hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

তাফসীরুল কুরআন বিল কুরআন

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

৫৯
অধ্যায়- ৭ : ঈমানের পরীক্ষা
আল্লাহ মুমিনদেরকে পরীক্ষা করে থাকেন :

اَحَسِبَ النَّاسُ اَنْ يُّتْرَكُوْاۤ اَنْ يَّقُوْلُوْاۤ اٰمَنَّا وَهُمْ لَا يُفْتَنُوْنَ -وَلَقَدْ فَتَنَّا الَّذِيْنَ مِنْ قَبْلِهِمْ فَلَيَعْلَمَنَّ اللهُ الَّذِيْنَ صَدَقُوْا وَلَيَعْلَمَنَّ الْكَاذِبِيْنَ

মানুষ কি মনে করে যে, ‘আমরা ঈমান এনেছি’ এ কথা বললেই তাদেরকে পরীক্ষা না করে ছেড়ে দেয়া হবে? আমি তো তাদের পূর্ববর্তীদেরকেও পরীক্ষা করেছিলাম। আল্লাহ অবশ্যই প্রকাশ করে দেবেন যে, কারা সত্যবাদী এবং কারা মিথ্যাবাদী। (সূরা আনকাবূত- ২, ৩)

ব্যাখ্যা : মহান আল্লাহ মুমিনদেরকে বুঝাতে চান যে, ইহকালীন ও পরকালীন সাফল্য অর্জনের জন্য আমার যে সমস্ত প্রতিশ্রুতি রয়েছে কোন ব্যক্তি নিছক মৌখিক ঈমানের দাবীর মাধ্যমে এসবের অধিকারী হতে পারবে না। প্রত্যেক দাবীদারকে অনিবার্যভাবে পরীক্ষার বিভিন্ন ধাপ অতিক্রম করতেই হবে। এভাবে তাকে নিজের দাবীর সত্যতার প্রমাণ পেশ করতে হবে। আমার জান্নাত এত সস্তা নয় এবং দুনিয়াতেও আমার বিশেষ অনুগ্রহ এত অনায়াসলব্ধ নয় যে, তোমরা কেবল মুখে আমার প্রতি ঈমান আনার কথা উচ্চারণ করবে আর অমনিই আমি তোমাদেরকে সেসব দান করে দেব। এসব পেতে হলে বিভিন্ন ধরনের নির্যাতন-নিপীড়ন সহ্য করতে হবে, বিপদাপদ ও সংকটের মুকাবিলা করতে হবে। ভয় ও আশঙ্কা দিয়েও পরীক্ষা করা হবে। যেসব জিনিস পছন্দ কর, তা আমার সন্তুষ্টির জন্য উৎসর্গ করতে হবে। আমার জন্য প্রত্যেকটি কষ্ট সহ্য করতে হবে। তারপরেই তোমরা আমাকে মানার যে দাবী করেছিলে তার সত্যতা যাচাই হবে। এ আয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলা মুসলিমদের মনে এ সত্যটি গেঁথে দিয়েছেন যে, পরীক্ষাই হচ্ছে এমন একটি মানদন্ড যার মাধ্যমে ভেজাল ও নির্ভেজাল যাচাই করা যায়। ভেজাল নিজে নিজেই আল্লাহর পথ থেকে সরে যায়। অতঃপর নির্ভেজালকে বাছাই করে নিয়ে এমনসব পুরস্কার লাভের যোগ্য করা হয়, যেগুলো কেবল সত্য ঈমানদারদের জন্যই নির্ধারিত।

অতীতের মুমিনরাও পরীক্ষার সম্মুখীন হয়েছিলেন :

اَمْ حَسِبْتُمْ اَنْ تَدْخُلُوا الْجَنَّةَ وَلَمَّا يَاْتِكُمْ مَّثَلُ الَّذِيْنَ خَلَوْا مِنْ قَبْلِكُمْؕ مَسَّتْهُمُ الْبَاْسَآءُ وَالضَّرَّآءُ وَزُلْزِلُوْا حَتّٰى يَقُوْلَ الرَّسُوْلُ وَالَّذِيْنَ اٰمَنُوْا مَعَهٗ مَتٰى نَصْرُ اللهِؕ اَ لَاۤ اِنَّ نَصْرَ اللهِ قَرِيْبٌ

তোমরা কি ধারণা করেছ যে, তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করে ফেলবে? অথচ তোমাদের পূর্ববর্তীদের মতো (সংকটময় অবস্থা) এখনো তোমাদের উপর আসেনি। তাদেরকে বিপদ ও দুঃখ স্পর্শ করেছিল এমনকি তাদেরকে কাঁপিয়ে তুলা হয়েছিল। অবশেষে রাসূল ও তার সাথে ঈমান আনয়নকারীরা বলে ফেলেছিল যে, কখন আল্লাহর সাহায্য আসবে? শুনে নাও, নিশ্চয় আল্লাহর সাহায্য অতি নিকটবর্তী। (সূরা বাক্বারা- ২১৪)

ব্যাখ্যা : ঈমানদারদের পরীক্ষা করা কোন নতুন ব্যাপার নয়। ইতিহাসে সবসময় এমনটিই হয়ে এসেছে। যে ব্যক্তিই ঈমানের দাবী করেছে তাকে অবশ্যই পরীক্ষার অগ্নিকুন্ডে নিক্ষেপ করে দগ্ধ করা হয়েছে। দুনিয়ার যে কোন দেশে যখনই নবীদের আবির্ভাব ঘটেছে তখনই তাঁরা ও তাঁদের প্রতি বিশ্বাস স্থাপনকারী মুসলিমরা আল্লাহদ্রোহী মানবসমাজের কঠোর বিরোধিতার সম্মুখীন হয়েছেন। তাঁরা কোন অবস্থায়ই নিজেদের প্রাণের পরোয়া করেননি। বাতিল পদ্ধতির বিরুদ্ধে কঠোর সংগ্রাম করে তাওহীদ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালিয়ে গেছেন। এ দ্বীন প্রতিষ্ঠার পথ কখনো ফুলশয্যা ছিল না। ইসলামকে নিজের জীবনবিধান হিসেবে মেনে নেয়ার পর কেউ নিশ্চিন্তে আরামে বসে থাকতে পারেনি। প্রতি যুগে মুসলিমদেরকে ইসলামী জীবনবিধান প্রতিষ্ঠার জন্য প্রচেষ্টা ও সংগ্রাম চালাতে হয়েছে। যেসব শয়তানী ও বিদ্রোহী শক্তি সে সংগ্রামের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে তার শক্তির দর্প চূর্ণ করার জন্য ঈমানদারদেরকে পূর্ণ শক্তি প্রয়োগ করতে হয়েছে।

খাববাব ইবনে আরাত (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা আমরা নবী ﷺ এর নিকট (আমাদের দুঃখ-দুর্দশা সম্পর্কে) অভিযোগ করলাম। তখন তিনি নিজের চাদরটাকে বালিশ বানিয়ে কা‘বাঘরের ছায়ায় বিশ্রাম করছিলেন। আমরা তাঁকে বললাম, আপনি কি আমাদের জন্য আল্লাহর নিকট সাহায্য কামনা করবেন না? আপনি কি আমাদের জন্য আল্লাহর নিকট দু‘আ করবেন না? নবী ﷺ বললেন, তোমাদের আর এমন কী দুর্দশা হয়েছে? তোমাদের পূর্বে যারা ঈমানদার ছিল, তাদের কারো জন্য মাটিতে গর্ত খোঁড়া হতো, তারপর তাকে সে গর্তের মধ্যে দাঁড় করিয়ে রাখা হতো; তারপর করাত আনা হতো এবং তা তার মাথার উপর স্থাপন করে তাকে দ্বিখন্ডিত করা হতো। তবুও এ অমানুষিক নির্যাতন তাকে তার দ্বীন থেকে ফেরাতে পারত না। আবার কারো শরীরে লোহার চিরুণী দ্বারা আঁচড়ে হাড় পর্যন্ত যাবতীয় মাংস তুলে ফেলা হতো। তবুও এটা তাকে তার দ্বীন থেকে ফেরাতে পারত না। আল্লাহর কসম! নিশ্চয় এ দ্বীন পূর্ণতা লাভ করবে। (তখন সর্বত্র এতটা নিরাপত্তা বিরাজ করবে যে) কোন উষ্ট্রারোহী সান‘আ থেকে হাযরামাওত পর্যন্ত দীর্ঘ পথ নির্বিঘ্নে অতিক্রম করবে। তখন সে নিজের নিরাপত্তার ব্যাপারে আল্লাহ ছাড়া অপর কারো এবং নিজের মেষপালের ব্যাপারে নেকড়ে ছাড়া অন্য কিছুরই ভয় করবে না। কিন্তু তোমরা (এ সময়টার আগমনের ব্যাপারে) তাড়াহুড়া করছ। (সহীহ বুখারী, হা/৩৬১২)

পরীক্ষার মাধ্যমেই আল্লাহ মুমিনদেরকে বাছাই করেন :

اَمْ حَسِبْتُمْ اَنْ تَدْخُلُوا الْجَنَّةَ وَلَمَّا يَعْلَمِ اللهُ الَّذِيْنَ جَاهَدُوْا مِنْكُمْ وَيَعْلَمَ الصَّابِرِيْنَ

তোমরা কি ধারণা করছ যে, তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করবে? অথচ তোমাদের মধ্য হতে কারা জিহাদ করে তাদের ব্যাপারে আল্লাহ অবগত হবেন না এবং ধৈর্যশীলদের সম্পর্কেও জেনে নেবেন না? (সূরা আলে ইমরান- ১৪২)

ব্যাখ্যা : আল্লাহ হক ও বাতিল এবং সত্য ও মিথ্যার সংঘাতের যে বিধান তৈরি করে দিয়েছেন, তা পাল্টে দেয়ার ক্ষমতা কারো নেই। সত্যপন্থীদের অবশ্যই দীর্ঘকাল পরীক্ষার আগুনে ঝালাই হতে হবে। তাদেরকে নিজেদের ধৈর্য, সহিষ্ণুতা, সততা, সত্যবাদিতা, ত্যাগ, ঈমানী দৃঢ়তা ও আল্লাহর প্রতি নির্ভরশীলতার পরীক্ষা দিতে হবে। বিপদ, মুসীবত, সমস্যা ও সংকটের কঠিন পথ অতিক্রম করার গুণাবলি তাদের মধ্যে সৃষ্টি করতে হবে। তাদেরকে নির্ভেজাল উন্নত নৈতিক গুণাবলি ও সচ্চরিত্রের অস্ত্র ব্যবহার করে জাহেলিয়াতের উপর বিজয় লাভ করতে হবে। এভাবে নিজেদেরকে সংস্কারক হিসেবে প্রমাণ করতে পারলেই আল্লাহর সাহায্য তাদের জন্য এগিয়ে আসবে।

আল্লাহ বিভিন্নভাবে পরীক্ষা করেন :

وَلَنَبْلُوَنَّكُمْ بِشَيْءٍ مِّنَ الْخَوْفِ وَالْجُوْعِ وَنَقْصٍ مِّنَ الْاَمْوَالِ وَالْاَنْفُسِ وَالثَّمَرَاتِؕ وَبَشِّرِ الصَّابِرِيْنَ اَ لَّذِيْنَ اِذَاۤ اَصَابَتْهُمْ مُّصِيْبَةٌ قَالُوْاۤ اِنَّا لِلّٰهِ وَاِنَّاۤ اِلَيْهِ رَاجِعُوْنَ

নিশ্চয় আমি তোমাদেরকে পরীক্ষা করব ভয়, ক্ষুধা, ধন, প্রাণ ও ফসলের অভাবের দ্বারা। সুতরাং আপনি ধৈর্যশীলদেরকে সুসংবাদ প্রদান করুন। (কেননা) যখন তাদের উপর কোন বিপদ আসে তখন তারা বলে, নিশ্চয় আমরা আল্লাহরই জন্য এবং আমরা তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তনকারী। (সূরা বাক্বারা- ১৫৫, ১৫৬)

لَتُبْلَوُنَّ فِۤيْ اَمْوَالِكُمْ وَاَنْفُسِكُمْؕ وَلَتَسْمَعُنَّ مِنَ الَّذِيْنَ اُوْتُوا الْكِتَابَ مِنْ قَبْلِكُمْ وَمِنَ الَّذِيْنَ اَشْرَكُوْاۤ اَذًى كَثِيْرًاؕ وَاِنْ تَصْبِرُوْا وَتَتَّقُوْا فَاِنَّ ذٰلِكَ مِنْ عَزْمِ الْاُمُوْرِ

অবশ্যই তোমরা তোমাদের ধনসম্পদ ও তোমাদের জীবন দ্বারা পরীক্ষিত হবে। তোমাদের পূর্বে যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে ও যারা শিরক করেছে, তাদের নিকট হতে তোমাদেরকে বহু দুঃখজনক বাক্য শুনতে হবে। আর যদি তোমরা ধৈর্যধারণ কর ও সংযমী হও, তবে অবশ্যই এটা সুদৃঢ় কার্যাবলির অন্তর্গত। (সূরা আলে ইমরান- ১৮৬)

ব্যাখ্যা : অর্থাৎ তাদের গালাগাল, মিথ্যা দোষারোপ, বেহুদা কথাবার্তা ও অপপ্রচারের মুকাবিলায় অধৈর্য হয়ে তোমরা এমন কোন কথা বলতে শুরু করো না, যা সত্য, ন্যায় ও শিষ্টাচার বিরোধী। বরং সর্বক্ষেত্রে তোমাদেরকে ধৈর্যের পরিচয় দিতে হবে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন