hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

তাফসীরুল কুরআন বিল কুরআন

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

৭৮
অধ্যায়- ২ : সালাতের গুরুত্ব ও মর্যাদা
সালাত আদায় করা মুত্তাক্বীদের বৈশিষ্ট্য :

الٓمّٓ ذٰلِكَ الْكِتَابُ لَا رَيْبَ فِيْهِ هُدًى لِّلْمُتَّقِيْنَ اَ لَّذِيْنَ يُؤْمِنُوْنَ بِالْغَيْبِ وَيُقِيْمُوْنَ الصَّلَاةَ وَمِمَّا رَزَقْنَاهُمْ يُنْفِقُوْنَ

এটা ঐ গ্রন্থ যার মধ্যে কোনরূপ সন্দেহ নেই; আর মুত্তাক্বীদের জন্য এটা হেদায়াত। যারা অদৃশ্য বিষয়গুলোর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে, সালাত কায়েম করে এবং আমি তাদেরকে যে জীবনোপকরণ দান করেছি তা হতে ব্যয় করে। (সূরা বাক্বারা- ২, ৩)

সালাত ঈমানদারীর পরিচয় :

اِنَّمَا الْمُؤْمِنُوْنَ الَّذِيْنَ اِذَا ذُكِرَ اللهُ وَجِلَتْ قُلُوْبُهُمْ وَاِذَا تُلِيَتْ عَلَيْهِمْ اٰيَاتُهٗ زَادَتْهُمْ اِيْمَانًا وَّعَلٰى رَبِّهِمْ يَتَوَكَّلُوْنَ اَ لَّذِيْنَ يُقِيْمُوْنَ الصَّلَاةَ وَمِمَّا رَزَقْنَاهُمْ يُنْفِقُوْنَ اُولٰٓئِكَ هُمُ الْمُؤْمِنُوْنَ حَقًّاؕ لَهُمْ دَرَجَاتٌ عِنْدَ رَبِّهِمْ وَمَغْفِرَةٌ وَّرِزْقٌ كَرِيْمٌ

নিশ্চয় মুমিন তো তারাই যাদের হৃদয় আল্লাহর স্মরণে কম্পিত হয় এবং তাদের সামনে তাঁর আয়াতসমূহ পাঠ করা হলে তাদের ঈমান আরো বৃদ্ধি পায়। আর তারা তাদের প্রতিপালকের উপরই নির্ভর করে থাকে। যারা সালাত কায়েম করে এবং আমি যা দিয়েছি তা হতে ব্যয় করে; তারাই প্রকৃত মুমিন। তাদের প্রতিপালকের নিকট তাদেরই জন্য রয়েছে মর্যাদা, ক্ষমা এবং সম্মানজনক জীবিকা। (সূরা আনফাল, ২-৪)

ব্যাখ্যা : যে ব্যক্তি আল্লাহর অনুগত নয় এবং আখিরাতের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে না, তার জন্য নিয়মিত সালাত আদায় করা খুবই কষ্টকর ও বিরাট মুসিবতের ব্যাপার। কিন্তু যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় ও সানন্দে নিজেকে আল্লাহর আনুগত্যে সোপর্দ করেছে এবং যে ব্যক্তি মৃত্যুর পর তার মহান প্রভুর সামনে উপস্থিত হওয়ার কথা চিন্তা করে, তার জন্য সালাত আদায় করা নয় বরং তা ত্যাগ করাই কঠিন।

সালাত মুমিন ও কাফির-মুশরিকের মধ্যে পার্থক্য নির্ণয় করে :

مُنِيْبِيْنَ اِلَيْهِ وَاتَّقُوْهُ وَاَقِيْمُوا الصَّلَاةَ وَلَا تَكُوْنُوْا مِنَ الْمُشْرِكِيْنَ

তোমরা একনিষ্ঠভাবে তাঁর অভিমুখী হও এবং শুধু তাঁকেই ভয় করো। আর তোমরা সালাত প্রতিষ্ঠা করো এবং কখনো মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না। (সূরা রূম- ৩১)

ব্যাখ্যা : মানবজাতির মধ্য থেকে যারা বিদ্রোহের নীতি পরিহার করে রবের প্রতি আনুগত্যের নীতি অবলম্বন করেছে, তা কাফির ও মুমিন উভয় সমাজের সামনে প্রকাশিত হওয়া প্রয়োজন। মুমিনদের কাছে এজন্য প্রকাশ হওয়া প্রয়োজন যে, এর ফলে তাদের একটি সমাজ গঠিত হতে পারে এবং তারা আল্লাহর পথে পরস্পরের সাথে সহযোগিতা করতে পারে। আর কাফিরদের কাছে এর প্রকাশ হওয়া এজন্য প্রয়োজন যে, এর ফলে মানুষদেরকে আসল ইলাহ্ রাববুল আলামীনের দিকে বার বার ফিরে আসতে দেখে তাদের হৃদয়ের অভ্যন্তরে ঘুমিয়ে থাকা প্রকৃতি জেগে উঠবে এবং আল্লাহর অনুগতদের কর্মতৎপরতা দেখে তাদের মধ্যে ভীতি সৃষ্টি হতে থাকবে। এ দু’টি উদ্দেশ্যের জন্যও সালাত কায়েম করাই সবচেয়ে বেশি উপযোগী মাধ্যম। জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূল ﷺ বলেছেন, মুসলিম ও কাফিরের মধ্যে পার্থক্যের মাপকাঠি হলো নামায। অর্থাৎ নামায ত্যাগ করলে তার কুফরীতে লিপ্ত হওয়ার আর বিলম্ব থাকে না। নামায হলো তার ঈমানের জন্য প্রাচীর স্বরূপ। (সহীহ মুসলিম, হা/২৫৬)

আল্লাহর দিকে ফিরা এবং তাঁর গযবের ভয় করা- এ দু’টিই অন্তরের কাজ। অন্তরে এ অবস্থাটির দৃঢ়তা প্রতিষ্ঠার জন্য এমন কোন দৈহিক কর্মের প্রয়োজন, যার মাধ্যমে বাইরেও প্রত্যেক ব্যক্তি জানবে যে, অমুক ব্যক্তি প্রকৃতপক্ষে এক আল্লাহর দিকে ফিরে এসেছে। তাই আল্লাহ তা‘আলা এই মানসিক পরিবর্তনের হুকুম দেয়ার পর পরই এ দৈহিক কর্ম অর্থাৎ সালাত কায়েম করার হুকুম দিয়েছেন। মানুষের মনে যতক্ষণ পর্যন্ত কোন চিন্তা নিছক চিন্তার পর্যায়েই থাকে, ততক্ষণ পর্যন্ত তার মধ্যে দৃঢ়তা ও স্থায়িত্ব সৃষ্টি হয় না। এ চিন্তায় ভাটা পড়ে এবং পরিবর্তন আসারও সম্ভাবনা থাকে। তাই সে অনুযায়ী যতই সে কাজ করতে থাকে, ততই তার চিন্তা শিকড় গেড়ে বসে। এ দৃষ্টিতে বিচার করলে আল্লাহর অভিমুখী হওয়া এবং আল্লাহভীতিকে শক্তিশালী করার জন্য প্রতিদিন নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করার চেয়ে বেশি কার্যকর আর কোন কাজ নেই। সালাত এমন একটি কাজ, যা নিয়মিতভাবে কয়েক ঘণ্টা পর পর ফিরে আসে, যাতে মানুষ আল্লাহকে ভুলে না যায়। এজন্য বার বার মানুষকে সালাতের পুনরাবৃত্তি করতে হয়।

সালাত ও ঈমানের সম্পর্ক একেবারে কাছাকাছি :

فَلَا صَدَّقَ وَلَا صَلّٰى - وَلٰكِنْ كَذَّبَ وَتَوَلّٰى

অতঃপর সে (জাহান্নামী) লোকটি বিশ্বাস করেনি এবং সালাতও আদায় করেনি; বরং সে অস্বীকার করেছে এবং মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। (সূরা ক্বিয়ামাহ- ৩১, ৩২)

ব্যাখ্যা : মহান আল্লাহর এ বাণীর মধ্যে ‘‘সে বিশ্বাস করেনি এবং সালাতও আদায় করেনি’’ কথাটি বিশেষভাবে লক্ষণীয়। এ থেকে স্পষ্টভাবে জানা যাচ্ছে যে, কোন ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান আনার পর তার প্রাথমিক জরুরি কাজ হলো- সালাত আদায় করা। ইসলামের অন্যান্য ফরয কাজ যেমন- যাকাত, হজ্জ ও রোযা ইত্যাদি বছরে একবার পালন করতে হয়; কিন্তু সালাত প্রতিদিন পাঁচ বার আদায় করতে হয়। ঈমান আনার পর কিছু সময় যেতে না যেতেই সালাতের সময় এসে যায়। তখনই যাচাই হয়ে যায়- ব্যক্তির ঈমান আনাটা সত্য কি না? যদি সে সালাত আদায় করে, তাহলে বুঝা যাবে সত্যিই সে ঈমান এনেছে। আর যদি সালাত আদায় না করে, তাহলে প্রমাণিত হবে সে কেবল মুখে কালিমা পড়েছে, মনে-প্রাণে পড়েনি এবং পূর্ণরূপে ইসলামে প্রবেশ করেনি। সুতরাং মুমিনকে অবশ্যই সালাত আদায়কারী হতে হবে।

আল্লাহ সালাত আদায়কারীদের সঙ্গে থাকেন :

وَقَالَ اللهُ اِنِّيْ مَعَكُمْؕ لَئِنْ اَقَمْتُمُ الصَّلَاةَ وَاٰتَيْتُمُ الزَّكَاةَ وَاٰمَنْتُمْ بِرُسُلِيْ وَعَزَّرْتُمُوْهُمْ وَاَقْرَضْتُمُ اللهَ قَرْضًا حَسَنًا

আল্লাহ বলেছিলেন, আমি তোমাদের সাথেই আছি, যদি তোমরা সালাত কায়েম কর, যাকাত দাও, আমার রাসূলদের প্রতি ঈমান আন ও তাদেরকে সম্মান কর এবং আল্লাহকে উত্তম ঋণ প্রদান কর। (সূরা মায়েদা- ১২)

সালাতের প্রতি যত্নবান হওয়ার নির্দেশ :

حَافِظُوْا عَلَى الصَّلَوَاتِ وَالصَّلَاةِ الْوُسْطٰى وَقُوْمُوْا لِلّٰهِ قَانِتِيْنَ

তোমরা সালাতের প্রতি যত্নবান হও, বিশেষ করে মধ্যবর্তী সালাতের প্রতি এবং আল্লাহর সামনে বিনীতভাবে দন্ডায়মান হও। (সূরা বাক্বারা- ২৩৮)

ব্যাখ্যা : وُسْطٰى (উসতা) এর অর্থ মধ্যবর্তী জিনিস। আবার এ শব্দটি এমন জিনিস সম্পর্কেও ব্যবহৃত হয়, যা উন্নত ও উৎকৃষ্ট। صَلَاةُ الْوُسْطٰى (সালাতুল উসতা) এর অর্থ মধ্যবর্তী সালাত তথা আসরের সালাত হতে পারে আবার এমন সালাতও হতে পারে, যা সঠিক সময়ে পূর্ণ একাগ্রতার সাথে আল্লাহর প্রতি গভীর মনোযোগ সহকারে আদায় করা হয় এবং যার মধ্যে সালাতের যাবতীয় গুণের সমাবেশ ঘটে।

নিয়মিত সালাত আদায়ের তাকিদ :

وَالَّذِيْنَ هُمْ عَلٰى صَلَاتِهِمْ دَآئِمُوْنَ

যারা তাদের সালাতে সদা নিয়মানুবর্তিতা অবলম্বনকারী। (সূরা মা‘আরিজ- ২৩ )

وَالَّذِيْنَ هُمْ عَلٰى صَلَاتِهِمْ يُحَافِظُوْنَ

যারা নিজেদের সালাতে যত্নবান। (সূরা মা‘আরিজ- ৩৪)

পরিবারের সবাইকে সালাতে অভ্যস্ত করা পরিবার প্রধানের দায়িত্ব :

وَاْمُرْ اَهْلَكَ بِالصَّلَاةِ وَاصْطَبِرْ عَلَيْهَاؕ لَا نَسْاَلُكَ رِزْقًاؕ نَحْنُ نَرْزُقُكَؕ وَالْعَاقِبَةُ لِلتَّقْوٰى

তোমার পরিবারবর্গকে সালাতের আদেশ দাও এবং তার উপর অবিচল থাকো। আমি তোমার নিকট কোন রিযিক চাই না; বরং আমিই তোমাকে রিযিক দেই এবং শুভ পরিণাম তো মুত্তাক্বীদের জন্যই। (সূরা ত্বা-হা- ১৩২)

ব্যাখ্যা : সন্তানদেরকে সালাত আদায় করার আদেশ দিতে হবে। এ বিষয়টি তাদের দৃষ্টিভঙ্গীতে পরিবর্তন ঘটাবে এবং তাদের মূল্যবোধ বদলে দেবে। তাদের আগ্রহ ও আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু পরিবর্তন করে দেবে। তারা পবিত্র ও পরিচ্ছন্ন রিযিকের উপর ধৈর্যধারণ করবে এবং তাতে সন্তুষ্ট হবে। ঈমান ও তাক্বওয়ার মাধ্যমে যে কল্যাণ অর্জিত হয় তাকে তারা এমন ভোগের উপর অগ্রাধিকার দিতে থাকবে, যা ফাসিকী, দুশ্চরিত্রতা ও পার্থিব লোভ-লালসা থেকে অর্জিত হয়। আল্লাহ নিজের কোন লাভের জন্য আমাদেরকে সালাত আদায় করতে বলছেন না। বরং এতে আমাদের নিজেদেরই লাভ। আর তা হচ্ছে, এর ফলে আমাদের মধ্যে তাক্বওয়া সৃষ্টি হবে। আর এটিই দুনিয়া ও আখিরাতে স্থায়ী ও শেষ সাফল্যের মাধ্যম। উক্ত আয়াতের মাধ্যমে পরিবার প্রধানকে পরিবারের সবাইকে সালাতে অভ্যস্ত করার জন্য দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এ দায়িত্ব পালন না করলে পরিবারের দায়িত্বশীলরা অবশ্যই গোনাহগার হবেন। মুক্তির জন্য কেবল নিজের আমলই যথেষ্ট নয়। তাই এ ব্যাপারে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।

সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে সমাজের সর্বস্তরে সালাত কায়েমের ব্যবস্থা করা :

اَلَّذِيْنَ اِنْ مَّكَّنَّاهُمْ فِى الْاَرْضِ اَقَامُوا الصَّلَاةَ وَاٰتَوُا الزَّكَاةَ وَاَمَرُوْا بِالْمَعْرُوْفِ وَنَهَوْا عَنِ الْمُنْكَرِؕ وَلِلّٰهِ عَاقِبَةُ الْاُمُوْرِ

আমি এদেরকে (মুমিনদেরকে) পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠা দান করি, যাতে করে তারা সালাত কায়েম করে, যাকাত দেয় এবং সৎকাজের নির্দেশ দেয় ও অসৎকাজ থেকে নিষেধ করে। আর সকল কর্মের পরিণাম তো আল্লাহর ইচ্ছাধীন। (সূরা হজ্জ- ৪১)

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন