hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

তাফসীরুল কুরআন বিল কুরআন

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

১২৩
অধ্যায়- ৩ : ইসলামী রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয়তা
আল্লাহর আইনের বাস্তবায়ন ছাড়া ইনসাফ প্রতিষ্ঠিত হয় না :

لَقَدْ اَرْسَلْنَا رُسُلَنَا بِالْبَيِّنَاتِ وَاَنْزَلْنَا مَعَهُمُ الْكِتَابَ وَالْمِيْزَانَ لِيَقُوْمَ النَّاسُ بِالْقِسْطِۚ وَاَنْزَلْنَا الْحَدِيْدَ فِيْهِ بَاْسٌ شَدِيْدٌ وَّمَنَافِعُ لِلنَّاسِ

নিশ্চয় আমি আমার রাসূলদেরকে প্রেরণ করেছি স্পষ্ট প্রমাণসহ এবং তাদের সঙ্গে দিয়েছি কিতাব ও মানদন্ড, যাতে করে মানুষ সুবিচার প্রতিষ্ঠা করতে পারে। আর আমি লৌহ দিয়েছি, যাতে রয়েছে প্রচন্ড শক্তি ও মানুষের জন্য বহুবিধ কল্যাণ। (সূরা হাদীদ- ২৫)

ব্যাখ্যা : اَلْحَدِيْدُ (আল হাদীদ) অর্থ হলো লৌহ। কিন্তু এখানে হাদীদ দ্বারা রাজনৈতিক শক্তিকে বুঝানো হয়েছে। বর্ণনার ধারাবাহিকতা অনুযায়ী আয়াতের মর্ম হচ্ছে, আল্লাহ তা‘আলা নবী-রাসূলদেরকে মু‘জিযা এবং কিতাব দিয়ে প্রেরণ করেছেন। যাতে করে লোকেরা ইনসাফের উপর প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু এটা একেবারে পরিষ্কার যে, কেবল উপদেশ দ্বারা অধিকাংশ মানুষ সৎপথ অবলম্বন করে না। সে ক্ষেত্রে রাজনৈতিক শক্তিই হচ্ছে এমন মাধ্যম যাকে ইসলামের পক্ষে ব্যবহার করলে লোহার মতো শক্ত ভূমিকা রাখতে পারে। আমীরুল মুমিনীন উসমান ইবনে আফফান (রাঃ) বলেন, اِنَّ اللهَ لَيَزَعُ بِالسُّلْطَانِ مَا لَا يَزَعُ بِالْقُراٰنِ ‘‘আল্লাহ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাবলে এমন কিছুর উচ্ছেদ ঘটান, কুরআনের মাধ্যমে যেগুলোর উচ্ছেদ ঘটান না।’’ অর্থাৎ কুরআনের সতর্কবাণী অধিকাংশ লোকের উপরই প্রভাব বিস্তার করে না। কিন্তু ভয় এবং প্রহারের আঘাত অনেককেই প্রভাবিত করে। উসমান (রাঃ) এর এ উক্তিটির অনেক তাৎপর্য রয়েছে। কারণ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার প্রভাব মারাত্মক। রাষ্ট্রীয় প্রশাসন যদি কোন অন্যায় কাজকে প্রতিহত করতে চায় তাহলে যত সহজে এটা সম্ভব হবে ওয়াজ-নসীহত ও বক্তৃতার মাধ্যমে তা ঐভাবে সম্ভব হয় না। অনেক ক্ষেত্রে ওয়াজ-নসীহতের কোন প্রভাবই লক্ষ্য করা যায় না। এজন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে যদি ইসলামের বিধান পালন করার উদ্যোগ নেয়া হয় এবং এ কাজে মানুষকে বাধ্য করা হয় তবে সকলেই ইসলামের বিধান পালনে অভ্যস্ত হবে। (শারহু সুনানে আবু দাউদ লিশ শায়েখ আবদুল মুহসিন- খন্ড ২৩, পৃ: ৪৫৭)

আল্লাহর আইন দিয়ে বিচার না করলে মুমিন হওয়া যায় না :

اَلَمْ تَرَ اِلَى الَّذِيْنَ يَزْعُمُوْنَ اَنَّهُمْ اٰمَنُوْا بِمَاۤ اُنْزِلَ اِلَيْكَ وَمَاۤ اُنْزِلَ مِنْ قَبْلِكَ يُرِيْدُوْنَ اَنْ يَّتَحَاكَمُوْاۤ اِلَى الطَّاغُوْتِ وَقَدْ اُمِرُوْاۤ اَنْ يَّكْفُرُوْا بِهٖؕ وَيُرِيْدُ الشَّيْطَانُ اَنْ يُّضِلَّهُمْ ضَلَالًا ۢبَعِيْدًا

তুমি কি তাদেরকে দেখনি, যারা দাবি করে যে, তোমার প্রতি এবং তোমার পূর্ববর্তী নবীদের প্রতি যা নাযিল হয়েছে তাতে তারা বিশ্বাস করে, আবার তারা তাগুতের কাছে বিচারপ্রার্থী হতে চায়? অথচ তা প্রত্যাখ্যান করার জন্য তাদেরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আর শয়তান তাদেরকে ভীষণভাবে পথভ্রষ্ট করতে চায়। (সূরা নিসা- ৬০)

ব্যাখ্যা : এখানে ‘তাগুত’ বলতে সুস্পষ্টভাবে এমন শাসককে বুঝানো হয়েছে, যে আল্লাহর আইন বাদ দিয়ে অন্য কোন আইন অনুযায়ী ফায়সালা করে। মূলত যে বিচারব্যবস্থা আল্লাহর সার্বভৌম ক্ষমতার আনুগত্য করে না এবং আল্লাহর কিতাবকে চূড়ান্ত সনদ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় না তা মূলত তাগুত। কাজেই যে আদালত তাগুতের ভূমিকা পালন করছে, নিজের বিভিন্ন বিষয়ের ফায়সালার জন্য তার কাছে উপস্থিত হওয়া ঈমান বিরোধী কাজ- এ ব্যাপারে এ আয়াতটির বক্তব্য একেবারে সুস্পষ্ট। আর আল্লাহ ও তাঁর কিতাবের উপর ঈমান আনার অপরিহার্য দাবি অনুযায়ী এ ধরনের আদালতকে অস্বীকার করাই প্রত্যেক ঈমানদার ব্যক্তির কর্তব্য। কেননা কুরআনের দৃষ্টিতে তাগুতকে অস্বীকার না করলে ঈমানদার হওয়া যায় না। আর আল্লাহ ও তাগুত উভয়ের সামনে একই সাথে মাথা নত করা হচ্ছে সুস্পষ্ট মুনাফিকী।

শানে নুযূল : একদা জনৈক ইয়াহুদির সাথে জনৈক মুনাফিকের ঝগড়া হলে, ইয়াহুদি রাসূল ﷺ কে বিচারক মানল। সে জানত, ধর্ম বিষয়ে মতবিরোধ থাকলেও তিনি পক্ষপাতিত্ব করবেন না। আর মুনাফিকের দাবী ছিল মিথ্যা, সে মনে করল, আমি বাইরে মুসলিম হলেও রাসূল ﷺ এর নিকট বাক-চাতুরাতীতে কাজ হবে না। তাই একজন অসৎ ইয়াহুদি সরদার কা’ব ইবনে আশরাফকে বিচারক মানতে চাইল। অবশেষে উভয়েই রাসূল ﷺ এর নিকট বিচারপ্রার্থী হলো এবং ইয়াহুদির বিজয় হলো। কিন্তু মুনাফিকটি এতে সন্তুষ্ট না হয়ে ওমর (রাঃ) এর নিকট গেল। সে ধারণা করেছিল ওমর (রাঃ) তার পক্ষে রায় দেবেন। ইয়াহুদিও মনে করল, ওমর (রাঃ) ন্যায়পরায়ণ; তিনি তার পক্ষেই রায় দেবেন। কাজেই মুনাফিকের প্রস্তাবে সে সম্মত হয়ে ওমরের কাছে গেল এবং সমস্ত ঘটনা বর্ণনা করল। আর বলল যে, রাসূল ﷺ এর বিচার এ ব্যক্তি মানেনি। ওমর (রাঃ) তৎক্ষণাৎ তলোয়ার দ্বারা মুনাফিকের শিরোচ্ছেদ করে দিলেন এবং বললেন, নবীর মীমাংসা অমান্য করার এটাই শাস্তি। অতঃপর মুনাফিকটির ওয়ারীসরা রাসূল ﷺ এর কাছে এসে বলল, একটা আপোষ মীমাংসার জন্যই ওমরের নিকট যাওয়া হয়েছিল, অনর্থক তিনি তাকে হত্যা করেছেন। কাজেই আমরা হত্যার প্রতিশোধ চাই। তখন এ আয়াতটি নাযিল হয়।

তাগুতের অনুসারীরা জাহান্নামী :

اَللهُ وَلِيُّ الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا يُخْرِجُهُمْ مِّنَ الظُّلُمَاتِ اِلَى النُّوْرِؕ وَالَّذِيْنَ كَفَرُوْاۤ اَوْلِيَآؤُهُمُ الطَّاغُوْتُ يُخْرِجُوْنَهُمْ مِّنَ النُّوْرِ اِلَى الظُّلُمَاتِؕ اُولٰٓئِكَ اَصْحَابُ النَّارِۚ هُمْ فِيْهَا خَالِدُوْنَ

যারা ঈমান এনেছে আল্লাহ তাদের অভিভাবক; তিনি তাদেরকে অন্ধকারসমূহ হতে আলোর দিকে নিয়ে আসেন। আর যারা কাফির তাদের অভিভাবক হচ্ছে তাগুত; তারা তাদেরকে আলো থেকে অন্ধকারসমূহের দিকে নিয়ে যায়। আর তারাই হচ্ছে জাহান্নামের অধিবাসী, সেখানে তারা চিরকাল অবস্থান করবে। (সূরা বাক্বারা- ২৫৭)

তাগুতকে বিশ্বাস করলে আল্লাহর লানত পড়বে :

اَلَمْ تَرَ اِلَى الَّذِيْنَ اُوْتُوْا نَصِيْبًا مِّنَ الْكِتَابِ يُؤْمِنُوْنَ بِالْجِبْتِ وَالطَّاغُوْتِ وَيَقُوْلُوْنَ لِلَّذِيْنَ كَفَرُوْا هٰۤؤُلَآءِ اَهْدٰى مِنَ الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا سَبِيْلًا اُولٰٓئِكَ الَّذِيْنَ لَعَنَهُمُ اللهُؕ وَمَنْ يَّلْعَنِ اللهُ فَلَنْ تَجِدَ لَهٗ نَصِيْرًا

তুমি কি তাদেরকে দেখনি, যাদেরকে কিতাবের এক অংশ দেয়া হয়েছিল; তারা জিব্ত ও তাগুতের প্রতি ঈমান রাখত? আর তারা কাফিরদের সম্বন্ধে বলত, এদের পথই মুমিনদের পথ থেকে উত্তম। এরা তারাই, যাদেরকে আল্লাহ লানত করেছেন; আর আল্লাহ যাকে লানত করেন তুমি কখনো তার কোন সাহায্যকারী পাবে না। (সূরা নিসা- ৫১, ৫২)

সকল নবীর মূল মিশন ছিল তাগুতকে অস্বীকার করা :

وَلَقَدْ بَعَثْنَا فِيْ كُلِّ اُمَّةٍ رَّسُوْلًا اَنِ اعْبُدُوا اللهَ وَاجْتَنِبُوا الطَّاغُوْتَ

আমি তো প্রত্যেক জাতির মধ্যেই রাসূল পাঠিয়েছি, (এ আদেশ দিয়ে যে) তোমরা আল্লাহর ইবাদাত করো এবং তাগুতকে বর্জন করো। (সূরা নাহল- ৩৬)

তাগুতকে অস্বীকার করাই ঈমানের মূল দাবী :

وَالَّذِيْنَ اجْتَنَبُوا الطَّاغُوْتَ اَنْ يَّعْبُدُوْهَا وَاَنَابُوْاۤ اِلَى اللهِ لَهُمُ الْبُشْرٰى فَبَشِّرْ عِبَادِ

যারা মূর্তিপূজা থেকে বিরত থাকে এবং আল্লাহ অভিমুখী হয়, তাদের জন্য রয়েছে সুসংবাদ। অতএব আমার বান্দাদেরকে সুসংবাদ দিন। (সূরা যুমার- ১৭)

فَمَنْ يَّكْفُرْ بِالطَّاغُوْتِ وَيُؤْمِنْ ۢبِاللهِ فَقَدِ اسْتَمْسَكَ بِالْعُرْوَةِ الْوُثْقٰىۗ لَا انْفِصَامَ لَهَاؕ وَاللهُ سَمِيْعٌ عَلِيْمٌ

যে ব্যক্তি তাগুতকে অস্বীকার করবে এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান আনবে, সে এমন এক মজবুত রশি ধারণ করল যা কখনো ছিড়বে না। আর আল্লাহ সর্বশ্রোতা ও মহাজ্ঞানী। (সূরা বাক্বারা- ২৫৬)

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন