hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

তাফসীরুল কুরআন বিল কুরআন

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

৪৭৬
অধ্যায়- ৭ : ইবরাহীম (আঃ) এর মূর্তি ভাঙ্গার ঘটনা
তিনি মূর্তি ভাঙ্গবেন বলে আগেই জানিয়ে দেন :

وَتَاللهِ لَاَكِيْدَنَّ اَصْنَامَكُمْ بَعْدَ اَنْ تُوَلُّوْا مُدْبِرِيْنَ

শপথ আল্লাহর, তোমরা চলে গেলে আমি তোমাদের মূর্তিগুলো সম্বন্ধে অবশ্যই কৌশল অবলম্বন করব।

(সূরা আম্বিয়া– ৫৭)

ব্যাখ্যা : অর্থাৎ যদি তোমরা আমার কথাগুলো যুক্তির সাহায্যে বুঝতে অপারগ হও, তাহলে আমি তোমাদেরকে কার্যত দেখিয়ে দেব যে, এরা একেবারেই অসহায়। নিজেদেরকে রক্ষা করার মতো সামান্যতম ক্ষমতাটুকুও এদের নেই; সুতরাং এদেরকে ইলাহ্ হিসেবে গ্রহণ করা ঠিক নয়।

ইবরাহীম (আঃ) মুশরিকদের সাথে মেলায় যাননি :

فَنَظَرَ نَظْرَةً فِى النُّجُوْمِ فَقَالَ اِنِّيْ سَقِيْمٌ فَتَوَلَّوْا عَنْهُ مُدْبِرِيْنَ

অতঃপর ইবরাহীম একবার তারকার দিকে তাকালেন। তিনি বললেন, আমি অসুস্থ হয়ে পড়েছি। অতঃপর তারা তাকে রেখে চলে গেল। (সূরা সাফ্ফাত, ৮৮-৯০)

ব্যাখ্যা : মিথ্যা বলা তাঁর উদ্দেশ্য ছিল না, বরং তিনি বিরোধীদেরকে একটি প্রমাণ দেখাতে চাচ্ছিলেন। যাতে করে তারা নিজেরাই এ কথা স্বীকার করে নেয় যে, এসব উপাস্যরা একেবারেই অসহায় এবং এদের দ্বারা কোন উপকারই আশা করা যায় না। এ ধরনের পরিস্থিতিতে যদি কোন ব্যক্তি প্রমাণ উপস্থাপনের জন্য বাস্তবতা বিরোধী কোন কথা বলে, তবে তাকে মিথ্যুক বলা যায় না। কারণ মিথ্যা বলার নিয়তে সে এমন কথা বলে না এবং তার বিরোধীরাও একে মিথ্যা মনে করে না।

তিনি মূর্তির নিকট গিয়ে দু’টি প্রশ্ন করলেন :

فَرَاغَ اِلٰۤى اٰلِهَتِهِمْ فَقَالَ اَ لَا تَأْكُلُوْنَ مَا لَكُمْ لَا تَنْطِقُوْنَ

তারপর তিনি তাদের মূর্তিগুলোর নিকট গেলেন এবং বললেন, তোমরা খাচ্ছ না কেন? তোমাদের কি হলো, তোমরা কথা বলছ না কেন? (সূরা সাফ্ফাত– ৯১, ৯২)

ডান হাত দিয়ে মূর্তির উপর আঘাত করলেন :

فَرَاغَ عَلَيْهِمْ ضَرْبًا ۢبِالْيَمِيْنِ

অতঃপর তিনি তাদের উপর ডান হাতে স্বজোরে আঘাত করলেন। (সূরা সাফ্ফাত–৯৩)

প্রধান মূর্তিটি ছাড়া সবগুলো ভেঙ্গে ফেললেন :

فَجَعَلَهُمْ جُذَاذًا اِلَّا كَبِيْرًا لَّهُمْ لَعَلَّهُمْ اِلَيْهِ يَرْجِعُوْنَ

অতঃপর সে প্রধানটি ব্যতীত সকল মূর্তিগুলোকে চূর্ণ–বিচূর্ণ করে দিল, যেন তারা তার দিকে ফিরে আসে।

(সূরা আম্বিয়া– ৫৮)

তারা বলল, এ কাজ কে করল?

قَالُوْا مَنْ فَعَلَ هٰذَا بِاٰلِهَتِنَاۤ اِنَّهٗ لَمِنَ الظَّالِمِيْنَ

তারা বলল, আমাদের উপাস্যগুলোকে কে এমন করল? নিশ্চয় সে সীমালঙ্ঘনকারী। (সূরা আম্বিয়া– ৫৯)

কেউ কেউ ইবরাহীম (আঃ) এর কথা বলল :

قَالُوْا سَمِعْنَا فَتًى يَّذْكُرُهُمْ يُقَالُ لَهٗۤ اِبْرَاهِيْمُ

কেউ কেউ বলল, এক যুবককে তাদের সমালোচনা করতে শুনেছি, তাকে ইবরাহীম নামে ডাকা হয়। (সূরা আম্বিয়া– ৬০)

তারা ইবরাহীম (আঃ) কে লোকসম্মুখে উপস্থিত করল :

قَالُوْا فَأْتُوْا بِهٖ عَلٰۤى اَعْيُنِ النَّاسِ لَعَلَّهُمْ يَشْهَدُوْنَ

তারা বলল, তাকে লোকসম্মুখে উপস্থিত করো, যেন তারা প্রত্যক্ষ করতে পারে। (সূরা আম্বিয়া– ৬১)

তিনি এ সময়ও দাওয়াত দিলেন :

قَالَ اَتَعْبُدُوْنَ مَا تَنْحِتُوْنَ وَاللهُ خَلَقَكُمْ وَمَا تَعْمَلُوْنَ

ইবরাহীম বললেন, তোমরা কি তাদেরই উপাসনা কর, যাদেরকে তোমরা নিজেরা নির্মাণ করেছ? অথচ আল্লাহই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন এবং তোমরা যা কর তাও (তিনি সৃষ্টি করেছেন)। (সূরা সাফ্ফাত– ৯৫, ৯৬)

তারা ইবরাহীম (আঃ) এর জবানবন্দী নিল :

قَالُوْاۤ اَ اَنْتَ فَعَلْتَ هٰذَا بِاٰلِهَتِنَا يَاۤ اِبْرَاهِيْمُ

তারা বলল, হে ইবরাহীম! তুমিই কি আমাদের উপাস্যগুলোকে এমন করেছ? (সূরা আম্বিয়া– ৬২)

তিনি কৌশল খাঁটিয়ে উত্তর দিলেন :

قَالَ بَلْ فَعَلَهٗ ۗ كَبِيْرُهُمْ هٰذَا فَاسْاَلُوْهُمْ اِنْ كَانُوْا يَنْطِقُوْنَ

সে বলল, বরং এই তো এদের প্রধান। সে–ই তো এসব করেছে, এদেরকে জিজ্ঞেস করো- যদি এরা কথা বলতে পারে। (সূরা আম্বিয়া– ৬৩)

নবী তাদের সামনে যুক্তি পেশ করলেন :

قَالَ اَفَتَعْبُدُوْنَ مِنْ دُوْنِ اللهِ مَا لَا يَنْفَعُكُمْ شَيْئًا وَّلَا يَضُرُّكُمْ

ইবরাহীম বলল, তবে কি তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে এমন কিছুর ইবাদাত কর, যা তোমাদের কোন উপকার করতে পারে না এবং ক্ষতিও করতে পারে না? (সূরা আম্বিয়া– ৬৬)

তাদের কিছুটা বুঝে আসল :

فَرَجَعُوْاۤ اِلٰۤى اَنْفُسِهِمْ فَقَالُوْاۤ اِنَّكُمْ اَنْتُمُ الظَّالِمُوْنَ

তখন তারা মনে মনে চিন্তা করে দেখল এবং একে অপরকে বলতে লাগল, তোমরাই তো সীমালঙ্ঘনকারী। (সূরা আম্বিয়া– ৬৪)

পরে আবার তাদের মতামত ঘুরে গেল :

ثُمَّ نُكِسُوْا عَلٰى رُءُوْسِهِمْۚ لَقَدْ عَلِمْتَ مَا هٰۤؤُلَآءِ يَنْطِقُوْنَ

অতঃপর তাদের মস্তক অবনত হয়ে গেল এবং তারা বলল, তুমি তো জানই যে, এরা কথা বলতে পারে না। (সূরা আম্বিয়া– ৬৫)

ব্যাখ্যা : ইবরাহীম (আঃ) এর জবাব শুনে প্রথমেই তারা মনে মনে ভাবল, প্রকৃতপক্ষে তারা নিজেরাই যালিম। কেননা তারা এতই অসহায় ও অক্ষম দেবতাদেরকে নিজেদের ইলাহ্ বানিয়ে নিয়েছে, যারা তাদের উপর কি ঘটেছে এবং কে তাদেরকে ভেঙ্গেছে- এ কথাও নিজ মুখে বলতে পারে না। যারা নিজেরাই নিজেদেরকে বাঁচাতে পারে না, তারা কীভাবে তাদের উপাসকদেরকে বাঁচাবে। কিন্তু এরপরও তাদের উপর জিদ ও মূর্খতা চড়াও হয়ে গেল; ফলে তাদের মস্তিষ্ক সঠিক চিন্তা করতে করতে হঠাৎ উল্টো চিন্তা করতে আরম্ভ করল।

ইবরাহীম (আঃ) তাদেরকে ধিক্কার দিলেন :

اُفٍّ لَّكُمْ وَلِمَا تَعْبُدُوْنَ مِنْ دُوْنِ اللهِؕ اَفَلَا تَعْقِلُوْنَ

ধিক তোমাদেরকে এবং আল্লাহর পরিবর্তে তোমরা যাদের ইবাদাত কর তাদেরকে, তবুও কি তোমরা অনুধাবন করবে না? (সূরা আম্বিয়া– ৬৭)

তারা তাকে জ্বলন্ত অগ্নিকুন্ডে নিক্ষেপ করল :

قَالُوا ابْنُوْا لَهٗ بُنْيَانًا فَاَلْقُوْهُ فِى الْجَحِيْمِ

তারা বলল, এর জন্য একটি অগ্নিকুন্ড নির্মাণ করো এবং তাকে সে জ্বলন্ত অগ্নিকুন্ডে নিক্ষেপ করো।

(সূরা সাফ্ফাত– ৯৭)

আল্লাহ আগুনকে ঠান্ডা করে দিলেন :

قُلْنَا يَا نَارُ كُوْنِيْ بَرْدًا وَّسَلَامًا عَلٰۤى اِبْرَاهِيْمَ

আমি বললাম, হে অগ্নি! তুমি ইবরাহীমের জন্য শীতল ও নিরাপদ হয়ে যাও। (সূরা আম্বিয়া– ৬৯)

তাকে আগুন থেকে রক্ষা করলেন :

فَمَا كَانَ جَوَابَ قَوْمِهٖۤ اِلَّاۤ اَنْ قَالُوا اقْتُلُوْهُ اَوْ حَرِّقُوْهُ فَاَنْجَاهُ اللهُ مِنَ النَّارِؕ اِنَّ فِي ْذٰلِكَ لَاٰٰيَاتٍ لِّقَوْمٍ يُّؤْمِنُوْنَ

উত্তরে ইবরাহীমের সম্প্রদায় শুধু এ বলল, একে হত্যা করো অথবা অগ্নিদগ্ধ করো। কিন্তু আল্লাহ তাকে অগ্নি হতে রক্ষা করলেন। এতে অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে মুমিন সম্প্রদায়ের জন্য। (সূরা আনকাবূত– ২৪)

তারা ইবরাহীম (আঃ) এর কোন ক্ষতি করতে পারল না :

وَاَرَادُوْا بِهٖ كَيْدًا فَجَعَلْنَاهُمُ الْاَخْسَرِيْنَ

তারা তার সাথে চক্রান্ত করার ইচ্ছা করেছিল, কিন্তু আমি তাদেরকেই সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত করে দিলাম।

(সূরা আম্বিয়া– ৭০)

তাদের সকল চক্রান্ত ব্যর্থ হলো :

فَاَرَادُوْا بِهٖ كَيْدًا فَجَعَلْنَاهُمُ الْاَسْفَلِيْنَ

মূলত তারা তার বিরুদ্ধে বিরাট চক্রান্তের সংকল্প করেছিল, কিন্তু আমি তাদেরকে পরাজিত করে দিলাম।

(সূরা সাফ্ফাত– ৯৮)

এই ঘটনায় মুমিনদের জন্য রয়েছে শিক্ষা:

اِنَّ فِيْ ذٰلِكَ لَاٰٰيَاتٍ لِّقَوْمٍ يُّؤْمِنُوْنَ

এতে অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে মুমিন সম্প্রদায়ের জন্য। (সূরা আনকাবূত– ২৪)

ব্যাখ্যা : এ ঘটনাটি বর্ণনা করার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, কুরাইশদেরকে এ ব্যাপারে সতর্ক করে দেয়া যে, তোমরা যে ইবরাহীম (আঃ) এর সন্তান হওয়ার গর্ব করে থাক, তাঁর নীতি তো তা ছিল না যা তোমরা অবলম্বন করেছ; বরং মুহাম্মাদ ﷺ যে নীতি অবলম্বন করেছেন সেটিই ছিল ইবরাহীম (আঃ) এর নীতি। এখন যদি তোমরা তাঁকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য এ ধরনের চক্রান্ত কর যা ইবরাহীম (আঃ) এর জাতি তাঁর বিরুদ্ধে করেছিল, তাহলে শেষ পর্যন্ত তোমরাই হেয় প্রতিপন্ন হবে। মুহাম্মাদ ﷺ কে হেয় প্রতিপন্ন করার ক্ষমতা তোমাদের নেই।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন