hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

তাফসীরুল কুরআন বিল কুরআন

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

২৭৯
অধ্যায়- ৩ : ফাসাদ বা বিপর্যয় সৃষ্টি করা
فَسَادٌ (ফাসাদ) তথা বিপর্যয় হচ্ছে, জীবনব্যবস্থার এমন একটি বিকৃতি, যা সত্য বিচ্যুত হওয়ার ফলে অনিবার্যভাবে দেখা দেয়। আল্লাহর আইন-কানুনের আনুগত্যের সীমানা অতিক্রম করে মানুষ যা কিছু করে তার প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সবই বিপর্যয়ে পরিণত হয়। এর একটি অংশ হচ্ছে এমন ধরনের বিপর্যয়, যা হারাম পথে সম্পদ আহরণ এবং হারাম পথে তা ব্যয় করার ফলে সৃষ্টি হয়।

অধিকাংশ ক্ষেত্রে রাজা-বাদশারাই ফাসাদ ঘটায় :

اِنَّ الْمُلُوْكَ اِذَا دَخَلُوْا قَرْيَةً اَفْسَدُوْهَا وَجَعَلُوْاۤ اَعِزَّةَ اَهْلِهَاۤ اَذِلَّةً

নিশ্চয় রাজা-বাদশারা যখন কোন জনপদে প্রবেশ করে, তখন তাকে বিপর্যস্ত করে দেয় এবং সেখানের মর্যাদাবান ব্যক্তিদেরকে অপদস্থ করে। (সূরা নামল- ৩৪)

فَهَلْ عَسَيْتُمْ اِنْ تَوَلَّيْتُمْ اَنْ تُفْسِدُوْا فِى الْاَرْضِ وَتُقَطِّعُوْاۤ اَرْحَامَكُمْ

এখন তোমাদের কাছ থেকে এছাড়া আর কী আশা করা যায় যে, যদি তোমরা জনগণের শাসক হও তাহলে দুনিয়াতে ফাসাদ সৃষ্টি করবে, মারামারি করবে এবং আত্মীয়তার সম্পর্ক বিনষ্ট করবে? (সূরা মুহাম্মাদ- ২২)

ব্যাখ্যা : মানুষ যখন আল্লাহর আনুগত্য না করে নিজের বা অন্য কারো আনুগত্য করে এবং আল্লাহর পথনির্দেশনা গ্রহণ না করে নিজের সমাজ, সংস্কৃতি ও নৈতিকতাকে এমনসব মূলনীতি ও আইনের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত করে, যা আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্য কারো পথনির্দেশনা থেকে গৃহীত, তখন নানা বিপর্যয় দেখা দেয়। এসব বিপর্যয়ের পথ রোধ করাই কুরআনের উদ্দেশ্য। কুরআন এ সত্যটি সম্পর্কেও সজাগ করতে চায় যে, বিপর্যয় পৃথিবীর ব্যবস্থাপনার মৌলিক বিষয় নয়; বরং সুস্থতাই হচ্ছে এ ব্যবস্থাপনার মৌলিক বিষয়। মানব জীবনের সূচনা হয়েছে সুস্থ ও সুসভ্য ব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে। পরবর্তীকালে দুষ্কর্মশীল লোকেরা নিজেদের নির্বুদ্ধিতা ও দুষ্ট মনোবৃত্তির সাহায্যে এ সুস্থ ব্যবস্থাটিকে ক্রমান্বয়ে বিনষ্ট করেছে। এ বিপর্যয় নির্মূল করে জীবনব্যবস্থাকে আবার নতুন করে সংশোধিত ও সুস্থ করে তুলার জন্যই মহান আল্লাহ যুগে যুগে ধারাবাহিকভাবে নবী ও রাসূল পাঠিয়েছেন। তাঁরা প্রত্যেক যুগে মানুষকে এ একই দাওয়াত দিয়ে এসেছেন যে, যে সুস্থ ও সভ্য বিধানের ভিত্তিতে দুনিয়ার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছিল তার মধ্যে বিপর্যয় সৃষ্টি করা থেকে বিরত থাকো।

ফিরাউন ফাসাদ সৃষ্টি করেছিল :

اِنَّ فِرْعَوْنَ عَلَا فِى الْاَرْضِ وَجَعَلَ اَهْلَهَا شِيَعًا يَّسْتَضْعِفُ طَآئِفَةً مِّنْهُمْ يُذَبِّحُ اَبْنَآءَهُمْؕ وَيَسْتَحْيِيْ نِسَآءَهُمْ اِنَّهٗ كَانَ مِنَ الْمُفْسِدِيْنَ

ফিরাউন দেশে ক্ষমতা লাভ করেছিল এবং সেখানকার অধিবাসীদেরকে বিভিন্ন শ্রেণিতে বিভক্ত করে রেখেছিল। অতঃপর তাদের মধ্যে একটি শ্রেণিকে সে হীনবল করে রেখেছিল। সে তাদের পুত্রদেরকে হত্যা করত এবং নারীদেরকে জীবিত রাখত। নিশ্চয় সে ছিল বিপর্যয় সৃষ্টিকারীদের অন্তর্ভুক্ত। (সূরা ক্বাসাস- ৪)

সামূদ জাতির মধ্যে ফাসাদ সৃষ্টিকারী একটি দল বিদ্যমান ছিল :

وَكَانَ فِى الْمَدِيْنَةِ تِسْعَةُ رَهْطٍ يُّفْسِدُوْنَ فِى الْاَرْضِ وَلَا يُصْلِحُوْنَ

আর ঐ শহরে (সামূদ জাতির মধ্যে) ছিল এমন নয়জন ব্যক্তি, যারা দেশে বিপর্যয় সৃষ্টি করে বেড়াত এবং সৎকর্ম করত না। (সূরা নামল- ৪৮)

আল্লাহ ফাসাদ সৃষ্টি করতে নিষেধ করেছেন :

وَلَا تُفْسِدُوْا فِى الْاَرْضِ بَعْدَ اِصْلَاحِهَا

দুনিয়ায় শান্তি স্থাপনের পর তোমরা তাতে বিপর্যয় সৃষ্টি করো না। (সূরা আ‘রাফ- ৫৬)

নবীরা তাদের জাতিকে ফাসাদ সৃষ্টি করা থেকে নিষেধ করতেন :

وَيَا قَوْمِ اَوْفُوا الْمِكْيَالَ وَالْمِيْزَانَ بِالْقِسْطِ وَلَا تَبْخَسُوا النَّاسَ اَشْيَآءَهُمْ وَلَا تَعْثَوْا فِى الْاَرْضِ مُفْسِدِيْنَ

হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা ন্যায়সঙ্গতভাবে মাপ ও ওজন করো, লোকদেরকে তাদের প্রাপ্যবস্তু কম করে দিয়ো না এবং পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করো না। (সূরা হুদ- ৮৫)

মানুষের কুকর্মই ফাসাদ সৃষ্টির কারণ :

ظَهَرَ الْفَسَادُ فِى الْبَرِّ وَالْبَحْرِ بِمَا كَسَبَتْ اَيْدِى النَّاسِ لِيُذِيْقَهُمْ بَعْضَ الَّذِيْ عَمِلُوْا لَعَلَّهُمْ يَرْجِعُوْنَ

মানুষের কাজকর্মের ফলস্বরূপ স্থলভাগে ও জলভাগের সর্বত্রে অশান্তি ছড়িয়ে পড়েছে, যার ফলে আল্লাহ তাদেরকে তাদের কিছু কিছু কাজের শাস্তি ভোগ করাতে চান, যাতে তারা ফিরে আসে। (সূরা রূম- ৪১)

জিহাদ না করলে ফাসাদ বন্ধ হবে না :

وَالَّذِيْنَ كَفَرُوْا بَعْضُهُمْ اَوْلِيَآءُ بَعْضٍؕ اِلَّا تَفْعَلُوْهُ تَكُنْ فِتْنَةٌ فِى الْاَرْضِ وَفَسَادٌ كَبِيْرٌ

যারা কুফরী করেছে তারা একে অপরের বন্ধু; যদি তোমরা সেটা (তাদের সাথে জিহাদ) না কর, তবে দেশে ফিতনা ও মহাবিপর্যয় দেখা দেবে। (সূরা আনফাল- ৭৩)

وَلَوْلَا دَفْعُ اللهِ النَّاسَ بَعْضَهُمْ بِبَعْضٍ لَّفَسَدَتِ الْاَرْضُ

আর যদি আল্লাহ মানুষের মধ্য হতে একদলকে অন্য দল দ্বারা প্রতিহত না করতেন, তাহলে অবশ্যই পৃথিবী বিশৃঙ্খলাপূর্ণ হয়ে যেত। (সূরা বাক্বারা- ২৫১)

ব্যাখ্যা : পৃথিবীর ব্যবস্থাপনা অক্ষুণ্ণ রাখার জন্য সর্বশক্তিমান আল্লাহ যে পদ্ধতি নির্ধারণ করেছেন তা হচ্ছে, তিনি বিভিন্ন মানবগোষ্ঠী ও দলকে একটি নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব লাভের সুযোগ দিয়ে থাকেন। কিন্তু যখনই কোন দল সীমা ছাড়িয়ে যেতে থাকে, তখনই তিনি অন্য একটি দলের সাহায্যে তার শক্তির দাপট চূর্ণ করে দেন। কর্তৃত্ব ও ক্ষমতা যদি চিরন্তনভাবে একটি জাতি ও একটি দলের মধ্যে কেন্দ্রীভূত করে রাখা হতো এবং তার ক্ষমতার দাপট ও যুলুম-নির্যাতন সীমাহীন হতো, তাহলে নিঃসন্দেহে আল্লাহর এ রাজ্যে মহাবিপর্যয় নেমে আসত।

আল্লাহ ফাসাদকারীদেরকে ভালোবাসেন না :

وَلَا تَبْغِ الْفَسَادَ فِى الْاَرْضِ ؕ اِنَّ اللهَ لَا يُحِبُّ الْمُفْسِدِيْنَ

আর তোমরা পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করতে উৎসাহী হয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহ বিপর্যয় সৃষ্টিকারীদেরকে ভালোবাসেন না। (সূরা ক্বাসাস- ৭৭)

ফাসাদকারীরা শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হবে :

اِنَّ اللهَ لَا يُصْلِحُ عَمَلَ الْمُفْسِدِيْنَ

আল্লাহ অবশ্যই ফাসাদ সৃষ্টিকারীদের কাজকর্ম সংশোধন করে দেন না। (সূরা ইউনুস- ৮১)

ফাসাদকারী ও মুমিন ব্যক্তি সমান নয় :

اَمْ نَجْعَلُ الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ كَالْمُفْسِدِيْنَ فِى الْاَرْضِؗ اَمْ نَجْعَلُ الْمُتَّقِيْنَ كَالْفُجَّارِ

যারা ঈমান আনয়ন করেছে এবং সৎকাজ করেছে আমি কি তাদেরকে ঐসব লোকের সমান করে দেব, যারা পৃথিবীতে ফাসাদ সৃষ্টি করে বেড়ায়? অথবা আমি কি মুত্তাক্বীদেরকে গোনাহগারদের সমান করে দেব? (সূরা সোয়াদ- ২৮)

যারা ফাসাদ থেকে দূরে থাকে তারাই জান্নাতে যাবে :

تِلْكَ الدَّارُ الْاٰخِرَةُ نَجْعَلُهَا لِلَّذِيْنَ لَا يُرِيْدُوْنَ عُلُوًّا فِى الْاَرْضِ وَلَا فَسَادًاؕ وَالْعَاقِبَةُ لِلْمُتَّقِيْنَ

এটা (জান্নাত) আখিরাতের সে আবাস যা আমি নির্ধারিত করে রেখেছি তাদের জন্য, যারা এ পৃথিবীতে উদ্ধত হতে ও বিপর্যয় সৃষ্টি করতে চায় না। আর শুভ পরিণাম তো মুত্তাক্বীদের জন্যই। (সূরা ক্বাসাস- ৮৩)

ব্যাখ্যা : অর্থাৎ যারা আল্লাহর জমিনে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠার প্রত্যাশী নয়। যারা বিদ্রোহী, স্বৈরাচারী ও দাম্ভিক হয়ে নয়; বরং সাধারণ বান্দা হয়ে থাকে এবং আল্লাহর বান্দাদেরকে নিজেদের বান্দা করে রাখার চেষ্টা করে না।

ফাসাদকারীদের বিরুদ্ধে দু‘আ :

رَبِّ انْصُرْنِيْ عَلَى الْقَوْمِ الْمُفْسِدِيْنَ

হে আমার প্রতিপালক! আমাকে বিপর্যয় সৃষ্টিকারী সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সাহায্য করো। (সূরা আনকাবূত- ৩০)

ফাসাদকারীদের উপর লানত পতিত হবে :

وَالَّذِيْنَ يَنْقُضُوْنَ عَهْدَ اللهِ مِنْ ۢبَعْدِ مِيْثَاقِهٖ وَيَقْطَعُوْنَ مَاۤ اَمَرَ اللهُ بِهٖۤ اَنْ يُّوْصَلَ وَيُفْسِدُوْنَ فِى الْاَرْضِۚ اُولٰٓئِكَ لَهُمُ اللَّعْنَةُ وَلَهُمْ سُوْٓءُ الدَّارِ

যারা আল্লাহর সাথে দৃঢ় অঙ্গীকারে আবদ্ধ হওয়ার পর তা ভঙ্গ করে, আল্লাহ যে সম্পর্ক অক্ষুণ্ণ রাখতে আদেশ করেছেন তা ছিন্ন করে এবং পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টি করে বেড়ায়, তাদের জন্য লানত; আর তাদের জন্য রয়েছে নিকৃষ্টতম আবাসস্থল। (সূরা রা‘দ- ২৫)

তারা একের পর এক আযাব ভোগ করবে :

اَلَّذِيْنَ كَفَرُوْا وَصَدُّوْا عَنْ سَبِيْلِ اللهِ زِدْنَاهُمْ عَذَابًا فَوْقَ الْعَذَابِ بِمَا كَانُوْا يُفْسِدُوْنَ

আমি কাফিরদের উপর ও আল্লাহর পথে বাধাদানকারীদের উপর শাস্তির পর শাস্তি বৃদ্ধি করব; কারণ তারা ফাসাদ সৃষ্টি করে বেড়াত। (সূরা নাহল- ৮৮)

দুনিয়াতে ফাসাদকারীদের আইনগত শাস্তি :

اِنَّمَا جَزَآءُ الَّذِيْنَ يُحَارِبُوْنَ اللهَ وَرَسُوْلَهٗ وَيَسْعَوْنَ فِى الْاَرْضِ فَسَادًا اَنْ يُّقَتَّلُوْاۤ اَوْ يُصَلَّبُوْاۤ اَوْ تُقَطَّعَ اَيْدِيْهِمْ وَاَرْجُلُهُمْ مِّنْ خِلَافٍ اَوْ يُنْفَوْا مِنَ الْاَرْضِؕ ذٰلِكَ لَهُمْ خِزْيٌ فِى الدُّنْيَا وَلَهُمْ فِى الْاٰخِرَةِ عَذَابٌ عَظِيْمٌ

যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিপক্ষে লড়াই করে এবং পৃথিবীতে ফিতনা সৃষ্টি করে বেড়ায় তাদের শাস্তি হলো, তাদেরকে হত্যা করা হবে অথবা শূলে চড়ানো হবে অথবা তাদের হাত-পা বিপরীত দিক থেকে কেটে ফেলা হবে অথবা তাদেরকে দেশ থেকে বহিষ্কার করা হবে। এ হলো তাদের জন্য পৃথিবীতে অপমান; আর পরকালে তাদের জন্য রয়েছে ভয়াবহ শাস্তি। (সূরা মায়েদা- ৩৩)

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন