hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

তাফসীরুল কুরআন বিল কুরআন

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

৫৮৯
অধ্যায়- ১৭ : নবী ﷺ এর প্রতি আল্লাহর প্রাথমিক অনুগ্রহ ও নির্দেশাবলি
নবুওয়াতের দায়িত্ব পাওয়ার পর নবী ﷺ যখন দ্বীনের প্রচার কাজ শুরু করলেন তখন অনেক বাধা ও কষ্টের সম্মুখীন হন। এমতাবস্থায় আল্লাহ তা‘আলা নবীর প্রতি তাঁর কিছু অনুগ্রহের বর্ণনা দিয়ে কতিপয় উপদেশ প্রদান করেন। সূরা ইন্শিরাহ, সূরা যোহা, সূরা মুয্যাম্মিল ও সূরা মুদ্দাসসির এর মধ্যে এ আলোচনা এসেছে।

সূরা ইনশিরাহ :

اَلَمْ نَشْرَحْ لَكَ صَدْرَكَ

আমি কি আপনার বক্ষ উন্মুক্ত করে দেইনি? (সূরা ইন্শিরাহ- ১)

وَوَضَعْنَا عَنْكَ وِزْرَكَ اَلَّذِيْ اَنْقَضَ ظَهْرَكَ

আমি আপনার বোঝা লাঘব করেছি, যা ছিল আপনার জন্য অতিশয় দুঃসহ। (সূরা ইনশিরাহ- ২, ৩)।

ব্যাখ্যা : মানবসমাজের শান্তি ও কল্যাণের পথ না পেয়ে আপনি অনেক বছর যেরকম পেরেশান অবস্থায় কাটিয়েছেন সে পথ যখন পেয়ে গেছেন, তখন চিন্তার কোন কারণ নেই। সমাজকে সংশোধন করতে গেলে যাদের স্বার্থে আঘাত লাগে তারা বাধা দেবেই। আপনি এসব বাধার কারণে মন খারাপ করবেন না।

وَرَفَعْنَا لَكَ ذِكْرَكَ

আমি আপনার আলোচনাকে সুউচ্চ করেছি। (সূরা ইনশিরাহ- ৪)

ব্যাখ্যা : আমি আপনার সুনাম বৃদ্ধি করা এবং মানুষের মধ্যে আপনার মর্যাদা বাড়ানোর ব্যবস্থা করেছি। যারা আপনার উপর ঈমান আনবে তারাই আপনার নাম উঁচু করবে।

فَاِنَّ مَعَ الْعُسْرِ يُسْرًا اِنَّ مَعَ الْعُسْرِ يُسْرًا

নিশ্চয় কষ্টের সাথে স্বস্তি রয়েছে, নিশ্চয় কষ্টের সাথে স্বস্তি রয়েছে। (সূরা ইনশিরাহ- ৫, ৬)

ব্যাখ্যা : দুঃখের পর পরই সুখ আসে। দুনিয়ায় কোন সুখই দুঃখ ছাড়া লাভ করা যায় না। আপনি যে বিরাট কাজে হাত দিয়েছেন, তার উপর মানবজাতির দুনিয়া ও আখিরাতের শান্তি নির্ভর করে। এত বড় সফলতা বিনা বাধা ও বিনা কষ্টে সম্ভব নয়।

فَاِذَا فَرَغْتَ فَانْصَبْ وَاِلٰى رَبِّكَ فَارْغَبْ

অতএব যখন অবসর পান পরিশ্রম করুন এবং আপনার পালনকর্তার প্রতি মনোনিবেশ করুন। (সূরা ইনশিরাহ- ৭, ৮)

ব্যাখ্যা : কঠিন অবস্থার মধ্যে মনকে মজবুত করার জন্য দায়িত্ব পালনের ফাঁকে ফাঁকে যখনই একটু অবসর পান, তখনই আমার যিকির করুন। এতে আপনি মনে শক্তি পাবেন।

সূরা যোহা :

وَالضُّحٰى وَاللَّيْلِ اِذَا سَجىٰ مَا وَدَّعَكَ رَبُّكَ وَمَا قَلٰى

শপথ পূর্বা‎হ্নের, শপথ রাত্রির যখন তা গভীর হয়, আপনার পালনকর্তা আপনাকে ত্যাগ করেননি এবং আপনার প্রতি বিরূপও হননি। (সূরা যোহা, ১-৩)

ব্যাখ্যা : প্রথম দিকে ঘন ঘন ওহী নাযিল হতো না, বেশ কিছু দিন ওহী বন্ধ থাকায় নবী ﷺ চিন্তিত হয়ে পড়েন। এমতাবস্থায় আল্লাহ তা‘আলা দিনের আলো ও রাতের নিরবতার কসম খেয়ে বলেছেন, আপনার রব আপনাকে ত্যাগ করেননি এবং আপনার প্রতি নারাজও হননি।

وَلَلْاٰخِرَةُ خَيْرٌ لَّكَ مِنَ الْاُوْلٰى وَلَسَوْفَ يُعْطِيْكَ رَبُّكَ فَتَرْضٰى

আপনার জন্য পরকাল ইহকালের চেয়ে উত্তম। আপনার পালনকর্তা অতি শীঘ্রই আপনাকে দান করবেন, এতে আপনি খুশি হয়ে যাবেন। (সূরা যোহা- ৪, ৫)

ব্যাখ্যা : এখানে রাসূল ﷺ কে বড় সুসংবাদ দিয়ে বলা হয়েছে, প্রথম অবস্থায় আপনাকে যেসব বাধা ও অসুবিধায় পড়তে হয়েছে এ অবস্থা বেশি দিন থাকবে না। আপনার রব শীঘ্রই আপনাকে এত কিছু দেবেন, যার ফলে আপনি খুশি হয়ে যাবেন। মক্কা থেকে মদিনায় পৌঁছার পর থেকেই এ ভবিষ্যদ্বাণী সত্যে পরিণত হতে শুরু হয়। মক্কা বিজয়ের পর গোটা আরবে ইসলামের মহাবিজয়ের মাধ্যমে এ সুসংবাদ পূর্ণতা লাভ করে।

اَلَمْ يَجِدْكَ يَتِيْمًا فَاٰوٰى وَوَجَدَكَ ضَآلًّا فَهَدٰى وَوَجَدَكَ عَآئِلًا فَاَغْنٰى فَاَمَّا الْيَتِيْمَ فَلَا تَقْهَرْ وَاَمَّا السَّآئِلَ فَلَا تَنْهَرْ وَاَمَّا بِنِعْمَةِ رَبِّكَ فَحَدِّثْ

তিনি কি আপনাকে ইয়াতীমরূপে পাননি? অতঃপর তিনি আশ্রয় দিয়েছেন। তিনি আপনাকে পেয়েছেন পথহারা অবস্থায়, অতঃপর তিনি আপনাকে পথপ্রদর্শন করেছেন। তিনি আপনাকে পেয়েছেন নিঃস্ব অবস্থায়, অতঃপর তিনি আপনাকে অভাবমুক্ত করেছেন। সুতরাং আপনি ইয়াতীমের প্রতি কঠোর হবেন না, সওয়ালকারীকে ধমক দেবেন না এবং আপনার পালনকর্তার নিয়ামতের কথা প্রকাশ করুন। (সূরা যোহা, ৬-১১)

ব্যাখ্যা : আপনার প্রভু আপনার জন্ম থেকেই আপনার প্রতি অবিরাম ধারায় অনুগ্রহ বর্ষণ করে এসেছেন। আপনি জন্মলগ্ন থেকেই ইয়াতীম ছিলেন; তিনিই আপনাকে লালন-পালনের ব্যবস্থা করেছেন। আপনি তাঁর পছন্দনীয় পথ চিনতেন না; তিনিই আপনাকে সে পথ দেখিয়েছেন। আপনি গরীব ছিলেন; তিনিই আপনাকে ধনী বানিয়েছেন। তাই আপনার উপর তিনি যত নিয়ামত দিয়েছেন, তার বদলে আপনিও অন্যের উপর মেহেরবানী করুন। ইয়াতীমদেরকে দয়া করুন, গরীবদেরকে সাহায্য করুন এবং আল্লাহ আপনাকে যে নিয়ামত প্রদান করেছেন তার জন্য শুকরিয়া আদায় করুন।

সূরা মুয্যাম্মিল :

يَاۤ اَيُّهَا الْمُزَّمِّلُ قُمِ اللَّيْلَ اِلَّا قَلِيْلًا نِصْفَهٗۤ اَوِ انْقُصْ مِنْهُ قَلِيْلًا اَوْ زِدْ عَلَيْهِ وَرَتِّلِ الْقُرْاٰنَ تَرْتِيْلًا اِنَّا سَنُلْقِيْ عَلَيْكَ قَوْلًا ثَقِيْلًا اِنَّ نَاشِئَةَ اللَّيْلِ هِيَ اَشَدُّ وَطْئًا وَّاَقْوَمُ قِيْلًا اِنَّ لَكَ فِى النَّهَارِ سَبْحًا طَوِيْلًا وَاذْكُرِ اسْمَ رَبِّكَ وَتَبَتَّلْ اِلَيْهِ تَبْتِيْلًا

হে বস্ত্রাবৃত! রাত্রি জাগরণ করো। রাতের কিছু অংশ অথবা অর্ধেক কিংবা তার চেয়ে কিছু কম অথবা কিছু বেশি। আর কুরআন পাঠ করো ধীরে ধীরে (থেমে থেমে সুন্দরভাবে)। অচিরেই আমি তোমার প্রতি অবতীর্ণ করব ভারী বাণী। নিশ্চয় রাত্রিজাগরণ প্রবৃত্তি দমনে অধিক সহায়ক এবং উত্তম বাক্য প্রয়োগে অধিক অনুকূল। আর দিনে তোমার জন্য রয়েছে দীর্ঘ কর্মব্যস্ততা। সুতরাং (রাতে) তুমি তোমার প্রতিপালকের নাম স্মরণ করো এবং (অন্যান্য ব্যস্ততা ছিন্ন করে) একনিষ্ঠভাবে তাতে (ইবাদাতে) মগ্ন হও। (সূরা মুয্যাম্মিল, ১-৮)

ব্যাখ্যা : উপরোক্ত আয়াতগুলোতে নবী ﷺ কে উপদেশ দিয়ে বলা হয়েছে যে, নবুওয়াতের যে বিরাট দায়িত্ব তোমার উপর দেয়া হয়েছে, তা পালন করার জন্য আধ্যাত্মিক শক্তির দরকার। আর তা অর্জিত হবে আল্লাহর সাথে গভীর সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে। আর আল্লাহর সাথে সম্পর্ক স্থাপনের একটি বড় উপায় হচ্ছে রাত্রের একটি অংশে তাহাজ্জুদের নামায আদায় করা এবং নামাযের মধ্যে মনোনিবেশ সহকারে কুরআন তিলাওয়াত করা।

رَبُّ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ فَاتَّخِذْهُ وَكِيْلًا وَاصْبِرْ عَلٰى مَا يَقُوْلُوْنَ وَاهْجُرْهُمْ هَجْرًا جَمِيْلًا وَذَرْنِيْ وَالْمُكَذِّبِيْنَ اُولِى النَّعْمَةِ وَمَهِّلْهُمْ قَلِيْلًا اِنَّ لَدَيْنَاۤ اَنْكَالًا وَّجَحِيْمًا

তিনি পূর্ব ও পশ্চিমের প্রভু, তিনি ব্যতীত কোন (সত্য) মা‘বুদ নেই। অতএব তোমরা তাঁকেই কর্মবিধায়ক হিসেবে গ্রহণ করো। লোকেরা যা বলে, তাতে তুমি ধৈর্যধারণ করো এবং তাদেরকে উত্তম পন্থায় পরিহার করে চলো। আর আমাকে এবং প্রাচুর্য্যবান মিথ্যা প্রতিপন্নকারীদেরকে ছেড়ে দাও এবং তাদেরকে কিছুকালের জন্য অবকাশ দাও। আমার নিকট আছে শক্ত বেড়ি ও জ্বলন্ত আগুন। (সূরা মুয্যাম্মিল, ৯-১২)

ব্যাখ্যা : বিরোধীদের কষ্টদায়ক আচরণে রাসূল ﷺ কে সবরের উপদেশ দিয়ে বলা হয়েছে, এরা আপনার সম্পর্কে যা কিছু বলছে তাতে বিচলিত হবেন না। তাদেরকে অত্যন্ত ভদ্রভাবে এড়িয়ে চলুন। তাদের কথায় মনে কষ্ট পাবেন না। তাদেরকে এ অবস্থায় অল্প কিছুদিন ছেড়ে দিন, তাদের শাস্তির পুরোপুরি ব্যবস্থা আমি করে রেখেছি।

সূরা মুদ্দাসসির :

يَاۤ اَيُّهَا الْمُدَّثِّرُ قُمْ فَاَنْذِرْ وَرَبَّكَ فَكَبِّرْ وَثِيَابَكَ فَطَهِّرْ وَالرُّجْزَ فَاهْجُرْ وَلَا تَمْنُنْ تَسْتَكْثِرُ وَلِرَبِّكَ فَاصْبِرْ

হে কম্বলাচ্ছাদিত! ওঠো, অতঃপর ভীতি প্রদর্শন করো এবং তোমার রবের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করো। তোমার পোশাক পবিত্র রাখো, অপবিত্রতা হতে দূরে থাকো এবং অধিক লাভের আশায় দান (ইহসান) করো না। আর তোমার প্রতিপালকের (সন্তুষ্টি লাভের) উদ্দেশ্যে ধৈর্যধারণ করো। (সূরা মুদ্দাসসির, ১-৭)

ব্যাখ্যা : নবুওয়াতের প্রাথমিক দায়িত্ব ও কর্মনীতি হিসেবে এখানে ছয়টি উপদেশ উল্লেখ করা হয়েছে :

১. আপনার এখন আর বসে থাকার সময় নেই। সুতরাং উঠুন এবং মানুষকে ভীতি প্রদর্শন করুন।

২. আপনার রব সবচেয়ে বড়, একথা প্রচার করুন। সবাই যেন আল্লাহকেই সবচেয়ে বড় বলে মেনে নেয়, সে দাওয়াতই দিন।

৩. আপনি এমন পোশাক পরিধান করুন, যা ভদ্র, শালীন ও পাক-পবিত্র।

৪. আপনার আচার-ব্যবহারের বাইরের দিকটা যেমন সুন্দর থাকা উচিত, তেমনি আপনার ভেতরটাও সবরকম অপবিত্রতা থেকে দূরে রাখুন।

৫. আপনি মানুষকে আল্লাহর দিকে ডাকার বিনিময়ে তাদের কাছ থেকে কোন প্রতিদান আশা করবেন না।

৬. বিরোধীরা হাজারো ষড়যন্ত্র করে আপনার কাজে বাধা দিতে থাকবে। আপনাকে চরম ধৈর্যের সাথে তার মুকাবিলা করতে হবে।

আল্লাহর রাসূলকে ইকামাতে দ্বীনের দায়িত্ব দেয়ার সময় এ সাতটি কর্মনীতিসহ উপরোক্ত যেসব কর্মনীতি শিক্ষা দেয়া হয়েছে তা ইসলামী আন্দোলনের প্রত্যেক কর্মীর জন্যই বিশেষভাবে জরুরি। এ কর্মনীতি পালন না করে যারা এ কাজ করতে চেষ্টা করবে, তাদের দ্বারা ইসলামী আন্দোলনের উপকার হবে না। এ কর্মনীতি যারা মানতে পারবে না, তারা একসময় এ পথ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হবে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন