hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামের ইতিহাস ১ম খণ্ড

লেখকঃ মাওলানা আকবর শাহ খান নজিববাদী

১২৭
মদীনায় প্রবেশ
শুক্রবার দিন হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) কুবা এবং কুবার অধিবাসী বনী আমর ইব্‌ন আওয়াফ গোত্রের নিকট থেকে বিদায় নিয়ে মদীনার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। মদীনার প্রতিটি মহল্লার প্রতিটি পরিবার সর্বান্তঃকরণে কামনা করতো যে, হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) যেন তাদেরই ঘরে গিয়ে বসবাস করেন। তিনি বনী সালিম ইব্‌ন আওফের মহল্লায় পৌঁছতেই জুমুআর সালাতের ওয়াক্ত হয়ে যায়। হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) একটি খোলা মাঠে একশত জন ভক্তদের নিয়ে জুমুআর সালাত আদায় করেন। এটা ছিল মদীনায় তাঁর প্রথম জুমুআ এবং প্রথম খুতবা। এখানেও একটি মসজিদ নির্মিত হলো।

জুমুআর সালাত অন্তে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) তাঁর উটনীতে চড়ে বসলেন। বনী সালিম ইব্‌ন আওফ-এর লোকেরা এসে তাঁর উটের বল্গা ধরে বসলো এবং তাকে তাদের ওখানেই থাকার জন্য আবদার জানালো। অন্যান্য কবীলার এবং অন্যান্য মহল্লার লোকেরাও তাঁকে তাদের ওখানে নিয়ে যেতে তাদের আগ্রহ প্রকাশ করলো। এভাবে তাদের মধ্যে বাদানুবাদের সৃষ্টি হলো। হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বললেন : আমার উটনীকে তোমরা থামিও না! তার লাগাম ছেড়ে দাও! আল্লাহর পক্ষ থেকে সে নির্দেশ ইতিমধ্যেই পেয়ে গেছে। যেখানে আমার উটনীটি বসে পড়বে সেখানেই আমি অবস্থান করবো। উটনীর লাগাম তাই ছেড়ে দেয়া হলো, এবং সে এগিয়ে চললো। সমস্ত আনসার ও মুহাজির তার অগ্র-পশ্চাতে ও ডানে-বামে সাথে সাথে এগিয়ে চললেন। হযরত নবী (সাঃ) লাগাম ঢিলা দিয়ে দিলেন এবং সে তার নিজ খুশিতে ধীরে ধীরে চলতে লাগলো। সকলেই অধীর আগ্রহে অপলক নেত্রে উটনীর দিকে তাকিয়ে রয়েছেন। সকলেই পরম কৌতূহল—শেষ পর্যন্ত সে কোথায় গিয়ে থামে এবং কার ভাগ্য সুপ্রসন্ন হয় তা-ই দেখবেন। উটটি যখন হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-কে নিয়ে বনু বায়াদিয়া গোত্রের মহল্লায় গিয়ে উপনীত হলো তখন সেই গোত্রের সর্দার যিয়াদ ইব্‌ন লবীদ এবং উরওয়া ইব্‌ন আমর অগ্রসর হয়ে উটনীর লাগাম ধরতে উদ্যত হন। তখন হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলে উঠলেন :

دعوها فانها مامورة

একে ছেড়ে দাও। কেননা সে ইতিমধ্যেই সুনির্দিষ্ট আদেশ পেয়ে গেছে।

তারপর উটনীটি বনূ সাঈদা গোত্রের মহল্লায় গিয়ে উপনীত হয়। বনু সাঈদা গোত্রের সরদার সা‘দ ইব্‌ন উবাদা এবং মুনযির ইব্‌ন আমর উটনীকে বাধা দিতে চাইলেন। তখন হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) আবারও বললেন :

دعوها فانها مامورة

একে ছেড়ে দাও, কেননা ইতিমধ্যেই সে সুনির্দিষ্ট আদেশ পেয়ে গেছে।

তারপর উটনীটি বনু হারিছ ইব্‌ন খাযরাজ গোত্রের মহল্লায় গিয়ে উপনীত হলো। এখানে সা‘দ ইবনুর রবীঈ, খারিজা ইব্‌ন যায়দ ও আবদুল্লাহ্ ইব্‌ন রাওয়াহা থামাতে চাইলেন। তাদেরকেও পূর্বোক্ত নিষেধাজ্ঞাটি শোনানো হলো। সেখান থেকে রওয়ানা হয়ে উটনীটি বনূ আদী ইবনুল নাজ্জারের মহল্লায় গিয়ে উপনীত হলো। এটি যেহেতু আবদুল মুত্তালিবের নানার গোত্র ছিল এজন্য তাদের দাবী ছিল এই যে, আবদুল মুত্তালিবের মা সালমা বিন্‌ত আমর যেহেতু আমাদেরই গোত্রের মেয়ে ছিলেন, তাই হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) আমাদেরই সাথে থাকবেন। সাথে সাথে বনূ আদী গোত্রের সর্দার সলীত ইব্‌ন কায়েস ও আসীর ইব্‌ন খারিজা অগ্রসর হয়ে উটনীর লাগাম ধরেও বসলেন, কিন্তু তাদেরকেও হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বললেন : উটনীকে যেতে দাও! কেননা, আল্লাহ্‌র পক্ষ থেকে সে ইতিমধ্যেই সুনির্দিষ্ট নির্দেশ পেয়ে গেছে। তারপর উটনী বনু মালিক ইব্‌ন নাজ্জার গোত্রের মহল্লায় গিয়ে একটি অনাবাদী জমির উপর বসে পড়লো। একটু পরে উঠেই আবার কিছু দূর পর্যন্ত অগ্রসর হলো। তারপর আবার ফিরে এসে পূর্ববর্তী স্থানে এসে বসে পড়লো। এবার উটনীটি বসে গা ঝাড়া দিল, ঘাড় নীচু করে ফেললো এবং লেজ দোলাতে লাগলো।

সেই অনাবাদী জমির পাশেই ছিল হযরত আবূ আইয়ুব খালিদ ইব্‌ন যায়দ আনসারী (রা)-এর বাড়ী। তিনি অত্যন্ত হৃষ্টচিত্তে হযরত নবী করীম (সাঃ)-এর সামান-পত্র বহন করে নিজের ঘরে নিয়ে উঠালেন। হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) সেখানেই অবস্থান করলেন।

ঐ পতিত জমিটি ছিলো সুহায়ল ও সুহায়ল নামক দু’টি ইয়াতীম বালকের। সেখানে কয়েকটি খেজুর গাছ দাঁড়িয়েছিল। মূর্তিপূজারীদের কয়েকটি কবরও ছিল সেখানে। পশুপাল এসে এখানে বসতো। হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) জিজ্ঞেস করলেন : এ জমিটি কার? মুআয ইব্‌ন আফরা আরয করলেন : জমিটা আমার দু’টি ইয়াতীম আত্মীয়ের ছেলের। এরা আমারই ঘরে প্রতিপালিত হচ্ছে। আমি তাদেরকে রাযী করে ফেলবো-। আপনি আপনার খুশিমত এখানে মসজিদ বানাতে পারেন। হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বললেন : আমি তা মূল্য দিয়ে কিনতে চাই। বিনা মূল্যে তা আমি কোন মতেই গ্রহণ করবো না। হযরত আবূ বকর সিদ্দীক (রা) তখনই তার মূল্য পরিশোধ করলেন। হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর নির্দেশক্রমে খেজুর গাছগুলো কেটে ফেলা হলো। মূর্তিপূজারীদের কবরগুলোকে ভূমির সাথে সমান করে দেয়া হলো এবং মসজিদ নির্মাণের কাজ শুরু হয়ে গেল। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) স্বয়ং মসজিদ নির্মাণের কাজে অংশ গ্রহণ করতেন। মুহাজিরীন ও আনসার স্বতঃস্ফূর্ত উৎসাহ-উদ্দীপনার সাথে এ কাজে লেগে থাকতেন। মসজিদের দেয়ালের গাঁথুনী পাথর ও কাদামাটির দ্বারা দেয়া হলো। খেজুর গাছের কাণ্ড ও পাতা দিয়ে তার ছাদের কড়িকাঠ ও চাল ছাওয়ার কাজ সম্পন্ন করা হলো। মসজিদ এবং তার পাশে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর বাসস্থান নির্মিত না হওয়া পর্যন্ত তিনি হযরত আবূ আইয়ুব আনসারী (রা)-এর ঘরে তার মেহমানরূপে অবস্থান করেন। ইনি সেই ইতিহাস বিখ্যাত আবূ আইয়ুব আনসারী (রা) যার মাযার কনস্টান্টিনোপলে রয়েছে। তিনি ৪৮ হিজরীতে হযরত : আমীর মু‘আবিয়া (রা)-এর আমলে কনস্টান্টিনোপল অবরোধকালে ইন্তিকাল করেন।

হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এগারো মাস কয়েকদিন হযরত আবূ আইয়ুব আনসারী (রা)-এর ঘরে অবস্থান করেন। হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর আমলে নির্মিত এ মসজিদটি হযরত উমর (রা)-এর আমল পর্যন্ত ঐরূপই ছিলো। হযরত উমর (রা) তাঁর খিলাফত আমলে মসজিদটি আরো প্রশস্ত করেন। হযরত উছমান (রা) তাঁর খিলাফত আমলে মসজিদের দেয়ালগুলো পাকা করান। তারপর ওয়ালীদ ইব্‌ন আবদুল মালিকের আমলে তা আরো প্রশস্ত করা হয় এবং নবী সহধর্মিণিগণের হুজরাসমূহও এর অন্তর্ভুক্ত করে নেয়া হয়। আব্বাসী খলীফা মামুনুর রশীদ মসজিদের শোভা বর্ধন করেন। হযরত আবূ আইয়ুব আনসারীর বাড়ীতে অবস্থানকালেই হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) যায়দ ইব্‌ন ছাবিত ও আবূ রাফি‘ঈ (রা)-কে মক্কা পাঠিয়ে হযরত ফাতিমা (রা), হযরত উম্মে কুলসূম (রা), হযরত সাওদা বিন্‌ত যাম্‌আ (রা), হযরত উসামা ইব্‌ন যায়দ (রা) এবং তার মা হযরত উম্মে আয়মন (রা)-কে মদীনায় আনিয়ে নেন এবং তাদের সকলের আসার পর হুযুর (সাঃ) তার নব নির্মিত হুজরায় গিয়ে উঠেন।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন