hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

তাফসীরুল কুরআন বিল কুরআন

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

১৩৯
অধ্যায়- ২ : সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজের নিষেধ
সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজ হতে নিষেধ করা মুমিনের বিশেষ গুণ :

وَالْمُؤْمِنُوْنَ وَالْمُؤْمِنَاتُ بَعْضُهُمْ اَوْلِيَآءُ بَعْضٍ يَّاْمُرُوْنَ بِالْمَعْرُوْفِ وَيَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنْكَرِ

মুমিন নর ও মুমিন নারী একে অপরের বন্ধু, এরা সৎকাজের আদেশ দেয় এবং অসৎকাজ থেকে নিষেধ করে। (সূরা তাওবা- ৭১)

এর বিপরীত করা মুনাফিকের কাজ :

اَلْمُنَافِقُوْنَ وَالْمُنَافِقَاتُ بَعْضُهُمْ مِّنْ ۢبَعْضٍ يَّاْمُرُوْنَ بِالْمُنْكَرِ وَيَنْهَوْنَ عَنِ الْمَعْرُوْفِ

মুনাফিক নর ও মুনাফিক নারী একে অপরের অনুরূপ- তারা অসৎকাজের আদেশ দেয় এবং সৎকর্ম থেকে নিষেধ করে। (সূরা তাওবা- ৬৭)

ব্যাখ্যা : এটা মুনাফিকদের একটা সাধারণ বৈশিষ্ট্য। তারা খারাপ কাজের ব্যাপারে আগ্রহী এবং ভালো কাজের প্রতি প্রচন্ড অনিহা ও শত্রুতা পোষণ করে। কোন ব্যক্তি খারাপ কাজ করতে চাইলে তারা তাকে সাহায্য করে। অন্যদিকে কোন ভালো কাজ হতে থাকলে, এর খবর শুনে তারা মনে ব্যথা অনুভব করতে থাকে। এর দিকে কাউকে এগিয়ে যেতে দেখলে তারা অস্থির হয়ে পড়ে এবং সম্ভাব্য সকল পদ্ধতিতে তার পথে বাধা সৃষ্টি করতে তৎপর হয়ে পড়ে।

এ কাজ ব্যক্তিগতভাবে সকলের দায়িত্ব :

يَا بُنَيَّ اَقِمِ الصَّلَاةَ وَأْمُرْ بِالْمَعْرُوْفِ وَانْهَ عَنِ الْمُنْكَرِ وَاصْبِرْ عَلٰى مَاۤ اَصَابَكَؕ اِنَّ ذٰلِكَ مِنْ عَزْمِ الْاُمُوْرِ

হে আমার ছেলে! সালাত কায়েম করো, সৎকাজের আদেশ দাও ও মন্দকাজ করতে নিষেধ করো এবং তোমার উপর যে বিপদ আসে তাতে ধৈর্যধারণ করো। নিশ্চয় এটা দৃঢ় সংকল্পের কাজ। (সূরা লুক্বমান- ১৭)

এ কাজ সরকারের বড় দায়িত্ব :

اَلَّذِيْنَ اِنْ مَّكَّنَّاهُمْ فِى الْاَرْضِ اَقَامُوا الصَّلَاةَ وَاٰتَوُا الزَّكَاةَ وَاَمَرُوْا بِالْمَعْرُوْفِ وَنَهَوْا عَنِ الْمُنْكَرِؕ وَلِلّٰهِ عَاقِبَةُ الْاُمُوْرِ

আমি তাদেরকে পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠা দান করলে তারা সালাত কায়েম করবে, যাকাত দেবে এবং সৎকাজের নির্দেশ দেবে ও অসৎকাজ থেকে নিষেধ করবে। আর সকল কর্মের পরিণাম আল্লাহর ইচ্ছাধীন। (সূরা হজ্জ- ৪১)

এ কাজ করা উম্মতে মুহাম্মাদীর সকলের দায়িত্ব :

كُنْتُمْ خَيْرَ اُمَّةٍ اُخْرِجَتْ لِلنَّاسِ تَأْمُرُوْنَ بِالْمَعْرُوْفِ وَتَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنْكَرِ وَتُؤْمِنُوْنَ بِاللهِ

তোমরাই হচ্ছ শ্রেষ্ঠ উম্মত, মানবজাতির (কল্যাণের) জন্যই তোমাদেরকে সৃষ্টি করা হয়েছে। তোমরা সৎকাজের আদেশ দেবে ও অসৎকাজ হতে নিষেধ করবে এবং আল্লাহর উপর ঈমান আনয়ন করবে। (সূরা আলে ইমরান- ১১০)

রাসূল ﷺ নিজে এ কাজ করতেন :

يَأْمُرُهُمْ بِالْمَعْرُوْفِ وَيَنْهَاهُمْ عَنِ الْمُنْكَرِ

তিনি তাদেরকে সৎকাজের নির্দেশ দেন ও অসৎকাজ থেকে বাধা প্রদান করেন। (সূরা আ‘রাফ- ১৫৭)

আহলে কিতাবের কিছু লোক এ দায়িত্ব পালন করত :

مِنْ اَهْلِ الْكِتَابِ اُمَّةٌ قَآئِمَةٌ يَّتْلُوْنَ اٰيَاتِ اللهِ اٰنَآءَ اللَّيْلِ وَهُمْ يَسْجُدُوْنَ - يُؤْمِنُوْنَ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الْاٰخِرِ وَيَأْمُرُوْنَ بِالْمَعْرُوْفِ وَيَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنْكَرِ وَيُسَارِعُوْنَ فِى الْخَيْرَاتِؕ وَاُولٰٓئِكَ مِنَ الصَّالِحِيْنَ

আহলে কিতাবদের মধ্যে একটি দল রয়েছে অটল। তারা রাতে আল্লাহর আয়াত তিলাওয়াত করে এবং সিজদা করে। তারা আল্লাহ ও পরকালের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে, সৎকাজের আদেশ দেয় এবং অসৎকাজ থেকে নিষেধ করে। আর তারা কল্যাণের কাজে দ্রুত অগ্রসর হয়। তারাই সৎলোকদের অন্তর্ভুক্ত। (সূরা আলে ইমরান- ১১৩, ১১৪)

যারা এ কাজ করেছে তারাই মুক্তি পেয়েছে :

فَلَمَّا نَسُوْا مَا ذُكِّرُوْا بِهٖۤ اَنْجَيْنَا الَّذِيْنَ يَنْهَوْنَ عَنِ السُّوْٓءِ وَاَخَذْنَا الَّذِيْنَ ظَلَمُوْا بِعَذَابٍ ۢبَئِيْسٍ ۢۢبِمَا كَانُوْا يَفْسُقُوْنَ

অতঃপর যে উপদেশ তাদেরকে দেয়া হয়েছিল যখন তারা তা ভুলে গেল, তখন আমি (সে সম্প্রদায় থেকে) এমন লোকদেরকে উদ্ধার করলাম, যারা অসৎকার্য হতে বাধা দিত। আর যারা যুলুম করত, তারা যা বিপর্যয় ঘটাত সে কারণে আমি তাদেরকে কঠোর শাস্তি প্রদান করলাম। (সূরা আ‘রাফ- ১৬৫)

যারা এ কাজ করে তারাই সফল হয় :

وَلْتَكُنْ مِّنْكُمْ اُمَّةٌ يَّدْعُوْنَ اِلَى الْخَيْرِ وَيَأْمُرُوْنَ بِالْمَعْرُوْفِ وَيَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنْكَرِؕ وَاُولٰٓئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُوْنَ

তোমাদের মধ্যে এমন একদল লোক থাকা জরুরি, যারা মানুষকে কল্যাণের দিকে আহবান করবে এবং সৎকাজের আদেশ দেবে ও অসৎকাজ থেকে নিষেধ করবে। আর তারাই হবে সফলকাম। (সূরা আলে ইমরান- ১০৪)

যে সমাজে দাওয়াতী কাজ চলে না তা ধ্বংস হয়ে যায় :

فَلَوْلَا كَانَ مِنَ الْقُرُوْنِ مِنْ قَبْلِكُمْ اُولُوْا بَقِيَّةٍ يَّنْهَوْنَ عَنِ الْفَسَادِ فِى الْاَرْضِ اِلَّا قَلِيْلًا مِّمَّنْ اَنْجَيْنَا مِنْهُمْ وَاتَّبَعَ الَّذِيْنَ ظَلَمُوْا مَاۤ اُتْرِفُوْا فِيْهِ وَكَانُوْا مُجْرِمِيْنَ

তারপর এমনটি কেন হয়নি যে, যেসব উম্মতের লোকেরা তোমাদের আগে অতিবাহিত হয়ে গেছে, (তাদের) অবশিষ্ট লোকেরা (মানুষকে) জমিনে বিপর্যয় সৃষ্টি করা থেকে নিষেধ করত। আমি যাদেরকে আযাব থেকে বাঁচিয়ে রেখেছিলাম তাদের সংখ্যা ছিল নিতান্ত কম। আর যালিমরা যে (বৈষয়িক) প্রাচুর্যের মধ্যে ছিল তার পেছনেই পড়ে থেকেছে; তারা ছিল (আসলেই) অপরাধী। (সূরা হুদ- ১১৬)

ব্যাখ্যা : মানবজাতির অতীত ইতিহাসে যতগুলো জাতিই ধ্বংস হয়েছে তাদের সবাইকে যে জিনিসটি ধ্বংস করেছে তা হচ্ছে, যখন আল্লাহ তাদেরকে স্বীয় নিয়ামত দ্বারা সমৃদ্ধ করেছেন তখন তারা নিজেদের প্রাচুর্য ও সমৃদ্ধির নেশায় মত্ত হয়ে পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করতে তৎপর হয়েছে। ফলে তাদের সামষ্টিক প্রকৃতি এমন পর্যায়ে বিকৃত হয়ে গিয়েছিল যে, তাদেরকে অসৎকাজ থেকে বিরত রাখার মতো সৎলোক তাদের মধ্যে ছিল না অথবা এ ধরনের কিছু লোক থাকলেও তাদের সংখ্যা এত কম ছিল যে, অসৎকাজ থেকে তারা বিরত রাখার চেষ্টা করলেও বিপর্যয় ঠেকাতে পারেনি। এ কারণেই শেষপর্যন্ত এ জাতিগুলো আল্লাহর আযাবের শিকার হয়েছে।

আযাব থেকে বাঁচতে হলে দাওয়াতী কাজ করতে হবে :

وَاِذْ قَالَتْ اُمَّةٌ مِّنْهُمْ لِمَ تَعِظُوْنَ قَوْمَانِ اللهُ مُهْلِكُهُمْ اَوْ مُعَذِّبُهُمْ عَذَابًا شَدِيْدًاؕ قَالُوْا مَعْذِرَةً اِلٰى رَبِّكُمْ وَلَعَلَّهُمْ يَتَّقُوْنَ

স্মরণ করো, যখন তাদের একদল বলেছিল, আল্লাহ যাদেরকে ধ্বংস করবেন কিংবা কঠোর শাস্তি দেবেন, তোমরা তাদেরকে উপদেশ দাও কেন? তারা বলেছিল, তোমাদের প্রতিপালকের নিকট দায়বদ্ধতা থেকে মুক্তির জন্য। আর হয়তো তারা সাবধানও হতে পারবে। (সূরা আ‘রাফ- ১৬৪)

ব্যাখ্যা : এ আয়াতে যাদের কথা বলা হয়েছে তাদের মধ্যে তিন ধরনের লোক ছিল। (এক) যারা প্রকাশ্যে ও পূর্ণ ঔদ্ধত্য সহকারে আল্লাহর বিধানের বিরুদ্ধাচরণ করছিল। (দুই) যারা নিজেরা বিরুদ্ধাচরণ করছিল না, কিন্তু নীরবে হাত-পা গুটিয়ে বসে বসে অন্যের বিরুদ্ধাচরণকে পর্যবেক্ষণ করছিল এবং উপদেশ দানকারীদের বলছিল, এ হতভাগাদের উপদেশ দিয়ে কী লাভ? (তিন) যারা ঈমানী মর্যাদাবোধের কারণে আল্লাহর আইনের অমর্যাদা সহ্য করতে পারেনি, তারা এ মনে করে সৎকাজের আদেশ দিতে ও অসৎকাজ থেকে অপরাধীদেরকে বিরত রাখতে তৎপর ছিল যে, হয়তো ঐ অপরাধীরা তাদের উপদেশের প্রভাবে সৎপথে এসে যাবে, আর যদি তারা সৎপথে নাও আসে তাহলে অন্তত নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী কর্তব্য পালন করে আল্লাহর সামনে নিজেদের দায় মুক্তির প্রমাণ পেশ করা যাবে। এ অবস্থায় যখন তাদের উপর আল্লাহর আযাব নেমে আসল তখন এ তিনটি দলের মধ্য থেকে একমাত্র তৃতীয় দলকেই বাঁচিয়ে নেয়া হয়েছিল। কারণ একমাত্র তারাই আল্লাহর সামনে নিজেদের অজুহাত পেশ করার চিন্তা করছিল এবং একমাত্র তারাই নিজেদের দায়িত্ব থেকে মুক্তির প্রমাণ সংগ্রহ করে রেখেছিল। বাকি দল দু’টিকে অপরাধীদের মধ্যে গণ্য করা হলো এবং নিজেদের অপরাধ অনুপাতে তারা শাস্তি ভোগ করল।

এখানে আল্লাহ সুষ্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, আল্লাহর কাছে ওজর পেশ করার জন্য অবশ্যই নিজেদের দায়িত্ব পুরোপুরি পালন করে যেতে হবে। এভাবে যারা দায়িত্ব থেকে মুক্তির প্রমাণ সংগ্রহ করতে পারবে, একমাত্র তারাই আল্লাহর কাছে ওজর পেশ করতে পারবে। এ থেকে পরিষ্কার প্রমাণিত হচ্ছে, যে জনপদে প্রকাশ্যে আল্লাহর বিধান লঙ্ঘন করা হতে থাকে সেখানকার সবাই জবাবদিহির সম্মুখীন হবে। সেখানকার কোন ব্যক্তি শুধু নিজে অপরাধ করেনি বলেই আল্লাহর সামনে জবাবদিহি থেকে বাঁচতে পারবে না। বরং আল্লাহর সামনে নিজের মুক্তির জন্য অবশ্যই তাকে এ মর্মে প্রমাণ পেশ করতে হবে যে, নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী সে মানুষের সংশোধন ও আল্লাহর সত্য দ্বীনের প্রতিষ্ঠার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে এসেছে। রাসূল ﷺ বলেছেন, ‘‘মহান আল্লাহ বিশেষ লোকদের অপরাধের কারণে সর্বসাধারণকে শাস্তি দেন না, যতক্ষণ সাধারণ লোকদের অবস্থা এমন পর্যায়ে না পৌঁছে যায় যে, তারা নিজেদের চোখের সামনে খারাপ কাজ হতে দেখে এবং তাতে বাধা দেয়ার ÿমতাও রাখে; কিন্তু বাধা দেয় না। লোকেরা যখন এমন অবস্থায় পৌঁছে যায়, তখন আল্লাহ সাধারণ ও অসাধারণ সবাইকে আযাবের মধ্যে নিক্ষেপ করেন।’’ (মুয়াত্তা মালিক, হা/১৭৯৮)

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন