hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

তাফসীরুল কুরআন বিল কুরআন

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

২১৮
পর্ব- ২৫ : আল্লাহর পথে দান অধ্যায়- ১ : দানের গুরুত্ব ও ফযীলত
দান করার জন্য আহবান :

اٰمِنُوْا بِاللهِ وَرَسُوْلِهٖ وَاَنْفِقُوْا مِمَّا جَعَلَكُمْ مُّسْتَخْلَفِيْنَ فِيْهِؕ فَالَّذِيْنَ اٰمَنُوْا مِنْكُمْ وَاَنْفَقُوْا لَهُمْ اَجْرٌ كَبِيْرٌ

আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান আনয়ন করো এবং তিনি তোমাদেরকে যা কিছুর উত্তরাধিকারী করেছেন তা হতে ব্যয় করো। অতঃপর তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান আনে ও ব্যয় করে, তাদের জন্য রয়েছে মহাপুরস্কার। (সূরা হাদীদ- ৭)

ব্যাখ্যা : এখানে খরচ বলতে নিজের ও নিজের পরিবার-পরিজনের বৈধ প্রয়োজন পূর্ণ করা, আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব, প্রতিবেশী ও অভাবীদেরকে সাহায্য করা, জনকল্যাণমূলক কাজে অংশগ্রহণ করা এবং আল্লাহর কালিমাকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য আর্থিক ত্যাগ স্বীকার করাকে বুঝানো হয়েছে। কেননা অযথা খরচ, ভোগবিলাসের জন্য খরচ এবং লোক দেখানো খরচকে কুরআন খরচ হিসেবে গণ্য করে না। বরং কুরআনের পরিভাষায় এ খরচকে ইসরাফ তথা অপচয় বলে নামকরণ করা হয়েছে। অনুরূপভাবে কার্পণ্য ও সংকীর্ণতা সহকারে যা খরচ করা হয়, তার ফলে মানুষ নিজের পরিবার-পরিজনকেও সংকীর্ণতার মধ্যে রাখে এবং নিজেও নিজের মর্যাদানুযায়ী প্রয়োজন পূর্ণ করতে পারে না। নিজের সামর্থ্যানুযায়ী অন্যদেরকে সাহায্যও করতে পিছপা হয়। এ অবস্থায় মানুষ যদিও কিছু না কিছু খরচ করে, কিন্তু কুরআনের ভাষায় এ খরচের নাম ‘ইনফাক’ নয়; বরং কুরআনে একে কৃপণতা ও মানসিক সংকীর্ণতা বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে।

দান-খয়রাত একটি লাভজনক ব্যবসা :

اِنَّ الَّذِيْنَ يَتْلُوْنَ كِتَابَ اللهِ وَاَقَامُوا الصَّلَاةَ وَاَنْفَقُوْا مِمَّا رَزَقْنَاهُمْ سِرًّا وَّعَلَانِيَةً يَّرْجُوْنَ تِجَارَةً لَّنْ تَبُوْرَ

নিশ্চয় যারা আল্লাহর কিতাব পাঠ করে, সালাত কায়েম করে এবং যা কিছু আমি তাদেরকে রিযিক হিসেবে দান করেছি তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে, তারা এমন ব্যবসার আশা করে, যাতে কখনো লোকসান হবে না। (সূরা ফাতির- ২৯)

ব্যাখ্যা : যেহেতু মানুষ আল্লাহর পথে যা ব্যয় করে আল্লাহ তার প্রতিটি অংশকে কয়েকগুণ বৃদ্ধি করে ফেরত দেয়ার ওয়াদা করেছেন, তাই কুরআনের বিভিন্ন স্থানে আল্লাহর পথে অর্থ-সম্পদ ব্যয় করাকে ঋণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন এবং এটাকে এমন ব্যবসার সাথে তুলনা করেছেন, যাতে কখনো লোকসান হবে না। তবে এখানে শর্ত হচ্ছে, তা অবশ্যই উত্তম ঋণ হতে হবে। অর্থাৎ বৈধ উপায়ে অর্জিত সম্পদ আল্লাহর পথে ব্যয় করতে হবে, আল্লাহর বিধান অনুযায়ী ব্যয় করতে হবে এবং আন্তরিকতার সাথে ব্যয় করতে হবে।

দান করা মুমিনের উত্তম বৈশিষ্ট্য :

وَالَّذِيْنَ اسْتَجَابُوْا لِرَبِّهِمْ وَاَقَامُوا الصَّلَاةَ۪ وَاَمْرُهُمْ شُوْرٰى بَيْنَهُمْ۪ وَمِمَّا رَزَقْنَاهُمْ يُنْفِقُوْنَ

যারা তাদের প্রতিপালকের আহবানে সাড়া দেয়, সালাত প্রতিষ্ঠা করে, পরস্পর পরামর্শের মাধ্যমে তাদের কর্ম সম্পাদন করে এবং তাদেরকে আমি যে রিযিক দিয়েছি তা হতে ব্যয় করে (তারাই মুমিন)। (সূরা শূরা- ৩৮)

ব্যাখ্যা : রিযিক থেকে ব্যয় করার অর্থ হলো, (এক) আমি তাদেরকে যে হালাল রিযিক দান করেছি তা থেকে খরচ করে, নিজের ব্যয়ভার নির্বাহের জন্য হারাম অর্থ-সম্পদের দিকে হাত বাড়ায় না। (দুই) আমার দেয়া রিযিককে কৃপণের মতো জমা করে রাখে না, বরং তা হতে আল্লাহর পথে খরচ করে।

দান করা তাক্বওয়ার পরিচয় :

ذٰلِكَ الْكِتَابُ لَا رَيْبَ فِيْهِۚ هُدًى لِّلْمُتَّقِيْنَ اَلَّذِيْنَ يُؤْمِنُوْنَ بِالْغَيْبِ وَيُقِيْمُوْنَ الصَّلَاةَ وَمِمَّا رَزَقْنَاهُمْ يُنْفِقُوْنَ

এটা ঐ গ্রন্থ, যার মধ্যে কোন সন্দেহ নেই। আর মুত্তাক্বীদের জন্য এটা হেদায়াতস্বরূপ। যারা অদৃশ্য বিষয়গুলোর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে, সালাত প্রতিষ্ঠা করে এবং আমি তাদেরকে যে জীবনোপকরণ দান করেছি তা হতে ব্যয় করে। (সূরা বাক্বারা- ২, ৩)

দান করা জান্নাতী লোকদের বিশেষ গুণ :

وَالَّذِيْنَ صَبَرُوا ابْتِغَآءَ وَجْهِ رَبِّهِمْ وَاَقَامُوا الصَّلَاةَ وَاَنْفَقُوْا مِمَّا رَزَقْنَاهُمْ سِرًّا وَّعَلَانِيَةً وَّيَدْرَءُوْنَ بِالْحَسَنَةِ السَّيِّئَةَ اُولٰٓئِكَ لَهُمْ عُقْبَى الدَّارِ

যারা তাদের প্রতিপালকের সন্তুষ্টি লাভের জন্য ধৈর্যধারণ করে, সালাত কায়েম করে এবং আমি তাদেরকে যে জীবনোপকরণ দিয়েছি তা হতে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে। আর যারা ভালো দ্বারা মন্দকে দূরীভূত করে, এদের জন্যই রয়েছে শুভ পরিণাম (জান্নাত)। (সূরা রা‘দ- ২২)

আল্লাহ দানকে ঋণ হিসেবে গ্রহণ করে অনেক গুণ বৃদ্ধি করেন :

مَنْ ذَا الَّذِيْ يُقْرِضُ اللهَ قَرْضًا حَسَنًا فَيُضَاعِفَهٗ لَهٗ وَلَهٗۤ اَجْرٌ كَرِيْمٌ

কে আছে যে আল্লাহকে উত্তম ঋণ দেবে? তাহলে তিনি তার জন্য তা বহুগুণে বৃদ্ধি করে দেবেন। আর তার জন্য রয়েছে উত্তম পুরস্কার। (সূরা হাদীদ- ১১)

مَنْ ذَا الَّذِيْ يُقْرِضُ اللهَ قَرْضًا حَسَنًا فَيُضَاعِفَهٗ لَهٗۤ اَضْعَافًا كَثِيْرَةً

কে আছে যে আল্লাহকে করযে হাসানা দেবে? অতঃপর তিনি তাকে তা অনেক গুণ বাড়িয়ে দেবেন। (সূরা বাক্বারা- ২৪৫)

ব্যাখ্যা : ‘করযে হাসানা’ এর শাব্দিক অনুবাদ হচ্ছে উত্তম ঋণ। অর্থাৎ এমন ঋণ যা কেবলমাত্র সৎকর্মের প্রেরণায় চালিত হয়ে নিঃস্বার্থভাবে কাউকে দেয়া হয়। অনুরূপভাবে আল্লাহর পথে অর্থ ব্যয় করলে আল্লাহ তাকে নিজের জন্য ঋণ বলে গণ্য করেন। এ ক্ষেত্রে তিনি কেবল আসলটি নয় বরং কয়েকগুণ বেশি দেয়ার ওয়াদা করেন। তবে এজন্য শর্তারোপ করে বলেন যে, সেটি ‘করযে হাসানা’ অর্থাৎ এমন ঋণ হতে হবে, যা দেয়ার পেছনে কোন হীন স্বার্থ থাকবে না বরং নিছক আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার উদ্দেশ্যে এ ঋণ দিতে হবে। আর তা এমন কাজে ব্যয় করতে হবে, যা আল্লাহ পছন্দ করেন।

দানের সওয়াব বিফলে যাবে না :

وَمَا تُنْفِقُوْا مِنْ خَيْرٍ فَلِاَنْفُسِكُمْ وَمَا تُنْفِقُوْنَ اِلَّا ابْتِغَآءَ وَجْهِ اللهِ وَمَا تُنْفِقُوْا مِنْ خَيْرٍ يُّوَفَّ اِلَيْكُمْ وَاَنْتُمْ لَا تُظْلَمُوْنَ

তোমরা যা কিছু দান কর তা মূলত তোমাদের নিজেদের জন্যই। আর তোমরা আল্লাহর সন্তুষ্টি ছাড়া অন্য কোন উদ্দেশ্যে ব্যয় করো না। তোমরা উত্তম যা কিছুই দান করবে তার পুরোপুরি প্রতিদান তোমরা পাবে এবং তোমাদের উপর কোন অন্যায় করা হবে না। (সূরা বাক্বারা- ২৭২)

وَمَا تُنْفِقُوْا مِنْ شَيْءٍ فِيْ سَبِيْلِ اللهِ يُوَفَّ اِلَيْكُمْ وَاَنْتُمْ لَا تُظْلَمُوْنَ

তোমরা আল্লাহর পথে যা কিছু ব্যয় করবে তার পূর্ণ প্রতিদান তোমাদেরকে দেয়া হবে এবং তোমাদের প্রতি (বিন্দু পরিমাণও) যুলুম করা হবে না। (সূরা আনফাল- ৬০)

কোন দানই আল্লাহর কাছে গোপন থাকে না :

وَمَا تُنْفِقُوْا مِنْ خَيْرٍ فَاِنَّ اللهَ بِهٖ عَلِيْمٌ

আর তোমরা যে সম্পদ দান কর আল্লাহ সে সম্পর্কে খবর রাখেন। (সূরা বাক্বারা- ২৭৩)

দান করলে আল্লাহ গোনাহ ক্ষমা করেন :

اِنْ تُبْدُوا الصَّدَقَاتِ فَنِعِمَّا هِيَۚ وَاِنْ تُخْفُوْهَا وَتُؤْتُوْهَا الْفُقَرَآءَ فَهُوَ خَيْرٌ لَّكُمْؕ وَيُكَفِّرُ عَنْكُمْ مِّنْ سَيِّئَاتِكُمْؕ وَاللهُ بِمَا تَعْمَلُوْنَ خَبِيْرٌ

তোমরা যদি প্রকাশ্যে দান কর, তবে তা ভালো। আর যদি গোপনে গরীবদেরকে দান কর, তবে তা তোমাদের জন্য আরো উত্তম। আল্লাহ তোমাদের গোনাহ ক্ষমা করেন এবং তোমাদের কর্ম সম্পর্কে খবর রাখেন। (সূরা বাক্বারা- ২৭১)

দান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উপায় :

وَمِنَ الْاَعْرَابِ مَنْ يُّؤْمِنُ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الْاٰخِرِ وَيَتَّخِذُ مَا يُنْفِقُ قُرُبَاتٍ عِنْدَ اللهِ وَصَلَوَاتِ الرَّسُوْلِؕ اَلَاۤ اِنَّهَا قُرْبَةٌ لَّهُمْؕ سَيُدْخِلُهُمُ اللهُ فِيْ رَحْمَتِهٖؕ اِنَّ اللهَ غَفُوْرٌ رَّحِيْمٌ

মরুবাসীদের মধ্যে কেউ কেউ আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ঈমান রাখে এবং তারা যা ব্যয় করে তা আল্লাহর সান্নিধ্য ও রাসূলের দু‘আ লাভের উপায় হিসেবে গ্রহণ করে। বাস্তবিকই তা তাদের জন্য আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের উপায়। অচিরেই আল্লাহ তাদেরকে নিজ রহমতের মধ্যে প্রবেশ করাবেন। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু। (সূরা তাওবা- ৯৯)

সর্বাবস্থায় দান করার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে :

اَلَّذِيْنَ يُنْفِقُوْنَ اَمْوَالَهُمْ بِاللَّيْلِ وَالنَّهَارِ سِرًّا وَّعَلَانِيَةً فَلَهُمْ اَجْرُهُمْ عِنْدَ رَبِّهِمْۚ وَلَا خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلَا هُمْ يَحْزَنُوْنَ

যারা রাতে ও দিনে, গোপনে ও প্রকাশ্যে তাদের মাল খরচ করে, তাদের জন্য তাদের রবের নিকট প্রতিদান রয়েছে। তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা চিন্তিতও হবে না। (সূরা বাক্বারা- ২৭৪)

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন