hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামের ইতিহাস ১ম খণ্ড

লেখকঃ মাওলানা আকবর শাহ খান নজিববাদী

২৪
গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র
গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে জনগণ সাধারণ ভোটে তিন অথবা পাঁচ বছরের জন্যে কোন এক ব্যক্তিকে তাদের শাসক নির্বাচিত—করে যাকে প্রেসিডেন্ট বা রাষ্ট্রপতি নামে অভিহিত করা হয়ে থাকে। একজন মানব দরদী রাষ্ট্রপতির যতটা শক্তি থাকা প্রয়োজন সাধারণত এ ব্যবস্থায় নির্বাচিত রাষ্ট্রপতির সে ক্ষমতা থাকে না। সামান্য সামান্য ব্যাপারেও এ ব্যবস্থার রাষ্ট্রপতিকে নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নিতে হয়, যেন রাষ্ট্রের সত্যিকারের কোন কেন্দ্রীয় পরিচালকের শক্তি নেই এবং মূল শক্তি বহুধা বিভক্ত হয়ে সমগ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিভক্ত হয়ে পড়ে। বাহ্যত এ রাষ্ট্র ব্যবস্থাটি খুবই চমকপ্রদ ও জনপ্রিয়। কেননা, এতে জনগণ আত্মনিয়ন্ত্রণের সুযোগ হাতে পায় এবং স্বৈরতন্ত্রের শক্তিকে দুর্বল দেখতে পেয়ে আনন্দবোধ করে। কিন্তু এতে তারা নিজেদের অনেক ক্ষতি সাধন করে থাকে। বল্গাহারা স্বাধীনতা এবং সর্বতোভাবে স্বাধীন আস্থা মানবীয় মর্যাদা রক্ষার অনুকূল প্রতিপন্ন হয় না। এ কারণেই ফ্রান্স, আমেরিকা প্রভৃতি গণতান্ত্রিক দেশে আধ্যাত্মিকতা উৎসন্নে গেছে। আধ্যাত্মিকতা ও ধর্মের শিক্ষাশ্রিত উঁচুদরের নৈতিকতা এমন কোন রাষ্ট্রে প্রতিষ্ঠিত থাকতেই পারে না, যেখানে গণতন্ত্রের তরঙ্গমালা উপচে পড়ছে। গণতন্ত্রের রাষ্ট্রব্যবস্থা মানুষকে এমনি বল্গাহীন করে তোলে যে, তা মানুষের বেশীক্ষণ আল্লাহমুখী ও আল্লাহ প্রেমিক হিসাবে কায়েম থাকতে দেয় না। নির্ভেজাল গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা হচ্ছে নাস্তিকতা ও ধর্মহীনতার চারণভূমি। মরুভূমিতে যখন শস্য উৎপন্ন হতে পারে না, পানি থেকে বের করে নিলে মাছ যেমন জীবন ধারণ করতে পারে না, অন্ধকার স্যাতসেঁতে স্থানে মানুষ যেভাবে সুস্থ থাকতে পারে না, তেমনি নির্ভেজাল গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে ধর্মীয় ধ্যান-ধারণা চিন্তা-চেতনা, বিধি-নিষেধ ও ইবাদত-বন্দেগীর বিকাশ ঘটতে পারে না এবং আল্লাহ প্রদত্ত কোন ধর্মীয় ব্যবস্থা সেখানে বেশীক্ষণ জীবন্ত থাকতে পারে না। ধর্মের প্রাণ হচ্ছে আনুগত্য এবং সত্য ধর্মের আনুগত্য মানব চরিত্রের সেই মৌলিক স্পিরিটকে অক্ষুন্ন রাখে যে, প্রত্যেক সম্মানার্হ ঊর্ধ্বতম সত্তাকে যথাযথ সম্মান দেখাতে হবে এবং আল্লাহ্ তা‘আলা যেহেতু সর্বোচ্চ সত্তা এবং নিরংকুশ কামালিয়ত বা পূর্ণতা কেবল তারই, তাই তাঁর দরবারে সিজদারত হয়ে “সুবহানা রাব্বিয়াল আলা’এর স্বীকারোক্তি করা উচিত। দুনিয়ার প্রত্যেক নবী-রাসূল পথ-প্রদর্শকই এ সঙ্গত দাবীই করেছেন যে, হে মানব জাতি। আমার বিধি-নিষেধ মেনে নাও, আমার আনুগত্য কর। আর এটা অনস্বীকার্য যে, এ নবী-রাসূল, পথ-প্রদর্শকদের নিঃশর্ত অনুসরণ ও আনুগত্যের মাধ্যমেই মানব জাতি চিরদিন মঙ্গল ও সাফল্য লাভ করেছে এবং সর্বনিম্ন স্তর থেকে সর্বোচ্চ স্তরে উন্নীত হয়েছে। তাই যে রাষ্ট্রব্যবস্থা এ উন্নত ব্যবস্থার জন্যে বিষতুল্য এবং মানুষকে বল্গাহারা করে দিতে প্রেরণা যোগায়, তার ফলাফল মানবজাতির জন্যে কখনো মঙ্গলজনক হতে পারে না। পৃথিবীর প্রতিটি পিতা তার সন্তানের আনুগত্য আশা করে এবং সন্তানের জন্যেও তার পিতার আনুগত্যে মঙ্গল নিহিত রয়েছে। প্রতিটি শিক্ষক তার শাগরিদের আনুগত্য চায়। প্রত্যেক পীর তার মুরীদের আনুগত্য চায় এবং শাগরিদ ও মুরীদের জন্যে তাদের শিক্ষক ও পীরের আনুগত্যেই মঙ্গল নিহিত। প্রতিটি নেতা তার দলীয় কর্মীর আনুগত্যের প্রত্যাশী এবং কর্মীর মঙ্গল নেতার আনুগত্যেই নিহিত। প্রতিটি সিপাহসালার যুদ্ধক্ষেত্রে তার সৈনিকের আনুগত্যের প্রত্যাশী এবং সৈনিকের মঙ্গলও তার সেনাপতির নিঃশর্ত আনুগত্যের মধ্যে নিহিত। গণতন্ত্রের সামগ্রিক প্রভাবে পুত্র তার পিতার, শাগরিদ তার উস্তাদের, মুরীদ তার পীরের, জনতা তার নেতার, সৈনিক তার সিপাহসালারের আনুগত্যকে একটি বোঝাস্বরূপ মনে করে এবং ধীরে ধীরে সে আনুগত্যের প্রবণতা বিনষ্ট হয়ে যায়। ফলে মানুষ নাস্তিকতা ও ধর্মহীনতার দিকে ঝুঁকে পড়ে যা তাকে মানবতার গণ্ডি থেকে বের করে পশুত্বের স্তরে নামিয়ে দিতে চায়। গণতন্ত্রের ব্যবস্থা যেহেতু ধর্ম বিরোধী প্রতিপন্ন হয়েছে তাই এ ব্যবস্থা দ্বারা ধর্মের যে পরিমাণ ক্ষতি সাধিত হবে, সুখ-শান্তি সেই পরিমাণই রাষ্ট্র ও জাতি থেকে বিদায় নেবে। কেননা, সত্যিকারের রাজনীতি ও সুখ-শান্তি কেবল ধর্মের মাধ্যমেই পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে। রাষ্ট্র এ ব্যাপারে কোনদিনই সাফল্যমণ্ডিত হতে পারেনি। আপন বাড়ীর গণ্ডিতে, নির্জন স্থানে বিজন বন বা মরুভূমিতে, পথে-ঘাটে প্রান্তরে মানুষ রাষ্ট্রের ক্ষমতা বা পুলিশের আওতা থেকে সম্পূর্ণ স্বাধীন থাকে। এ সব ক্ষেত্রে মানুষকে চুরি-ডাকাতি, রাহাজানি, ব্যভিচার প্রভৃতি পাপাচার থেকে একমাত্র ধর্মই নিবৃত্ত রাখতে পারে। রাষ্ট্র এ ব্যাপারে কিছুই করতে পারে না। সমগ্র বিশ্বের মানুষ যদি ধর্মহীন হয়ে যায়, তা হলে পৃথিবী চুরি, ডাকাতি, হত্যা, রাহাজানি, ব্যভিচার, মিথ্যাচার প্রভৃতি পাপাচারে পূর্ণ একটি জাহান্নামের রূপ পরিগ্রহ করবে।

ইউরোপ আমেরিকার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রসমূহে এমন কোন সৌন্দর্য আমরা দেখতে পাই না যদ্দরুন সঙ্গতভাবে আমরা ঈর্ষা করতে পারি। এসব দেশে ধর্মহীনতার জয়জয়কার। এদের সমাজ অশ্লীলতায় পূর্ণ। প্রতিশ্রুতিভঙ্গ, বিশ্বাসঘাতকতা, স্বার্থপরতা, মিথ্যাচার, প্রতারণা প্রভৃতি তাদের সমাজ জীবনের অঙ্গ হয়ে দাঁড়ায়। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে কোন নেপোলিয়ন, কায়সার, উইলিয়াম, জুলিয়াস সীজার, তৈমুর, হ্যানিবল, সালাহউদ্দীন, সুলায়মান কানুনী, শেরশাহ, আলমগীর কস্মিনকালেও সৃষ্টি হতে পারে না বা সৃষ্টি হলেও বেঁচে থাকতে পারে না। এমন ব্যবস্থায় কোন খালিদ ইব্‌ন ওয়ালীদের জন্মগ্রহণ অসম্ভব ব্যাপার। মানুষের প্রতারিত হওয়ার এবং হীনম্মন্যতার শিকার হওয়ার সম্ভবত এটাই সর্বনিকৃষ্ট নমুনা যে, আজ আমরা অনেক মুসলিম সন্তানকেও পাশ্চাত্যের ঐ গণতন্ত্রের প্রত্যাশী লক্ষ্য করছি। অথচ এ ব্যবস্থাটি হচ্ছে ইসলামের সম্পূর্ণ পরিপন্থী এবং মানব জাতির জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। মুসলমানদের এ প্রবণতার মূলে রয়েছে তাদের কাপুরুষতা ও হীনম্মন্যতা। ধর্ম সম্পর্কে অজ্ঞতা এবং কুরআন হাদীস সম্পর্কে চিন্তাভাবনা না করার ফলেই এ হীনম্মন্যতার সৃষ্টি হয়েছে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন