hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

তাফসীরুল কুরআন বিল কুরআন

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

২৮১
অধ্যায়- ৫ : মানুষ হত্যা করা
আল্লাহ অন্যায়ভাবে মানুষ হত্যা করতে নিষেধ করেছেন :

وَلَا تَقْتُلُوْاۤ اَنْفُسَكُمْ اِنَّ اللهَ كَانَ بِكُمْ رَحِيْمًا

একে অপরকে হত্যা করো না, নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের প্রতি পরম দয়ালু। (সূরা নিসা- ২৯)

ব্যাখ্যা : এ আয়াতের দু’টি অর্থ হয়। (এক) পরস্পরকে হত্যা করো না। (দুই) আত্মহত্যা করো না। মহান আল্লাহ মানুষকে মর্যাদাসম্পন্ন করেছেন। অন্যের প্রাণের সাথে সাথে মানুষের নিজের প্রাণও সম্মানের অন্তর্ভুক্ত। কাজেই মানুষ হত্যা যতবড় অপরাধ, আত্মহত্যা করাও ঠিক ততবড় অপরাধ। মানুষ নিজে নিজের প্রাণের মালিক নয় এবং একে নিজ ক্ষমতায় নিঃশেষ করে দেয়ার অধিকারও সে রাখে না। বরং তার এ প্রাণ আল্লাহর মালিকানাধীন, তিনি এ প্রাণকে যা ইচ্ছা তাই করতে পারেন। তিনি ইচ্ছা করলে ব্যক্তির শরীরের মধ্যেও রাখতে পারেন, আবার শরীর থেকে পৃথক করেও রাখতে পারেন। তিনি একে কষ্টেও রাখতে পারেন, আবার প্রশান্তিতেও রাখতে পারেন। মূলত এর দ্বারা তিনি আমাদের পরীক্ষা নিচ্ছেন। তবে তিনি যেভাবেই আমাদের পরীক্ষা নেন না কেন, পরীক্ষার শেষ সময় পর্যন্ত আমাদেরকে সেভাবেই পরীক্ষা দিয়ে যেতে হবে। আল্লাহর দেয়া সময়কে ইচ্ছা করে বিনষ্ট করে দিয়ে পরীক্ষাগৃহ থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা ভুল পদক্ষেপ ছাড়া আর কিছুই নয়। আবার এ পালিয়ে যাওয়ার কাজটিও এমন এক অপরাধের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হয়, যাকে আল্লাহ সুস্পষ্ট ভাষায় হারাম হিসেবে গণ্য করেছেন। এটা কোন ক্রমেই কাম্য হতে পারে না।

وَلَا تَقْتُلُوا النَّفْسَ الَّتِيْ حَرَّمَ اللهُ اِلَّا بِالْحَقِّؕ ذٰلِكُمْ وَصَّاكُمْ بِهٖ لَعَلَّكُمْ تَعْقِلُوْنَ

আল্লাহ যাকে হত্যা করা নিষিদ্ধ করেছেন, তোমরা তাকে যথার্থ কারণ ছাড়া হত্যা করো না। তিনি তোমাদেরকে এ নির্দেশ দিলেন, যাতে তোমরা অনুধাবন করতে পার। (সূরা আন‘আম- ১৫১)

একজনকে হত্যা করা সারা দুনিয়ার মানুষকে হত্যা করার সমান :

مَنْ قَتَلَ نَفْسًا ۢبِغَيْرِ نَفْسٍ اَوْ فَسَادٍ فِى الْاَرْضِ فَكَاَنَّمَا قَتَلَ النَّاسَ جَمِيْعًاؕ وَمَنْ اَحْيَاهَا فَكَاَنَّمَاۤ اَحْيَا النَّاسَ جَمِيْعًا

যে ব্যক্তি কাউকে প্রাণের বিনিময়ে প্রাণ কিংবা দুনিয়ায় ফাসাদ সৃষ্টি করার কারণ ব্যতীত অন্য কোন কারণে হত্যা করবে, সে যেন দুনিয়ার সকল মানুষকেই হত্যা করল। আর যে ব্যক্তি কারো প্রাণ বাঁচাল, সে যেন সমস্ত মানুষের প্রাণ বাঁচাল। (সূরা মায়েদা- ৩২)

মানুষ হত্যার সূচনা হয় আদম (আঃ) এর পুত্র কাবিল এর মাধ্যমে :

وَاتْلُ عَلَيْهِمْ نَبَاَ ابْنَيْ اٰدَمَ بِالْحَقِّ اِذْ قَرَّبَا قُرْبَانًا فَتُقُبِّلَ مِنْ اَحَدِهِمَا وَلَمْ يُتَقَبَّلْ مِنَ الْاٰخَرِؕ قَالَ لَاَقْتُلَنَّكَؕ قَالَ اِنَّمَا يَتَقَبَّلُ اللهُ مِنَ الْمُتَّقِيْنَ

তুমি তাদেরকে আদমের দু’পুত্রের বিবরণ সঠিকভাবে শুনাও। যখন তারা কুরবানী করেছিল তখন তাদের একজনের কুরবানী কবুল করা হয়েছিল এবং অপরজনের কুরবানী কবুল করা হয়নি। অতঃপর (যার কুরবানী কবুল করা হয়নি) সে বলল, ‘‘অবশ্যই আমি তোমাকে হত্যা করব।’’ তখন অপরজন বলল, ‘‘আল্লাহ একমাত্র পরহেযগারদের কুরবানীই কবুল করে থাকেন।’’ (সূরা মায়েদা- ২৭)

হাবিল কাবিলকে হত্যা করতে রাজি ছিল না :

لَئِنْ ۢبَسَطْتَّ اِلَيَّ يَدَكَ لِتَقْتُلَنِيْ مَاۤ اَنَاْ بِبَاسِطٍ يَّدِيَ اِلَيْكَ لِاَقْتُلَكَۚ اِنِّۤيْ اَخَافُ اللهَ رَبَّ الْعَالَمِيْنَ

(হাবিল বলল) যদি তুমি আমাকে হত্যা করার জন্য আমার দিকে তোমার হাত বাড়াও, তবুও আমি তোমাকে হত্যা করার জন্য তোমার দিকে আমার হাত বাড়াব না। কেননা আমি বিশ্বজগতের প্রতিপালক আল্লাহকে ভয় করি। (সূরা মায়েদা- ২৮)

اِنِّۤيْ اُرِيْدُ اَنْ تَبُوْٓءَ بِاِثْمِيْ وَاِثْمِكَ فَتَكُوْنَ مِنْ اَصْحَابِ النَّارِۚ وَذٰلِكَ جَزَآءُ الظَّالِمِيْنَ

আমি চাই, তুমি আমার ও তোমার গোনাহের বোঝা বহন কর, তারপর তুমি জাহান্নামবাসীদের মধ্যে শামিল হয়ে যাও। আর এটাই হলো অত্যাচারীদের (প্রকৃত) শাস্তি। (সূরা মায়েদা- ২৯)

কাবিল তার ভাই হাবিলকে হত্যা করল :

فَطَوَّعَتْ لَهٗ نَفْسُهٗ قَتْلَ اَخِيْهِ فَقَتَلَهٗ فَاَصْبَحَ مِنَ الْخَاسِرِيْنَ

অতঃপর তার প্রবৃত্তি তার ভাইকে হত্যা করার উস্কানি দিল এবং সে তাকে হত্যা করল। ফলে সে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে শামিল হয়ে গেল। (সূরা মায়েদা- ৩০)

ভাইকে হত্যা করে কাবিল চরমভাবে লজ্জিত হলো :

فَبَعَثَ اللهُ غُرَابًا يَّبْحَثُ فِى الْاَرْضِ لِيُرِيَهٗ كَيْفَ يُوَارِيْ سَوْاَةَ اَخِيْهِؕ قَالَ يَا وَيْلَتَاۤ اَعَجَزْتُ اَنْ اَكُوْنَ مِثْلَ هٰذَا الْغُرَابِ فَاُوَارِيَ سَوْاَةَ اَخِيْۚ فَاَصْبَحَ مِنَ النَّادِمِيْنَ

তারপর আল্লাহ একটি কাক পাঠালেন, সে মাটি খুঁড়তে লাগল তাকে দেখানোর জন্য যে, কীভাবে সে তার ভাইয়ের লাশ লুকিয়ে রাখবে। (এসব দেখে) সে বলল, হায়! আমি কি এ কাকের মতোও হতে পারলাম না যে, আমার ভাইয়ের লাশ লুকিয়ে রাখতে পারি? অতঃপর সে লাঞ্ছিতদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেল। (সূরা মায়েদা- ৩১)

ব্যাখ্যা : মহান আল্লাহ একটি কাকের মাধ্যমে আদম (আঃ) এর বিভ্রান্ত পুত্রটিকে তার মূর্খতা সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়েছেন। ফলে যখন সে নিজের মনের প্রতি দৃষ্টি নিক্ষেপ করার সুযোগ পেয়েছে তখন তার লজ্জা কেবলমাত্র এতটুকু বিষয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি যে, সে লাশ লুকানোর কৌশল বের করার ব্যাপারে কাকের চেয়ে পেছনে থেকে গেল বরং তার মনে এ অনুভূতিও জন্ম নিয়েছে যে, নিজের ভাইকে হত্যা করে সে কত বড় মূর্খতার পরিচয় দিয়েছে।

বনী ইসরাঈলরা অনেক নবীকে হত্যা করেছে :

لَقَدْ اَخَذْنَا مِيْثَاقَ بَنِيْۤ اِسْرَآئِيْلَ وَاَرْسَلْنَاۤ اِلَيْهِمْ رُسُلًاؕ كُلَّمَا جَآءَهُمْ رَسُوْلٌ ۢبِمَا لَا تَهْوٰۤى اَنْفُسُهُمْ فَرِيْقًا كَذَّبُوْا وَفَرِيْقًا يَّقْتُلُوْنَ

আমি বনী ইসরাঈলের নিকট হতে অঙ্গীকার গ্রহণ করছিলাম এবং তাদের নিকট রাসূল প্রেরণ করেছিলাম। অতঃপর যখনই কোন রাসূল তাদের নিকট এমন কিছু নিয়ে এসেছেন যা তাদের মনঃপূত নয়, তখনই তারা কাউকে মিথ্যারোপ করেছে এবং কাউকে হত্যা করেছে। (সূরা মায়েদা- ৭০)

ইবরাহীম (আঃ) কে লোকেরা হত্যা করতে চেয়েছিল :

فَمَا كَانَ جَوَابَ قَوْمِهٖۤ اِلَّاۤ اَنْ قَالُوا اقْتُلُوْهُ اَوْ حَرِّقُوْهُ فَاَنْجَاهُ اللهُ مِنَ النَّارِؕ اِنَّ فِيْ ذٰلِكَ لَاٰيَاتٍ لِّقَوْمٍ يُّؤْمِنُوْنَ

উত্তরে ইবরাহীমের সম্প্রদায় শুধু এ বলল যে, একে হত্যা করো অথবা অগ্নিদগ্ধ করো। কিন্তু আল্লাহ তাকে অগ্নি হতে রক্ষা করলেন। নিশ্চয় এতে মুমিন সম্প্রদায়ের জন্য নিদর্শন রয়েছে। (সূরা আনকাবূত- ২৪)

ইউসুফ (আঃ) কে তাঁর ভাইয়েরা হত্যা করতে চেয়েছিল :

اُقْتُلُوْا يُوْسُفَ اَوِ اطْرَحُوْهُ اَرْضًا يَّخْلُ لَكُمْ وَجْهُ اَبِيْكُمْ وَتَكُوْنُوْا مِنْ ۢبَعْدِهٖ قَوْمًا صَالِحِيْنَ

তোমরা ইউসুফকে হত্যা করো অথবা তাঁকে কোন স্থানে ফেলে আসো, ফলে তোমাদের পিতার দৃষ্টি শুধু তোমাদের প্রতিই নিবিষ্ট হবে। অতঃপর তোমরা ভালো লোক হয়ে যাবে। (সূরা ইউসুফ- ৯)

মূসা (আঃ) কে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল :

وَقَالَ فِرْعَوْنُ ذَرُوْنِۤيْ اَقْتُلْ مُوْسٰى وَلْيَدْعُ رَبَّهٗ

ফিরাউন বলল, আমাকে ছেড়ে দাও আমি মূসাকে হত্যা করব, আর সে তার প্রতিপালককে ডাকুক। (সূরা মু’মিন- ২৬)

আমাদের নবীকেও হত্যা করার ষড়যন্ত্র করা হয়েছে :

وَاِذْ يَمْكُرُ بِكَ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا لِيُثْبِتُوْكَ اَوْ يَقْتُلُوْكَ اَوْ يُخْرِجُوْكَؕ وَيَمْكُرُوْنَ وَيَمْكُرُ اللهُؕ وَاللهُ خَيْرُ الْمَاكِرِيْنَ

(স্মরণ করো) যখন কাফিররা তোমার বিরুদ্ধে তোমাকে বন্দী করার জন্য অথবা হত্যা করার জন্য কিংবা নির্বাসিত করার জন্য ষড়যন্ত্র করেছিল। (লক্ষ্য করো) তারা কৌশল অবলম্বন করে এবং আল্লাহও কৌশল অবলম্বন করেন। আর আল্লাহই সর্বশ্রেষ্ঠ কৌশলী। (সূরা আনফাল- ৩০)

ইসলামের আহবানকারীদেরকে হত্যাকারীরা কঠিন শাস্তি ভোগ করবে :

اِنَّ الَّذِيْنَ يَكْفُرُوْنَ بِاٰيَاتِ اللهِ وَيَقْتُلُوْنَ النَّبِيِّيْنَ بِغَيْرِ حَقٍّ وَّيَقْتُلُوْنَ الَّذِيْنَ يَأْمُرُوْنَ بِالْقِسْطِ مِنَ النَّاسِ فَبَشِّرْهُمْ بِعَذَابٍ اَلِيْمٍ

নিশ্চয় যারা আল্লাহর আয়াতকে অস্বীকার করেছে, অন্যায়ভাবে নবীদেরকে হত্যা করেছে এবং যারা মানবজাতিকে ন্যায়-ইনসাফের নির্দেশ দেয় তাদেরকেও হত্যা করেছে, তাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির সংবাদ দাও। (সূরা আলে ইমরান- ২১)

স্বেচ্ছায় কোন মুমিনকে হত্যা করলে চির জাহান্নামী হতে হবে :

وَمَنْ يَّقْتُلْ مُؤْمِنًا مُّتَعَمِّدًا فَجَزَآؤُهٗ جَهَنَّمُ خَالِدًا فِيْهَا وَغَضِبَ اللهُ عَلَيْهِ وَلَعَنَهٗ وَاَعَدَّ لَهٗ عَذَابًا عَظِيْمًا

আর যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে কোন মুমিনকে হত্যা করবে, তার শাস্তি হবে জাহান্নাম; সেখানে সে স্থায়ী হবে। আল্লাহ তার প্রতি রাগান্বিত হন, তাকে অভিশপ্ত করেন এবং তার জন্য প্রস্তুত করে রাখেন মহাশাস্তি। (সূরা নিসা- ৯৩)

ভুলে কোন মুমিনকে হত্যা করলে কাফ্ফারা দিতে হবে :

وَمَا كَانَ لِمُؤْمِنٍ اَنْ يَّقْتُلَ مُؤْمِنًا اِلَّا خَطَأًۚ وَمَنْ قَتَلَ مُؤْمِنًا خَطَأً فَتَحْرِيْرُ رَقَبَةٍ مُّؤْمِنَةٍ وَّدِيَةٌ مُّسَلَّمَةٌ اِلٰۤى اَهْلِهٖۤ اِلَّاۤ اَنْ يَّصَّدَّقُوْاؕ فَاِنْ كَانَ مِنْ قَوْمٍ عَدُوًّا لَّكُمْ وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَتَحْرِيْرُ رَقَبَةٍ مُّؤْمِنَةٍؕ وَاِنْ كَانَ مِنْ قَوْمٍ ۢبَيْنَكُمْ وَبَيْنَهُمْ مِّيْثَاقٌ فَدِيَةٌ مُّسَلَّمَةٌ اِلٰۤى اَهْلِهٖ وَتَحْرِيْرُ رَقَبَةٍ مُّؤْمِنَةٍۚ فَمَنْ لَّمْ يَجِدْ فَصِيَامُ شَهْرَيْنِ مُتَتَابِعَيْنِؗ تَوْبَةً مِّنَ اللهِؕ وَكَانَ اللهُ عَلِيمًا حَكِيْمًا

কোন মুমিনকে হত্যা করা কোন মুমিনের কাজ নয়, তবে ভুলবশত হত্যা করে ফেললে তা স্বতন্ত্র। আর যদি (কোন মুমিন অপর) কোন মুমিনকে ভুলবশত হত্যা করেই ফেলে, তবে সে যেন একজন মুমিন দাস আযাদ করে দেয় এবং তার পরিবারকে রক্তপণ অর্পণ করে; তবে যদি তারা (রক্তপণ) ক্ষমা করে দেয় (তা ভিন্ন কথা)। আর যদি সে তোমাদের শত্রুপক্ষের লোক হয় এবং মুমিন হয়, তবে সে যেন (শুধুমাত্র) একজন মুমিন দাস মুক্ত করে দেয়। আর যদি সে এমন এক সম্প্রদায়ভুক্ত হয়, যার সঙ্গে তোমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ; তবে সে যেন তার পরিবারকে রক্তপণ অর্পণ করে দেয় এবং একজন মুমিন দাস মুক্ত করে দেয়, কিন্তু যে তা করতে পারবে না সে যেন ধারাবাহিকভাবে দু’মাস রোযা রাখে। বস্তুত এটা আল্লাহর পক্ষ হতে তাওবার জন্য একটি ব্যবস্থামাত্র; আর আল্লাহ সর্বজ্ঞ ও প্রজ্ঞাময়। (সূরা নিসা- ৯২)

অন্যায় হত্যার প্রতিশোধ নেয়ার বিধান রয়েছে :

وَلَا تَقْتُلُوا النَّفْسَ الَّتِيْ حَرَّمَ اللهُ اِلَّا بِالْحَقِّؕ وَمَنْ قُتِلَ مَظْلُوْمًا فَقَدْ جَعَلْنَا لِوَلِيِّهٖ سُلْطَانًا فَلَا يُسْرِفْ فِّى الْقَتْلِؕ اِنَّهٗ كَانَ مَنْصُوْرًا

আল্লাহ যার হত্যা নিষিদ্ধ করেছেন যথার্থ কারণ ব্যতীত তাকে হত্যা করো না। এরপরও যদি কেউ অন্যায়ভাবে নিহত হয়, তবে তার উত্তরাধিকারীদেরকে তো আমি এর প্রতিকারের অধিকার দিয়েছিই, কিন্তু হত্যার ব্যাপারে সে যেন বাড়াবাড়ি না করে; (এতে) নিশ্চয় সে সাহায্যপ্রাপ্ত হবে। (সূরা বনী ইসরাঈল- ৩৩)

হত্যার কিসাস নেয়াকে ফরজ করা হয়েছে :

يَاۤ اَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا كُتِبَ عَلَيْكُمُ الْقِصَاصُ فِى الْقَتْلٰىؕ اَ لْحُرُّ بِالْحُرِّ وَالْعَبْدُ بِالْعَبْدِ وَالْاُنْثٰى بِالْاُنْثٰىؕ فَمَنْ عُفِيَ لَهٗ مِنْ اَخِيْهِ شَيْءٌ فَاتِّبَاعٌ ۢبِالْمَعْرُوْفِ وَاَدَآءٌ اِلَيْهِ بِاِحْسَانٍؕ ذٰلِكَ تَخْفِيْفٌ مِّنْ رَّبِّكُمْ وَرَحْمَةٌؕ فَمَنِ اعْتَدٰى بَعْدَ ذٰلِكَ فَلَهٗ عَذَابٌ اَلِيْمٌ

হে ঈমানদারগণ! নিহতদের ব্যাপারে তোমাদের জন্য কিসাস (প্রতিশোধ গ্রহণের বিধান) ফরয করে দেয়া হলো। স্বাধীন ব্যক্তির পরিবর্তে স্বাধীন ব্যক্তি, দাসের পরিবর্তে দাস এবং নারীর পরিবর্তে নারী। কিন্তু কেউ যদি তার ভাই কর্তৃক কোন বিষয়ে ক্ষমাপ্রাপ্ত হয়, তবে যেন ন্যায়সঙ্গতভাবে (রক্তমূল্য) তাগাদা করে এবং (হত্যাকারী) সদ্ভাবে তা পরিশোধ করে দেবে। এটা তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ হতে হালকা বিধান ও করুণা। অতঃপর যে ব্যক্তি সীমালঙ্ঘন করবে, তার জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। (সূরা বাক্বারা- ১৭৮)

وَكَتَبْنَا عَلَيْهِمْ فِيْهَاۤ اَنَّ النَّفْسَ بِالنَّفْسِ وَالْعَيْنَ بِالْعَيْنِ وَالْاَنْفَ بِالْاَنْفِ وَالْاُذُنَ بِالْاُذُنِ وَالسِّنَّ بِالسِّنِّ وَالْجُرُوْحَ قِصَاصٌؕ فَمَنْ تَصَدَّقَ بِهٖ فَهُوَ كَفَّارَةٌ لَّهٗؕ وَمَنْ لَّمْ يَحْكُمْ بِمَاۤ اَنْزَلَ اللهُ فَاُولٰٓئِكَ هُمُ الظَّالِمُوْنَ

আমি তাদের জন্য তাতে নির্ধারণ করে দিয়েছিলাম যে, প্রাণের বদলে প্রাণ, চোখের বদলে চোখ, নাকের বদলে নাক, কানের বদলে কান, দাঁতের বদলে দাঁত এবং জখমের বদলে অনুরূপ জখম। তবে কেউ তা ক্ষমা করে দিলে, তা তার (ক্ষমাকারীর) জন্য পাপের কাফফারা হয়ে যাবে। আর আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন যারা সে অনুযায়ী মীমাংসা করে না, তারাই অত্যাচারী। (সূরা মায়েদা- ৪৫)

কিসাসের মধ্যে মানুষের জীবন নিহিত রয়েছে :

وَلَكُمْ فِى الْقِصَاصِ حَيَاةٌ يَّاۤ اُولِى الْاَلْبَابِ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُوْنَ

হে জ্ঞানবান লোকেরা! কিসাস (হত্যার প্রতিশোধ) গ্রহণের মধ্যে তোমাদের জন্য জীবন রয়েছে। যাতে তোমরা ভয় করতে পার। (সূরা বাক্বারা- ১৭৯)

ব্যাখ্যা : قِصَاصٌ (ক্বিসাস) হচ্ছে, রক্তপাতের বদলা বা প্রতিশোধ। অর্থাৎ হত্যাকারীর সাথে এমন ব্যবহার করা যেমন সে নিহত ব্যক্তির সাথে করেছে। কিন্তু এর অর্থ এ নয় যে, হত্যাকারী যেভাবে নিহত ব্যক্তিকে হত্যা করেছে ঠিক সেভাবেই তাকে হত্যা করতে হবে। বরং এর অর্থ হচ্ছে, সে একজনকে হত্যা করেছে তাই তাকেও হত্যা করা হবে।

‘বৈধ হত্যা’ পাঁচটি ক্ষেত্রের মধ্যে সীমাবদ্ধ। (এক) জেনে বুঝে হত্যাকারী থেকে কিসাস নেয়া। অর্থাৎ কোন ব্যক্তি কাউকে হত্যা করলে এর বিনিময়ে তাকেও হত্যা করা। (দুই) আল্লাহর সত্য দ্বীনের পথে বাধাদানকারীকে শাস্তি দেয়া। (তিন) ইসলামী রাষ্ট্রের শাসনব্যবস্থা উৎখাত করার প্রচেষ্টাকারীদের শাস্তি দেয়া। (চার) বিবাহিত পুরুষ ও নারীকে ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়ার শাস্তি দেয়া। (পাঁচ) মুরতাদ তথা যে ইসলাম ত্যাগ করে তাকে শাস্তি দেয়া। শুধুমাত্র এ পাঁচটি ক্ষেত্রে মানুষের প্রাণের মর্যাদা রহিত হয় এবং তাকে হত্যা করা বৈধ হিসেবে গণ্য হয়। হত্যার ব্যাপারে সীমালঙ্ঘন করা নিষিদ্ধ। যেমন অপরাধী ছাড়া অন্যদেরকেও হত্যা করা, অপরাধীকে কষ্ট দিয়ে হত্যা করা, হত্যার পর তার লাশের সাথে অন্যায় আচরণ করা ইত্যাদি।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন