hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামের ইতিহাস ১ম খণ্ড

লেখকঃ মাওলানা আকবর শাহ খান নজিববাদী

৩৩১
হযরত ফারূকে আযম (রা)-এর শাহাদত বরণ
ফিরূয নামীয় মুগীরা ইব্‌ন শু‘বা (রা)-এর জনৈক ক্রীতদাস (যার ডাক নাম ছিল আবূ লূ’লূ’) মদীনা তাইয়িবাতে বসবাস করত। একদিন সে বাজারে হযরত ফারূকে আযমের কাছে অভিযোগ করল : আমার প্রভু মুগীরা ইব্‌ন শু’বা আমার কাছ থেকে অধিক মাশুল আদায় করে থাকেন। কাজেই, আপনি এর পরিমাণ হ্রাস করে দিন। হযরত ফারুকে আযম (রা) জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি কাজ কর? সে উত্তরে বললো, আমি কামার, চিত্রকর ও ছুতারের কাজ করি। হযরত ফারূকে আযম (রা) বললেন, তোমার এসব শিল্পকর্মের অনুপাতে মাশুলের পরিমাণ তো অধিক নয়। একথা শুনে আবূ লূ’লূ’ মনে মনে অত্যন্ত অসন্তুষ্ট হয়। হযরত ফারূকে আযম (রা) তারপর তাকে বললেন, আমি শুনেছি তুমি এমন চাক্কি বানাতে পার, যা বাতাসের উপর ভর করে চলে। তুমি আমার জন্যও এ ধরনের একটি চাক্কি বানিয়ে দাও না? সে উত্তর দিল, বেশ আমি আপনাকে এমন একটি চাক্কি বানিয়ে দেব, যার শব্দ প্রাচ্য-প্রতীচ্যের সর্বত্র শোনা যাবে। পরদিন লোকেরা ফজরের নামাযের জন্য মসজিদে নববীতে সমবেত হন। আবূ লূ’লূ’ একটি খঞ্জর নিয়ে মসজিদে ঢুকল। যখন নামাযের জন্য সারি বাঁধা হল এবং হযরত ফারূকে আযম (রা) ইমাম হিসাবে আগে বেড়ে নামায পড়াতে শুরু করলেন, তখন মুক্তাদিগণের প্রথম সারিতে দণ্ডায়মান আবূ লূ’লূ’ খানিকটা এগিয়ে গিয়ে খঞ্জর দ্বারা হযরত ফারূকে আযম (রা)-কে একে একে ছয়টি আঘাত করল। একটি আঘাত ঠিক নাভীর নীচে পড়ে। হযরত ফারূকে আযম (রা) হযরত আবদুর রহমান ইব্‌ন আওফ (রা)-কে টেনে নিয়ে ইমামতি করার জন্য নিজের জায়গায় দাঁড় করিয়ে দেন এবং আঘাতের যন্ত্রণায় বেহুশ হয়ে সঙ্গে সঙ্গে মেঝেতে লুটিয়ে পড়েন।

হযরত আবদুর রহমান ইব্‌ন আওফ (রা) এমন অবস্থায় নামায পড়ালেন যে, ভীষণভাবে আহত হযরত ফারূকে আযম (রা) তার সামনেই পড়েছিলেন। আবূ লূ’লূ’ আঘাত হেনেই মসজিদ থেকে পালিয়ে যায়। লোকেরা তাকে ধরার চেষ্টা করে এবং এ অবস্থায় আরো কয়েকজন তার হাতে আহত হয়। শেষ পর্যন্ত তাকে বন্দী করা হয়। কিন্তু বন্দী হওয়ার সাথে সাথে সে আত্মহত্যা করে। ফজরের নামায আদায় করার পর লোকেরা হযরত ফারূকে আযম (রা)-কে মসজিদ থেকে উঠিয়ে তার ঘরে নিয়ে যায়। চেতনা ফিরে আসতেই তিনি জিজ্ঞেস করেন, আমার হত্যাকারী কে? লোকেরা আবূ লূ’লূ’র কথা বললে তিনি বললেন মহান আল্লাহর শোক্‌র, আমি এমন কোন লোকের হাতে মারা পড়িনি, যে নিজেকে মুসলমান বলে দাবী করেছে কিংবা যে মহান আল্লাহকে একটিবারের মত হলেও সিজদা করেছে। একজন চিকিৎসক এসে তাকে দুধ ও নাবীয (খেজুরের নির্যাস থেকে তৈরী পানীয় পান করালেন। কিন্তু তা প্রায় সঙ্গে সঙ্গে ক্ষতস্থান দিয়ে বের হয়ে গেল। এ অবস্থা দেখে উপস্থিত সকলেই তাঁর জীবন সম্পর্কে নিরাশ হয়ে পড়েন এবং তাঁর কাছে আবেদন করেন : হে আমীরুল মু‘মিনীন! যে ভাবে হযরত আবূ বকর (রা) আপনাকে তার স্থলাভিষিক্ত করে গেছেন, সেভাবে আপনিও কাউকে আপনার স্থলাভিষিক্ত করে যান।

হযরত ফারূকে আযম (রা) তখন আবদুর রহমান ইব্‌ন আওফ (রা), হযরত সা‘দ ইব্‌ন আবূ ওয়াক্কাস (রা), হযরত যুবায়র ইব্‌ন আওয়াম (রা), হযরত তালহা (রা), হযরত আলী (রা) ও হযরত উসমান ইব্‌ন আফফান (রা)-কে তলব করেন। হযরত তালহা (রা) তখন মদীনা মুনাওয়ারাতে ছিলেন না। হযরত ফারূকে আযম (রা) বাকী পাঁচজনকে সম্বোধন করে বললেন, আপনারা তিন দিন পর্যন্ত হযরত তালহা (রা)-এর জন্য অপেক্ষা করবেন। যদি তিনি তিন দিনের মধ্যে চলে আসেন, তাহলে তাকেও আপনাদের দলভুক্ত করে নেবেন। তারপর তিনি স্বীয় পুত্র আবদুল্লাহ্ ইব্‌ন উমর (রা)-কে ডেকে বললেন, যদি খলীফা নির্বাচনের ক্ষেত্রে মতবিরোধের সৃষ্টি হয়, তাহলে তুমি সেই দলে যোগ দেবে, যে দলে আবদুর রহমান ইব্‌ন আওফ (রা) রয়েছে। তারপর তিনি হযরত আবূ তালহা আনসারী (রা) এবং হযরত মিকদাদ ইব্‌ন আসওয়াদ (রা)-কে পাঠিয়ে নির্দেশ দেন : যখন তাঁরা খলীফা নির্বাচনের উদ্দেশ্যে পরামর্শ করার জন্য কোন জায়গায় সমবেত হবেন, তখন তোমরা দু’জন দরজায় দাঁড়িয়ে থাকবে এবং যতক্ষণ পর্যন্ত তারা সলা-পরামর্শের কাজ শেষ না করবেন, তোমরা কাউকে ভিতরে ঢুকতে দেবে না। তারপর তিনি উপরোক্ত ব্যক্তিবৃন্দকে সম্বোধন করে বললেন : “আপনাদের মধ্যে যিনি খলীফা নির্বাচিত হবেন, তার উদ্দেশ্যে আমার ওসীয়ত তিনি যেন আনসারগণের অধিকারের প্রতি বিশেষ লক্ষ্য রাখেন। কেননা, তারা হচ্ছেন সেই লোক যারা হযরত রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-কে সাহায্য করেছিলেন এবং মুহাজিরগণকে নিজেদের ঘরে স্থান দিয়েছিলেন। আনসারগণ আপনাদের অনেক উপকার করেছেন। কাজেই, আপনাদের উচিত, তাদের উপকার করা, তাঁদের ভুল-ভ্রান্তিকে যথাসম্ভব উপেক্ষা করা এবং তাদেরকে ক্ষমা করে দেওয়া। আপনাদের মধ্যে যিনি খলীফা হবেন, তার উচিত হবে, মুহাজিরগণের প্রতি বিশেষ লক্ষ্য রাখা। কেননা, তাঁরাই ইসলামের মূল উপাদান। অনুরূপভাবে যিম্মীদের প্রতিও পুরাপুরি লক্ষ্য রাখা উচিত। সেই সাথে মহান আল্লাহ্ ও মহান আল্লাহর পিয়ারা রাসূলের প্রতি একজন মুসলমানের যেসব দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে, সেগুলোর প্রতিও লক্ষ্য রাখতে হবে। আর যিম্মীদেরকে যে সমস্ত প্রতিশ্রুতি প্রদান করা হবে, সেগুলো যেন অবশ্যই পূরণ করা হয়। তাদের থেকে তাদের শত্রুদেরকে যেন প্রতিহত করা হয় এবং তাদেরকে সামর্থ্যের অধিক কষ্ট যেন দেওয়া না হয়।”

তারপর তিনি পুত্র হযরত আবদুল্লাহ ইব্‌ন উমর (রা)-কে নির্দেশ দিলেন : তুমি হযরত আয়িশা সিদ্দীকা (রা)-এর কাছে গিয়ে আবেদন জানাও, যেন তিনি হযরত আবূ বকর সিদ্দীক (রা)-এর পাশে আমাকে দাফন করার অনুমতি দান করেন। হযরত আবদুল্লাহ্ (রা) হযরত আয়িশা সিদ্দীকা (রা)-এর কাছে গিয়ে হযরত ফারূকে আযম (রা)-এর অন্তিম আকাঙ্ক্ষার কথা তাঁকে জানান। হযরত আয়িশা সিদ্দীকা (রা) বলেন, আমি সাব্যস্ত করেছিলাম এ জায়গায় আমারই কবর হবে। কিন্তু হযরত উমর ফারুক (রা)-এর অন্তিম ইচ্ছা অনুযায়ী আমি তাঁকেই আমার উপর প্রাধান্য দিলাম। এ জায়গায় যেন তাকেই দাফন করা হয়। হযরত আবদুল্লাহ্ (রা) যখন হযরত ফারূকে আযম (রা)-কে ঐ সংবাদ শোনান, তখন তিনি অত্যন্ত সন্তুষ্ট হন এবং বলেন : আমার সবচেয়ে বড় আকাঙ্ক্ষাটি পূরণ হল। হিজরী ২৩ সনের ২৭ যুলহাজ্জাহ বুধবার তিনি আহত হন এবং হিজরী ২৪ সনের ১লা মুহাররম শনিবার ইনতিকাল করেন।

তার খিলাফতের মেয়াদ কাল সাড়ে দশ বছর। হযরত সুহায়ব (রা) তার জানাযার নামায পড়ান। হযরত উছমান গনী (রা), হযরত আলী (রা), হযরত যুবায়র (রা), হযরত আবদুর রহমান ইব্‌ন আওফ (রা) এবং হযরত আবদুল্লাহ্ ইব্‌ন উমর (রা) হযরত ফারূকে আযম (রা)-কে কবরে নামিয়ে শেষবারের মত শুইয়ে দেন।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন