hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

তাফসীরুল কুরআন বিল কুরআন

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

৮০
অধ্যায়- ৪ : সালাতের বিধিবিধান
পবিত্রতা অর্জন করতে হবে :

لَمَسْجِدٌ اُسِّسَ عَلَى التَّقْوٰى مِنْ اَوَّلِ يَوْمٍ اَحَقُّ اَنْ تَقُوْمَ فِيْهِ ؕ فِيهِ رِجَالٌ يُّحِبُّوْنَ اَنْ يَّتَطَهَّرُوْاؕ وَاللهُ يُحِبُّ الْمُطَّهِّرِيْنَ

যে মসজিদের ভিত্তি প্রথম দিন হতেই তাক্বওয়ার উপর স্থাপিত হয়েছে, সেটাই তোমার সালাতের জন্য অধিক উপযুক্ত। তথায় এমন লোক আছে, যারা পবিত্রতা অর্জন করতে ভালোবাসে; আর আল্লাহ পবিত্রতা অর্জনকারীদেরকে পছন্দ করেন। (সূরা তাওবা- ১০৮)

সালাতের পূর্বে ওযু করতে হবে :

يَاۤ اَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْاۤ اِذَا قُمْتُمْ اِلَى الصَّلَاةِ فَاغْسِلُوْا وُجُوْهَكُمْ وَاَيْدِيَكُمْ اِلَى الْمَرَافِقِ وَامْسَحُوْا بِرُءُوْسِكُمْ وَاَرْجُلَكُمْ اِلَى الْكَعْبَيْنِ

হে মুমিনগণ! যখন তোমরা সালাতের জন্য প্রস্তুত হবে তখন তোমরা তোমাদের মুখমন্ডল ও হস্তদ্বয় কনুইসহ ধুয়ে নেবে। তারপর তোমাদের মাথা মাসাহ করবে এবং পা টাখনু পর্যন্ত ধুয়ে নেবে। (সূরা মায়েদা- ৬)

শরীর নাপাক থাকলে গোসল করতে হবে :

وَاِنْ كُنْتُمْ جُنُبًا فَاطَّهَّرُوْا

যদি তোমরা অপবিত্র থাক, তবে বিশেষভাবে পবিত্র হবে (গোসল করবে)। (সূরা মায়েদা- ৬)

يَاۤ اَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا لَا تَقْرَبُوا الصَّلَاةَ وَاَنْتُمْ سُكَارٰى حَتّٰى تَعْلَمُوْا مَا تَقُوْلُوْنَ وَلَا جُنُبًا اِلَّا عَابِرِيْ سَبِيْلٍ حَتّٰى تَغْتَسِلُوْا

হে মুমিনগণ! তোমরা নেশাগ্রস্ত অবস্থায় সালাতের নিকটবর্তী হয়ো না, যতক্ষণ না তোমরা যা বল তা বুঝতে পার এবং অপবিত্র অবস্থাতেও সালাতের নিকটবর্তী হয়ো না, যতক্ষণ পর্যন্ত না তোমরা গোসল করে নেবে; তবে পথচারী (সফরকালীন) অবস্থা ব্যতীত। (সূরা নিসা- ৪৩)

ব্যাখ্যা : جُنُبٌ (জুনুব) এর অর্থ হচ্ছে, দূর হয়ে যাওয়া, দূরত্ব ও সম্পর্কহীনতা। এ থেকে ‘আজনবী’ (অপরিচিত) শব্দটি বের হয়েছে। আর শরীয়াতের পরিভাষায় জুনুব বা জানাবাত অর্থ হচ্ছে, যৌন চাহিদা পূর্ণ করার এবং স্বপ্নের মধ্যে বীর্যপাত হওয়ার ফলে নাপাকী সৃষ্টি হওয়া। আর এর ফলে মানুষ পবিত্রতা থেকে দূরে তথা অপবিত্র হয়ে পড়ে।

পানি ব্যবহারে অক্ষম হলে তায়াম্মুম করতে হবে :

وَاِنْ كُنْتُمْ مَّرْضٰۤى اَوْ عَلٰى سَفَرٍ اَوْ جَآءَ اَحَدٌ مِّنْكُمْ مِّنَ الْغَآئِطِ اَوْ لَامَسْتُمُ النِّسَآءَ فَلَمْ تَجِدُوْا مَآءً فَتَيَمَّمُوْا صَعِيْدًا طَيِّبًا فَامْسَحُوْا بِوُجُوْهِكُمْ وَاَيْدِيْكُمْؕ اِنَّ اللهَ كَانَ عَفُوًّا غَفُوْرًا

যদি তোমরা অসুস্থ হয়ে যাও অথবা সফরে থাক অথবা তোমাদের কেউ শৌচগার হতে আসো অথবা তোমরা নারী-সম্ভোগ কর এবং পানি না পাও, তবে পবিত্র মাটির দ্বারা তায়াম্মুম করে নাও এবং মুখমন্ডল ও হাত মাসাহ করো, নিশ্চয় আল্লাহ পাপ মোচনকারী এবং ক্ষমাশীল। (সূরা নিসা- ৪৩)

وَاِنْ كُنْتُمْ مَّرْضٰۤى اَوْ عَلٰى سَفَرٍ اَوْ جَآءَ اَحَدٌ مِّنْكُمْ مِّنَ الْغَآئِطِ اَوْ لَامَسْتُمُ النِّسَآءَ فَلَمْ تَجِدُوْا مَآءً فَتَيَمَّمُوْا صَعِيْدًا طَيِّبًا فَامْسَحُوْا بِوُجُوْهِكُمْ وَاَيْدِيْكُمْ مِّنْهُؕ مَا يُرِيْدُ اللهُ لِيَجْعَلَ عَلَيْكُمْ مِّنْ حَرَجٍ وَّلٰكِنْ يُّرِيْدُ لِيُطَهِّرَكُمْ وَلِيُتِمَّ نِعْمَتَهٗ عَلَيْكُمْ لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُوْنَ

যদি তোমরা অসুস্থ হয়ে যাও অথবা সফরে থাক অথবা তোমাদের কেউ শৌচগার হতে আসো অথবা তোমরা স্ত্রীর সাথে মিলিত হও এবং পানি না পাও, তবে পবিত্র মাটি দ্বারা তায়াম্মুম করে নাও এবং তা দ্বারা তোমাদের মুখমন্ডল ও হস্তদ্বয় মাসাহ করে নাও। আল্লাহ তোমাদেরকে কষ্ট দিতে চান না; বরং তিনি তোমাদেরকে পবিত্র করতে চান ও তোমাদের প্রতি তাঁর অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করতে চান; যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন কর। (সূরা মায়েদা- ৬)

ব্যাখ্যা : এ নির্দেশটির বিস্তারিত অবস্থা হচ্ছে, যদি কোন ব্যক্তি অযুবিহীন অবস্থায় থাকে অথবা তার গোসলের প্রয়োজন হয় আর এ অবস্থায় সে পানি না পায়, তাহলে সে তায়াম্মুম করে সালাত আদায় করতে পারবে। যদি সে অসুস্থ হয় এবং গোসল বা অযু করলে তার জন্য ক্ষতির আশঙ্কা থাকে, তাহলে পানি থাকা সত্ত্বেও সে তায়াম্মুমের অনুমতির সুযোগ গ্রহণ করতে পারে। তায়াম্মুম অর্থ হচ্ছে, ইচ্ছা বা সংকল্প করা। অর্থাৎ যদি পানি না পাওয়া যায় অথবা পাওয়া গেলেও তা ব্যবহার করা সম্ভব না হয়, তাহলে পবিত্র মাটি ব্যবহার করার সংকল্প করা।

আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি আসমা (রাঃ) থেকে একটি গলার হার ধার নিয়েছিলেন। অতঃপর তা হারিয়ে গেল। তখন রাসূলুল্লাহ ﷺ তাঁর সাহাবাদের মধ্যে কিছু লোককে খোঁজতে পাঠালেন। এমতাবস্থায় তাদের সালাতের সময় হয়ে গেল। তখন তারা ওযূ ছাড়াই সালাত আদায় করলেন। এরপর তারা রাসূলুল্লাহ ﷺ এর কাছে এসে এ ঘটনা জানালেন। তখন তায়াম্মুমের আয়াত নাযিল হয়। এ সময় উসাইদ ইবনে হুযাইর (রাঃ) বললেন, আল্লাহ তা‘আলা আপনাকে (আয়েশা) উত্তম প্রতিদান দান করুন। আল্লাহর কসম! আপনার উপর যখনই কোন সমস্যা এসেছে তখনই আল্লাহ তা‘আলা এর সমাধানের পথ বের করে দিয়েছেন এবং মুসলিমদের জন্য তাতে বরকত রেখেছেন। (সহীহ মুসলিম, হা/৭০৩)

সালাতের সময় উত্তম পোশাক পরিধান করার নির্দেশ :

يَا بَنِيْۤ اٰدَمَ خُذُوْا زِيْنَتَكُمْ عِنْدَ كُلِّ مَسْجِدٍ وَّكُلُوْا وَاشْرَبُوْا وَلَا تُسْرِفُوْاۚ اِنَّهٗ لَا يُحِبُّ الْمُسْرِفِيْنَ

হে বনী আদম! তোমরা প্রত্যেক সালাতের সময় সুন্দর পোশাক পরিধান করো; আর তোমরা আহার করো এবং পান করো, তবে অপচয় করো না। নিশ্চয় তিনি অপচয়কারীকে পছন্দ করেন না। (সূরা আ‘রাফ- ৩১)

ব্যাখ্যা : আল্লাহর ইবাদাত করার জন্য দাঁড়ানোর সময় কেবল লজ্জাস্থান ঢাকাই যথেষ্ট হবে না বরং সামর্থ্য অনুযায়ী নিজের পূর্ণ পোশাক পরে নিতে হবে, যার মাধ্যমে লজ্জাস্থান আবৃত হওয়ার সাথে সাথে সৌন্দর্যের প্রকাশও ঘটবে এবং তাকে অন্তত এতটুকু উন্নত মানে পৌঁছতে হবে, যার ফলে তার পোশাক তাক্বওয়ার পোশাকে পরিণত হয়। অর্থাৎ তার পোশাক দিয়ে সে লজ্জাস্থান ঢেকে ফেলবে। সাজসজ্জার মাধ্যমে শরীরের শোভা বর্ধন করার ক্ষেত্রে সীমা অতিক্রম করবে না; আবার ব্যক্তির মর্যাদার চেয়ে নিম্নমানেরও হবে না। তার মধ্যে গর্ব ও অহংকারের কোন প্রদর্শনী থাকবে না; আবার এমন কোন মানসিক রোগের প্রতিফলনও থাকবে না, যার আক্রমণের ফলে পুরুষ নারীসুলভ আচরণ করতে থাকে এবং নারী পুরুষসুলভ আচরণ করতে থাকে। যেসকল লোক নিজেদেরকে পুরোপুরি আল্লাহর পথনির্দেশনার আওতাধীন করে দেয়নি, তাদের পক্ষে পোশাকের ব্যাপারে এ কাঙ্ক্ষিত মানে উপনীত হওয়া সম্ভব হয় না।

নির্ধারিত সময়ে সালাত আদায় করতে হবে :

فَاِذَا اطْمَاْنَنْتُمْ فَاَقِيْمُوا الصَّلَاةَؕ اِنَّ الصَّلَاةَ كَانَتْ عَلَى الْمُؤْمِنِيْنَ كِتَابًا مَّوْقُوْتًا

যখন তোমরা পুরোপুরিভাবে স্বস্তিবোধ করবে, তখনই সালাত আদায় করে নেবে। নিশ্চয় সালাত মুমিনদের উপর সুনির্দিষ্ট সময়ের সাথেই ফরয করা হয়েছে। (সূরা নিসা- ১০৩)

কা‘বার দিকে মুখ করে সালাত আদায় করতে হবে :

وَمِنْ حَيْثُ خَرَجْتَ فَوَلِّ وَجْهَكَ شَطْرَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِؕ وَاِنَّهٗ لَلْحَقُّ مِنْ رَّبِّكَؕ وَمَا اللهُ بِغَافِلٍ عَمَّا تَعْمَلُوْنَ

তুমি যেখান থেকেই বের হও না কেন, তোমার মুখ মসজিদে হারামের দিকে ফিরিয়ে নাও। নিশ্চয় এটাই তোমার প্রতিপালকের নিকট হতে সত্য, আর তোমরা যা করছ সে বিষয়ে আল্লাহ অমনোযোগী নন। (সূরা বাক্বারা- ১৪৯)

বিনয়ের সাথে আল্লাহর সামনে দাঁড়াতে হবে :

حَافِظُوْا عَلَى الصَّلَوَاتِ وَالصَّلَاةِ الْوُسْطٰى وَقُوْمُوْا لِلّٰهِ قَانِتِيْنَ

তোমরা সালাতসমূহের প্রতি যত্নবান হও, বিশেষ করে (যত্নবান হও) মধ্যবর্তী সালাতের প্রতি। আর তোমরা আল্লাহর সামনে বিনীতভাবে দন্ডায়মান হও। (সূরা বাক্বারা- ২৩৮)

ব্যাখ্যা : আবু আমর শায়বানী (রহ.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, যায়েদ ইবনে আরক্বাম (রাঃ) আমাকে বলেছেন, নবী ﷺ এর যুগে আমরা সালাতের মধ্যে কথা বলাবলি করতাম। এমনকি আমাদের যে কেউ অপরের সাথে তার প্রয়োজন সম্পর্কেও কথাবার্তা বলতো। অবশেষে যখন এ আয়াত অবতীর্ণ হলো, ‘‘তোমরা তোমাদের সালাতসমূহের হেফাজত করো’’ তখন আমরা নীরবে সালাত আদায় করতে আদেশপ্রাপ্ত হলাম। (সহীহ বুখারী, হা/১২০০, সহীহ মুসলিম হা/১০৯০)

قَدْ اَفْلَحَ الْمُؤْمِنُوْنَ اَ لَّذِيْنَ هُمْ فِيْ صَلَاتِهِمْ خَاشِعُوْنَ

অবশ্যই সফলকাম হয়েছে মুমিনগণ, যারা নিজেদের সালাতে বিনয়-নম্রতা অবলম্বন করে। (সূরা মু’মিনূন- ১, ২)

ব্যাখ্যা : خُشُوْعٌ (খুশূ) এর আসল অর্থ হচ্ছে, কারো সামনে ঝুঁকে পড়া, বিনয় ও নম্রতা প্রকাশ করা। এ অবস্থাটা মনের সাথে এবং দেহের বাহ্যিক অবস্থার সাথেও সম্পর্ক রাখে। মনের খূশূ হচ্ছে, মানুষ কারো ভীতি, শ্রেষ্ঠত্ব, প্রতাপ ও পরাক্রমের দরুন সন্ত্রস্ত থাকবে। আর দেহের খূশূ হচ্ছে, যখন সে তাঁর সামনে যাবে তখন মাথা নত হয়ে যাবে, দৃষ্টি নত হবে, কণ্ঠস্বর নিম্নগামী হবে এবং কোন জবরদস্ত প্রতাপশালী ব্যক্তির সামনে উপস্থিত হলে মানুষের মধ্যে যে স্বাভাবিক ভীতির সঞ্চার হয় তার চিহ্ন তার মধ্যে ফুটে উঠবে। এটাই সালাতের আসল প্রাণ।

আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে সালাত শুরু করতে হবে :

قَدْ اَفْلَحَ مَنْ تَزَكّٰى - وَذَكَرَ اسْمَ رَبِّهٖ فَصَلّٰى

নিশ্চয় সে সাফল্য লাভ করে, যে পবিত্রতা অবলম্বন করে এবং তাঁর প্রতিপালকের নাম স্মরণ করে ও সালাত কায়েম করে। (সূরা আ‘লা- ১৪, ১৫)

সালাতের মধ্যে কুরআন তিলাওয়াত করা অপরিহার্য :

اَقِمِ الصَّلَاةَ لِدُلُوْكِ الشَّمْسِ اِلٰى غَسَقِ اللَّيْلِ وَقُرْاٰنَ الْفَجْرِ ؕ اِنَّ قُرْاٰنَ الْفَجْرِ كَانَ مَشْهُوْدًا

সূর্য হেলে পড়ার পর হতে রাত্রির ঘন অন্ধকার হওয়া পর্যন্ত সালাত কায়েম করো এবং ফজরের (সালাতে) কুরআন পাঠ করো; নিশ্চয় ফজরের (সালাতের) কুরআন পাঠের সময় (ফেরেশতাগণ) উপস্থিত হয়। (সূরা বনী ইসরাঈল- ৭৮)

ব্যাখ্যা : এখানে ফজরের কুরআন পাঠ দ্বারা ফজরের সালাত বুঝানো হয়েছে। ফজরের কুরআন পরিলক্ষিত হওয়ার অর্থ হচ্ছে, আল্লাহর ফেরেশতারা এর সাক্ষী হয়। যদিও ফেরেশতারা প্রত্যেক সালাত ও প্রত্যেক সৎকাজের সাক্ষী, তবুও যখন ফজরের সালাতের কুরআন পাঠে তাদের সাক্ষ্যের কথা বলা হয়েছে তখন এ থেকে স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে যে, এ কাজটি বিশেষ গুরুত্বের অধিকারী। এ কারণেই নবী ﷺ ফজরের সালাতে দীর্ঘ সূরা পড়ার পদ্ধতি অবলম্বন করেন।

স্বাভাবিক আওয়াজে কুরআন পড়তে হবে :

وَلَا تَجْهَرْ بِصَلَاتِكَ وَلَا تُخَافِتْ بِهَا وَابْتَغِ بَيْنَ ذٰلِكَ سَبِيْلًا

(হে নবী) সালাতে তোমার স্বর উচ্চ করো না এবং অতিশয় ক্ষীণও করো না; বরং এ দু’য়ের মধ্যবর্তী পন্থা অবলম্বন করো। (সূরা বনী ইসরাঈল- ১১০)

ব্যাখ্যা : আবদুল্লাহ ইবনে আববাস (রাঃ) বলেন, মক্কায় যখন নবী ﷺ অথবা সাহাবীগণ সালাত আদায় করার সময় উচ্চকণ্ঠে কুরআন পাঠ করতেন, তখন কাফিররা শোরগোল শুরু করে দিত; অনেক সময় এক নাগাড়ে গালাগাল করতে থাকত। এজন্য আল্লাহর পক্ষ হতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে যে, তোমরা কুরআনকে এমন উচ্চৈঃস্বরে পাঠ করো না, যাতে কাফিররা শুনে হৈচৈ করতে পারে। আবার এমন নীচু স্বরেও পাঠ করো না, যাতে তোমাদের নিজেদের সাথিরা শুনতে না পায়। কেবলমাত্র সংশ্লিষ্ট অবস্থার সাথে এ হুকুম সম্পৃক্ত ছিল। এরপর নবী ﷺ যখন মদিনায় হিজরত করলেন এবং মক্কার পরিস্থিতি থেকে মুক্ত হয়ে একটি অনুকূল পরিবেশ পেলেন, তখন আর এ হুকুম কার্যকর থাকেনি। তবে হ্যাঁ, পরবর্তীতে মুসলিমরা যখনই মক্কার মতো অবস্থার সম্মুখীন হবে, তখনই তাদেরকে এ নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করা উচিত।

সালাতে যা পড়া হয় তা বুঝার চেষ্টা করতে হবে :

يَاۤ اَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا لَا تَقْرَبُوا الصَّلَاةَ وَاَنْتُمْ سُكَارٰى حَتّٰى تَعْلَمُوْا مَا تَقُوْلُوْنَ

হে মুমিনগণ! তোমরা নেশাগ্রস্ত অবস্থায় সালাতের নিকটবর্তী হয়ো না, যতক্ষণ না তোমরা যা বল তা বুঝতে পার। (সূরা নিসা- ৪৩)

জামা‘আতের সাথে সালাত আদায় করতে হবে :

وَاَقِيْمُوا الصَّلَاةَ وَاٰتُوا الزَّكَاةَ وَارْكَعُوْا مَعَ الرَّاكِعِيْنَ

তোমরা সালাত প্রতিষ্ঠা করো, যাকাত প্রদান করো এবং রুকূকারীদের সাথে রুকূ করো। (সূরা বাক্বারা- ৪৩)

মসজিদে গিয়ে সালাত আদায় করা ঈমানের পরিচয় :

اِنَّمَا يَعْمُرُ مَسَاجِدَ اللهِ مَنْ اٰمَنَ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الْاٰخِرِ وَاَقَامَ الصَّلَاةَ وَاٰتَى الزَّكَاةَ وَلَمْ يَخْشَ اِلَّا اللهَ ؕ فَعَسٰۤى اُولٰٓئِكَ اَنْ يَّكُوْنُوْا مِنَ الْمُهْتَدِيْنَ

তারাই তো আল্লাহর মসজিদ আবাদ করবে, যারা আল্লাহ ও আখিরাতের প্রতি ঈমান আনয়ন করে, সালাত কায়েম করে, যাকাত দেয় এবং আল্লাহ ব্যতীত অন্য কাউকে ভয় করে না। অতএব আশা করা যায় যে, তারা সৎপথপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে। (সূরা তাওবা- ১৮)

কেবলমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যেই সালাত আদায় করতে হবে :

قُلْ اِنَّ صَلَاتِيْ وَنُسُكِيْ وَمَحْيَايَ وَمَمَاتِيْ لِلّٰهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ - لَا شَرِيْكَ لَهۚٗ وَبِذٰلِكَ اُمِرْتُ وَاَنَاْ اَوَّلُ الْمُسْلِمِيْنَ

বলো, আমার সালাত, আমার ইবাদাত, আমার জীবন ও আমার মরণ জগতসমূহের প্রতিপালক আল্লাহরই উদ্দেশ্যে। তাঁর কোন শরীক নেই এবং আমি এজন্যই আদিষ্ট হয়েছি; আর আমিই প্রথম মুসলিম। (সূরা আন‘আম- ১৬২, ১৬৩)

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন