hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

তাফসীরুল কুরআন বিল কুরআন

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

১৫৬
অধ্যায়- ৩ : অসৎ পন্থায় উপার্জন করা হারাম
হারাম উপায়ে অর্জিত অনেক সম্পদের চেয়ে হালাল অল্পও ভালো :

قُلْ لَّا يَسْتَوِى الْخَبِيْثُ وَالطَّيِّبُ وَلَوْ اَعْجَبَكَ كَثْرَةُ الْخَبِيْثِۚ فَاتَّقُوا اللهَ يَاۤ اُولِى الْاَلْبَابِ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُوْنَ

বলো, মন্দ ও ভালো সমান নয়, যদিও মন্দের আধিক্য তোমাকে চমৎকৃত করে। সুতরাং হে জ্ঞানী ব্যক্তিবর্গ! আল্লাহকে ভয় করো, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার। (সূরা মায়েদা- ১০০)

ব্যাখ্যা : এ আয়াতটি মূল্যায়নের এমন একটি মানদন্ড পেশ করে, যা দুনিয়ালোভী মানুষের মানদন্ড থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। তাদের দৃষ্টিতে পাঁচ টাকার তুলনায় একশ টাকার দাম অবশ্যই অনেক বেশি। কিন্তু এ আয়াতটি বলছে, যদি আল্লাহর নাফরমানি করে একশ টাকা লাভ করা হয়, তাহলেও তা নাপাক এবং অপবিত্র। অন্যদিকে আল্লাহর হুকুম পালনের আওতায় যদি পাঁচ টাকা লাভ করা হয়, তাহলেও তা পবিত্র। আর অপবিত্রের পরিমাণ যতবেশিই হোক না কেন তা কোন দিন পবিত্রের সমান হতে পারবে না। আবর্জনার একটি স্তূপের তুলনায় এক ফোঁটা আতরের মর্যাদা অনেক বেশি। কাজেই আপাত দৃষ্টিতে পরিমাণ যত সামান্যই হোক না কেন একজন যথার্থ বুদ্ধিমান ব্যক্তির অবশ্যই হালাল জিনিস নিয়ে সন্তুষ্ট থাকা উচিত। হারাম বস্তু বাহ্যত যত বিপুল পরিমাণই হোক না কেন সেদিকে কোন অবস্থাতেই হাত বাড়ানো উচিত নয়।

দুনিয়ার জীবিকা দুনিয়াদাররাও পাচ্ছে এবং আখিরাত প্রত্যাশীরাও পাচ্ছে। আখিরাত প্রত্যাশীদেরকে জীবিকা থেকে বঞ্চিত করার ক্ষমতা দুনিয়া পূজারীদের নেই এবং দুনিয়া পূজারীদের কাছে আল্লাহর নিয়ামত পৌঁছার পথে বাধা দেয়ার ক্ষমতা আখিরাত প্রত্যাশীদেরও নেই। তবে আখিরাত প্রত্যাশীরা যে শ্রেষ্ঠত্বের অধিকারী তা দুনিয়াতেই সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে। এটা এ দৃষ্টিতে নয় যে, তাদের খাবার-দাবার, পোশাক-পরিচ্ছদ, গাড়ি-বাড়ি ও সভ্যতা-সংস্কৃতি দুনিয়া পূজারীদের চেয়ে বেশি দামি। বরং পার্থক্যটা এখানে যে, তারা যা কিছু পায় সততা, বিশ্বস্ততা ও ঈমানদারীর সাথে পায়। আর দুনিয়াদাররা যা কিছু লাভ করে তা যুলুম, নিপীড়ন, ধোঁকা, বেঈমানী এবং হারাম পথ অবলম্বনের মাধ্যমে। আবার আখিরাত প্রত্যাশীরা যা কিছু পায়, তা ভারসাম্যের সাথে খরচ করে। তা থেকে হকদারদের হক আদায় করে, নিজের প্রয়োজন পূর্ণ করে এবং অপরকেও সাহায্য করে। আবার আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে অন্যান্য সৎকাজেও ব্যয় করে। পক্ষান্তরে দুনিয়া পূজারীরা যা কিছু পায় তা অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিলাসিতা, অন্যায় ও বিপর্যয় সৃষ্টিকারী কাজে ব্যয় করে থাকে। এভাবে সবদিক দিয়েই আখিরাত প্রত্যাশীদের জীবনে আল্লাহভীতি ও নৈতিকতার এমন আদর্শ ফুটে ওঠে, যা তালি দেয়া কাপড়ে এবং খড়ের তৈরি কুঁড়ে ঘরেও ঔজ্জ্বল্য বিকীরণ করে। অপরদিকে এ পদ্ধতি বিদ্ধমান না থাকলে বড় বড় বাদশাহদের জন্যও জনগণের হৃদয়ে কখনো সত্যিকার মর্যাদাবোধ এবং ভালোবাসা জাগে না।

সুদ খাওয়া হারাম :

يَاۤ اَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا لَا تَأْكُلُوا الرِّبَاۤ اَضْعَافًا مُّضَاعَفَةً۪ وَاتَّقُوا اللهَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُوْنَ

হে ঈমানদারগণ! তোমরা দ্বিগুণের উপর দ্বিগুণ (চক্রবৃদ্ধি হারে) সুদ ভক্ষণ করো না। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় করো, যেন তোমরা সফলকাম হতে পার। (সূরা আলে ইমরান- ১৩০)

ইয়াতীমের মাল খাওয়া হারাম :

وَاٰتُوا الْيَتَامٰۤى اَمْوَالَهُمْ وَلَا تَتَبَدَّلُوا الْخَبِيْثَ بِالطَّيِّبِ۪ وَلَا تَأْكُلُوْاۤ اَمْوَالَهُمْ اِلٰۤى اَمْوَالِكُمْؕ اِنَّهٗ كَانَ حُوْبًا كَبِيْرًا

ইয়াতীমদেরকে তাদের ধনসম্পদ বুঝিয়ে দাও এবং খারাপ মালের সাথে উত্তম মালের বিনিময় করো না। তোমাদের ধনসম্পদের সাথে তাদের ধনসম্পদও ভোগ করো না, নিশ্চয় এটা কবীরা গোনাহ। (সূরা নিসা- ২)

পতিতাবৃত্তির মাধ্যমে উপার্জন করা হারাম :

وَلَا تُكْرِهُوْا فَتَيَاتِكُمْ عَلَى الْبِغَآءِ اِنْ اَرَدْنَ تَحَصُّنًا لِّتَبْتَغُوْا عَرَضَ الْحَيَاةِ الدُّنْيَاؕ وَمَنْ يُّكْرِهْهُّنَّ فَاِنَّ اللهَ مِنْ ۢبَعْدِ اِكْرَاهِهِنَّ غَفُوْرٌ رَّحِيْمٌ

যদি তোমাদের দাসীগণ সতীত্ব রক্ষা করতে চায়, তবে পার্থিব জীবনের ধনসম্পদের লালসায় তাদেরকে ব্যভিচারিণী হতে বাধ্য করো না। এরপরও যদি কেউ তাদেরকে বাধ্য করে, তবে তাদের উপর জবরদস্তির পর আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু। (সূরা নূর- ৩৩)

ব্যাখ্যা : জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবদুল্লাহ ইবনে উবাই এর দু’জন বাঁদী ছিল। একজনের নাম ছিল মুসাইকাহ এবং অপরজনের নাম ছিল উমাইমাহ। সে দু’জন বাঁদীকে দিয়ে জোরপূর্বক বেশ্যাবৃত্তি করাত। তাই তারা এ বিষয়ে নবী ﷺ এর নিকট অভিযোগ করল। তখন এ আয়াত নাযিল হয়। (সহীহ মুসলিম, হা/৭৪৪৩)

মদ ও জুয়ার ব্যবসা হারাম :

يَاۤ اَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْاۤ اِنَّمَا الْخَمْرُ وَالْمَيْسِرُ وَالْاَنْصَابُ وَالْاَزْلَامُ رِجْسٌ مِّنْ عَمَلِ الشَّيْطَانِ فَاجْتَنِبُوْهُ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُوْنَ

হে ঈমানদারগণ! নিশ্চয় মদ, জুয়া, মূর্তি ও ভাগ্য নির্ধারক তীর এসব শয়তানের কাজ। অতএব তা বর্জন করো, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার। (সূরা মায়েদা- ৯০)

ব্যাখ্যা : ইবনে আববাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূল ﷺ মদের ব্যাপারে বলেছেন, নিশ্চয় যিনি মদ্যপানকে হারাম করেছেন, তিনি মদ ক্রয়-বিক্রয়কেও হারাম করেছেন। (সহীহ মুসলিম, হা/৪১২৮)

গান ও বাদ্যযন্ত্রের ব্যবসা হারাম :

وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يَّشْتَرِيْ لَهْوَ الْحَدِيْثِ لِيُضِلَّ عَنْ سَبِيْلِ اللهِ بِغَيْرِ عِلْمٍۗ وَيَتَّخِذَهَا هُزُوًاؕ اُولٰٓئِكَ لَهُمْ عَذَابٌ مُّهِيْنٌ

মানুষের মধ্যে এমন লোকও আছে, যারা লোকদেরকে আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করার জন্য অজ্ঞতাবশত অমূলক কাহিনী ক্রয় করে নেয় এবং আল্লাহর দেখানো পথকে ঠাট্টা-বিদ্রূপের বস্তু বানিয়ে নেয়। (জেনে রেখো) এদের জন্যই রয়েছে অপমানজনক শাস্তি। (সূরা লুক্বমান- ৬)

চুরি ও ডাকাতির মাল হারাম :

وَالسَّارِقُ وَالسَّارِقَةُ فَاقْطَعُوْاۤ اَيْدِيَهُمَا جَزَآءً ۢبِمَا كَسَبَا نَكَالًا مِّنَ اللهِؕ وَاللهُ عَزِيْزٌ حَكِيْمٌ

যে পুরুষ ও নারী চুরি করে তাদের কর্মফলের শাস্তি হিসেবে তাদের হাত কেটে দাও, এটা হলো আল্লাহর পক্ষ থেকে দন্ড। আল্লাহ মহাপ্রতাপশালী ও মহাবিজ্ঞ। (সূরা মায়েদা- ৩৮)

ধর্মের নামে অনেকে হারাম খায় :

يَاۤ اَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْاۤ اِنَّ كَثِيْرًا مِّنَ الْاَحْبَارِ وَالرُّهْبَانِ لَيَأْكُلُوْنَ اَمْوَالَ النَّاسِ بِالْبَاطِلِ

হে মুমিনগণ! পন্ডিত এবং সংসারবিরাগীদের মধ্যে অনেকেই অন্যের ধনসম্পদ অন্যায়ভাবে ভোগ করে থাকে। (সূরা তাওবা- ৩৪)

অন্যায়ভাবে মানুষের মাল খাওয়ার জন্য বিচারকের নিকট যাওয়া নিষেধ :

وَلَا تَأْكُلُوْاۤ اَمْوَالَكُمْ بَيْنَكُمْ بِالْبَاطِلِ وَتُدْلُوْا بِهَاۤ اِلَى الْحُكَّامِ لِتَأْكُلُوْا فَرِيْقًا مِّنْ اَمْوَالِ النَّاسِ بِالْاِثْمِ وَاَنْتُمْ تَعْلَمُوْنَ

তোমরা পরস্পরের ধনসম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না এবং তা বিচারকের নিকট এজন্য উপস্থাপন করো না, যাতে তোমরা অন্যায়ভাবে জেনে-বুঝে মানুষের মালের কিছু অংশ খেতে পার। (সূরা বাক্বারা- ১৮৮)

ব্যাখ্যা : এ আয়াতটির দু’টি অর্থ হতে পারে। একটি অর্থ হচ্ছে, তোমরা শাসকদেরকে ঘুষ দিয়ে অবৈধভাবে লাভবান হওয়ার চেষ্টা করো না। আর দ্বিতীয় অর্থ হচ্ছে, তোমরা নিজেরাই যখন জান এগুলো অন্যের সম্পদ, তখন তা ভোগ করার আশায় কোন অবৈধ পন্থা অবলম্বন করে আদালতের কাছে যেয়ো না। কেননা আদালত থেকে ঐ সম্পদের মালিকানা লাভ করার পরও প্রকৃতপক্ষে তুমি তার বৈধ মালিক হতে পারবে না। আল্লাহর কাছে তা তোমার জন্য হারামই থেকে যাবে।

যে ব্যক্তি বিচারককে ধোঁকা দিয়ে নিজের পক্ষে সত্যের বিপরীত ফায়সালা করিয়ে নেয়, সে আসলে নিজেকে এ ভুল ধারণার শিকার করে যে, এ ধরনের কলাকৌশল অবলম্বন করার ফলে সত্য তার পক্ষে এসে গেছে। অথচ প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর দৃষ্টিতে সত্য যার দিকে মূলত তার দিকেই থেকে যায়। এ ক্ষেত্রে প্রতারিত বিচারপতির ফায়সালার কারণে আসল সত্যের উপর কোন প্রভাব পড়ে না।

অন্যায়ভাবে মানুষের মাল খাওয়া হারাম :

يَاۤ اَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا لَا تَأْكُلُوْاۤ اَمْوَالَكُمْ بَيْنَكُمْ بِالْبَاطِلِ اِلَّاۤ اَنْ تَكُوْنَ تِجَارَةً عَنْ تَرَاضٍ مِّنْكُمْ وَلَا تَقْتُلُوْاۤ اَنْفُسَكُمْؕ اِنَّ اللهَ كَانَ بِكُمْ رَحِيْمًا

হে মুমিনগণ! তোমরা একে অপরের ধনসম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না, তবে তোমাদের পরস্পরের সন্তুষ্টিতে ব্যবসা করা বৈধ। আর তোমরা একে অপরকে হত্যা করো না, নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের প্রতি পরম দয়ালু। (সূরা নিসা- ২৯)

ব্যাখ্যা : অন্যায়ভাবে বলতে এখানে এমন পদ্ধতির কথা বুঝানো হয়েছে, যা সত্য ও ন্যায়নীতি বিরোধী এবং নৈতিক দিক দিয়েও শরীয়াতের দৃষ্টিতে নাজায়েয। লেনদেন অর্থ হচ্ছে, পরস্পরের মধ্যে স্বার্থ ও মুনাফার বিনিময় করা। যেমন- ব্যবসা, শিল্প ও কারিগরীর ক্ষেত্রে হয়ে থাকে। সেখানে একজন অন্যজনের প্রয়োজন সরবরাহ করার জন্য পরিশ্রম করে এবং তার বিনিময় দান করে। পারস্পরিক সন্তুষ্টি অর্থ হচ্ছে, কোন অবৈধ চাপ বা ধোঁকা ও প্রতারণার মাধ্যমে লেনদেন হবে না। ঘুষ ও সুদের মধ্যে সাময়িক সন্তুষ্টি থাকলেও মূলত এ সন্তুষ্টির পেছনে থাকে অক্ষমতা। প্রতিপক্ষ নিজের অক্ষমতার কারণে বাধ্য হয়ে চাপের মুখে ঘুষ ও সুদ দিতে রাজী হয়। জুয়ার মধ্যেও বাহ্যিক দৃষ্টিতে সন্তুষ্টিই মনে হয়। কিন্তু আসলে জুয়াতে অংশগ্রহণকারী প্রত্যেক ব্যক্তিই বিজয়ী হওয়ার আশায় অংশগ্রহণ করে। পরাজয়ের উদ্দেশ্য নিয়ে কেউ এতে অংশগ্রহণ করে না। প্রতারণা ও জালিয়াতির কারবারেও বাহ্যত সন্তুষ্টি দেখা যায়, কিন্তু এখানে সন্তুষ্টির পেছনে এ ভুল ধারণা কাজ করে যে, এর মধ্যে প্রতারণা ও জালিয়াতি নেই। দ্বিতীয় পক্ষ যদি জানতে পারে যে, প্রথম পক্ষ তার সাথে প্রতারণা ও জালিয়াতি করছে, তাহলে সে কখনই এতে রাজি হবে না।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন