম্পন্ন করে রাতের আঁধারে তিনি ঘর থেকে বেরিয়ে গেলেন। সর্বপ্রথম তিনি সূরা ইয়াসীনের শুরুর দিকের আয়াতসমূহ فَهُمْ لَا يُبْصِرُونَ পর্যন্ত পড়ে এক মুষ্টি মাটিতে ফুঁক দিয়ে কাফিরদের দিকে নিক্ষেপ করলেন। তারপর তাদের সম্মুখ দিয়েই অকপটে বেরিয়ে গেলেন, কিন্তু কাফিরদের কেউই তাকে দেখতে পেলো না।

وَإِذْ يَمْكُرُ بِكَ الَّذِينَ كَفَرُوا لِيُثْبِتُوكَ أَوْ يَقْتُلُوكَ أَوْ يُخْرِجُوكَ ۚ وَيَمْكُرُونَ وَيَمْكُرُ اللَّهُ ۖ وَاللَّهُ خَيْرُ الْمَاكِرِينَ .

স্মরণ কর, কাফিরগণ তোমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে তোমাকে বন্দী করিবার জন্য, হত্যা করিবার অথবা নির্বাসিত করিবার জন্য এবং তাহারা ষড়যন্ত্র করে এবং আল্লাহ্ও কৌশল করেন; আর আল্লাহই সর্বশ্রেষ্ঠ কৌশলী। (৮: ৩০)

হযরত আবূ বকর সিদ্দীক (রা) বাহন উটনী দুটো আবদুল্লাহ ইব্‌ন উরায়কিতের হাতে ন্যস্ত করেন। উক্ত আবদুল্লাহ্ যদিও মুসলমান ছিলো না কিন্তু নির্ভরযোগ্য ছিলো বিধায় মদীনা পর্যন্ত পথ দেখিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সঙ্গত পারিশ্রমিকের বিনিময়ে তখন আবূ বকর (রা) তাকে পথ প্রদর্শক নিয়োগ করেছিলেন। হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) নিজ বাড়ি থেকে বেরিয়ে হযরত আবূ বকর (রা)-এর বাড়িতে গেলেন। তিনি হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর প্রতীক্ষায়ই ছিলেন। কাল-বিলম্ব না করে উভয়ে তক্ষুনি বেরিয়ে পড়লেন এবং মক্কার নিম্নাঞ্চল দিয়ে চার মাইল দূরে অবস্থিত ছওর পর্বতের গুহায়-যা ছওর গুহা নামে বিখ্যাত-গিয়ে উপনীত হলেন। তারা সেখানে আত্মগোপন করে রইলেন।

এ দিকে মক্কায় হযরত আলী (রা) সারারাত ধরে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর বিছানায় নিদ্রা গেলেন। মক্কার কাফিররাও সারা রাত ধরে বাড়ি অবরোধ করে দাঁড়িয়ে রইলো। তারা হযরত আলী (রা)-কে শায়িত দেখে নিশ্চিত রইলো যে, হযরত মুহাম্মদ তো বিছানায়ই শুয়ে আছেন। তারা তার ঘর থেকে বেরিয়ে আসার জন্য অধীরভাবে অপেক্ষা করছিলো। ফজরের সময় যখন হযরত আলী (রা) নামায পড়ার জন্যে ঘুম থেকে জেগে উঠলো তখন তারা জিজ্ঞেস করলো : মুহাম্মদ কোথায়? হযরত আলী (রা) বললেন : আমি তার কি জানি?

জানার কথা তো তোমাদের! কেননা তোমরা পাহারায় ছিলে। আমি তো সারা রাত শুয়ে কাটিয়েছি। কাফিররা হযরত আলী (রা)-কে পাকড়াও করলো। তারা তাকে প্রহার করলো এবং কিছুক্ষণ পর্যন্ত তাঁকে বন্দী করে রাখলো। তার পর ছেড়ে দিলো। হযরত আলী (রা) ধীরে সুস্থে সমস্ত গচ্ছিত দ্রব্য মালিকদের হাতে প্রত্যর্পণ করলেন।

এখানে লক্ষণীয়, কাফিররা হযরত নবী (সাঃ)-এর প্রাণের বৈরী ছিল, কিন্তু তাঁর বিশ্বস্ততার প্রতি এতই আস্থাশীল যে, তাদের মূল্যবান সোনা-দানা অলংকারাদি তাঁরই কাছে গচ্ছিত রাখতো। তিনিও মক্কা ত্যাগের সময়ও তার এ বিশ্বস্ততা রক্ষার জন্যে সেই প্রিয় চাচাতো ভাই, যাকে তিনি আপন পুত্রসম প্রতিপালন করছিলেন, শুধু এজন্যে একাকী মক্কায় রেখে যাচ্ছেন যেন তিনি সেই গচ্ছিত দ্রব্যাদি যথারীতি মালিকের হাতে প্রত্যর্পণ করে আসেন।

কাফিররা তখন আলী (রা)-কে ছেড়ে সোজা হযরত আবূ বকর (রা)-এর বাড়ীতে গিয়ে উপস্থিত হলো। দরজায় করাঘাত করতেই হযরত আসমা (রা) বেরিয়ে এলেন। আবূ জাহেল জিজ্ঞেস করলো, হে বালিকা! তোর পিতা কোথায়? তিনি বললেন : আমি তা জানিনে। বলতেই দুরাচার এমনি জোরে তাঁকে চপেটাঘাত করলো যে তার কানের বালি (দুল) নীচে পড়ে গেল। তারপর তারা মক্কার আনাচে-কানাচে তন্ন-তন্ন করে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর সন্ধান করতে লাগলো, কিন্তু কোথাও তার খোঁজ পেলো না। অবশেষে তারা ঘোষণা করলো : যে কেউ মুহাম্মদ (সাঃ)-কে জীবিত অথবা মৃত অবস্থায় ধরে দেবে তাকে একশ’ উট পুরস্কার স্বরূপ দান করা হবে। এ পুরস্কারের ঘোষণা শুনে অনেকেই মক্কার চতুর্দিক দূর-দূরান্ত পর্যন্ত তার খোঁজে বেরিয়ে পড়লো।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন