hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামের ইতিহাস ১ম খণ্ড

লেখকঃ মাওলানা আকবর শাহ খান নজিববাদী

৪১৩
যুদ্ধের পরিসমাপ্তি
আলী (রা) আশতারের সফল আক্রমণ প্রত্যক্ষ করে যেমন আনন্দিত ও আশান্বিত হয়েছিলেন, মুআবিয়া (রা) বাহিনীর বিপর্যস্ত অবস্থা প্রত্যক্ষ করে তেমনি নিরাশ ও দিশেহারা হয়ে পড়েছিলেন। আমর ইবনুল ‘আস মুআবিয়াকে বলেন, কী দেখছ, সকলকে নির্দেশ দাও, যেন তারা অবিলম্বে নিজ নিজ বর্শায় কুরআন মজীদ গেঁথে তা উঁচু করে ধরে এবং উচ্চৈঃস্বরে বলতে থাকে هٰذَا كِتَابُ اللَّهُ بَيْنَنَا وَبَيْنَكُمْ (আমাদের এবং তোমাদের মধ্যকার ফায়সালা এ কুরআনই করবে)। সঙ্গে সঙ্গে সবাইকে এই নির্দেশ দেওয়া হল এবং সিরিয়ার প্রত্যেকটি সৈন্য নিজ নিজ বর্শায় কুরআন গেঁথে তা উঁচিয়ে ধরে উচ্চৈঃস্বরে বলতে লাগল, আমরা কুরআনের ফায়সালা মানি। কোন কোন দিক থেকে এ আওয়াজ উঠল, মুসলিম ভ্রাতৃবৃন্দ। আমাদের যুদ্ধ তো ধর্মের জন্য। অতএব এসো, আমরা কুরআনের ফায়সালাই মেনে নেই এবং এখানেই যুদ্ধের ইতি টানি। কোন কোন দিক থেকে এ আওয়াজও উঠল, মুসলিম ভ্রাতৃবৃন্দ। এ কুরআনকেই হাকিম হিসাবে মেনে নাও। যুদ্ধে যদি সিরীয়রা ধ্বংস হয়ে যায় তাহলে রোমানদের আক্রমণকে কে প্রতিরোধ করবে? আর যদি ইরাকীরা ধ্বংস হয়ে যায় তাহলে প্রাচ্যের আক্রমণকারীদের মুকাবিলা কে করবে? আলী (রা)-এর সৈন্যরা কুরআনকে বর্শায় গেঁথে ঊর্ধ্বে তুলে ধরা দেখে যুদ্ধ থেকে হাত গুটিয়ে নিল। আব্দুল্লাহ্ ইব্‌ন আব্বাস (রা) সিরীয়দের এই কৌশল লক্ষ্য করে বললেন, এতক্ষণ যুদ্ধ হচ্ছিলো, এবার প্রবঞ্চনা শুরু হল। আলী (রা) তার লোকদের বুঝিয়ে বললেন, তোমরা এই মুহূর্তে শৈথিল্য প্রদর্শন করো না। কেননা শীঘ্রই তোমরা জয়লাভ করবে। লোকেরা অনবরত যুদ্ধ করতে করতে হাঁপিয়ে উঠেছিল। তাছাড়া মুসলমানদের মধ্যকার এই যুদ্ধকে তারা ইসলাম বিরোধী মনে করছিলো। তাই তারা যুদ্ধের পরিবর্তে আপোস-মীমাংসার ঐ আবেদনকে যথার্থ বিবেচনা করল এবং সঙ্গে সঙ্গে নিজ নিজ তরবারি খাপের মধ্যে ঢুকিয়ে রেখে দিল। তখন পর্যন্ত উভয় বাহিনীর শক্তি সমান সমান বলে প্রতীয়মান হচ্ছিলো। আলী (রা)-এর বাহিনীর বিজয় যে অতি নিকটবর্তী তা তিনি ও অন্যান্য অভিজ্ঞ সমরনায়ক যেমন বুঝতে পারছিলেন, সাধারণ সৈন্যরা তেমন বুঝতে পারছিল না। প্রকৃতপক্ষে নিজ নিজ অবস্থানে থেকে তা বুঝে উঠার শক্তিও তাদের ছিল না। এ কারণেই আলী (রা)-এর বেশির ভাগ লোক সিরীয়দের ঐ ইচ্ছাকে তাদেরই প্রতিফলন এবং একান্ত সময়োচিত কর্মপন্থা বলে বিবেচনা করল। এ অবস্থা দেখে সাবাঈদের চোখও খুলে গেল। তারাও তৎপর হয়ে উঠল এবং আলী (রা)-এর চারপাশে একত্রিত হয়ে তার উপর অনবরত চাপ সৃষ্টি করতে লাগল যেন তিনি অবিলম্বে আশতারকে যুদ্ধ থেকে নিরস্ত করে পিছনে ডেকে নিয়ে আসেন।

আশতার তার সাফল্যকে নিশ্চিত জেনে অত্যন্ত উৎসাহ-উদ্দীপনার সাথে যুদ্ধ করছিলেন। কিন্তু যারা আশতারকে পিছনে ডেকে নিয়ে আসা ও যুদ্ধ বন্ধ করে দেওয়ার দাবী উত্থাপন করেছিল তাদের সাথে সাধারণ সৈন্যরাও এসে যোগ দিতে থাকে। ফলে একদিকে লোকেরা যুদ্ধ বন্ধ করে দেয় এবং অপর দিকে সিরীয়রা সম্মিলিতভাবে আশতারের হামলা প্রতিরোধ করার সুযোগ পায়। উপরন্তু হযরত আলীকে তার লোকেরা চতুর্দিক থেকে ঘিরে ফেলে এবং তাঁকে সম্বোধন করে অশিষ্টের মত বলতে থাকে, যদি আপনি আশতারকে ফিরে আসার হুকুম না দেন তাহলে আমরা আপনার সাথেও সেই আচরণ করব যে আচরণ আমরা উসমানের সাথে করেছি। এই ভয়ানক অবস্থা দেখে আলী (রা) সঙ্গে সঙ্গে লোক পাঠিয়ে আশতারকে এই বলে ডেকে পাঠান যে, এখানে বিশৃঙ্খলার দ্বার উন্মুক্ত হয়ে গেছে। অতএব যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তুমি আমার কাছে ফিরে এসো। আশতার অনিচ্ছা সত্ত্বেও ফিরে এলেন। সঙ্গে সঙ্গে লড়াই থেমে গিয়ে সমগ্র যুদ্ধক্ষেত্রে নেমে এল শান্তি ও নীরবতা। আশতার ফিরে এলে আলী (রা) তার কাছে প্রকৃত ঘটনা বর্ণনা করলেন। আশতার অত্যন্ত আক্ষেপ করে বললেন, “হে ইরাকবাসী! যখন সিরীয়দের উপর তোমাদের বিজয় লাভ ছিল সুনিশ্চিত ঠিক তখনই তোমরা তাদের প্রতারণার ফাঁদে পা দিলে।” সাধারণ লোকের মধ্যে যুদ্ধ বিরোধী মনোভাব এমনভাবে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছিল যে, তারা আশতারের উপর হামলা করতে উদ্যত হয়, কিন্তু আলী (রা)-এর ধমকে তা থেকে বিরত থাকে। এরপর আশআস্ ইব্‌ন কায়স আগে বেড়ে হযরত আলীর কাছে নিবেদন করেন, হে আমীরুল মু‘মিনীন! লোকেরা তো কুরআনকে তাদের ফায়সালাকারী মেনে নিয়েছে এবং যুদ্ধও বন্ধ হয়ে গেছে। এখন যদি আমাকে অনুমতি দেন তাহলে আমি মুআবিয়ার কাছে গিয়ে তার ইচ্ছার কথা জানতে পারি। আলী (রা) তাকে অনুমতি দিলে তিনি আমীরে মুআবিয়ার কাছে গিয়ে তাকে জিজ্ঞেস করেন, তোমরা কুরআনকে বর্শায় গেঁথে কি উদ্দেশ্যে ঊর্ধ্বে তুলে ধরেছিলে? তিনি উত্তরে বলেন, আমরা এবং তোমরা উভয়ই আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূলের হুকুম মেনে নেব। আমরা আমাদের পক্ষ থেকে এক ব্যক্তিকে মনোনীত করব এবং তোমরা তোমাদের পক্ষ থেকে এক ব্যক্তিকে মনোনীত করবে। আর ঐ দুই ব্যক্তির কাছ থেকে এই মর্মে অঙ্গীকার নেওয়া হবে যে, তারা কুরআন মজীদ অনুসরণে এই বিবাদের একটা মীমাংসা করবে। এরপর তারা উভয়ে যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে আমরা উভয় পক্ষই তা মেনে নেব।

এরপর আশআস ইব্‌ন কায়স আলী (রা)-এর কাছে ফিরে আসেন এবং আমীরে মুআবিয়ার কথা তাঁকে শোনান। আলী (রা)-এর চারপাশের লোকেরা একথা শুনে সমস্বরে বলে উঠল, আমরা এতে সম্মত আছি এবং এ ধরনের ফায়সালাই আমরা সমর্থন করি। এরপর আমীরে মুআবিয়া ও সিরিয়াবাসীদের জিজ্ঞেস করা হলো, তোমরা তোমাদের পক্ষ থেকে কাকে হাকিম নিযুক্ত করতে চাও? তারা আমর ইবনুল ‘আস (রা)-এর নাম বলল। এবার আলী (রা)-এর দরবারে বিষয়টি উত্থাপিত হল। তিনি বললেন, এ কাজের জন্য আমি আবদুল্লাহ ইব্‌ন আব্বাসকেই পছন্দ করি। কিন্তু তাঁর দরবারের লোকেরা বলল, তিনি হচ্ছেন আপনার আত্মীয়। আমরা এমন ব্যক্তিকে মধ্যস্থতাকারী মনোনীত করতে চাই যার সাথে আপনার ও আমীরে মুআবিয়ার সমান সম্পর্ক রয়েছে। তখন তিনি বললেন, তোমরা কাকে পছন্দ কর? লোকেরা বলল, আবূ মূসা আশআরী (রা) এ কাজের জন্য সর্বাধিক যোগ্য বলে আমরা মনে করি। তিনি বললেন, আমি আবূ মূসা (রা)-কে নির্ভরযোগ্য মনে করি না। তোমরা যদি ইবনুল আব্বাসকে আমার আত্মীয় হওয়ার কারণে মনোনীত না কর তাহলে মালিক আশতারকে মনোনীত করে ফেল। তিনি আমার আত্মীয় নন। লোকেরা বলল মক্কী জীবন থেকেই হযরত আবূ মূসা (রা) রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ)-এর সংসর্গে ছিলেন। তিনি একজন সম্মানিত সাহাবী। কিন্তু মালিক আশতার এই গুণাবলী থেকে বঞ্চিত। অতএব আমরা আবূ মূসার উপর তাকে অগ্রাধিকার দিতে পারি না। শেষ পর্যন্ত আবূ মূসা আশআরীই হযরত আলীর পক্ষের হাকিম নিযুক্ত হন। তখনো হযরত আলীর দরবারে এ সম্পর্কে আলোচনা চলছিল—এমন সময় আমীরে মুআবিয়ার পক্ষ থেকে আমর (রা) অঙ্গীকারনামা লেখার জন্য সেখানে এসে হাযির হন।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন