hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

তাফসীরুল কুরআন বিল কুরআন

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

১৭৯
অধ্যায়- ১ : পর্দার গুরুত্ব ও বিধান
পর্দার উদ্দেশ্য হলো নারী-পুরুষের চরিত্রকে পবিত্র রাখা :

ذٰلِكُمْ اَطْهَرُ لِقُلُوْبِكُمْ وَقُلُوْبِهِنَّ

এটা তোমাদের অন্তরের জন্য এবং তাদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্র উপায়। (সূরা আহযাব- ৫৩)

নারীরা ঘরের দরজা-জানালায় পর্দা ঝুলিয়ে রাখবে :

وَاِذَا سَاَلْتُمُوْهُنَّ مَتَاعًا فَاسْاَلُوْهُنَّ مِنْ وَّرَآءِ حِجَابٍ

তোমরা যখন নবীর স্ত্রীদের কাছ থেকে কোনকিছু চাইবে, তখন পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। (সূরা আহযাব- ৫৩)

নারীরা জাহেলী যুগের নারীদের মতো ঘুরাফিরা করবে না :

وَقَرْنَ فِيْ بُيُوْتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْاُوْلٰى

তোমরা নিজেদের ঘরে অবস্থান করবে এবং প্রাথমিক অজ্ঞতার যুগের ন্যায় নিজেদেরকে প্রদর্শন করে বেড়াবে না। (সূরা আহযাব- ৩৩)

মাথা ও বুকের উপর ওড়না ঝুলিয়ে দেবে :

وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلٰى جُيُوْبِهِنَّ

তারা যেন তাদের গলদেশ ও বক্ষদেশ মাথার কাপড় দ্বারা আবৃত করে নেয়। (সূরা নূর- ৩১)

রাস্তায় বের হওয়ার সময় সম্পূর্ণ শরীর ঢেকে নেবে :

يَاۤ اَيُّهَا النَّبِيُّ قُلْ لِّاَزْوَاجِكَ وَبَنَاتِكَ وَنِسَآءِ الْمُؤْمِنِيْنَ يُدْنِيْنَ عَلَيْهِنَّ مِنْ جَلَابِيْبِهِنَّؕ ذٰلِكَ اَدْنٰۤى اَنْ يُّعْرَفْنَ فَلَا يُؤْذَيْنَؕ وَكَانَ اللهُ غَفُوْرًا رَّحِيْمًا

হে নবী! আপনি আপনার স্ত্রীদেরকে, আপনার কন্যাদেরকে এবং মুমিন নারীদেরকে বলে দিন, তারা যেন তাদের চাদর নিজেদের উপর ঝুলিয়ে দেয়, এতে সহজেই তাদের পরিচয় পাওয়া যাবে, ফলে তারা লাঞ্ছিত হবে না। আর আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল ও করুণাময়। (সূরা আহযাব- ৫৯)

ব্যাখ্যা : جِلْبَابُ (জিলবাব) বলা হয় বড় চাদরকে। আর يُدْنِيْنَ (ইউদনীনা) শব্দের আসল অর্থ হচ্ছে, নিকটবর্তী করা ও ঢেকে নেয়া। কিন্তু যখন তার সাথে عَلٰى (আলা) অব্যয় বসে তখন তার অর্থ হয় উপর থেকে ঝুলিয়ে দেয়া। আয়াতের পরিষ্কার অর্থ হচ্ছে, নারীরা যেন নিজেদের চাদর ভালোভাবে জড়িয়ে নিয়ে তার একটি অংশ নিজেদের উপর ঝুলিয়ে দেয়, সাধারণভাবে যাকে বলা হয় ঘোমটা। এখানে আল্লাহ মহিলাদেরকে হুকুম দিয়েছেন যে, যখন তারা কোন কাজে ঘরের বাইরে বের হবে তখন চাদরের একটি অংশ নিজেদের উপর দিয়ে ঝুলিয়ে দিয়ে বের হবে। যাতে করে নিজেদের বক্ষদেশ, গলা, চুল ও মুখ ঢাকা পড়ে যায় এবং রাস্তা চেনার জন্য শুধুমাত্র চোখগুলো খোলা থাকে। এ আয়াতটিতে যুবতী মেয়েদের চেহারা অপরিচিত পুরুষদের থেকে লুকিয়ে রাখার হুকুম দেয়া হয়েছে। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে, লোকেরা যেন জানতে পারে যে, এরা দুশ্চরিত্রা মেয়ে নয়। কারণ যে মেয়েটি নিজের চেহারা ঢাকবে, অথচ চেহারা সতরের অন্তর্ভুক্ত নয়, তার কাছে কেউ এ আশা করতে পারে না যে, সে নিজের সতর অন্যের সামনে খুলতে রাজী হবে। এভাবে প্রত্যেক ব্যক্তি জানবে, এ মেয়েটি পর্দাশীল, একে যিনার কাজে লিপ্ত করার আশা করা যেতে পারে না। এভাবে সে বখাটেদের হাতে উত্ত্যক্ত ও লাঞ্ছিত হওয়া থেকে বাঁচতে পারবে। বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে এ বিধানটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

এখানে চাদর দিয়ে ঢাকার যে হুকুম দেয়া হয়েছে তার উদ্দেশ্য হচ্ছে, অপরিচিতদের থেকে সৌন্দর্য লুকানো। আর এ কথা সুস্পষ্ট যে, এ উদ্দেশ্য তখনই পূর্ণ হতে পারে যখন চাদরটি হবে সাদামাটা। একটি উন্নত নকশাদার ও দৃষ্টিনন্দিত কাপড় জড়িয়ে নিলে এর উদ্দেশ্য ব্যর্থ হয়ে যাবে। তারপর আল্লাহ নিজেই এ হুকুমটির কারণ বর্ণনা করে দিয়েছেন যে, এটি এমন একটি সর্বাধিক উপযোগী পদ্ধতি, যা থেকে মুসলিম মহিলাদেরকে চিনে নেয়া যাবে এবং তারা উত্যক্ত হওয়া থেকেও বেঁচে যাবে।

সৎকর্মশীলা মহিলাদের সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, যদি সত্যই তোমরা এভাবে নিজেদেরকে পরিচিত করাতে না চাও এবং পুরুষদের যৌন লালসার দৃষ্টি সত্যিই তোমাদের জন্য আনন্দদায়ক না হয়ে কষ্টকর হয়ে থাকে, তাহলে এজন্য তোমরা খুব ভালোভাবে সাজসজ্জা করে বাসর রাতের কনে সেজে ঘর থেকে বের হয়ো না। দর্শকদের লালসার দৃষ্টির সামনে নিজেদের সৌন্দর্যকে উজ্জল করে তুলে ধরো না। বাইরে বের হওয়ার আগে যেসব মেয়েরা সাজগোজ করে পুরুষদেরকে নিজেদের দিকে আকৃষ্ট করতে চায়, তারা যদি উল্টো পুরুষদেরকেই দোষারোপ করে তাহলে এটা প্রতারণা ছাড়া আর কিছুই নয়। মানুষের কথা তার নিয়ত নির্ধারণ করে না বরং কাজই তার আসল নিয়ত প্রকাশ করে। কাজেই যে নারী আকর্ষণীয় হয়ে পরপুরুষের সামনে যায়, তার এ কাজের পেছনে কোন ধরনের উদ্দেশ্য কাজ করছে সেটা ঐ কাজ দ্বারাই প্রকাশ পায়। কাজেই এসব মহিলাদের থেকে যা আশা করা যেতে পারে, ফিতনাবাজ লোকেরা তাদের থেকে তাই আশা করে থাকে।

এসব জানার পরও যে ব্যক্তি পর্দার বিরুদ্ধাচরণ করবে সে এ কথা মেনে নিয়েই করবে যে, হয় সে কুরআনবিরোধী কাজ করছে অথবা কুরআনের নির্দেশনাকে ভুল মনে করছে। আল্লাহর এ বিধান জানার পর যারা নিজেদেরকে সংশোধন করে নেবে, আশা করা যায় আল্লাহ তাদের অতীতের ভুলসমূহ ক্ষমা করে দেবেন। আর যারা কুরআনের বিধান লঙ্ঘন করছে, তারা নিজেরাই নিজেদেরকে জাহান্নামের আগুনের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। যেদিন তাদের চেহারা আগুনে উলটপালট করা হবে তখন তারা বলবে, হায়! যদি আমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করতাম! কিন্তু তখন এ আফসোস কোন কাজে লাগবে না।

এমনভাবে চলাফেরা করবে না যাতে সৌন্দর্য বেরিয়ে যায় :

وَلَا يَضْرِبْنَ بِاَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِيْنَ مِنْ زِيْنَتِهِنَّؕ وَتُوْبُوْاۤ اِلَى اللهِ جَمِيْعًا اَيُّهَا الْمُؤْمِنُوْنَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُوْنَ

তারা যেন তাদের গোপন সৌন্দর্য প্রকাশের উদ্দেশ্যে সজোরে পদক্ষেপ না করে। হে মুমিনগণ! তোমরা সকলে আল্লাহর দিকে ফিরে আস, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার। (সূরা নূর- ৩১)

ব্যাখ্যা : জাহেলী যুগের মহিলাদের সামনের দিকে বুকের একটি অংশ খোলা থাকত। এতে গলা ও বুকের উপরের দিকের অংশটি পরিষ্কার দেখা যেত। বুকে জামা ছাড়া আর কিছুই থাকত না। পেছনের দিকে দু’তিনটা খোঁপা দেখা যেত। এ আয়াত নাযিল হওয়ার পর মুসলিম মহিলাদের মধ্যে ওড়নার প্রচলন শুরু হয়। এ ওড়না বর্তমান মেয়েদের মতো ভাঁজ করে পেঁচিয়ে গলার মালা বানিয়ে ফ্যাশন করা উদ্দেশ্যে ছিল না। বরং এর মূল উদ্দেশ্য ছিল, যাতে করে এর দ্বারা কোমর, বুক ইত্যাদি আকর্ষণীয় অঙ্গসমূহ ভালোভাবে ঢেকে নেয়া যায়। মুমিন মহিলারা কুরআনের এ হুকুমটি শোনার সাথে সাথেই অত্যন্ত আগ্রহভরে একে কার্যকর করতে প্রতিযোগিতায় নেমে গিয়েছিলেন। আয়েশা (রাঃ) বলেন, সূরা নূর নাযিল হলে রাসূল ﷺ এর মুখ থেকে তা শুনে লোকেরা ঘরে ফিরে আসে এবং নিজেদের স্ত্রী, মেয়ে ও বোনদেরকে তা শোনায়। ফলে আনসারী মেয়েদের মধ্যে এমন একজনও ছিল না যে وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلٰى جُيُوبِهِنَّ (অর্থাৎ তারা যেন তাদের মাথার উপর ওড়না ঝুলিয়ে দেয়) বাক্যাংশ শোনার পর নিজের জায়গায় বসে ছিল। বরং প্রত্যেকে উঠে দাঁড়িয়েছিল এবং এ আদেশ পালন করার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল। অনেকে নিজের কোমরে বাঁধা কাপড় খুলে নিয়ে আবার অনেকে চাদর তুলে নিয়ে সাথে সাথে ওড়না বানিয়ে ফেলেন এবং তা দিয়ে শরীর ঢেকে নেন। পরদিন ফজরের নামাযের সময় যতজন মহিলা মসজিদে নববীতে হাজির হয়েছিলেন তারা সবাই ওড়না পরা ছিলেন। এ সম্পর্কিত অন্য একটি হাদীসে আয়েশা (রাঃ) আরো বিস্তারিত বর্ণনা করে বলেন, মহিলারা পাতলা কাপড় পরিত্যাগ করে মোটা কাপড় বাছাই করে তা দিয়ে ওড়না তৈরি করে। (ইবনে কাসীর, ৩য় খন্ড, ২৮৪ পৃ:)

নিজের চোখ নিয়ন্ত্রণে রাখবে, লজ্জাস্থানের হেফাজত করতে হবে :

وَقُلْ لِّلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ اَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوْجَهُنَّ

আর মুমিন নারীদেরকে বলো, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত করে ও তাদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করে। (সূরা নূর- ৩১)

কোমল কণ্ঠে পরপুরুষের সাথে কথা বলা যাবে না :

يَا نِسَآءَ النَّبِيِّ لَسْتُنَّ كَاَحَدٍ مِّنَ النِّسَآءِ اِنِ اتَّقَيْتُنَّ فَلَا تَخْضَعْنَ بِالْقَوْلِ فَيَطْمَعَ الَّذِيْ فِيْ قَلْبِهٖ مَرَضٌ وَّقُلْنَ قَوْلًا مَّعْرُوْفًا

হে নবীর স্ত্রীগণ! তোমরা কোন সাধারণ স্ত্রীলোকের মতো নও, যদি তোমরা আল্লাহকে ভয় কর তবে (পরপুরুষের সাথে) কথা বলার সময় এমনভাবে কোমল কণ্ঠে কথা বলবে না, যাতে যার অন্তরে (কুপ্রবৃত্তির) রোগ রয়েছে সে লালায়িত হতে পারে। আর তোমরা ন্যায়সঙ্গত কথা বলবে। (সূরা আহযাব- ৩২)

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন