hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

তাফসীরুল কুরআন বিল কুরআন

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

১১
অধ্যায়- ৬ : আল্লাহ মহাজ্ঞানী
আল্লাহ সর্ববিষয়ে জ্ঞান রাখেন :

اِنَّ اللهَ كَانَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيْمًا

নিশ্চয় আল্লাহ সর্ববিষয়ে সর্বজ্ঞ। (সূরা নিসা- ৩২)

ব্যাখ্যা : عَلِيْمٌ (‘আলীম) শব্দের অর্থ সর্বজ্ঞ, মহাজ্ঞানী। অর্থাৎ তিনি ছোট-বড়, প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য সবকিছু সম্পর্কে জানেন। তার জ্ঞানের বাহিরে কোন জিনিস থাকতে পারে না। তিনি কোন বিষয়ে অনুমান করেন না; বরং সবকিছু সম্পর্কে সরাসরি জানেন। সুতরাং অনুভূতি ও ইন্দ্রিয়বহির্ভূত বিষয়ে তিনি যেসব তথ্য দিচ্ছেন, তার সবগুলোই সঠিক। আর তা না মানার অর্থ হচ্ছে, অজ্ঞতার অনুসরণ করা। একইভাবে তিনি মানুষের উন্নতির পথ ও পদ্ধতি সম্পর্কেও জানেন। তাঁর প্রতিটি শিক্ষা সঠিক ও জ্ঞানভিত্তিক, যার মধ্যে ভুলভ্রান্তির কোন সম্ভাবনা নেই। অতএব তাঁর পথনির্দেশনা গ্রহণ না করার অর্থ হচ্ছে, সঠিক পথে চলতে না চাওয়া এবং ভ্রান্ত পথে চলতে থাকা। তাছাড়া মানুষের কোন গতিবিধি তাঁর নিকট গোপন থাকতে পারে না। এমনকি তিনি মানুষের অন্তর্নিহিত সকল ধরনের ইচ্ছা সম্পর্কেও জানেন, যা তাদের সমস্ত কাজকর্মের মূল চালিকাশক্তি। তাই মানুষ কোন অজুহাত দেখিয়ে তাঁর শাস্তি থেকে রক্ষা পাবে না।

لَهٗ مَقَالِيْدُ السَّمَاوَاتِ وَالْاَ رْضِۚ يَبْسُطُ الرِّزْقَ لِمَنْ يَّشَآءُ وَيَقْدِرُؕ اِنَّهٗ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيْمٌ

আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর চাবিসমূহ তাঁরই নিকট। তিনি যাকে ইচ্ছা তার রিযিক বর্ধিত করেন অথবা সংকুচিত করেন। তিনি সর্ববিষয়ে সর্বজ্ঞ। (সূরা শূরা- ১২)

আল্লাহর জ্ঞান সবকিছুকে বেষ্টন করে আছে :

اَنَّ اللهَ عَلٰى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ وَّاَنَّ اللهَ قَدْ اَحَاطَ بِكُلِّ شَيْءٍ عِلْمًا

আল্লাহ সর্ববিষয়ে শক্তিমান এবং আল্লাহ তাঁর জ্ঞান দ্বারা সবকিছুই পরিবেষ্টন করে রেখেছেন। (সূরা তালাক্ব- ১২)

ব্যাখ্যা : আল্লাহর জ্ঞান ও তাঁর পাকড়াও হতে কেউ বাঁচতে পারে না। পাথরের মধ্যে ছোট্ট একটি কণা মানুষের দৃষ্টির অগোচরে থাকতে পারে কিন্তু তাঁর কাছে তা সুস্পষ্ট। আকাশে একটি ক্ষুদ্রতম কণিকা মানুষ থেকে বহু দূরবর্তী হতে পারে, ভূমির গভীরে অবস্থিত কোন জিনিসের প্রতি তার দৃষ্টি শেষ হয়ে যেতে পারে; কিন্তু তা আল্লাহর অতি নিকটতর। কাজেই তুমি কোথাও এমন কোন সৎ বা অসৎকাজ করতে পার না, যা আল্লাহর অগোচরে থেকে যায়। তিনি তা জানেন কেবল তা নয় বরং যখন হিসাব-নিকাশের সময় আসবে তখন তিনি তোমাদের প্রত্যেকটি কাজের রেকর্ডও তোমাদের সামনে উপস্থাপন করবেন।

অতীত-ভবিষ্যৎ সবই আল্লাহ জানেন :

يَعْلَمُ مَا بَيْنَ اَيْدِيْهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْؕ وَاِلَى اللهِ تُرْجَعُ الْاُمُوْرُ

তাদের সম্মুখে এবং পশ্চাতে যা কিছু আছে তিনি তা জানেন। আর সমসত্ম বিষয় তো আল্লাহর দিকেই প্রত্যাবর্তিত হবে। (সূরা হজ্জ- ৭৬)

আসমান-জমিনের সবকিছুই আল্লাহ জানেন :

قُلْ اِنْ تُخْفُوْا مَا فِيْ صُدُوْرِكُمْ اَوْ تُبْدُوْهُ يَعْلَمْهُ اللهُؕ وَيَعْلَمُ مَا فِى السَّمَاوَاتِ وَمَا فِى الْاَ رْضِؕ وَاللهُ عَلٰى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ

বলো, তোমাদের অন্তরে যা আছে তা গোপন রাখ অথবা প্রকাশ কর আল্লাহ সে সম্পর্কে অবগত আছেন। এমনকি আসমান ও জমিনে যা আছে সবকিছু সম্পর্কে তিনি অবগত আছেন। আর আল্লাহ সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান। (সূরা আলে ইমরান- ২৯)

اَنَّ اللهَ يَعْلَمُ مَا فِى السَّمَاوَاتِ وَمَا فِى الْاَ رْضِ وَاَنَّ اللهَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيْمٌ

আসমান ও জমিনে যা কিছু আছে আল্লাহ সে সম্পর্কে জানেন; নিশ্চয় আল্লাহ সর্ববিষয়ে সর্বজ্ঞ। (সূরা মায়েদা- ৯৭)

সবকিছু জানা আল্লাহর জন্যই শোভা পায় :

اَلَا يَعْلَمُ مَنْ خَلَقَؕ وَهُوَ اللَّطِيْفُ الْخَبِيْرُ

যিনি সৃষ্টি করেছেন, তিনি কি জানেন না? তিনি সূক্ষ্মদর্শী ও সবকিছুর খবর রাখেন। (সূরা মুলক- ১৪)

জলে-স্থলে কী আছে সবই আল্লাহর জানা আছে :

وَيَعْلَمُ مَا فِى الْبَرِّ وَالْبَحْرِ

জলে ও স্থলে যা কিছু আছে সে সম্পর্কে তিনি অবগত। (সূরা আন‘আম- ৫৯)

গাছের পাতা ঝরলে তাও জানেন :

وَمَا تَسْقُطُ مِنْ وَّرَقَةٍ اِلَّا يَعْلَمُهَا وَلَا حَبَّةٍ فِيْ ظُلُمَاتِ الْاَ رْضِ وَلَا رَطْبٍ وَّلَا يَابِسٍ اِلَّا فِيْ كِتَابٍ مُّبِيْنٍ

তাঁর অজ্ঞাতসারে একটি পাতাও পড়ে না। মাটির অন্ধকারে এমন কোন শস্যকণাও রসযুক্ত কিংবা শুষ্ক হয় না, যা সুস্পষ্ট কিতাবে নেই। (সূরা আন‘আম- ৫৯)

জমিনে যা প্রবেশ করে এবং আকাশে যা উঠে আল্লাহ তাও জানেন :

يَعْلَمُ مَا يَلِجُ فِى الْاَ رْضِ وَمَا يَخْرُجُ مِنْهَا وَمَا يَنْزِلُ مِنَ السَّمَآءِ وَمَا يَعْرُجُ فِيْهَاؕ وَهُوَ الرَّحِيْمُ الْغَفُوْرُ

তিনি জানেন যা কিছু জমিনে প্রবেশ করে এবং যা কিছু সেখান থেকে বের হয়। আর যা কিছু আসমান থেকে নাযিল হয় এবং যা কিছু সেখানে আরোহণ করে। তিনি পরম দয়ালু ও অত্যন্ত ক্ষমাশীল। (সূরা সাবা- ২)

يَعْلَمُ مَا يَلِجُ فِى الْاَ رْضِ وَمَا يَخْرُجُ مِنْهَا وَمَا يَنْزِلُ مِنَ السَّمَآءِ وَمَا يَعْرُجُ فِيْهَاؕ وَهُوَ مَعَكُمْ اَيْنَ مَا كُنْتُمْؕ وَاللهُ بِمَا تَعْمَلُوْنَ بَصِيْرٌ

তিনি জানেন যা কিছু ভূমিতে প্রবেশ করে ও যা কিছু তা হতে বের হয় এবং আকাশ হতে যা কিছু নামে ও আকাশে যা কিছু উঠে। তোমরা যেখানেই থাক না কেন তিনি (জানার দিক দিয়ে) তোমাদের সঙ্গেই আছেন। আর তোমরা যা কিছু কর আল্লাহ তা দেখেন। (সূরা হাদীদ- ৪)

নারীর জরায়ুতে সন্তানের কী অবস্থা তাও জানেন :

اَللهُ يَعْلَمُ مَا تَحْمِلُ كُلُّ اُنْثٰى وَمَا تَغِيْضُ الْاَ رْحَامُ وَمَا تَزْدَادُؕ وَكُلُّ شَيْءٍ عِنْدَهٗ بِمِقْدَارٍ

প্রত্যেক নারী যা গর্ভে ধারণ করে এবং জরায়ুতে যা কিছু কমে ও বাড়ে আল্লাহ তাও জানেন এবং তাঁর বিধানে প্রত্যেক বস্তুরই একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ রয়েছে। (সূরা রা‘দ- ৮)

ব্যাখ্যা : মাতৃগর্ভে ভ্রূণের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ, শক্তি-সামর্থ্য, যোগ্যতা ও মানসিক ক্ষমতার মধ্যে যাবতীয় হ্রাস-বৃদ্ধি আল্লাহর সরাসরি তত্ত্বাবধানে সাধিত হয়।

গর্ভধারণ, প্রসব ও বয়স সবই তাঁর জ্ঞানের আওতায় :

وَمَا تَحْمِلُ مِنْ اُنْثٰى وَلَا تَضَعُ اِلَّا بِعِلْمِه ؕ وَمَا يُعَمَّرُ مِنْ مُّعَمَّرٍ وَّلَا يُنْقَصُ مِنْ عُمُرِه ۤ اِلَّا فِيْ كِتَابٍؕ اِنَّ ذٰلِكَ عَلَى اللهِ يَسِيْرٌ

কোন নারীই গর্ভধারণ করে না এবং সন্তানও প্রসব করে না তাঁর অজান্তে। আর কোন বয়স্ক ব্যক্তির দীর্ঘায়ু লাভ করা হয় না আবার তার আয়ু কমও করা হয় না, কিন্তু তা তো লিপিবদ্ধ রয়েছে এক কিতাবে (লাওহে মাহফুযে)। নিশ্চয় এ কাজ আল্লাহর পক্ষে অতি সহজ। (সূরা ফাতির- ১১)

পাঁচটি জিনিসের বিশেষ জ্ঞান একমাত্র আল্লাহর কাছে :

اِنَّ اللهَ عِنْدَهٗ عِلْمُ السَّاعَةِۚ وَيُنَزِّلُ الْغَيْثَۚ وَيَعْلَمُ مَا فِى الْاَ رْحَامِؕ وَمَا تَدْرِيْ نَفْسٌ مَّاذَا تَكْسِبُ غَدًاؕ وَّمَا تَدْرِيْ نَفْسٌ ۢبِاَيِّ اَرْضٍ تَمُوْتُؕ اِنَّ اللهَ عَلِيْمٌ خَبِيْرٌ

নিশ্চয় আল্লাহর কাছে রয়েছে কিয়ামত সম্পর্কে জ্ঞান। তিনিই বৃষ্টি বর্ষণ করেন এবং তিনিই জানেন যা কিছু গর্ভে আছে। কেউ জানে না আগামীকাল সে কী আয় করবে এবং কেউ জানে না কোন স্থানে সে মৃত্যুবরণ করবে। নিশ্চয় আল্লাহ সবকিছু জানেন এবং সব খবর রাখেন। (সূরা লুক্বমান- ৩৪)

ব্যাখ্যা : মানুষের সচ্ছলতা-অসচ্ছলতা নির্ভর করে বৃষ্টির উপর। কিন্তু আল্লাহর হাতে রয়েছে এর চাবিকাঠি। তিনি যখন যেখানে যতটুকু চান পানি বর্ষণ করেন এবং যখনই চান থামিয়ে দেন। কেউ এতটুকুও জানে না যে, কোথায় কখন কতটুকু বৃষ্টি হবে এবং কোন্ ভূখন্ড তা হতে বঞ্চিত হবে অথবা কেন্ ভূখন্ডে বৃষ্টি উল্টো ক্ষতিকর প্রমাণিত হবে। পুরুষের বীর্যে স্ত্রীদের গর্ভসঞ্চার হয় এবং এর সাথে মানুষের বংশধারার ভবিষ্যৎ জড়িত। কিন্তু মানুষ জানে না যে, এ গর্ভে কী লালিত হচ্ছে এবং কোন্ আকৃতিতে ও কোন্ ধরনের কল্যাণ বা অকল্যাণ নিয়ে তা বের হয়ে আসবে। আগামীকাল তাদের কী হবে, তাও তারা জানে না। একটি আকস্মিক দুর্ঘটনা মানুষের ভাগ্য বদলে দিতে পারে। কিন্তু এক মিনিট আগেও মানুষ তার খবর পায় না। মানুষ এটাও জানে না যে, তাদের এ জীবনের সমাপ্তি কোথায় এবং কী অবস্থায় ঘটবে। এ সমস্ত তথ্যজ্ঞান আল্লাহ নিজের কাছে রেখেছেন। এভাবে দুনিয়ার শেষ ক্ষণটির ব্যাপারেও আল্লাহর ফায়সালার প্রতি আস্থা রাখা ছাড়া আর কোন উপায় নেই।

মানুষের অবস্থা আল্লাহই ভালো জানেন :

رَبُّكُمْ اَعْلَمُ بِكُمْؕ اِنْ يَّشَاْ يَرْحَمْكُمْ اَوْ اِنْ يَّشَاْ يُعَذِّبْكُمْ

তোমাদের প্রতিপালক তোমাদের ব্যাপারে ভালোভাবে জানেন। ইচ্ছা করলে তিনি তোমাদের প্রতি দয়া করেন এবং ইচ্ছা করলে তোমাদেরকে শাসিত্ম দেন। (সূরা বনী ইসরাঈল- ৫৪)

সৃষ্টির শুরু থেকেই মানুষকে জানেন :

هُوَ اَعْلَمُ بِكُمْ اِذْ اَنْشَاَكُمْ مِّنَ الْاَ رْضِ وَاِذْ اَنْتُمْ اَجِنَّةٌ فِيْ بُطُوْنِ اُمَّهَاتِكُمْۚ فَلَا تُزَكُّوْاۤ اَنْفُسَكُمْؕ هُوَ اَعْلَمُ بِمَنِ اتَّقٰى

তিনি তোমাদের সম্পর্কে সম্যক অবগত- যখন তিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছিলেন মাটি হতে এবং এক সময় তোমরা মাতৃগর্ভে ভ্রুণরূপে ছিলে। অতএব তোমরা আত্মপ্রশংসা করো না, তিনিই ভালো জানেন কে মুত্তাক্বী। (সূরা নাজম- ৩২)

তিনি পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সকলের সম্পর্কে জানেন :

وَلَقَدْ عَلِمْنَا الْمُسْتَقْدِمِيْنَ مِنْكُمْ وَلَقَدْ عَلِمْنَا الْمُسْتَاْخِرِيْنَ

তোমাদের মধ্য হতে পূর্বে যারা গত হয়েছে আমি তাদেরকে জানি এবং পরে যারা আসবে তাদেরকেও জানি। (সূরা হিজর- ২৪)

মানুষের মনের কথাও তিনি জানেন :

وَاَسِرُّوْا قَوْلَكُمْ اَوِ اجْهَرُوْا بِهٖؕ اِنَّهٗ عَلِيْمٌ ۢبِذَاتِ الصُّدُوْرِ

তোমরা তোমাদের কথা চুপে চুপে বল অথবা উচ্চৈঃস্বরে বল, তিনি তো অন্তরের গোপনীয়তা সম্পর্কে সর্বজ্ঞ। (সূরা মুলক- ১৩)

اِنَّ اللهَ عَلِيْمٌ ۢبِذَاتِ الصُّدُوْرِ

নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের অন্তরের বিষয় সম্পর্কে ভালোভাবে অবগত আছেন। (সূরা আলে ইমরান- ১১৯)

وَاللهُ يَعْلَمُ مَا فِيْ قُلُوْبِكُمْؕ وَكَانَ اللهُ عَلِيْمًا حَلِيْمًا

তোমাদের অন্তরে যা আছে তা আল্লাহ জানেন। আর আল্লাহ মহাজ্ঞানী ও সহনশীল। (সূরা আহযাব- ৫১)

وَاِنَّ رَبَّكَ لَيَعْلَمُ مَا تُكِنُّ صُدُوْرُهُمْ وَمَا يُعْلِنُوْنَ

তাদের অন্তর যা গোপন করে এবং তারা যা প্রকাশ করে অবশ্যই তোমার প্রতিপালক তা জানেন। (সূরা নামল- ৭৪)

اِنْ تُبْدُوْا شَيْئًا اَوْ تُخْفُوْهُ فَاِنَّ اللهَ كَانَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيْمًا

যদি তোমরা কোন বিষয় প্রকাশ কর কিংবা তা গোপন রাখ তবে আল্লাহ প্রত্যেক বিষয়েই অবগত আছেন। (সূরা আহযাব- ৫৪)

কথা আস্তে বলা বা জোরে বলা উভয়ই তাঁর নিকট সমান :

سَوَآءٌ مِّنْكُمْ مَّنْ اَسَرَّ الْقَوْلَ وَمَنْ جَهَرَ بِهٖ وَمَنْ هُوَ مُسْتَخْفٍ ۢبِاللَّيْلِ وَسَارِبٌ ۢبِالنَّهَارِ

তোমাদের মধ্যে যে কথা গোপন রাখে এবং যে প্রকাশ করে, আর যে রাত্রিতে আত্মগোপন করে এবং যে দিবসে প্রকাশ্যে বিচরণ করে, তারা সমভাবে আল্লাহর জ্ঞানগোচরেই আছে। (সূরা রা‘দ- ১০)

وَاِنْ تَجْهَرْ بِالْقَوْلِ فَاِنَّهٗ يَعْلَمُ السِّرَّ وَاَخْفٰى

যদি তুমি উচ্চকণ্ঠে কথা বল, তবে তিনি তো যা গুপ্ত ও অব্যক্ত সবকিছুই জানেন। (সূরা ত্বা-হা- ৭)

اِنَّهٗ يَعْلَمُ الْجَهْرَ مِنَ الْقَوْلِ وَيَعْلَمُ مَا تَكْتُمُوْنَ

তিনি জানেন, তোমরা যে কথা ব্যক্ত কর এবং যা গোপন কর। (সূরা আম্বিয়া- ১১০)

قَالَ رَبِّيْ يَعْلَمُ الْقَوْلَ فِى السَّمَآءِ وَالْاَ رْضِ وَهُوَ السَّمِيْعُ الْعَلِيْمُ

সে বলল, আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সমসত্ম কথাই আমার প্রতিপালক অবগত আছেন এবং তিনিই সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞ। (সূরা আম্বিয়া- ৪)

গুপ্ত বিষয়গুলো তিনি একদিন প্রকাশ করবেন :

وَاللهُ مُخْرِجٌ مَّا كُنْتُمْ تَكْتُمُوْنَ

তোমরা যা গোপন করেছিলে আল্লাহ তার প্রকাশকারী। (সূরা বাক্বারা- ৭২)

কেউ খারাপ চিন্তা করলে তাও জানেন :

وَلَقَدْ خَلَقْنَا الْاِنْسَانَ وَنَعْلَمُ مَا تُوَسْوِسُ بِهٖ نَفْسُهٗۚ وَنَحْنُ اَقْرَبُ اِلَيْهِ مِنْ حَبْلِ الْوَرِيْدِ

আমিই মানুষকে সৃষ্টি করেছি এবং তার অন্তর তাকে যে কুমন্ত্রণা দেয় তা আমি জানি। আমি তার ঘাড়ের শাহরগ অপেক্ষাও নিকটতর। (সূরা ক্বাফ- ১৬)

ব্যাখ্যা : আল্লাহর ক্ষমতা ও জ্ঞান এমনভাবে মানুষকে পরিবেষ্টন করে আছে যে, তাঁর ক্ষমতা মানুষের যতটা নিকটে তার ঘাড়ের শিরাও ততটা নিকটে নয়। মানুষের কথা শোনার জন্য তাঁকে কোথাও থেকে আসতে হয় না। তার মনের মধ্যে উদিত কল্পনাসমূহ পর্যন্ত আল্লাহ সরাসরি জানেন। অনুরূপভাবে তাকে যদি কোন সময় আল্লাহ পাকড়াও করতে চান, তখনও তাঁকে কোথাও থেকে এসে তাকে পাকড়াও করতে হয় না। মানুষ যেখানেই থাকুক না কেন সর্বদা সে আল্লাহর আয়ত্তাধীন রয়েছে।

মানুষের সলাপরামর্শেরও খবর রাখেন :

اَنَّ اللهَ يَعْلَمُ سِرَّهُمْ وَنَجْوَاهُمْ وَاَنَّ اللهَ عَلَّامُ الْغُيُوْبِ

(তারা কি জানে না যে) আল্লাহ তাদের অন্তরের গোপন কথা ও তাদের গোপন পরামর্শ সম্পর্কেও অবগত আছেন এবং যা অদৃশ্য তাও তিনি বিশেষভাবে জানেন। (সূরা তাওবা- ৭৮)

সলাপরামর্শে মানুষ যতজন হয় তার মধ্যে আল্লাহ একজন :

مَا يَكُوْنُ مِنْ نَّجْوٰى ثَلَاثَةٍ اِلَّا هُوَ رَابِعُهُمْ وَلَا خَمْسَةٍ اِلَّا هُوَ سَادِسُهُمْ وَلَاۤ اَدْنٰى مِنْ ذٰلِكَ وَلَاۤ اَكْثَرَ اِلَّا هُوَ مَعَهُمْ اَيْنَ مَا كَانُوْاۚ ثُمَّ يُنَبِّئُهُمْ بِمَا عَمِلُوْا يَوْمَ الْقِيَامَةِؕ اِنَّ اللهَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيْمٌ

তিনজনের এমন কোন পরামর্শ হয় না, যাতে তিনি তাদের চতুর্থ না হন; আর পাঁচ জনেরও এমন কোন পরামর্শ হয় না, যাতে তিনি তাদের ষষ্ঠ না হন। (এ সলাপরামর্শকারীদের সংখ্যা) তার চেয়ে কম হোক কিংবা বেশি হোক তারা যেখানেই থাকুক না কেন, তিনি তাদের সাথে আছেন। অতঃপর তারা যা করে কিয়ামতের দিন তাদেরকে তিনি জানিয়ে দেবেন। নিশ্চয় আল্লাহ সর্ববিষয়ে জ্ঞানী। (সূরা মুজাদালা- ৭)

মানুষ কী উপার্জন করছে তাও আল্লাহ জানেন :

وَهُوَ اللهُ فِى السَّمَاوَاتِ وَفِى الْاَ رْضِؕ يَعْلَمُ سِرَّكُمْ وَجَهْرَكُمْ وَيَعْلَمُ مَا تَكْسِبُوْنَ

আসমান ও জমিনে তিনিই আল্লাহ, তোমাদের গোপন ও প্রকাশ্য সবকিছু তিনি জানেন এবং তোমরা যা অর্জন কর, তাও তিনি অবগত আছেন। (সূরা আন‘আম- ৩)

يَعْلَمُ مَا تَكْسِبُ كُلُّ نَفْسٍؕ وَسَيَعْلَمُ الْكُفَّارُ لِمَنْ عُقْبَى الدَّارِ

প্রত্যেক ব্যক্তি যা করে তা তিনি জানেন। (সুতরাং) কাফিররা শীঘ্রই জানতে পারবে যে, পরকালের শুভ পরিণাম কাদের জন্য। (সূরা রা‘দ- ৪২)

আল্লাহ মানুষের কর্মকান্ডের খবর রাখেন :

وَاللهُ يَعْلَمُ اَعْمَالَكُمْ

আল্লাহ তোমাদের সব আমল সম্পর্কেই ভালো করে জানেন। (সূরা মুহাম্মাদ- ৩০)

وَاللهُ بِمَا تَعْمَلُوْنَ بَصِيْرٌ

তোমরা যা করছ, আল্লাহ তার পর্যবেক্ষণকারী। (সূরা আলে ইমরান- ১৫৬)

وَهُوَ الَّذِيْ يَتَوَفَّاكُمْ بِاللَّيْلِ وَيَعْلَمُ مَا جَرَحْتُمْ بِالنَّهَارِ

তিনিই রাতে তোমাদের মৃত্যু ঘটান এবং দিবসে তোমরা যা কর তা তিনি জানেন। (সূরা আন‘আম- ৬০)

ব্যাখ্যা : আল্লাহ প্রত্যেক ব্যক্তিকে সব অবস্থায় নিজেই সরাসরি দেখছেন এবং তার সমস্ত গতিবিধি ও কার্যক্রম সম্পর্কে অবগত রয়েছেন। আল্লাহর নিযুক্ত তত্ত্বাবধায়কও প্রত্যেক ব্যক্তির সাথে রয়েছেন এবং তারা তার জীবনের সমস্ত কার্যক্রমের রেকর্ডও সংরক্ষণ করছেন। এমন অকল্পনীয় ক্ষমতার অধিকারী আল্লাহর সার্বভৌম কর্তৃত্বের অধীনে থেকে যারা একথা মনে করে জীবন-যাপন করে যে, তাদেরকে লাগামহীন উটের মতো দুনিয়ায় ছেড়ে দেয়া হয়েছে এবং তাদের কার্যকলাপের জন্য কারো কাছে জবাবদিহি করতে হবে না তারা আসলে নিজেরাই নিজেদের ধ্বংস ডেকে আনে।

চোখের খেয়ানত সম্পর্কেও জানেন :

يَعْلَمُ خَآئِنَةَ الْاَعْيُنِ وَمَا تُخْفِى الصُّدُوْرُ

চক্ষুর অপব্যবহার ও অন্তরে যা গোপন আছে সে সম্বন্ধে তিনি অবহিত। (সূরা মু’মিন- ১৯)

কেউ নেক আমল করলেও তিনি জানেন :

وَمَا تَفْعَلُوْا مِنْ خَيْرٍ فَاِنَّ اللهَ كَانَ بِهٖ عَلِيْمًا

আর তোমরা যেসব সৎকাজ কর, নিশ্চয় আল্লাহ সে সম্পর্কে সবিশেষ অবহিত। (সূরা নিসা- ১২৭)

وَمَا تَفْعَلُوْا مِنْ خَيْرٍ يَّعْلَمْهُ اللهُ

তোমরা যে কোন সৎকর্ম কর না কেন আল্লাহ তা জানেন। (সূরা বাক্বারা- ১৯৭)

কিছু ব্যয় করলে তারও খবর রাখেন :

وَمَاۤ اَنْفَقْتُمْ مِّنْ نَّفَقَةٍ اَوْ نَذَرْتُمْ مِّنْ نَّذْرٍ فَاِنَّ اللهَ يَعْلَمُهٗ

তোমরা যে বস্তু দান কর অথবা যা কিছু মান্নত কর, আল্লাহ সে বিষয়ে অবগত আছেন। (সূরা বাক্বারা- ২৭০)

কে কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে আল্লাহ তাও জানেন :

اَلَّذِيْ يَرَاكَ حِيْنَ تَقُوْمُ- وَتَقَلُّبَكَ فِى السَّاجِدِيْنَ

তিনি তোমাকে দেখেন যখন তুমি দন্ডায়মান হও এবং সিজদাকারীদের সাথে উঠাবসা কর। (সূরা শু‘আরা- ২১৮, ২১৯)

ব্যাখ্যা : এখানে উঠার কয়েকটি অর্থ হতে পারে।

(১) নামাযরত ব্যক্তি যখন জামা‘আতের সাথে নামায পড়ার সময় মুকতাদীদের সাথে উঠাবসা ও রুকু সিজদা করেন, তখন আল্লাহ তাকে দেখতে থাকেন।

(২) ব্যক্তি নিজের সাথিদের পরকাল গড়ার জন্য এবং আল্লাহর বান্দাদের সংশোধন করার জন্য যেসব প্রচেষ্টা, সংগ্রাম ও সাধনা চালিয়ে যায়, আল্লাহ সে সম্পর্কে সবকিছু অবগত আছেন।

(৩) ব্যক্তি সিজদাকারী লোকদের দলে যেসব তৎপরতা চালিয়ে যায়, আল্লাহ তা পর্যবেক্ষণ করছেন। তিনি জানেন উক্ত বান্দা কীভাবে তাদেরকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে, কীভাবে তাদেরকে পরিশুদ্ধ করছে, কীভাবে ভেজাল সোনাকে খাঁটি সোনায় পরিণত করছে।

রাতের বেলায় তাহাজ্জুদে দাঁড়ালে তাও আল্লাহ জানেন :

اِنَّ رَبَّكَ يَعْلَمُ اَنَّكَ تَقُوْمُ اَدْنٰى مِنْ ثُلُثَيِ اللَّيْلِ وَنِصْفَهٗ وَثُلُثَهٗ وَطَآئِفَةٌ مِّنَ الَّذِيْنَ مَعَكَ

তোমার প্রতিপালক তো জানেন যে, তুমি জাগরণ কর কখনো রাত্রির প্রায় দুই তৃতীয়াংশ, কখনো অর্ধাংশ এবং কখনো এক তৃতীয়াংশ এবং তোমার সাথে যারা আছে তাদের একটি দলও জাগে। (সূরা মুয্যাম্মিল- ২০)

তিনি মানুষের সকল কাজ পরিদর্শন করেন :

وَمَا تَكُوْنُ فِيْ شَاْنٍ وَّمَا تَتْلُوْ مِنْهُ مِنْ قُرْاٰنٍ وَّلَا تَعْمَلُوْنَ مِنْ عَمَلٍ اِلَّا كُنَّا عَلَيْكُمْ شُهُوْدًا اِذْ تُفِيْضُوْنَ فِيْهِؕ وَمَا يَعْزُبُ عَنْ رَّبِّكَ مِنْ مِّثْقَالِ ذَرَّةٍ فِى الْاَ رْضِ وَلَا فِى السَّمَآءِ وَلَاۤ اَصْغَرَ مِنْ ذٰلِكَ وَلَاۤ اَكْبَرَ اِلَّا فِيْ كِتَابٍ مُّبِيْنٍ

তুমি যে অবস্থায়ই থাক এবং তুমি কুরআন হতে যা কিছুই তিলাওয়াত কর কিংবা তোমরা যে কাজই কর না কেন, যখনই তোমরা তাতে প্রবৃত্ত হও তখন আমি তোমাদের পরিদর্শক হই। আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর অনুপরিমাণ বস্তুও তোমার প্রতিপালকের অগোচরে নয় এবং তা অপেক্ষা ক্ষুদ্রতর অথবা বৃহত্তর কিছুই নেই, যা সুস্পষ্ট কিতাবে নেই। (সূরা ইউনুস- ৬১)

আল্লাহ সবকিছুর উপর সাক্ষী আছেন :

اِنَّ اللهَ كَانَ عَلٰى كُلِّ شَيْءٍ شَهِيْدًا

নিশ্চয় আল্লাহ সর্ববিষয়ে লক্ষ্য করেন। (সূরা নিসা- ৩৩, সূরা আহযাব- ৫৫)

وَكَفٰى بِاللهِ شَهِيْدًا

সাক্ষী হিসেবে আল্লাহই যথেষ্ট। (সূরা নিসা- ৭৯)

আল্লাহ বান্দার উপর তীক্ষ্ম দৃষ্টি রাখেন :

اِنَّ اللهَ كَانَ عَلَيْكُمْ رَقِيْبًا

নিশ্চয় আল্লাহই তোমাদের উপর তীক্ষ্ম দৃষ্টি রাখেন। (সূরা নিসা- ১)

কেউ দুর্বল থাকলে তাও জানেন :

وَعَلِمَ اَنَّ فِيْكُمْ ضَعْفًا

তিনি তো অবগত আছেন যে, তোমাদের মধ্যে দুর্বলতা আছে। (সূরা আনফাল- ৬৬)

কেউ অসুখ থাকলে তাও জানেন :

عَلِمَ اَنْ سَيَكُوْنُ مِنْكُمْ مَّرْضٰى

তিনি জানেন যে, তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ অসুস্থ হয়ে পড়বে। (সূরা মুয্যাম্মিল- ২০)

কেউ মিথ্যা বললে তাও আল্লাহ জানতে পারেন :

وَاِنَّا لَنَعْلَمُ اَنَّ مِنْكُمْ مُّكَذِّبِيْنَ

নিশ্চয় আমি জানি যে, তোমাদের মধ্যে মিথ্যাপ্রতিপন্নকারী কিছু লোকও রয়েছে। (সূরা হাক্কাহ- ৪৯)

যালিমদের সম্পর্কেও আল্লাহ জানেন :

وَاللهُ اَعْلَمُ بِالظَّالِمِيْنَ

আর আল্লাহ যালিমদের সম্বন্ধে অধিক অবহিত। (সূরা আন‘আম- ৫৮)

ফাসাদকারীদেরকেও আল্লাহ জানেন :

فَاِنَّ اللهَ عَلِيْمٌ ۢبِالْمُفْسِدِيْنَ

তবে ফাসাদকারীদের সম্পর্কে অবশ্যই আল্লাহ ভালো জানেন। (সূরা আলে ইমরান- ৬৩)

وَ رَبُّكَ اَعْلَمُ بِالْمُفْسِدِيْنَ

তোমার প্রতিপালক অশান্তি সৃষ্টিকারীদের সম্বন্ধে সম্যক অবহিত। (সূরা ইউনুস- ৪০)

আল্লাহ জানেন কারা সীমালঙ্ঘনকারী :

اِنَّ رَبَّكَ هُوَ اَعْلَمُ بِالْمُعْتَدِيْنَ

নিশ্চয় তোমার প্রতিপালক সীমালঙ্ঘনকারীদের সম্বন্ধে ভালোভাবেই জানেন। (সূরা আন‘আম- ১১৯)

মুনাফিক কারা তা আল্লাহ জানেন :

وَمِمَّنْ حَوْلَكُمْ مِّنَ الْاَعْرَابِ مُنَافِقُوْنَؕ وَمِنْ اَهْلِ الْمَدِيْنَةِؕ مَرَدُوْا عَلَى النِّفَاقِؕ لَا تَعْلَمُهُمْ نَحْنُ نَعْلَمُهُمْؕ سَنُعَذِّبُهُمْ مَّرَّتَيْنِ ثُمَّ يُرَدُّوْنَ اِلٰى عَذَابٍ عَظِيْمٍ

মরুবাসীদের মধ্যে যারা তোমাদের আশেপাশে আছে তাদের কেউ কেউ মুনাফিক এবং মদিনাবাসীদের মধ্যেও কেউ কেউ কপটতায় সিদ্ধ। তুমি তাদেরকে জান না; আমি তাদেরকে জানি। অচিরেই আমি তাদেরকে দু’বার শাস্তি দেব। অতঃপর তারা প্রত্যাবর্তিত হবে মহাশাস্তির দিকে। (সূরা তাওবা- ১০১)

মুসলিমদের শত্রু কারা তাও জানেন :

وَاللهُ اَعْلَمُ بِاَعْدَآئِكُمْؕ وَكَفٰى بِاللهِ وَلِيًّا وَّكَفٰى بِاللهِ نَصِيْرًا

আল্লাহ তোমাদের শত্রুদেরকে ভালোভাবে জানেন। অভিভাবকত্বে আল্লাহই যথেষ্ট এবং সাহায্যেও আল্লাহ যথেষ্ট। (সূরা নিসা- ৪৫)

মুত্তাক্বীদের সম্পর্কেও জানেন :

وَمَا يَفْعَلُوْا مِنْ خَيْرٍ فَلَنْ يُّكْفَرُوْهُؕ وَاللهُ عَلِيْمٌ ۢبِالْمُتَّقِيْنَ

আর তারা যে ভালো কাজই করুক না কেন তা অবমূল্যায়ন করা হবে না। আর আল্লাহ মুত্তাক্বীদের সম্পর্কে জানেন। (সূরা আলে ইমরান- ১১৫)

কারা কৃতজ্ঞ আল্লাহ তা জানেন :

اَلَيْسَ اللهُ بِاَعْلَمَ بِالشَّاكِرِيْنَ

আল্লাহ কি কৃতজ্ঞ লোকদের সম্বন্ধে সবিশেষ অবহিত নন? (সূরা আন‘আম- ৫৩)

কে কোন পথে ঘুরছে আল্লাহ জানেন :

وَاللهُ يَعْلَمُ مُتَقَلَّبَكُمْ وَمَثْوَاكُمْ

আল্লাহ তোমাদের তৎপরতার খবরও রাখেন এবং তোমাদের (শেষ) ঠিকানা সম্পর্কেও (অবগত আছেন)। (সূরা মুহাম্মাদ- ১৯)

আল্লাহ গাফিল নন :

وَمَا اللهُ بِغَافِلٍ عَمَّا تَعْمَلُوْنَ

তোমরা যা কর সে সম্পর্কে আল্লাহ অমনোযোগী নন। (সূরা বাক্বারা- ৭৪)

وَلَا تَحْسَبَنَّ اللهَ غَافِلًا عَمَّا يَعْمَلُ الظَّالِمُوْنَؕ اِنَّمَا يُؤَخِّرُهُمْ لِيَوْمٍ تَشْخَصُ فِيْهِ الْاَبْصَارُ

তুমি কখনো মনে করো না যে, যালিমরা যা করে সে বিষয়ে আল্লাহ গাফিল, তবে তিনি তাদেরকে সেদিন পর্যমত্ম অবকাশ দেন যেদিন তাদের চক্ষু স্থির হয়ে যাবে। (সূরা ইবরাহীম- ৪২)

আল্লাহ মানুষকে দেখছেন :

اَلَمْ يَعْلَمْ بِاَنَّ اللهَ يَرٰى

সে কি জানে না যে, আল্লাহ তাকে দেখছেন? (সূরা আলাক্ব- ১৪)

আল্লাহ জানার দিক থেকে মানুষের অতি নিকটে :

وَنَحْنُ اَقْرَبُ اِلَيْهِ مِنْ حَبْلِ الْوَرِيْدِ

আমি (জ্ঞানের দিক দিয়ে) তার ঘাড়ের শাহরগ অপেক্ষাও নিকটতর । (সূরা ক্বাফ- ১৬)

وَهُوَ مَعَكُمْ اَيْنَ مَا كُنْتُمْؕ وَاللهُ بِمَا تَعْمَلُوْنَ بَصِيْرٌ

তোমরা যেখানেই থাক না কেন তিনি (জানার দিক দিয়ে) তোমাদের সঙ্গে আছেন, তোমরা যা কিছু কর আল্লাহ তা দেখেন। (সূরা হাদীদ- ৪)

মানুষের মৃত্যুও আল্লাহ পর্যবেক্ষণ করেন :

فَلَوْلَاۤ اِذَا بَلَغَتِ الْحُلْقُوْمَ - وَاَنْتُمْ حِيْنَئِذٍ تَنْظُرُوْنَ - ‐ وَنَحْنُ اَقْرَبُ اِلَيْهِ مِنْكُمْ وَلٰكِنْ لَّا تُبْصِرُوْنَ

প্রাণ যখন কণ্ঠনালীতে উপস্থিত হয় আর তখন তোমরা তাকিয়ে দেখ। আর আমি তোমাদের অপেক্ষা (জানার দিক দিয়ে) তার নিকটতর; কিন্তু তোমরা দেখতে পাও না। (সূরা ওয়াক্বিয়া, ৮৩-৮৫)

কার আবাস কোথায় হবে আল্লাহ জানেন :

وَمَا مِنْ دَآبَّةٍ فِى الْاَ رْضِ اِلَّا عَلَى اللهِ رِزْقُهَا وَيَعْلَمُ مُسْتَقَرَّهَا وَمُسْتَوْدَعَهَا كُلٌّ فِيْ كِتَابٍ مُّبِيْنٍ

ভূপৃষ্ঠে বিচরণকারী সকলের জীবিকার দায়িত্ব আল্লাহরই। তিনি তাদের স্থায়ী ও অস্থায়ী অবস্থান সম্বন্ধে অবহিত; সুস্পষ্ট কিতাবে সবকিছুই আছে। (সূরা হুদ- ৬)

গায়েবের (অদৃশ্য বিষয়ের) জ্ঞান কেবল আল্লাহরই রয়েছে :

قُلْ لَّا يَعْلَمُ مَنْ فِى السَّمَاوَاتِ وَالْاَ رْضِ الْغَيْبَ اِلَّا اللهُؕ وَمَا يَشْعُرُوْنَ اَيَّانَ يُبْعَثُوْنَ

বলো, আল্লাহ ব্যতীত আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে কেউ অদৃশ্য বিষয়ের জ্ঞান রাখে না এবং তারা জানে না যে, কখন তারা উত্থিত হবে। (সূরা নামল- ৬৫)

وَعِنْدَهٗ مَفَاتِحُ الْغَيْبِ لَا يَعْلَمُهَاۤ اِلَّا هُوَ

অদৃশ্যের চাবিকাঠি তাঁরই নিকট রয়েছে, তিনি ব্যতীত তা অন্য কেউ জানে না। (সূরা আন‘আম- ৫৯)

وَلِلّٰهِ غَيْبُ السَّمَاوَاتِ وَالْاَ رْضِؕ وَاِلَيْهِ يُرْجَعُ الْاَمْرُ كُلُّهٗ فَاعْبُدْهُ وَتَوَكَّلْ عَلَيْهِؕ وَمَا رَبُّكَ بِغَافِلٍ عَمَّا تَعْمَلُوْنَ

আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর অদৃশ্য বিষয়ের জ্ঞান আল্লাহরই এবং তাঁরই নিকট সমসত্ম কিছুর প্রত্যাবর্তন হবে। সুতরাং তুমি তাঁর ইবাদাত কর এবং তাঁর উপর নির্ভর করো। তোমরা যা করো সে সম্বন্ধে তোমার প্রতিপালক গাফিল নন। (সূরা হুদ- ১২৩)

عَالِمُ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ الْكَبِيْرُ الْمُتَعَالِ

যা অদৃশ্য ও যা দৃশ্যমান তিনি তা অবগত; তিনি মহান ও সর্বোচ্চ মর্যাদাবান। (সূরা রা‘দ- ৯)

اِنَّ اللهَ يَعْلَمُ غَيْبَ السَّمَاوَاتِ وَالْاَ رْضِؕ وَاللهُ بَصِيْرٌ ۢبِمَا تَعْمَلُوْنَ

নিশ্চয় আল্লাহ আসমান ও জমিনের গায়েবী বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান রাখেন। আর তোমরা যা কিছু করছ তিনি তা দেখছেন। (সূরা হুজুরাত- ১৮)

اِنَّ اللهَ عَالِمُ غَيْبِ السَّمَاوَاتِ وَالْاَ رْضِؕ اِنَّهٗ عَلِيْمٌ ۢبِذَاتِ الصُّدُوْرِ

নিশ্চয় আল্লাহ আসমান ও জমিনের যাবতীয় গুপ্ত বিষয় সম্পর্কে পরিজ্ঞাত। নিশ্চয় তিনি অন্তরের বিষয় সম্বন্ধেও অবগত আছেন। (সূরা ফাতির- ৩৮)

ذٰلِكَ عَالِمُ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ الْعَزِيْزُ الرَّحِيْمُ

তিনি অপ্রকাশ্য ও প্রকাশ্য সকল বিষয় সম্পর্কে পরিজ্ঞাত, প্রতাপশালী ও পরম দয়ালু। (সূরা সাজদা- ৬)

ব্যাখ্যা : غَائِبٌ (গায়েব) শব্দের অর্থ লুকানো, অদৃশ্য বা আবৃত। পারিভাষিক অর্থে গায়েব হচ্ছে এমন জিনিস যা অজানা এবং যাকে উপায়-উপকরণ দ্বারা আয়ত্ত করা যায় না। এ ব্যাপারেও মহান আল্লাহ একক সত্তা। পৃথিবী ও আকাশে ফেরেশতা, জিন, নবী, আউলিয়া অথবা মানুষ যে কোন সৃষ্টিই হোক না কেন সকলের জ্ঞানই সীমাবদ্ধ। কিছু না কিছু বিষয় সবার কাছ থেকে গোপন রয়েছে। সবকিছুর জ্ঞান যদি কারো থাকে তাহলে তিনি হচ্ছেন একমাত্র আল্লাহ। এ বিশ্বের কোন জিনিস এবং কোন কথা তাঁর কাছে গোপন নেই। তিনি অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ সবকিছু সম্পর্কে অবগত আছেন। মানুষের মন এ সত্যটি সুস্পষ্টভাবে জানে যে, ভাগ্যের ভাঙ্গা-গড়া, ফরিয়াদ শোনা, প্রয়োজন পূর্ণ করা এবং প্রত্যেক সাহায্যপ্রার্থীকে সাহায্য করা কেবলমাত্র এমন এক সত্তার কাজ হতে পারে, যিনি সবকিছু জানেন এবং যার কাছে কোনকিছুই গোপন নেই। এখন যদি এটি সত্য হয়ে থাকে যে, আল্লাহ ছাড়া আর কেউ স্রষ্টা, ফরিয়াদ শ্রবণকারী ও রিযিকদাতা নেই, তাহলে সাথে সাথে এটিও সত্য যে, আল্লাহ ছাড়া দ্বিতীয় কোন সত্তা অদৃশ্য জ্ঞানের অধিকারীও নয়। এটি ইসলামের মৌলিক বিশ্বাস। আল্লাহ তাঁর বান্দাদের মধ্য থেকে যাকে যতটুকু চান জ্ঞান দান করেন। কিন্তু অদৃশ্য জ্ঞান সামগ্রিকভাবে কেউ লাভ করতে পারে না। সুতরাং ‘আলিমুল গায়েব’ বা অদৃশ্য জ্ঞানী উপাধি একমাত্র আল্লাহ রাববুল আলামীনের জন্য নির্দিষ্ট। কোন সৃষ্টি অদৃশ্য জ্ঞানের অধিকারী হতে পারে এ ধারণা কুরআন নাকচ করে দেয়। এমনকি অন্যান্য নবী এবং স্বয়ং মুহাম্মাদ ﷺ এর ব্যাপারেও এ বিষয়টি পরিষ্কার যে, তারা অদৃশ্য জ্ঞানের অধিকারী নন। তাঁকে অদৃশ্যের কেবলমাত্র ততটুকু জ্ঞান আল্লাহর পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছে যতটুকু রিসালাতের দায়িত্ব পালন করার জন্য প্রয়োজন ছিল। আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে অদৃশ্য জ্ঞানের অধিকারী মনে করা এবং যা কিছু আছে ও যা কিছু হবে এর জ্ঞান আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো আছে একথা বিশ্বাস করা শিরক। আয়েশা (রাঃ) বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি দাবী করে যে, মুহাম্মদ ﷺ আগামীকাল কী হবে তা জানেন, সে আল্লাহর প্রতি মিথ্যারোপ করে। কারণ আল্লাহ বলেন, হে নবী! তুমি বলে দাও আল্লাহ ছাড়া আসমান ও জমিনের অধিবাসীদের মধ্যে আর কেউ অদৃশ্যের জ্ঞান রাখে না।’’

(সহীহ বুখারী, হা/৪৮৫৫)

আল্লাহ গায়েবের কিছু বিষয় রাসূলদের কাছে প্রকাশ করেন :

عَالِمُ الْغَيْبِ فَلَا يُظْهِرُ عَلٰى غَيْبِهٖۤ احَدًا اِلَّا مَنِ ارْتَضٰى مِنْ رَّسُوْلٍ فَاِنَّهٗ يَسْلُكُ مِنْ ۢبَيْنِ يَدَيْهِ وَمِنْ خَلْفِهٖ رَصَدًا

তিনি অদৃশ্য জ্ঞানের অধিকারী, তিনি তাঁর অদৃশ্যের জ্ঞান কারো নিকট প্রকাশ করেন না। তবে তাঁর মনোনীত রাসূল ব্যতীত। নিশ্চয় তিনি তার সামনে এবং পেছনে প্রহরী নিয়োজিত করে রেখেছেন (যাতে শয়তান কোন মিশ্রণ ঘটাতে না পারে)। (সূরা জিন-২৬, ২৭)

আসমান ও জমিনের কোনকিছুই আল্লাহর কাছে গোপন নয় :

وَمَا يَخْفٰى عَلَى اللهِ مِنْ شَيْءٍ فِى الْاَ رْضِ وَلَا فِى السَّمَآءِ

পৃথিবী ও আকাশমন্ডলীর কোনকিছুই আল্লাহর নিকট গোপন থাকে না। (সূরা ইবরাহীম- ৩৮)

اِنَّ اللهَ لَا يَخْفٰى عَلَيْهِ شَيْءٌ فِى الْاَ رْضِ وَلَا فِى السَّمَآءِ

নিশ্চয় আল্লাহর কাছে পৃথিবী ও আকাশমন্ডলীর কিছুই গোপন থাকে না। (সূরা আলে ইমরান- ৫)

সরিষা পরিমাণ কোন জিনিসও আল্লাহর জ্ঞানের বাইরে নয় :

وَمَا يَعْزُبُ عَنْ رَّبِّكَ مِنْ مِّثْقَالِ ذَرَّةٍ فِى الْاَ رْضِ وَلَا فِى السَّمَآءِ وَلَاۤ اَصْغَرَ مِنْ ذٰلِكَ وَلَاۤ اَكْبَرَ اِلَّا فِيْ كِتَابٍ مُّبِيْنٍ

আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর অণুপরিমাণ কোন জিনিসও তোমার প্রতিপালকের অগোচরে নয় এবং তার চেয়ে ছোট অথবা বড় কিছুই নেই, যা সুস্পষ্ট কিতাবে নেই। (সূরা ইউনুস- ৬১)

لَا يَعْزُبُ عَنْهُ مِثْقَالُ ذَرَّةٍ فِى السَّمَاوَاتِ وَلَا فِى الْاَ رْضِ وَلَاۤ اَصْغَرُ مِنْ ذٰلِكَ وَلَاۤ اَكْبَرُ اِلَّا فِيْ كِتَابٍ مُّبِيْنٍ

আকাশ ও পৃথিবীতে অণুপরিমাণ জিনিসও তাঁর অজানা নয়, কিংবা তদপেক্ষা ক্ষুদ্র বা বৃহৎ (তাঁর অজানা নয়) কিন্তু এ সবই সুস্পষ্ট গ্রন্থেহ লিপিবদ্ধ আছে। (সূরা সাবা- ৩)

এতো কিছু জানা আল্লাহর পক্ষে কঠিন নয় :

اَلَمْ تَعْلَمْ اَنَّ اللهَ يَعْلَمُ مَا فِى السَّمَآءِ وَالْاَ رْضِ اِنَّ ذٰلِكَ فِيْ كِتَابٍ اِنَّ ذٰلِكَ عَلَى اللهِ يَسِيْرٌ

তুমি কি জান না যে, আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু রয়েছে আল্লাহ তা জানেন। এ সবই আছে এক কিতাবে; নিশ্চয় এটা আল্লাহর নিকট সহজ। (সূরা হজ্জ- ৭০)

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন