hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

তাফসীরুল কুরআন বিল কুরআন

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

৪৩০
অধ্যায়- ১৩ : ইয়াহুদি আলিমদের চরিত্র
তাদের আলিমরা পাপকাজে বাধা দিত না :

وَتَرٰى كَثِيْرًا مِّنْهُمْ يُسَارِعُوْنَ فِى الْاِثْمِ وَالْعُدْوَانِ وَاَكْلِهِمُ السُّحْتَؕ لَبِئْسَ مَا كَانُوْا يَعْمَلُوْنَ لَوْلَا يَنْهَاهُمُ الرَّبَّانِيُّوْنَ وَالْاَحْبَارُ عَنْ قَوْلِهِمُ الْاِثْمَ وَاَكْلِهِمُ السُّحْتَؕ لَبِئْسَ مَا كَانُوْا يَصْنَعُوْنَ

আর তুমি তাদের মধ্যে এমন অসংখ্য লোক দেখবে, যারা পাপ, যুলুম ও হারাম ভক্ষণে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত রয়েছে; তারা যা করে তা কতই না নিকৃষ্ট। তাদের আল্লাহওয়ালা ও আলিমরা যদি তাদেরকে খারাপ কথা বলতে ও অবৈধ ভক্ষণ করা হতে নিষেধ করত! তারা যা করে তা কতই না নিকৃষ্ট। (সূরা মায়েদা- ৬২, ৬৩)

তারা আল্লাহর কালামকে বিকৃত করত :

اَفَتَطْمَعُوْنَ اَنْ يُّؤْمِنُوْا لَكُمْ وَقَدْ كَانَ فَرِيْقٌ مِّنْهُمْ يَسْمَعُوْنَ كَلَامَ اللهِ ثُمَّ يُحَرِّفُوْنَهٗ مِنْ ۢبَعْدِ مَا عَقَلُوْهُ وَهُمْ يَعْلَمُوْنَ

তোমরা কি আশা কর যে, তোমাদের কথায় তারা ঈমান আনয়ন করবে? অথচ তাদের মধ্যে এমন কতক লোক গত হয়ে গেছে, যারা আল্লাহর কালাম শুনত। অতঃপর তারা তা বুঝার পর স্বজ্ঞানে বিকৃত করে ফেলত। (সূরা বাক্বারা- ৭৫)

مِنَ الَّذِيْنَ هَادُوْا يُحَرِّفُوْنَ الْكَلِمَ عَنْ مَّوَاضِعِهٖ

ইয়াহুদিদের মধ্যে কিছু লোক রয়েছে, যারা (আল্লাহর) বাক্যসমূহ স্থানচ্যুত করে বিকৃত করে থাকে।

(সূরা নিসা- ৪৬)

ব্যাখ্যা : তাহরীফ এর তিনটি অর্থ হয়।

(এক) তারা আল্লাহর কিতাবের শব্দের মধ্যে পরিবর্তন ঘটায়।

(দুই) তারা নিজেদের মনগড়া ব্যাখ্যার সাহায্যে কিতাবের আয়াতের অর্থের মধ্যে পরিবর্তন আনে।

(তিন) তারা মুহাম্মাদ ﷺ ও তাঁর অনুসারীদের সাহচর্যে এসে তাদের কথা শোনে। কিন্তু সেখান থেকে ফিরে গিয়ে নিজেদের শয়তানী দুষ্টবুদ্ধির দ্বারা পরিচালিত হয়ে তাকে ভিন্ন রূপ দিয়ে লোকদের সামনে প্রকাশ করে। এভাবে তারা নবী ও তাঁর অনুসারীদের দুর্নাম করে এবং তাদের বিরুদ্ধে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে সাধারণ মানুষকে ইসলামী দাওয়াত থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে চায়।

তাদের আলিমরা নিজেরাই বিধান তৈরি করত :

فَوَيْلٌ لِّلَّذِيْنَ يَكْتُبُوْنَ الْكِتَابَ بِاَيْدِيْهِمْۗ ثُمَّ يَقُوْلُوْنَ هٰذَا مِنْ عِنْدِ اللهِ

আফসোস তাদের জন্য যারা স্বহস্তে পুস্তক রচনা করে। অতঃপর তারা বলে, এগুলো হচ্ছে আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ শরীয়াতের বিধান। (সূরা বাক্বারা- ৭৯)

ব্যাখ্যা : তাদের আলিমদের সম্পর্কে বলা হচ্ছে, তারা নিজেদের ইচ্ছা ও পার্থিব স্বার্থ অনুযায়ী আল্লাহর কালামের অর্থ করত এবং মনগড়া ব্যাখ্যা করত। সাধারণ মানুষের সামনে সেগুলোকে তারা এমনভাবে পেশ করেছে, যেন সেগুলো সবই আল্লাহর পক্ষ থেকে নাযিল হয়েছে। ফলে প্রত্যেক আইন শাস্ত্রবিদের উদ্ভাবিত আইন আল্লাহর বাণীর মর্যাদা লাভ করত। ইয়াহুদি আলিমরা শরীয়াতের ছোট ছোট বিধি-নিষেধ পালনের উপর বেশি গুরুত্ব দিত। তাদের সমস্ত সময় এসব ছোটখাটো বিধানের পর্যালোচনা ও যাচাই বাছাইয়ে অতিবাহিত হতো। তাদের মনীষীরা এ খুঁটিনাটি বিধানগুলো ইজতিহাদের মাধ্যমে বের করত। কিন্তু তাদের দৃষ্টিতে ‘শিরক’ ছিল একটি হালকা ও ছোট গোনাহ। তাই এ গোনাহটির হাত থেকে বাঁচার জন্য তারা কোন প্রকার চেষ্টা করত না এবং নিজেদের জাতিকে মুশরিকী কার্যকলাপ থেকে বাঁচানোর জন্য কোন উদ্যোগও গ্রহণ করত না। ফলে মুশরিকদের সাথে বন্ধুত্ব এবং তাদের সাহায্য সহযোগিতাও তাদের কাছে ক্ষতিকর মনে হতো না।

তারা আল্লাহর সাক্ষ্য গোপন করত :

وَمَنْ اَظْلَمُ مِمَّنْ كَتَمَ شَهَادَةً عِنْدَهٗ مِنَ اللهِ

যে ব্যক্তি আল্লাহর নিকট হতে প্রাপ্ত সাক্ষ্যসমূহ গোপন করে, তার চেয়ে বড় যালিম আর কে হতে পারে?

(সূরা বাক্বারা- ১৪০)

ব্যাখ্যা : এখানে ইয়াহুদি ও খ্রিস্টান আলিমদেরকে সম্বোধন করা হয়েছে। তারা নিজেরাও এ সত্যটি জানত যে, ইয়াহুদিবাদ ও খ্রিষ্টবাদ সে সময় যে বৈশিষ্ট্য নিয়ে বিরাজ করছিল, তা অনেক পরবর্তী কালের সৃষ্টি। কিন্তু তা সত্ত্বেও তারা জনগণকে এ ভুল ধারণা দিয়ে আসছিল যে, নবীদের অতিক্রান্ত হয়ে যাওয়ার দীর্ঘকাল পর তাদের মনীষীরা যে সমস্ত আকীদা-বিশ্বাস, রীতিনীতি ও ইজতিহাদী নিয়মকানুন রচনা করেছে, সেগুলোর আনুগত্যের মধ্যেই মানুষের কল্যাণ ও মুক্তি নিহিত রয়েছে। তাদের আলিমদেরকে যখন জিজ্ঞেস করা হতো, তোমাদের এ কথাই যদি সত্য হয়ে থাকে, তাহলে ইবরাহীম, ইসহাক, ইয়াকূব ও অন্যান্য নবীগণ তোমাদের এ সম্প্রদায়গুলোর মধ্যে কোন সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন? তখন তারা এর জবাব এড়িয়ে যেত।

তারা কিতাবের কিছু অংশ মানত এবং কিছু অংশ মানত না :

اَفَتُؤْمِنُوْنَ بِبَعْضِ الْكِتَابِ وَتَكْفُرُوْنَ بِبَعْضٍ

তবে কি তোমরা গ্রন্থের একাংশকে বিশ্বাস কর ও অপর অংশকে অবিশ্বাস কর? (সূরা বাক্বারা- ৮৫)

তারা আল্লাহর কিতাবের শিক্ষাকে ভুলে গিয়েছিল :

يُّحَرِّفُوْنَ الْكَلِمَ عَنْ مَّوَاضِعِهٖ وَنَسُوْا حَظًّا مِّمَّا ذُكِّرُوْا بِهٖ

তারা আল্লাহর কালামকে তার নির্দিষ্ট অর্থ থেকে সরিয়ে নিয়ে বিকৃত করেছিল এবং তাদেরকে যে উপদেশ দেয়া হয়েছিল তার একাংশকে ভুলে গিয়েছিল। (সূরা মায়েদা- ১৩)

তারা হারাম খেতে অভ্যস্ত ছিল :

سَمَّاعُوْنَ لِلْكَذِبِ اَكَّالُوْنَ لِلسُّحْتِ

তারা মিথ্যা শুনতে অভ্যস্ত এবং হারাম খেতে অত্যন্ত আসক্ত। (সূরা মায়েদা- ৪২)

তারা দুনিয়ালোভী হয়ে গিয়েছিল :

فَخَلَفَ مِنْ ۢبَعْدِهِمْ خَلْفٌ وَّرِثُوا الْكِتَابَ يَاْخُذُوْنَ عَرَضَ هٰذَا الْاَدْنٰى وَيَقُوْلُوْنَ سَيُغْفَرُ لَنَاۚ وَاِنْ يَّاْتِهِمْ عَرَضٌ مِّثْلُهٗ يَاْخُذُوْهُؕ اَلَمْ يُؤْخَذْ عَلَيْهِمْ مِّيْثَاقُ الْكِتَابِ اَنْ لَّا يَقُوْلُوْا عَلَى اللهِ اِلَّا الْحَقَّ وَدَرَسُوْا مَا فِيْهِؕ وَالدَّارُ الْاٰخِرَةُ خَيْرٌ لِّلَّذِيْنَ يَتَّقُوْنَؕ اَفَلَا تَعْقِلُوْنَ

অতঃপর তাদের অযোগ্য উত্তরসূরীরা একের পর এক এই জমিনে ক্ষমতার অধিকারী হয়ে আল্লাহর কিতাবেরও উত্তরাধীকারী হয়ে পড়ে। তারা এ দুনিয়ার ধনসম্পদ করায়ত্ত করে নেয়। অপরদিকে তারা মূর্খের মতো বলত, অচিরেই আমাদেরকে ক্ষমা করে দেয়া হবে। কিন্তু যদি নিকৃষ্ট মানের কোন পার্থিব স্বার্থ তাদের কাছে এসে পড়ে, তখন তারা সাথে সাথেই তা হস্তগত করে নেয়। তাদের থেকে কি এ অঙ্গীকার নেয়া হয়নি যে, তারা আল্লাহ সম্বন্ধে সত্য ব্যতীত কিছুই বলবে না? তাতে যা আছে তারা তো তা অধ্যয়নও করেছে। তবে যারা তাক্বওয়া অবলম্বন করে তাদের জন্য পরকালের আবাসই শ্রেষ্ঠ, তোমরা কি এটা অনুধাবন কর না? (সূরা আ‘রাফ- ১৬৯)

ব্যাখ্যা : অর্থাৎ তারা কেবল নিজেরা আল্লাহর পথ থেকে সরে গিয়ে ক্ষান্ত হয়নি, বরং তারা একই সাথে এত বড় দুঃসাহসিক অপরাধ প্রবণতায় লিপ্ত হয়ে পড়েছে যে, দুনিয়ায় আল্লাহর বান্দাদেরকে পথভ্রষ্ট করার জন্য যতগুলো আন্দোলন দানা বেঁধে উঠেছে তাদের অধিকাংশের পেছনে তাদেরকে সক্রিয় দেখা গেছে। সত্যের দিকে আহবান করার জন্য যে আন্দোলনই শুরু হয়েছে তার বিরুদ্ধে তারাই সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অথচ এই দুর্ভাগা জাতিটির কাছে আল্লাহর কিতাব আছে এবং তারাও নবীদের উত্তরাধিকারী। প্রকাশ্যে আল্লাহর সাথে শত্রুতা করা এবং আল্লাহর আনুগত্য ব্যবস্থাকে মিটিয়ে দেয়ার সংকল্পের ভিত্তিতে দুনিয়ার বুকে প্রথম আল্লাহদ্রোহী জীবনবিধান ও রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার অপরাধও এই আহলে কিতাব দ্বারা সংঘটিত হয়েছিল। এই ইয়াহুদি জাতিই ছিল এর উদ্যোক্তা, প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন