hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

তাফসীরুল কুরআন বিল কুরআন

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

৩৩৫
অধ্যায়- ৭ : দুনিয়াতে পাপের পরিণাম
মানুষের পাপের কারণে পৃথিবীতে বিপদ আসে :

ظَهَرَ الْفَسَادُ فِى الْبَرِّ وَالْبَحْرِ بِمَا كَسَبَتْ اَيْدِى النَّاسِ لِيُذِيْقَهُمْ بَعْضَ الَّذِيْ عَمِلُوْا لَعَلَّهُمْ يَرْجِعُوْنَ

স্থলভাগে ও জলভাগে মানুষের কৃতকর্মের ফলস্বরূপ অশান্তি ছড়িয়ে পড়েছে, যার ফলে আল্লাহ তাদেরকে তাদের কিছু কিছু কাজের শাস্তি ভোগ করাতে চান, যেন তারা ফিরে আসে। (সূরা রূম- ৪১)

وَمَاۤ اَصَابَكُمْ مِّنْ مُّصِيْبَةٍ فَبِمَا كَسَبَتْ اَيْدِيْكُمْ وَيَعْفُوْا عَنْ كَثِيْرٍ

তোমাদের যে বিপদাপদ ঘটে, তা তো তোমাদেরই হাতের উপার্জন; অথচ তোমাদের অনেক অপরাধ তিনি ক্ষমা করে দেন। (সূরা শূরা- ৩০)

ব্যাখ্যা : আল্লাহ যদি মানুষের সমস্ত দোষ-ত্রুটির জন্য পাকড়াও করতেন তাহলে তাদের জীবিতই রাখতেন না। তবে যে বিপদাপদ তাদের উপর আসে, তা কেবল সতর্কীকরণ হিসেবে দেয়া হয়েছে। যাতে তারা নিজেদের কাজকর্মের পর্যালোচনা করে দেখে যে, নিজেদের রবের বিরুদ্ধে তারা কী ধরনের আচরণ করছে। আর এ কথাও বুঝার চেষ্টা করে যে, যে আল্লাহর বিরুদ্ধে তারা বিদ্রোহ করছে তাঁর কাছে তারা কত অসহায়। এ ব্যাপারে খাঁটি মুমিনের জন্য আল্লাহর বিধান ভিন্ন। মুমিনের উপর যে দুঃখ-কষ্ট ও বিপদাপদ পতিত হয়, তা তার গোনাহ ও ত্রুটি-বিচ্যুতিসমূহের কাফ্ফারা হয়ে যায়। রাসূল ﷺ বলেন, ‘‘মুসলিম ব্যক্তি যে কোন দুঃখ-কষ্টের সম্মুখীন হোক না কেন- এমনকি একটি কাঁটা বিদ্ধ হলেও আল্লাহ তাকে তার কোন না কোন গোনাহের কাফ্ফারা বানিয়ে দেন।’’ (সহীহ বুখারী, হা/৫৬৪০)

যখন আযাব আসবে তখন কেউই বাঁচতে পারবে না :

وَاتَّقُوْا فِتْنَةً لَّا تُصِيْبَنَّ الَّذِيْنَ ظَلَمُوْا مِنْكُمْ خَآصَّةًۚ وَاعْلَمُوْاۤ اَنَّ اللهَ شَدِيْدُ الْعِقَابِ

তোমরা এমন ফিতনাকে ভয় করো, যা বিশেষ করে তোমাদের মধ্যে যারা যালিম কেবল তাদেরকেই স্পর্শ করবে না (বরং সকলকেই স্পর্শ করবে)। জেনে রেখো, নিশ্চয় আল্লাহ শাস্তিদানে খুবই কঠোর। (সূরা আনফাল- ২৫)

ব্যাখ্যা : শুধুমাত্র যারা গোনাহ করে তারাই এ ধ্বংসের শিকার হয় না বরং তারাও এর শিকার হয়, যারা এ পাপাচারে জর্জরিত সমাজে বসবাস করা সহ্য করে নেয়। যখন সমাজের সামষ্টিক বিবেক দুর্বল হয়ে পড়ে, নৈতিক অনিষ্টগুলোকে দমিয়ে রাখা হয় না, সমাজে অসৎ ও দুশ্চরিত্রবান লোকেরা অন্যায় ছড়াতে থাকে, সৎ লোকেরা নিষ্কর্মা হয়ে নিজেদের ব্যক্তিগত সততা ও সদগুণাবলি নিয়েই সন্তুষ্ট থাকে এবং সামাজিক দুষ্কৃতির ব্যাপারে নীরব ভূমিকা পালন করে, তখন সামগ্রিকভাবে গোটা সমাজের উপর দুর্ভোগ নেমে আসে। এ সময় এমন ব্যাপক দুর্যোগ সৃষ্টি হয়, যার ফলে ছোট-বড়, সবল-দুর্বল সবাই সমানভাবে বিপর্যস্ত হয়। কাজেই আল্লাহর বক্তব্যের মর্ম হচ্ছে, রাসূল ﷺ যে সংস্কার ও হেদায়াতের দিকে আহবান জানাচ্ছেন, তার মধ্যেই রয়েছে ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনের নিশ্চয়তা। যদি সমাজের বুকে যেসব দুষ্কৃতি ছড়িয়ে রয়েছে সেগুলোকে সহ্য করে যাওয়া হয়, তাহলে ব্যাপক বিপর্যয় দেখা দেবে। যদিও তোমাদের মধ্যে এমন অনেক লোক থাকে, যারা কার্যত দুষ্কৃতিতে লিপ্ত হয় না; তবুও এ ব্যাপক বিপদ তোমাদেরকে আচ্ছন্ন করে ফেলবে।

আল্লাহ প্রত্যেক অপরাধী জাতিকেই পাকড়াও করেছেন :

اَوَلَمْ يَسِيْرُوْا فِى الْاَرْضِ فَيَنْظُرُوْا كَيْفَ كَانَ عَاقِبَةُ الَّذِيْنَ كَانُوْا مِنْ قَبْلِهِمْ ؕ كَانُوْا هُمْ اَشَدَّ مِنْهُمْ قُوَّةً وَّ اٰثَارًا فِى الْاَرْضِ فَاَخَذَهُمُ اللهُ بِذُنُوْبِهِمْؕ وَمَا كَانَ لَهُمْ مِّنَ اللهِ مِنْ وَّاقٍ

তারা কি পৃথিবীতে ভ্রমণ করে না? তাহলে দেখতে পেত যে, তাদের পূর্ববর্তীদের পরিণাম কী হয়েছিল? পৃথিবীতে তারা ছিল এদের চেয়ে শক্তিতে এবং কীর্তিতে প্রবল। অতঃপর আল্লাহ তাদেরকে তাদের অপরাধের জন্য শাস্তি দিয়েছিলেন; আর আল্লাহ থেকে তাদেরকে রক্ষাকারী কেউ ছিল না। (সূরা মু’মিন- ২১)

মানুষকে সতর্ক করার জন্যই আল্লাহ এ ব্যবস্থা করেন :

وَلَنُذِيْقَنَّهُمْ مِّنَ الْعَذَابِ الْاَدْنٰى دُوْنَ الْعَذَابِ الْاَ كْبَرِ لَعَلَّهُمْ يَرْجِعُوْنَ

নিশ্চয় আমি তাদেরকে সামান্য শাস্তি ভোগ করাব মহাশাস্তির পূর্বে, যেন তারা ফিরে আসে। (সূরা সাজদা- ২১)

ব্যাখ্যা : এখানে বড় শাস্তি বলতে আখিরাতের শাস্তিকে বুঝানো হয়েছে। কুফরী ও ফাসিকীর অপরাধে এ শাস্তি দেয়া হবে। এর বিপরীতে ‘ছোট শাস্তি’ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। এর অর্থ হচ্ছে ইহকালীন জীবনে মানুষের উপর আবর্তিত যাবতীয় বিপদাপদ, যা দ্বারা তাদের কষ্ট অনুভূত হয়। যেমন ব্যক্তিগত জীবনে কঠিন রোগ, নিজের প্রিয়তম লোকদের মৃত্যু, ভয়াবহ দুর্ঘটনা, মারাত্মক ক্ষতি ও ব্যর্থতা ইত্যাদি। সামাজিক জীবনে ঝড়-তুফান, ভূমিকম্প, দুর্ভিক্ষ, যুদ্ধ এবং আরো বহু বিপদাপদ- যা লাখো লাখো কোটি কোটি মানুষকে প্রভাবিত করে। মূলত এসব বিপদাপদ অবতীর্ণ করার মাধ্যমে বড় শাস্তির আগেই মানুষকে সচেতন করে দেয়া হয়। দুনিয়ায় আল্লাহ মানুষকে একেবারেই আনন্দে রাখেননি। কেননা নিশ্চিন্তে ও আরামে জীবনের গাড়ি চলতে থাকলে মানুষ এ ভুল ধারণায় লিপ্ত হয় যে, সে-ই সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী ও ক্ষমতাবান। সুতরাং দুনিয়ার কোন শক্তিই তার কোন ক্ষতি করতে পারবে না। তাই আল্লাহ এমন ব্যবস্থা করে রেখেছেন, যার ফলে মাঝে মধ্যে বিভিন্ন ব্যক্তি, জাতি ও দেশের উপর এমনসব বিপদাপদ পাঠাতে থাকেন, যা তাদেরকে একদিকে নিজেদের অসহায়ত্ব এবং অন্যদিকে নিজেদের চেয়ে বড় এক মহাপরাক্রমশালীর অস্তিত্বের অনুভূতি দান করে। এগুলো দ্বারা প্রত্যেক ব্যক্তি, দল ও জাতিকে এ কথা স্মরণ করিয়ে দেয় যে, এগুলোর উপর তাদের কোন হস্তক্ষেপ নেই বরং অন্য একজন নিয়ন্ত্রক এগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করছেন। সবকিছু তোমাদের হাতে দিয়ে দেয়া হয়নি। আসল ক্ষমতা রয়েছে তাঁর হাতে, যিনি কর্তৃত্ব সহকারে এসবকিছু সংঘটিত করে আসছেন। তাঁর কাছে তোমরা এতই দুর্বল যে, তোমাদের উপর তাঁর পক্ষ থেকে কোন বিপদ আসলে এর বিরুদ্ধে তোমরা কোন প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পার না। এদিক দিয়ে বিচার করলে এ বিপদ নিছক বিপদ নয় বরং আল্লাহর সতর্ক সংকেত। মানুষকে সত্য জানানোর এবং তাঁর বিভ্রান্তি দূর করার জন্য একে পাঠানো হয়। এর থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে যদি মানুষ দুনিয়াতেই নিজের বিশ্বাস ও কর্ম সংশোধন করে নেয়, তাহলে আখিরাতে আল্লাহর বড় শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে না।

তারপরও মানুষ সতর্ক হয় না :

اَوَلَا يَرَوْنَ اَنَّهُمْ يُفْتَنُوْنَ فِيْ كُلِّ عَامٍ مَّرَّةً اَوْ مَرَّتَيْنِ ثُمَّ لَا يَتُوْبُوْنَ وَلَا هُمْ يَذَّكَّرُوْنَ

তারা কি দেখে না যে, তাদেরকে প্রতি বৎসর একবার বা দু’বার বিপর্যস্ত করা হয়? এরপরও তারা তাওবা করে না এবং উপদেশ গ্রহণ করে না। (সূরা তাওবা- ১২৬)

খুব কম লোকই বিপদ থেকে শিক্ষা লাভ করে :

وَلَقَدْ اَرْسَلْنَاۤ اِلٰۤى اُمَمٍ مِّنْ قَبْلِكَ فَاَخَذْنَاهُمْ بِالْبَاْسَآءِ وَالضَّرَّآءِ لَعَلَّهُمْ يَتَضَرَّعُوْنَ فَلَوْلَاۤ اِذْ جَآءَهُمْ بَاْسُنَا تَضَرَّعُوْا وَلٰكِنْ قَسَتْ قُلُوْبُهُمْ وَزَيَّنَ لَهُمُ الشَّيْطَانُ مَا كَانُوْا يَعْمَلُوْنَ

তোমার পূর্বে আমি বহু জাতির নিকট রাসূল প্রেরণ করেছি। অতঃপর তাদেরকে অর্থ সংকট ও দুঃখ-কষ্ট দ্বারা পাকড়াও করেছি, যাতে তারা বিনীত হয়। অতঃপর যখন আমার শাস্তি তাদের উপর এসে গেল, তখন তারা কেন বিনীত হলো না? অধিকন্তু তাদের হৃদয় কঠিন হয়ে গিয়েছিল এবং তারা যা করছিল শয়তান তা তাদের দৃষ্টিতে শোভনীয় করে দিয়েছিল। (সূরা আন‘আম- ৪২, ৪৩)

বিপদ সরে গেলে মানুষ আবার নাফরমানি শুরু করে দেয় :

اِنَّا كَاشِفُوا الْعَذَابِ قَلِيْلًا اِنَّكُمْ عَآئِدُوْنَ

আমি (যদি) তোমাদের শাস্তি কিছুকালের জন্য সরিয়ে দেই, তবে তোমরা তো পুনরায় তাই করবে।

(সূরা দুখান- ১৫)

মানুষের উপর একের পর এক বিপদ আসতেই থাকে :

وَلَا يَزَالُ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا تُصِيْبُهُمْ بِمَا صَنَعُوْا قَارِعَةٌ اَوْ تَحُلُّ قَرِيْبًا مِّنْ دَارِهِمْ حَتّٰى يَاْتِيَ وَعْدُ اللهِ اِنَّ اللهَ لَا يُخْلِفُ الْمِيْعَادَ

যারা কুফরী করেছে তাদের কর্মফলের জন্য তাদের বিপর্যয় ঘটতেই থাকবে, অথবা বিপর্যয় তাদের আশেপাশে আপতিত হতেই থাকবে, যতক্ষণ পর্যমত্ম না আল্লাহর প্রতিশ্রুতি দিবস উপস্থিত হবে। নিশ্চয় আল্লাহ প্রতিশ্রুতির ব্যতিক্রম করেন না। (সূরা রা‘দ- ৩১)

আযাব থেকে বাঁচার উপায় হলো কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা :

مَا يَفْعَلُ اللهُ بِعَذَابِكُمْ اِنْ شَكَرْتُمْ وَاٰمَنْتُمْؕ وَكَانَ اللهُ شَاكِرًا عَلِيْمًا

তোমরা যদি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর ও ঈমান আনয়ন কর, তবে তোমাদেরকে শাস্তি দিয়ে আল্লাহর কী লাভ? আর আল্লাহ তো মহাপুরস্কারদাতা ও সর্বজ্ঞ। (সূরা নিসা- ১৪৭)

আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া :

وَمَا كَانَ اللهُ لِيُعَذِّبَهُمْ وَاَنْتَ فِيْهِمْؕ وَمَا كَانَ اللهُ مُعَذِّبَهُمْ وَهُمْ يَسْتَغْفِرُوْنَ

আল্লাহ এমন নন যে, তুমি তাদের মধ্যে থাকবে অথচ তিনি তাদেরকে শাস্তি দেবেন। আর আল্লাহ এমনও নন যে, তারা ক্ষমাপ্রার্থনা করবে অথচ তিনি তাদেরকে শাস্তি দেবেন। (সূরা আনফাল- ৩৩)

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন