hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামের ইতিহাস ১ম খণ্ড

লেখকঃ মাওলানা আকবর শাহ খান নজিববাদী

৪১৮
খারিজীদের বিশৃঙ্খলা
ইতিপূর্বে বর্ণিত হয়েছে যে, আলী (রা) হাকিমদের ফায়সালা শোনার জন্য চারশ’ লোককে আযরাজে পাঠানোর সময় হারকূস ইব্‌ন যুহায়র তাকে বলেছিল, আপনি এখনো মধ্যস্থতাকারীদের ফায়সালা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন এবং সিরিয়ার উপর হামলা করুন। কিন্তু আলী (রা) তার একথা মেনে নিতে অস্বীকার করেছিলেন এবং বলেছিলেন, আমরা অঙ্গীকার ভঙ্গ করতে পারব না এবং নিজেদের লিখিত প্রতিশ্রুতি থেকেও ফিরে আসতে পারব না। এখন যখন হারকুস ও অন্যান্য খারিজীরা দেখল যে, স্বয়ং আলী (রা) মধ্যস্থতাকারী হাকিমদের ফায়সালাকে অমূলক এবং অগ্রহণীয় প্রমাণ করে লোকদেরকে সিরিয়া আক্রমণে উৎসাহিত করছেন তখন যুরআ’ ইবনুল বারহ্ ও হারকূস ইব্‌ন যুহায়র এ দু’জন খারিজী নেতা আলী (রা)-এর কাছে এসে বলে, আপনি প্রথমে আমাদের সঠিক পরামর্শ ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছেন, অথচ এখন আপনি নিজেই সেই কাজ করছেন যার কথা আমরা আপনাকে বলেছিলাম। মধ্যস্থতাকারীদের ফায়সালার প্রতি সম্মতি প্রকাশ করে আপনি ভুল করেছিলেন, কিন্তু সে ভুল আপনি স্বীকার করেন নি। অথচ এখন আপনি মধ্যস্থতাকারীদের ফায়সালা অমূলক আখ্যা দিয়ে সিরিয়া আক্রমণের সংকল্প নিয়েছেন। অতএব এখন থেকে আমরা তখনই আপনাকে সমর্থন করব যখন আপনি আপনার ভ্রান্তি ও অপরাধ স্বীকার করে তা থেকে তওবা করবেন।

আলী (রা) উত্তরে বললেন, মধ্যস্থতাকারীদের সমর্থন এবং তাদেরকে হাকিম হিসাবে মেনে নিতে তোমরাই তো আমাকে বাধ্য করেছিলে। অন্যথায় যুদ্ধের মাধ্যমে তখনই তো একটা ফায়সালা হয়ে যেত। এটা কেমন কথা যে, এখন তোমরা আমাকে অপরাধী আখ্যা দিয়ে তওবা করতে বলছ। তারা বলল, আচ্ছা আমরা স্বীকার করছি যে, আমরা অপরাধ করেছি এবং এজন্য আমরাও তওবা করছি। আপনিও আপনার অপরাধের কথা স্বীকার করে সেজন্য তওবা করুন, এরপর সিরীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য অগ্রসর হোন। আলী (রা) বললেন, আমি তো অপরাধের কথা স্বীকারই করছি না; অতএব তওবা করব কিসের জন্য? একথা শুনে ওরা উভয়ে সেখান থেকে উঠে দাঁড়াল এবং لا حكم الا لله (আল্লাহ্ ছাড়া কারো হুকুম মানি না) এই শ্লোগান দিতে দিতে নিজ নিজ গন্তব্যের দিকে চলে গেল। এরপর আলী (রা) কূফার মসজিদে বক্তৃতা দিতে দাঁড়ালে মসজিদের এক কোণা থেকে এক খারিজী উচ্চৈঃস্বরে বলে উঠল, لا حكم الا لله (আল্লাহ ছাড়া কারো সালিশ মানি না)। আলী (রা) তখন বললেন, দেখ, এই লোকেরা সত্য কথার দ্বারা বাতিলকে প্রকাশ করছে। এরপর তিনি বক্তৃতা দিতে শুরু করলে পুনরায় আওয়াজ উঠে ‘লা হুকমা ইল্লা লিল্লাহ্’। আলী তখন বলেন, তোমরা আমার সাথে অত্যন্ত অসঙ্গত আচরণ করছ। আমরা তোমাদের মসজিদে আসতে বাধা দেই না। যতক্ষণ তোমরা আমাদের সাথে ছিলে আমরা তোমাদের গনীমতের সম্পদের সমান ভাগ দিয়েছি। আর আমরা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব না যতক্ষণ তোমরা আমাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণ না করবে। আমরা এখন তোমাদের ব্যাপারে আল্লাহর নির্দেশের অপেক্ষা করছি—দেখি তিনি কি ফায়সালা করেন।

একথা বলে তিনি মসজিদ থেকে বের হয়ে আপন ঘরের দিকে চলে যান। তারপর খারিজীরাও পরস্পর সলা-পরামর্শের উদ্দেশ্যে আবদুল্লাহ্ ইব্‌ন ওয়াহবের ঘরে একত্রিত হয়। সেখানে আবদুল্লাহ ইব্‌ন ওয়াহব, হারকূস ইব্‌ন যুহায়র, হামযা ইব্‌ন সিনান, যায়দ ইব্‌ন হুসায়ন তাঈ, শুরায়হ ইব্‌ন আদান প্রমুখ এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে যে, এখন খারিজীদের উচিত কূফা থেকে বেরিয়ে গিয়ে কোন একটি পাহাড়ী এলাকায় অবস্থান গ্রহণ করা, তথা আলীর হুকুমতের বাইরে গিয়ে নিজেদের একটি পৃথক হুকুমত প্রতিষ্ঠা করা। হামযা ইব্‌ন সিনান আসাদী বলল, এখান থেকে রওয়ানা হওয়ার পূর্বে আমাদের উচিত, কোন এক ব্যক্তিকে আমীর মনোনীত করা এবং তার হাতে নিজেদের পতাকা তুলে দেওয়া।

এ কাজের জন্য পরদিন শুরায়হের ঘরে পুনরায় বৈঠক বসল। ঐ বৈঠকে আবদুল্লাহ ইব্‌ন ওয়াহবকে খারিজীরা তাদের আমীর মনোনীত করল এবং তার হাতে বায়‘আত করল। আবদুল্লাহ ইব্‌ন ওয়াহব বলল, এখন আমাদেরকে এখান থেকে এমন কোন শহরে চলে যেতে হবে যেখানে আমরা আল্লাহর হুকুম জারি করতে পারি। কেননা আমরাই হচ্ছি আহলে হক বা ন্যায়পন্থী। শুরায়হ্ বলল, মাদায়েনের দিকে আমাদের চলে যাওয়া উচিত। কেননা সেখানে যে সামান্য সৈন্য রয়েছে তাদেরকে পরাস্ত করে অতি সহজেই আমরা এলাকার উপর নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হব। এরপর আমরা সেখানে আমাদের বসরায় অবস্থানরত ভাইদেরকেও ডেকে নিয়ে যাব। যায়দ ইব্‌ন হুসায়ন বলল, যদি আমরা সকলে একযোগে বের হই তাহলে এটা আশ্চর্য নয় যে, আমাদের পশ্চাদ্ধাবন করা হবে। অতএব এটাই সমীচীন যে, আমরা দু’ দু’ চার চার বা দশ দশ জন হয়ে এখান থেকে বের হব এবং সোজা মাদায়েনে না গিয়ে প্রথমে নাহরাওয়ান প্রান্তরে গিয়ে সমবেত হব। তারপর পত্র মারফত বসরার ভাইদেরকেও সেখানে ডেকে নিয়ে যাব। এই অভিমত সকলেই পছন্দ করে। এরপর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তারা ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে কূফা থেকে বের হয়। সেই সাথে তারা বসরার খারিজীদের কাছে লিখে, তোমরাও বসরা থেকে বের হয়ে নাহরাওয়ানে এসে আমাদের সাথে মিলিত হও।

আশআর ইব্‌ন আযাকী তাইমী পাঁচশ’ খারিজীর একটি দল নিয়ে বসরা থেকে বের হয়। আলী (রা) যখন জানতে পারলেন যে, বহু সংখ্যক খারিজী কূফা থেকে বের হয়ে মাদায়েন অভিমুখে রওয়ানা হয়ে গেছে তখন তিনি সেখানকার শাসক সা‘দ ইব্‌ন মাসউদের কাছে একজন দ্রুতগামী দূত পাঠিয়ে তাকে নির্দেশ দেন, খারিজীদের প্রতিরোধ কর এবং তাদের সম্পর্কে সতর্ক থাক। সা‘দ নিজ ভ্রাতুষ্পুত্রকে নিজের স্থলাভিষিক্ত করে স্বয়ং একটি বাহিনী নিয়ে খারিজীদের প্রতিরোধ করার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। পথিমধ্যে ‘কুরজ’ নামক স্থানে খারিজীদের একটি দলের সাথে তার সংঘর্ষ হয়। সন্ধ্যা পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকে। রাতের অন্ধকারে খারিজীরা দজলা নদী অতিক্রম করে চলে যায়। এরপর বসরার খারিজীরা সেখানে গিয়ে পৌঁছে। তাদের সাথেও সা‘দের সংঘর্ষ হয়। শেষ পর্যন্ত তারাও দাজলা অতিক্রম করে নাহরাওয়ান নামক স্থানে গিয়ে নিজ দলের সাথে মিলিত হতে সক্ষম হয়। নাহরাওয়ানে খারিজীরা নিজেদের সুসংগঠিত করে নেয়। তারপর আলী (রা) ও তাঁর অনুসারীদের উপর কুফরী ফতওয়া জারি করে এবং যারা ‘হযরত আলী ন্যায়ের উপর রয়েছেন’ একথা স্বীকার করত তাদেরকে হত্যা করতে শুরু করে। তাদের সংখ্যা দিনের পর দিন বৃদ্ধি পেতে থাকে, এমন কি তা পঁচিশ হাজারে গিয়ে দাঁড়ায়।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন