hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামের ইতিহাস ১ম খণ্ড

লেখকঃ মাওলানা আকবর শাহ খান নজিববাদী

১২৪
ছওর গিরি গুহায় আফতাব (সূর্য) ও মাহতাব (চাঁদ)
রাতের অন্ধকারে প্রেমিক ও প্রেমাস্পদ যখন ছওর গুহার নিকটে গিয়ে পৌঁছলেন, তখন হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-কে বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখে প্রথমে আবূ বকর (রা) গুহার অভ্যন্তরে ঢুকলেন। তিনি তার অভ্যন্তর ভাগ পরিষ্কার করলেন এবং গুহার ছিদ্রসমূহ খুঁজে বের করে পরনের কাপড় ছিঁড়ে ছিঁড়ে সেগুলো বন্ধ করতে লাগলেন। এভাবে সমস্ত ছিদ্র বন্ধ করার পর তিনি হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-কে গুহার ভিতরে নিয়ে গেলেন। এ চন্দ্র ও সূর্য পূর্ণ তিন দিন তিন রাত এ গুহায় আত্মগোপন করে থাকেন। কুরায়শদের বড় বড় সর্দাররা পুরস্কারের ঘোষণা দিয়ে নিজেরাও সন্ধানী লোকদের সাহায্যে পায়ের চিহ্ন ধরে এগুতে এগুতে ছওর গুহার মুখ পর্যন্ত গিয়ে উপস্থিত হলো। সন্ধানীরা জানালো, এরপর তো আর পায়ের কোনো চিহ্নই পাওয়া যাচ্ছে না, হয় মুহাম্মদ এখানেই কোথাও লুকিয়ে আছেন, নতুবা এখান থেকে সোজা আসমানে উঠে গেছেন। একজন বললো, তাহলে এ গুহার অভ্যন্তরে গিয়েই দেখা যাক না। দ্বিতীয়জন বললো, এত অন্ধকার বিভীষিকাময় গুহায়ও মানুষ ঢুকতে পারে নাকি? আমরা তো বহুকাল ধরে এগুলোকে এভাবেই দেখে আসছি। তৃতীয়জন বললো, দেখ, দেখ, এ গুহার মুখে মাকড়সা জাল বুনে রেখেছেন। কেউ যদি একান্তই এখানে ঢুকতোই তবে এ জাল অবশ্যই ছিন্ন হয়ে যেতো। চতুর্থজন বললো, ঐ দেখ, ওখান থেকে কবুতর উড়ে যাচ্ছে। তার ডিমও দেখা যাচ্ছে—যাতে বসে তা দিচ্ছিল। সকলেই তখন এ ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে গেল যে, গুহায় আর কোন লোক নেই। নিশ্চিন্ত হয়ে সবাই অন্য দিকে পথ ধরলো। কাফিররা গুহার এতই নিকটে পৌঁছে গিয়েছিল যে, হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ও আবূ বকর (রা) তাদের পা স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছিলেন। তাদের কথাবার্তার আওয়াজও স্পষ্টই শোনা যাচ্ছিলো। এমন বিপজ্জনক অবস্থায় হযরত আবূ বকর (রা) বলে উঠলেন : হুযুর! কাফিররা তো এসেই গেল! এখন উপায়? হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বললেন :

لاتحزن ان الله معنا

ভীত-বিহবল হয়ো না, আল্লাহ্ নিশ্চয়ই আমাদের সাথে রয়েছেন।

তারপর তিনি বললেন :

وما ظنك باثنين الله ثالثهما

সে দুই ব্যক্তি সম্পর্কে তোমার কী ধারণা যাদের তৃতীয় জন হচ্ছেন স্বয়ং আল্লাহ্ তা‘আলা?

কাফিররা তাদের খোঁজাখুজিতে ব্যর্থমনোরথ হয়ে ফিরে গেল। একে একে তিন দিন অতিবাহিত হওয়ার পর কাফিররা একেবারে ক্লান্ত-শ্রান্ত ও নিরাশ হয়ে পড়লো। হযরত আবূ বকর সিদ্দীক (রা) তদীয় পুত্র আবদুল্লাহ ইতিপূর্বেই বলে রেখেছিলেন যে, কাফিরদের অবস্থা ও তাদের সারাদিনের কর্মতৎপরতা সম্পর্কে তিনি যেন রাত্রে এসে অবহিত করে যান। অনুরূপভাবে তদীয় গোলাম আমির ইব্‌ন ফুহায়রাকে নির্দেশ দিয়ে রেখেছিলেন যে, ছাগলপালকে সারা দিন এদিক-সেদিক চরিয়ে রাতের বেলা তিনি যেন মেষটাকে চরাতে চরাতে ছওর গুহার কাছে নিয়ে আসেন। আসমা বিন্‌ত আবূ বকর (রা)-এর উপর এ দায়িত্ব অর্পণ করে রেখেছিলেন যে, আহার্য দ্রব্যাদি সযত্নে প্রস্তুত করে রাতের বেলা যেন তা গুহাবাসীদের কাছে পৌঁছিয়ে দেন। আবদুল্লাহ ও আসমা ভাইবোন দু’জন নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করে যখন ঘরে ফিরতেন তখন আমির ইব্‌ন ফুহায়রা ছাগল দোহন করে এবং গুহাবাসীদেরকে তা পান করিয়ে ছাগলপাল নিয়ে অধিক রাতে মক্কায় প্রবেশ করতেন। এভাবে আবদুল্লাহ ও আসমার পদচিহ্ন ছাগলপালের চলাচলের দ্বারা মুছে যেতো। যখন মক্কাবাসীদের উৎসাহ-উদ্দীপনায় ভাটা পড়ার সংবাদ জানা গেলো তখন আবদুল্লাহ ইব্‌ন উরায়কিতের কাছে সংবাদ পাঠানো হলো যেন প্রতিশ্রুতি অনুসারে উটনী দু’টি নিয়ে ছওর পাহাড়ের পাদদেশে এসে উপস্থিত হন। এখানে আবদুল্লাহ, আসমা ও আমির ইব্‌ন ফুহায়রার গোপনীয়তা রক্ষায় প্রশংসা না করলে নাও করতে পারেন, কেননা তারা ছিলেন হযরত আবূ বকর (রা)-এর ঘনিষ্ঠজন। কিন্তু আবদুল্লাহ্ ইব্‌ন উরায়কিতের গোপনীয়তা রক্ষা, প্রতিশ্রুতির মর্যাদা রক্ষা ও ধৈর্য-স্থৈর্যের প্রশংসা না করে পারা যায় না–যে নিছক একজন শ্রমিকই ছিল আর সে ব্যক্তি মুসলমানও ছিল না। তার এসব গুণের প্রতি গভীরভাবে মনোনিবেশ করলে আরবদের জিদ, আত্মমর্যাদাবোধ ও জাতীয় আভিজাত্যবোধের প্রশংসা না করে পারা যায় না। আবদুল্লাহ্ ইব্‌ন উরায়কিত উক্ত দু’টি উটনী এবং তার নিজস্ব একটি উট নিয়ে ছওর পাহাড়ের পাদদেশে ছওর গুহার নিকট রাতের বেলা এসে উপনীত হলেন। রাতটি ছিল রবিউল আউয়াল চাঁদের প্রথম রাত। হযরত আসমা বিনত আবূ বকর (রা)-ও সফরের জন্যে ছাতু প্রভৃতি আহার্য দ্রব্য নিয়ে এসে উপস্থিত হলেন। হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ও আবূ বকর সিদ্দীক ছওর গুহা থেকে বেরিয়ে পড়লেন। একটি উটনীতে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) আরোহণ করলেন। সে উটনীটির নাম ছিলো কাসওয়া। অপর উটনীতে হযরত আবূ বকর (রা) ও তার গোলাম আমির ইব্‌ন ফুহায়রা আরোহণ করেন। পথ প্রদর্শক আবদুল্লাহ ইব্‌ন উরায়কিত তার নিজস্ব উটে আরোহণ করলেন। চার ব্যক্তির এ সংক্ষিপ্ত কাফেলাটি সাধারণ পথ এগিয়ে মদীনার অন্য পথে এগিয়ে চললো। যেহেতু তখন পশ্চাদ্ধাবনের আশংকা ছিল, তাই যাত্রা শুরুর পূর্বে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটলো এই যে, হযরত আবূ বকর-তনয়া আসমা ছাতুর যে থলে ঘর থেকে নিয়ে এসেছিলেন, ভুলক্রমে তিনি তা লটকানোর জন্যে কোন ফিতে বা রশি নিয়ে আসননি। হযরত আসমা তখন কালবিলম্ব না করে আপন কোমরের ফিতা খুলে অর্ধেক কোমরে বেঁধে বাকী অর্ধেক দিয়ে তা উটের হাওদার সাথে বেঁধে দিলেন। হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) তার এ তাৎক্ষণিক ও সময়োপযোগী কাজটি দেখে অত্যন্ত প্রীত হন এবং তাঁকে ‘যাতু’ন-নিতাকায়ন বা দুই ফিতাধারিণী’ বলে অভিহিত করেন। পরবর্তীকালে হযরত আসমা এ খেতাবেই প্রসিদ্ধি লাভ করেন। এ আসমা বিন্‌ত আবূ বকর (রা) ছিলেন আবদুল্লাহ্ ইব্‌ন যুবায়রের জননী। এটাও একটা উল্লেখযোগ্য ব্যাপার এই যে, হযরত আবূ বকর (রা) যাত্রা শুরুর সময় তার ঘরের সমুদয় নগদ অর্থ সম্পদ, যার পরিমাণ ছিল পাঁচ ছয় হাজার দিরহাম, সাথে নিয়ে রওয়ানা হয়েছিলেন। তাঁর পিতা আবূ কুহাফা তখনো কুফরের উপর অবিচল ছিলেন এবং অন্ধ ছিলেন। তিনি ঘরে তার নাতনীদ্বয়কে লক্ষ্য করে বললেন, আবূ বকর নিজেও গেল এবং সমুদয় অর্থ-সম্পদও নিয়ে গেল। হযরত আসমা বললেন : দাদাজান, আব্বা আমাদের জন্যে অনেক অর্থ রেখে গেছেন। বলেই তিনি একটি বস্ত্র খণ্ডে অনেক কাঁকর মুড়িয়ে ঠিক সেই স্থানে নিয়ে রেখে দিলেন, যেখানে সাধারণত টাকার থলে রাখা হতো। তিনি দাদার হাত ধরে সেখানে নিয়ে গেলেন। তিনি হাতড়ে দেখে নিয়ে ধারণা করলেন যে, আসলেও অর্থ সেখানে আছে। তখন তিনি নাতনীদেরকে বললেন, তাহলে আবূ বকর গেছে, তজ্জন্য চিন্তা নেই।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন