hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

তাফসীরুল কুরআন বিল কুরআন

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

৬১২
অধ্যায়- ৪০ : হুদায়বিয়ার ঘটনা
রাসূল ﷺ স্বপ্নে দেখলেন যে, তিনি সাহাবায়ে কেরামসহ মক্কায় গেলেন এবং ওমরা আদায় করেন। তাই রাসূল ﷺ ১৪০০ সাহাবী নিয়ে জিলকদ মাসের প্রথমদিকে সফর শুরু করলেন। যখন তিনি তাদেরকে নিয়ে হুদায়বিয়া নামক স্থানে আগমন করেন, তখন মক্কার কুরাইশ কর্তৃক বাধাপ্রাপ্ত হন। মক্কার কুরাইশ নেতারা ভেবেছিল, যদি বিনা বাধায় ওমরা করতে দেয়া হয় তাহলে কুরাইশদের ইজ্জত থাকবে না। আর বাধা দিলে সারা আরবে বদনাম হবে। তাই তারা দূতের মাধ্যমে রাসূল ﷺ কে ফিরে যাওয়ার পরামর্শ দেয়। এদিকে রাসূল ﷺ ওসমান (রাঃ) কে দূত হিসেবে মক্কায় পাঠান। যাতে করে তিনি তাদেরকে এ কথা বুঝাতে পারেন যে, তিনি যুদ্ধের সাজ-সরঞ্জাম নিয়ে আসেননি। শুধু ওমরার নিয়তে কুরবানীর পশু নিয়ে এসেছেন। তাই এতে বাধা দেয়ার কোন অধিকার নেই। কিন্তু তারা সে কথা মানতে রাজি হলো না; বরং ওসমান (রাঃ) কে আটক করে রাখল। এদিকে গুজব রটল যে, ওসমান (রাঃ) কে শহীদ করা হয়েছে। তিনি ফিরে না আসায় গুজবে সবাই বিশ্বাস করতে বাধ্য হলো। ফলে রাসূল ﷺ তাদের সাথে যুদ্ধ করার সংকল্প করেন এবং সাহাবায়ে কেরামদের থেকে এ শপথ নেন যে, আমরা সবাই জীবন দেব, তবুও পিছু হটব না। এ শপথটিই ইতিহাসে বাইআতে রিদওয়ান নামে পরিচিত। এরপরই দেখা গেল, ওসমান (রাঃ) ফিরে এলেন এবং সুহাইল বিন আমরের নেতৃত্বেও কুরাইশদের একটি প্রতিনিধি দল সন্ধি প্রস্তাব নিয়ে হাজির হয়। অতঃপর অনেক আলাপ-আলোচনার পর তাদের মাঝে একটি সন্ধিপত্র তৈরি হয়, যার কয়েকটি শর্ত নিন্মে উল্লেখ করা হলো :

১. দশ বছর পর্যন্ত উভয়পক্ষের মধ্যে যুদ্ধ বন্ধ থাকবে এবং কোন পক্ষই প্রকাশ্যে বা গোপনে যুদ্ধের পক্ষে কোন কাজ করবে না।

২. এ সময়ের মধ্যে কুরাইশদের কোন লোক তার অভিভাবকের অনুমতি ছাড়া মদিনায় পালিয়ে গেলে তাকে ফেরত দিতে হবে; কিন্তু মদিনা থেকে কোন মুসলিম মক্কায় চলে এলে তাকে মদিনায় ফেরত দেয়া হবে না।

৩. আরবের বিভিন্ন গোত্র এ দু’পক্ষের যে কোন এক পক্ষের সহযোগী হিসেবে এ সন্ধিতে শরীক হতে চাইলে হতে পারবে।

৪. রাসূল ﷺ এ বছর ওমরা না করেই ফিরে যাবেন এবং আগামী বছর ওমরার উদ্দেশ্যে তিন দিন মক্কায় থাকতে পারবেন। তবে শর্ত থাকবে যে, একটি করে তলোয়ার সাথে রাখা ছাড়া যুদ্ধের কোন অস্ত্র সাথে আনতে পারবেন না। যখন সন্ধির এসব শর্ত লেখা হচ্ছিল তখন কুরাইশরা এটাকে তাদের বিজয় মনে করছিল এবং সাহাবীগণ অপমানজনক মনে করে অস্থিরতা বোধ করছিলেন। প্রকৃতপক্ষে এসব শর্ত বাহ্যত মুসলিমদের স্বার্থের বিরোধী মনে হলেও এগুলো যে পরবর্তী বিজয়ের জন্য খুবই সহায়ক, তা রাসূল ﷺ ছাড়া আর কেউ বুঝতে পারেননি।

নবী ﷺ স্বপ্নের মাধ্যমে ওমরা করার নির্দেশ পান :

لَقَدْ صَدَقَ اللهُ رَسُوْلَهُ الرُّؤْيَا بِالْحَقِّۚ لَتَدْخُلُنَّ الْمَسْجِدَ الْحَرَامَ اِنْ شَآءَ اللهُ اٰمِنِيْنَ مُحَلِّقِيْنَ رُءُوْسَكُمْ وَمُقَصِّرِيْنَ لَا تَخَافُوْنَ

বাস্তবিকই আল্লাহ তাঁর রাসূলকে সঠিক স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন, যা ছিল সস্পূর্ণ সত্য। যদি আল্লাহ চান তবে অবশ্যই তোমরা মাসজিদুল হারামে সম্পূর্ণ নিরাপদে প্রবেশ করবে- (কেউ কেউ) মাথা কামাবে, (কেউ কেউ) চুল ছোট করবে; এতে তোমাদের কোন ভয় থাকবে না। (সূরা ফাতহ- ২৭)

হুদায়বিয়া নামক স্থানে গেলে কাফিররা মুসলিমদেরকে বাধা দেয় :

هُمُ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا وَصَدُّوْكُمْ عَنِ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ وَالْهَدْيَ مَعْكُوْفًا اَنْ يَّبْلُغَ مَحِلَّهٗ

তারাই তো ঐ সমস্ত কাফির, যারা কুফরী করেছে ও তোমাদেরকে মাসজিদুল হারাম থেকে ফিরিয়ে রেখেছে এবং কুরবানীর উটগুলোকে নির্দিষ্ট জায়গায় পৌঁছতে বাধা প্রদান করেছে। (সূরা ফাতহ- ২৫)

সাহাবীরা জিহাদের জন্য নবী ﷺ এর কাছে বায়‘আত গ্রহণ করলেন :

اِنَّ الَّذِيْنَ يُبَايِعُوْنَكَ اِنَّمَا يُبَايِعُوْنَ اللهَؕ يَدُ اللهِ فَوْقَ اَيْدِيْهِمْۚ فَمَنْ نَّكَثَ فَاِنَّمَا يَنْكُثُ عَلٰى نَفْسِهٖۚ وَمَنْ اَوْفٰى بِمَا عَاهَدَ عَلَيْهُ اللهَ فَسَيُؤْتِيْهِ اَجْرًا عَظِيْمًا

(হে রাসূল!) যারা আপনার কাছে বায়‘আত গ্রহণ করছিল তারা (আসলে) আল্লাহর কাছেও বায়‘আত গ্রহণ করেছিল, তাদের হাতের উপর ছিল আল্লাহর হাত। এখন যে এ ওয়াদা ভঙ্গ করবে, এর কুফল তার উপরই পড়বে। আর আল্লাহর সাথে ওয়াদা করে যে তা পূরণ করবে, অচিরেই আল্লাহ তাকে বড় পুরস্কারে ভূষিত করবেন। (সূরা ফাতহ- ১০)

ব্যাখ্যা : মক্কায় ওসমান (রাঃ) এর শহীদ হয়ে যাওয়ার সংবাদ শুনে রাসূল ﷺ সাহাবায়ে কেরামের কাছ থেকে হুদায়বিয়া নামক স্থানে যে শপথ গ্রহণ করেছিলেন, এখানে তার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। সেখানে এ শপথ নেয়া হয়েছিল যে, ওসমান (রাঃ) এর শাহাদাত যদি সত্য প্রমাণিত হয়, তবে মুসলিমরা কুরাইশদের সাথে চরম বুঝাপড়া করে নেবে; তাতে যদি সবাই শহীদ হয় তাও মেনে নিতে হবে।

এমতাবস্থায় আল্লাহ তাদের উপর প্রশান্তি নাযিল করলেন :

اِذْ جَعَلَ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا فِيْ قُلُوْبِهِمُ الْحَمِيَّةَ حَمِيَّةَ الْجَاهِلِيَّةِ فَاَنْزَلَ اللهُ سَكِيْنَتَهٗ عَلٰى رَسُوْلِهٖ وَعَلَى الْمُؤْمِنِيْنَ وَاَلْزَمَهُمْ كَلِمَةَ التَّقْوٰى وَكَانُوْاۤ اَحَقَّ بِهَا وَاَهْلَهَاؕ وَكَانَ اللهُ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيْمًا

স্মরণ করো, যখন কাফিররা তাদের অন্তরে জাহেলী বিদ্বেষ পোষণ করল, তখন আল্লাহ তাঁর রাসূল ও মুমিনদের উপর প্রশান্তি নাযিল করলেন এবং তাদেরকে তাক্বওয়ার নীতি মেনে চলতে বাধ্য করলেন। কেননা তারাই (এ নীতি মেনে চলার) সবচেয়ে বেশি হকদার ও উপযুক্ত। আর আল্লাহ সবকিছু সম্পর্কেই জ্ঞান রাখেন। (সূরা ফাতহ- ২৬)

ব্যাখ্যা : এখানে ‘সাকীনাহ’ অর্থ অন্তরের সেই অবস্থা, যার ভিত্তিতে একজন মানুষ পেরেশান না হয়ে ঠান্ডা মাথায় মনের পূর্ণ সন্তুষ্টি ও প্রশান্তিসহ নিজেকে বিপদের মধ্যে ফেলে দেয় এবং কোন ভয় ও অস্থিরতা ছাড়াই এ চরম সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে যে, যে কোন অবস্থায় এ কাজ করতেই হবে।

এ সময় তাদেরকে খায়বার বিজয়ের সুসংবাদও দেয়া হলো :

لَقَدْ رَضِيَ اللهُ عَنِ الْمُؤْمِنِيْنَ اِذْ يُبَايِعُوْنَكَ تَحْتَ الشَّجَرَةِ فَعَلِمَ مَا فِيْ قُلُوْبِهِمْ فَاَنْزَلَ السَّكِيْنَةَ عَلَيْهِمْ وَاَثَابَهُمْ فَتْحًا قَرِيْبًا وَمَغَانِمَ كَثِيْرَةً يَّاْخُذُوْنَهَاؕ وَكَانَ اللهُ عَزِيْزًا حَكِيْمًا

(হে রাসূল!), যখন তারা (মুমিনগণ) গাছের তলায় আপনার কাছে বায়‘আত গ্রহণ করেছিল, তখন আল্লাহ তাদের উপর সন্তুষ্ট হয়ে গেলেন। তাদের অন্তরের অবস্থা তাঁর জানা ছিল। তাই তিনি তাদের উপর প্রশান্তি নাযিল করলেন এবং পুরস্কার হিসেবে নিকটবর্তী একটি বিজয় দান করলেন। আর তাদেরকে আরো অনেক গনিমতের মাল দান করবেন, যা (শীঘ্রই) তারা লাভ করবে। আল্লাহ মহাশক্তিশালী ও সুকৌশলী। (সূরা ফাতহ- ১৮, ১৯)

আল্লাহ উভয়পক্ষকে যুদ্ধ থেকে বিরত রাখলেন :

وَهُوَ الَّذِيْ كَفَّ اَيْدِيَهُمْ عَنْكُمْ وَاَيْدِيَكُمْ عَنْهُمْ بِبَطْنِ مَكَّةَ مِنْ ۢبَعْدِ اَنْ اَظْفَرَكُمْ عَلَيْهِمْؕ وَكَانَ اللهُ بِمَا تَعْمَلُوْنَ بَصِيْرًا

তিনিই ঐ সত্তা, যিনি মক্কায় তাদের হাতকে তোমাদের উপর থেকে এবং তোমাদের হাতকে তাদের উপর থেকে ফিরিয়ে রেখেছিলেন। অথচ তিনি তোমাদেরকে তাদের উপর বিজয়ী করে দিয়েছিলেন। আর তোমরা যা কিছু করছিলে আল্লাহ তা প্রত্যক্ষ করছিলেন। (সূরা ফাতহ- ২৪)

যুদ্ধ থেকে বিরত রাখার কারণ :

وَلَوْلَا رِجَالٌ مُّؤْمِنُوْنَ وَنِسَآءٌ مُّؤْمِنَاتٌ لَّمْ تَعْلَمُوْهُمْ اَنْ تَطَئُوْهُمْ فَتُصِيْبَكُمْ مِّنْهُمْ مَّعَرَّةٌ ۢبِغَيْرِ عِلْمٍۚ لِيُدْخِلَ اللهُ فِيْ رَحْمَتِهٖ مَنْ يَّشَآءُ

যদি (মক্কায় কাফিরদের মাঝে) মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীরা না থাকত, যাদের (মুসলিম হওয়া) সম্পর্কে তোমরা জান না এবং অজ্ঞতাবশত তোমরা তাদেরকে পদদলিত করে ফেলবে, যার ফলে তোমাদেরকে দোষারোপ করা হবে- (তাহলে তোমাদেরকে যুদ্ধের আদেশ দেয়া হতো)। (এ আদেশ দেয়া হয়নি এজন্য যে) যাতে করে আল্লাহ যাকে চান তাকে তাঁর রহমতে প্রবেশ করাতে পারেন। (সূরা ফাতহ- ২৫)

ব্যাখ্যা : মক্কায় সে সময় এমন অনেক মুসলিম নারী-পুরুষ ছিলেন, যারা নিজেদের ঈমান গোপন রেখেছিলেন অথবা নিরুপায় হওয়ার কারণে হিজরত করতে পারেননি। এ অবস্থায় যদি যুদ্ধ ঘটত তাহলে অজ্ঞতাবশত কাফিরদের সাথে সাথে মুসলিমরাও মুসলিমদের হাতে মার খেত।

মুমিনরা যদি আলাদা থাকত তাহলে কাফিররা ঐ দিন শাস্তি পেত :

لَوْ تَزَيَّلُوْا لَعَذَّبْنَا الَّذِيْنَ كَفَرُوْا مِنْهُمْ عَذَابًا اَلِيْمًا

মুমিনরা যদি (কাফিরদের থেকে) পৃথক থাকত, তাহলে (মক্কায়) যারা কাফির ছিল তাদেরকে আমি কঠিন শাস্তি দিতাম। (সূরা ফাতহ- ২৫)

যুদ্ধ বাধলে কাফিররাই পরাজিত হতো :

وَلَوْ قَاتَلَكُمُ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا لَوَلَّوُا الْاَدْبَارَ ثُمَّ لَا يَجِدُوْنَ وَلِيًّا وَّلَا نَصِيْرًا سُنَّةَ اللهِ الَّتِيْ قَدْ خَلَتْ مِنْ قَبْلُۚ وَلَنْ تَجِدَ لِسُنَّةِ اللهِ تَبْدِيْلًا

কাফিররা যদি এ সময়ই তোমাদের সাথে লড়াই করত, তাহলে অবশ্যই তারা পিছু হটে যেত এবং তারা কোন অভিভাবক ও কোন সাহায্যকারীও পেত না। এটাই আল্লাহর বিধান, যা আগে থেকে চলে এসেছে। আর তোমরা আল্লাহর নিয়মে কোন পরিবর্তন পাবে না। (সূরা ফাতহ- ২২, ২৩)

এ সন্ধির মাধ্যমে মুসলিমরা উপস্থিত বিজয় লাভ করে :

وَعَدَكُمُ اللهُ مَغَانِمَ كَثِيْرَةً تَاْخُذُوْنَهَا فَعَجَّلَ لَكُمْ هٰذِهٖ وَكَفَّ اَيْدِيَ النَّاسِ عَنْكُمْۚ وَلِتَكُوْنَ اٰيَةً لِّلْمُؤْمِنِيْنَ وَيَهْدِيَكُمْ صِرَاطًا مُّسْتَقِيْمًا

আল্লাহ তোমাদেরকে অনেক গনিমতের মাল দেয়ার ওয়াদা করছেন, যা তোমরা লাভ করবে। এটা তিনি তোমাদেরকে খুব তাড়াতাড়িই দিয়ে দিলেন এবং মানুষের (কাফিরদের) হাতকে তোমাদের (ওপর ওঠানো) থেকে সংযত রাখলেন, যাতে মুমিনদের জন্য এটা নিদর্শন হয়ে থাকে এবং তিনি (আল্লাহ) তোমাদেরকে সরলসঠিক পথে পরিচালিত করেন। (সূরা ফাতহ- ২০)

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন