hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

তাফসীরুল কুরআন বিল কুরআন

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

৩৫৩
অধ্যায়- ৭ : আখিরাতের পক্ষে যুক্তিপ্রমাণ
যিনি আসমান-জমিন সৃষ্টি করেছেন, তিনি পুনরুত্থানও ঘটাতে পারবেন :

اَوَلَمْ يَرَوْا اَنَّ اللهَ الَّذِيْ خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْاَرْضَ قَادِرٌ عَلٰۤى اَنْ يَّخْلُقَ مِثْلَهُمْ وَجَعَلَ لَهُمْ اَجَلًا لَّا رَيْبَ فِيْهِؕ فَاَبَى الظَّالِمُوْنَ اِلَّا كُفُوْرًا

তারা কি লক্ষ্য করে না যে, নিশ্চয় আল্লাহ সেই সত্তা, যিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন। আর তিনি তাদের অনুরূপ (আরো) সৃষ্টি করতে ক্ষমতাবান? তিনি তাদের জন্য স্থির করেছেন এক নির্দিষ্ট কাল, যাতে কোন সন্দেহ নেই। তারপরও সীমালঙ্ঘনকারীরা কুফরী করেই চলেছে। (সূরা বনী ইসরাঈল- ৯৯)

اَوَلَمْ يَرَوْا اَنَّ اللهَ الَّذِيْ خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْاَرْضَ وَلَمْ يَعْيَ بِخَلْقِهِنَّ بِقَادِرٍ عَلٰۤى اَنْ يُّحْيِيَ الْمَوْتٰىؕ بَلٰۤى اِنَّهٗ عَلٰى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ

তারা কি লক্ষ্য করে না যে, আল্লাহ এমন সত্তা, যিনি জমিন ও আসমান সৃষ্টি করেছেন এবং এসব সৃষ্টিতে তিনি ক্লান্তও হননি। তিনি এমন সত্তা, যিনি মৃতকে জীবিত করার ক্ষমতা রাখেন। নিশ্চয় তিনি সবকিছুর উপর শক্তিশালী। (সূরা আহকাফ- ৩৩)

মানুষ সৃষ্টি করার চেয়ে আসমান-জমিন সৃষ্টি করা অনেক কঠিন :

لَخَلْقُ السَّمَاوَاتِ وَالْاَرْضِ اَ كْبَرُ مِنْ خَلْقِ النَّاسِ وَلٰكِنَّ اَكْثَرَ النَّاسِ لَا يَعْلَمُوْنَ

মানব সৃষ্টির চেয়ে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি অবশ্যই অনেক বড় কাজ; কিন্তু অধিকাংশ মানুষ তা জানে না। (সূরা মু’মিন- ৫৭)

মৃত জমিনকে জীবিত করা পুনর্জীবনের প্রমাণ :

وَاللهُ الَّذِيْۤ اَرْسَلَ الرِّيَاحَ فَتُثِيْرُ سَحَابًا فَسُقْنَاهُ اِلٰى بَلَدٍ مَّيِّتٍ فَاَحْيَيْنَا بِهِ الْاَرْضَ بَعْدَ مَوْتِهَاؕ كَذٰلِكَ النُّشُوْرُ

তিনিই আল্লাহ, যিনি বাতাস প্রেরণ করেন এবং এর দ্বারা মেঘমালাকে পরিচালিত করেন। অতঃপর আমি তা পরিচালিত করি মৃত ভূখন্ডের দিকে, তারপর আমি এর মাধ্যমে মৃত জমিনকে পুনরুজ্জীবিত করে দেই। (সূরা ফাতির- ৯)

وَمِنْ اٰيَاتِهٖۤ اَنَّكَ تَرَى الْاَرْضَ خَاشِعَةً فَاِذَاۤ اَنْزَلْنَا عَلَيْهَا الْمَآءَ اهْتَزَّتْ وَرَبَتْؕ اِنَّ الَّذِيْۤ اَحْيَاهَا لَمُحْيِى الْمَوْتٰىؕ اِنَّهٗ عَلٰى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ

তাঁর একটি নিদর্শন এই যে, তুমি ভূমিকে শুষ্ক দেখতে পাও। অতঃপর যখন আমি তাতে বৃষ্টি বর্ষণ করি, তখন তা আন্দোলিত ও ষ্ফীত হয়। যিনি ভূমিকে জীবিত করেন তিনিই মৃতের জীবনদানকারী। তিনি তোমাদের সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান। (সূরা হা-মীম সাজদা- ৩৯)

فَانْظُرْ اِلٰۤى اَثَارِ رَحْمَةِ اللهِ كَيْفَ يُحْيِى الْاَرْضَ بَعْدَ مَوْتِهَاؕ اِنَّ ذٰلِكَ لَمُحْيِى الْمَوْتٰىۚ وَهُوَعَلٰى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ

অতএব আল্লাহর রহমতের ফলাফল সম্পর্কে চিন্তা করো। কীভাবে তিনি জমিনকে মৃত্যুর পর আবার জীবিত করেন। নিশ্চয় তিনি মৃতকে জীবনদানকারী এবং তিনিই সবকিছুর উপর সর্বশক্তিমান। (সূরা রূম- ৫০)

وَنَزَّلْنَا مِنَ السَّمَآءِ مَآءً مُّبَارَكًا فَاَنْۢبَتْنَا بِهٖ جَنَّاتٍ وَّحَبَّ الْحَصِيْدِ وَالنَّخْلَ بَاسِقَاتٍ لَّهَا طَلْعٌ نَّضِيْدٌ رِزْقًا لِّلْعِبَادِ وَاَحْيَيْنَا بِهٖ بَلْدَةً مَّيْتًاؕ كَذٰلِكَ الْخُرُوْجُ

আমি আকাশ হতে কল্যাণকর বৃষ্টি বর্ষণ করি। অতঃপর এর দ্বারা উদ্যান, পরিপক্ক শস্যরাজি এবং উঁচু উঁচু খেজুর বৃক্ষ সৃষ্টি করি, যাতে রয়েছে গুচ্ছ গুচ্ছ খেজুর। বান্দাদের জীবিকাস্বরূপ; আর আমি বৃষ্টি দ্বারা মৃত ভূমিকে জীবিত করি। মূলত এভাবেই পুনরুত্থান ঘটবে। (সূরা ক্বাফ, ৯-১১)

রাতের ঘুম পুনরুত্থানের একটি প্রমাণ :

وَهُوَ الَّذِيْ يَتَوَفَّاكُمْ بِاللَّيْلِ وَيَعْلَمُ مَا جَرَحْتُمْ بِالنَّهَارِ ثُمَّ يَبْعَثُكُمْ فِيْهِ لِيُقْضٰۤى اَجَلٌ مُّسَمًّى ثُمَّ اِلَيْهِ مَرْجِعُكُمْ ثُمَّ يُنَبِّئُكُمْ بِمَا كُنْتُمْ تَعْمَلُوْنَ

তিনিই রাতে তোমাদের মৃত্যু ঘটান এবং দিনে তোমরা যা কর তা তিনি জানেন। অতঃপর দিনে তোমাদেরকে তিনি পুনর্জাগরন করেন, যাতে নির্ধারিত কাল পূর্ণ হয়। অবশেষে তাঁর দিকেই তোমাদের প্রত্যাবর্তন। তোমরা যা কর অচিরেই তিনি তোমাদেরকে সে সম্বন্ধে অবহিত করবেন। (সূরা আন‘আম- ৬০)

যিনি প্রথমে সৃষ্টি করেছেন তিনি পুনরায় সৃষ্টি করতে সক্ষম :

وَهُوَ الَّذِيْ يَبْدَاُ الْخَلْقَ ثُمَّ يُعِيْدُهٗ وَهُوَ اَهْوَنُ عَلَيْهِؕ وَلَهُ الْمَثَلُ الْاَعْلٰى فِى السَّمَاوَاتِ وَالْاَرْضِۚ وَهُوَ الْعَزِيْزُ الْحَكِيْمُ

তিনি সৃষ্টির সূচনা করেন, তারপর তিনিই আবার তা সৃষ্টি করবেন এটা তাঁর জন্য খুবই সহজ। আসমান ও জমিনে সর্বোচ্চ মর্যাদা তাঁরই। আর তিনিই প্রতাপশালী ও মহাবিজ্ঞ। (সূরা রূম- ২৭)

আল্লাহ শপথ করেছেন, তিনি পুনরায় জীবিত করবেন :

لَاۤ اُقْسِمُ بِيَوْمِ الْقِيَامَةِ وَلَاۤ اُقْسِمُ بِالنَّفْسِ اللَّوَّامَةِ اَيَحْسَبُ الْاِنْسَانُ اَلَّنْ نَّجْمَعَ عِظَامَهُ بَلٰى قَادِرِيْنَ عَلٰۤى اَنْ نُّسَوِّيَ بَنَانَهٗ

আমি শপথ করছি কিয়ামত দিবসের, আরো শপথ করছি তিরস্কারকারী আত্মার। মানুষ কি মনে করে যে, আমি তার হাড়গুলো কোনক্রমে একত্র করতে পারব না? হ্যাঁ! অবশ্যই আমি তার আঙ্গুলীর অগ্রভাগ পর্যন্ত পুনর্বিন্যস্ত করতে সক্ষম। (সূরা ক্বিয়ামাহ, ১-৪)

এটা আল্লাহর কাছে সহজ ব্যাপার :

اَوَلَمْ يَرَوْا كَيْفَ يُبْدِئُ اللهُ الْخَلْقَ ثُمَّ يُعِيْدُهٗؕ اِنَّ ذٰلِكَ عَلَى اللهِ يَسِيْرٌ

তারা কি লক্ষ্য করে না, কীভাবে আল্লাহ সৃষ্টিকে অস্তিত্ব দান করেন, অতঃপর তা পুনরায় সৃষ্টি করবেন? এটা তো আল্লাহর জন্য খুবই সহজ। (সূরা আনকাবূত- ১৯)

مَا خَلْقُكُمْ وَلَا بَعْثُكُمْ اِلَّا كَنَفْسٍ وَّاحِدَةٍؕ اِنَّ اللهَ سَمِيْعٌ ۢ بَصِيْرٌ

তোমাদের সৃষ্টি ও পুনরুত্থান একটি প্রাণীর সৃষ্টি ও পুনরুত্থানের ন্যায়। নিশ্চয় আল্লাহ সবকিছু শুনেন এবং দেখেন। (সূরা লুক্বমান- ২৮)

ব্যাখ্যা : মানবকুল সৃষ্টি এবং তাদের পুনরুজ্জীবনের ব্যাপারটিও ঠিক একই। সৃষ্টির সূচনা থেকে আজ পর্যন্ত যত মানুষ জন্ম নিয়েছে এবং কিয়ামত পর্যন্ত জন্ম নেবে তাদের সবাইকে তিনি আবার এক মুহূর্তেই সৃষ্টি করতে পারেন। তাঁর সৃষ্টিক্ষমতা একটি মানুষের সৃষ্টিতে এমনভাবে লিপ্ত হয়ে পড়ে না যে, একই সময়ে তিনি অন্য মানুষ সৃষ্টি করতে অপারগ হয়ে পড়েন। একজন মানুষ সৃষ্টি করা বা কোটি কোটি মানুষ সৃষ্টি করা দুটোই তাঁর জন্য সমান।

লাশের কোন অংশ কোথায় আছে আল্লাহ তা জানেন :

قَدْ عَلِمْنَا مَا تَنْقُصُ الْاَرْضُ مِنْهُمْۚ وَعِنْدَنَا كِتَابٌ حَفِيْظٌ

মাটি তাদের কতটুকু ক্ষয় করে তা আমি জানি; আর আমার নিকট সংরক্ষিত একটি কিতাব রয়েছে। (সূরা ক্বাফ- ৪)

ব্যাখ্যা : এ কথা যদি তাদের বিবেকবুদ্ধিতে না ধরে তাহলে তা তাদের বিবেকবুদ্ধির সংকীর্ণতা। তাদের বিবেকবুদ্ধির সংকীর্ণতার কারণে আল্লাহর জ্ঞান ও কুদরতও সংকীর্ণ হতে হবে- তা নয়। এরা মনে করে, সৃষ্টির সূচনাকাল থেকে কিয়ামত পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারী অসংখ্য মানুষের দেহের বিভিন্ন অংশ যা মাটিতে মিশে গিয়েছে তা একত্রিত করা কোন ক্রমেই সম্ভব নয়। কিন্তু প্রকৃত ব্যাপার হচ্ছে, ঐসব দেহের একেকটি অংশ যেখানে যে অবস্থায় আছে আল্লাহ তা‘আলা তা সরাসরি জানেন। তাছাড়া আল্লাহর দফতরে তার পূর্ণাঙ্গ রেকর্ডও সংরক্ষণ করা হচ্ছে। একটি ক্ষুদ্র অণুও তা থেকে বাদ পড়ে না। যখন আল্লাহর নির্দেশ হবে তখনই তাঁর ফেরেশতারা উক্ত রেকর্ড দেখে একেকটি অণুকে খুঁজে বের করবে এবং সমস্ত মানুষ যে দেহ নিয়ে দুনিয়াতে কাজ করেছিল সেই দেহ তারা পুনরায় বানিয়ে দেবে। আখিরাতের জীবন যে কেবল দুনিয়ার জীবনের মতো দৈহিক জীবন হবে- তা নয় বরং দুনিয়াতে মানুষের যে দেহ ছিল আখিরাতেও প্রত্যেক মানুষের দেহ হবে।

পুনর্জীবনের ঐতিহাসিক প্রমাণ :

كَذَّبَتْ قَبْلَهُمْ قَوْمُ نُوْحٍ وَّاَصْحَابُ الرَّسِّ وَثَمُوْدُ وَعَادٌ وَّفِرْعَوْنُ وَاِخْوَانُ لُوْطٍ وَاَصْحَابُ الْاَيْكَةِ وَقَوْمُ تُبَّعٍؕ كُلٌّ كَذَّبَ الرُّسُلَ فَحَقَّ وَعِيْدِ اَفَعَيِيْنَا بِالْخَلْقِ الْاَوَّلِؕ بَلْ هُمْ فِيْ لَبْسٍ مِّنْ خَلْقٍ جَدِيْدٍ

তাদের পূর্বেও সত্য প্রত্যাখ্যান করেছিল নূহের সম্প্রদায়, রাস্সের অধিবাসী, সামূদ সম্প্রদায়, আদ সম্প্রদায়, ফিরাউন ও লূতের ভাইয়েরা, আইকাবাসী এবং তুববা সম্প্রদায়; তারা সকলে রাসূলদেরকে মিথ্যাবাদী বলেছিল, ফলে তাদের উপর আমার শাস্তি কার্যকর হয়েছে। আমি কি প্রথমবার সৃষ্টি করেই ক্লান্ত হয়ে পড়েছি? যার কারণে পুনরায় নতুন সৃষ্টির বিষয়ে তারা সন্দেহ পোষণ করবে! (সূরা ক্বাফ, ১২-১৫)

ব্যাখ্যা : আখিরাতের পক্ষে এটি একটি ঐতিহাসিক যুক্তি। যেভাবেই আখিরাতকে অস্বীকার করা হোক না কেন, তার অনিবার্য ফলস্বরূপ মানুষের নৈতিক চরিত্র নষ্ট হয়ে গেছে। তারা নিজেদেরকে দায়িত্বহীন মনে করে লাগামহীন স্বেচ্ছাচারী হয়ে পড়েছে। তারা যুলুম, বিপর্যয়, ফাসিকী ও অশ্লীল আচরণের চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। এর ফলে জাতিসমূহ একের পর এক ধ্বংস হচ্ছে। যারা নিছক বস্তুগত উন্নতিকে একটি জাতির সৎ হওয়ার আলামত মনে করে, এখানে তাদের জবাব রয়েছে। এমন উন্নয়নমূলক কাজ পূর্বেও বহু জাতি বিরাট আকারে করেছে। তারপরও কি তোমরা দেখনি যে, সে জাতিগুলো তাদের নিজেদের সভ্যতা-সংস্কৃতি সহকারে ধূলোয় মিশে গেছে এবং তাদের উন্নয়নের আকাশচুম্বী প্রাসাদ ধ্বংস হয়ে গেছে? মূলত সত্যের প্রতি বিশ্বাস ও সৎ চারিত্রিক গুণাবলি ছাড়া নিছক বস্তুগত নির্মাণের কোন মূল্য আল্লাহর কাছে নেই। এ জাতিগুলো যে ধ্বংসের সম্মুখীন হয়েছে এটা তাদের উপর আল্লাহর যুলুম ছিল না বরং তা ছিল তাদের নিজেদের যুলুম। এসব যুলুম তারা নিজেরাই নিজেদের উপর করেছিল। যে ব্যক্তি বা দল নিজে সঠিক চিন্তা করে না এবং অন্যের বুঝিয়ে দেয়ার পরও সঠিক নীতি অবলম্বন করে না, সে নিজেই নিজের অশুভ পরিণামের জন্য দায়ী হয়। এ ব্যাপারে আল্লাহকে দোষারোপ করা যেতে পারে না। আল্লাহ নিজের কিতাব ও নবীগণের মাধ্যমে মানুষকে সত্যের জ্ঞান দেয়ার ব্যবস্থা করেছেন এবং তাকে এমন বুদ্ধিবৃত্তিক ও তাত্ত্বিক উপকরণাদিও দিয়েছেন, যেগুলো ব্যবহার করে সে সবসময় নবী ও আসমানী কিতাবপ্রদত্ত জ্ঞানের সত্যতা যাচাই করতে পারে। আল্লাহ যদি মানুষকে এ পথনির্দেশনা এবং উপকরণাদি থেকে বঞ্চিত করতেন এবং এতে যদি মানুষ ভুল পথে পরিচালিত হতো, তাহলে নিঃসন্দেহে আল্লাহর বিরুদ্ধে যুলুমের দোষারোপ করার অবকাশ থাকত।

আসহাবে কাহফ পরকালের প্রমাণ :

اَمْ حَسِبْتَ اَنَّ اَصْحَابَ الْكَهْفِ وَالرَّقِيْمِ كَانُوْا مِنْ اٰيَاتِنَا عَجَبًا

তুমি কি মনে কর যে, গুহা ও রাকীমের অধিবাসীরা আমার নিদর্শনাবলির মধ্যে একটি বিস্ময়কর নিদর্শন? (সূরা কাহফ- ৯)

وَكَذٰلِكَ اَعْثَرْنَا عَلَيْهِمْ لِيَعْلَمُوْاۤ اَنَّ وَعْدَ اللهِ حَقٌّ وَّاَنَّ السَّاعَةَ لَا رَيْبَ فِيْهَا

এভাবে আমি মানুষকে তাদের বিষয় জানিয়ে দিলাম, যাতে তারা জ্ঞাত হয় যে, আল্লাহর প্রতিশ্রুতি সত্য এবং কিয়ামতের ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই। (সূরা কাহফ- ২১)

আল্লাহ এক নবীকে সরাসরি পুনর্জীবন দেখিয়েছেন :

اَوْ كَالَّذِيْ مَرَّ عَلٰى قَرْيَةٍ وَّهِيَ خَاوِيَةٌ عَلٰى عُرُوْشِهَاۚ قَالَ اَنّٰى يُحْيِيْ هٰذِهِ اللهُ بَعْدَ مَوْتِهَاۚ فَاَمَاتَهُ اللهُ مِائَةَ عَامٍ ثُمَّ بَعَثَهٗؕ قَالَ كَمْ لَبِثْتَؕ قَالَ لَبِثْتُ يَوْمًا اَوْ بَعْضَ يَوْمٍؕ قَالَ بَلْ لَّبِثْتَ مِائَةَ عَامٍ فَانْظُرْ اِلٰى طَعَامِكَ وَشَرَابِكَ لَمْ يَتَسَنَّهْۚ وَانْظُرْ اِلٰى حِمَارِكَۗ وَلِنَجْعَلَكَ اٰيَةً لِّلنَّاسِ وَانْظُرْ اِلَى الْعِظَامِ كَيْفَ نُنْشِزُهَا ثُمَّ نَكْسُوْهَا لَحْمًاؕ فَلَمَّا تَبَيَّنَ لَهٗ قَالَ اَعْلَمُ اَنَّ اللهَ عَلٰى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ

অথবা ঐ ব্যক্তির মতো, যে কোন এক জনপদ অতিক্রম করছিল, যা থুবড়ে পড়ে আছে। সে বলল, এই নগরের অধিবাসীদের মৃত্যুর পর আল্লাহ কীভাবে জীবিত করবেন? অতঃপর আল্লাহ তাকে একশ’ বছর মৃত রাখলেন। পরে তাকে জীবিত করলেন। আল্লাহ জিজ্ঞেস করলেন, তুমি এ অবস্থায় কতদিন ছিলে? সে বলল, একদিন অথবা একদিনের কিছু কম সময়। আল্লাহ বললেন, বরং তুমি একশ’ বছর অতিবাহিত করেছ। তোমার খাদ্য ও পানীয়ের দিকে লক্ষ্য করে দেখ, তা বিকৃত হয়নি। অতঃপর তুমি তোমার গাধার দিকেও লক্ষ্য করো। (আমি এটি ঘটিয়েছি, কেননা) আমি তোমাকে মানুষের জন্য নিদর্শনস্বরূপ বানাতে চাই। আর তুমি হাড়গুলোর দিকে লক্ষ্য করো, কীভাবে আমি ওগুলোকে সংযুক্ত করি, তারপর তাকে মাংস দ্বারা আবৃত করি। যখন তার কাছে এটা স্পষ্ট হয়ে গেল তখন সে বলল, আমি জানি আল্লাহ সর্ববিষয়ে ক্ষমতাবান। (সূরা বাক্বারা- ২৫৯)

ইবরাহীম (আঃ) কে আল্লাহ পুনর্জীবন দেখিয়েছেন :

وَاِذْ قَالَ اِبْرَاهِيْمُ رَبِّ اَرِنِيْ كَيْفَ تُحْيِى الْمَوْتٰىؕ قَالَ اَوَلَمْ تُؤْمِنْؕ قَالَ بَلٰى وَلٰكِنْ لِّيَطْمَئِنَّ قَلْبِيْؕ قَالَ فَخُذْ اَرْبَعَةً مِّنَ الطَّيْرِ فَصُرْهُنَّ اِلَيْكَ ثُمَّ اجْعَلْ عَلٰى كُلِّ جَبَلٍ مِّنْهُنَّ جُزْءًا ثُمَّ ادْعُهُنَّ يَاْتِيْنَكَ سَعْيًاؕ وَاعْلَمْ اَنَّ اللهَ عَزِيْزٌ حَكِيْمٌ

যখন ইবরাহীম বলেছিলেন, হে আমার রব! কীভাবে আপনি মৃতকে জীবিত করেন তা আমাকে দেখান। আল্লাহ বললেন, তুমি কি বিশ্বাস কর না? তিনি বললেন, হ্যাঁ (বিশ্বাস করি) তবে আমার অন্তরের প্রশান্তির জন্য। আল্লাহ বললেন, তাহলে চারটি পাখি ধরো। অতঃপর সেগুলোকে তোমার পোষ মানিয়ে নাও। তারপর তুমি প্রত্যেক পাহাড়ের উপর ওদের এক এক অংশ রাখো; অতঃপর তাদেরকে ডাকো, ওরা তোমার কাছে দৌড়ে আসবে। জেনে রেখো, আল্লাহ পরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময়। (সূরা বাক্বারা- ২৬০)

আল্লাহ তাঁর ওয়াদা বাস্তবায়ন করবেনই :

اَللهُ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَؕ لَيَجْمَعَنَّكُمْ اِلٰى يَوْمِ الْقِيَامَةِ لَا رَيْبَ فِيْهِؕ وَمَنْ اَصْدَقُ مِنَ اللهِ حَدِيْثًا

আল্লাহ সেই সত্তা, যিনি ব্যতীত অন্য কোন ইলাহ্ নেই; তিনি তোমাদেরকে কিয়ামতের দিন একত্র করবেন, এতে কোন সন্দেহ নেই। আল্লাহর চেয়ে অধিক সত্যবাদী আর কে? (সূরা নিসা- ৮৭)

يَوْمَ نَطْوِى السَّمَآءَ كَطَيِّ السِّجِلِّ لِلْكُتُبِؕ كَمَا بَدَاْنَاۤ اَوَّلَ خَلْقٍ نُّعِيْدُهٗؕ وَعْدًا عَلَيْنَاؕ اِنَّا كُنَّا فَاعِلِيْنَ

সেদিন আকাশমন্ডলীকে গুটিয়ে ফেলব, যেভাবে গুটানো হয় লিখিত দফতর। যেভাবে আমি প্রথম সৃষ্টির সূচনা করেছিলাম, সেভাবে পুনরায় সৃষ্টি করার প্রতিশ্রুতি পালন করা আমার কর্তব্য, আর আমি এটা পালন করবই। (সূরা আম্বিয়া- ১০৪)

মানুষের কৃতকর্মই তার সৌভাগ্য বা দুর্ভাগ্য ডেকে আনে :

وَكُلَّ اِنْسَانٍ اَلْزَمْنَاهُ طَآئِرَهٗ فِيْ عُنُقِهٖ وَنُخْرِجُ لَهٗ يَوْمَ الْقِيَامَةِ كِتَابًا يَّلْقَاهُ مَنْشُوْرًا

আমি প্রত্যেক মানুষের ভাগ্য তাদের কাঁধেই ঝুলিয়ে রেখেছি। অতঃপর কিয়ামতের দিন আমি তার জন্য বের করব এক কিতাব, যা সে পাবে উন্মুক্ত অবস্থায়। (সূরা বনী ইসরাঈল- ১৩)

ব্যাখ্যা : অর্থাৎ প্রত্যেক মানুষের সৌভাগ্য ও দুর্ভাগ্য এবং তার পরিণতির ভালো-মন্দের কারণগুলো তার নিজ সত্তার মধ্যেই বিরাজ করছে। নিজের গুণাবলি, চরিত্র, এবং সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা ব্যবহারের মাধ্যমে সে নিজেই নিজেকে সৌভাগ্যের অধিকারী করে, আবার দুর্ভাগ্যেরও অধিকারী করে। নির্বোধ লোকেরা নিজেদের ভাগ্যের ভালো-মন্দের চিহ্নগুলো বাইরে খুঁজে বেড়ায় এবং তারা সবসময় বাহ্যিক কার্যক্রমকেই নিজেদের দুর্ভাগ্যের জন্য দায়ী করে। কিন্তু প্রকৃত ব্যাপার হচ্ছে, তাদের ভালো-মন্দ তাদের নিজেদের গলায়ই ঝুলানো থাকে। নিজেদের কার্যকলাপের প্রতি নজর দিলে তারা পরিষ্কার দেখতে পায় যে, যে জিনিসটি তাদেরকে ধ্বংসের পথে এগিয়ে দিয়েছে এবং শেষ পর্যন্ত তাদেরকে সর্বহারা করে ছেড়েছে, তা ছিল তাদের নিজেদেরই অসৎ গুণাবলি ও অশুভ সিদ্ধান্ত। বাহির থেকে কোন জিনিস এসে জোরপূর্বক তাদের উপর চেপে বসেনি।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন