hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

তাফসীরুল কুরআন বিল কুরআন

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

৬০৪
অধ্যায়- ৩২ : ওহুদ যুদ্ধ
বদরের যুদ্ধে কুরাইশরা আর্থিক, সামরিক ও রাজনৈতিক দিক দিয়ে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। কুরাইশদের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি আবু জাহেল ও উতবা নিহত হয়েছিল। বদরের যুদ্ধে পরাজিত হয়ে কুরাইশ দলপতি আবু সুফিয়ান প্রতিজ্ঞা করে যে, প্রতিশোধ গ্রহণ না করা পর্যমত্ম সে নারী অথবা তেল স্পর্শ করবে না। অতঃপর আবু সুফিয়ান ৬২৫ খ্রিস্টাব্দে, ৩য় হিজরীর শাওয়াল মাসে ৩০০ উষ্ট্রারোহী ও ২০০ অশ্বারোহীসহ ৩০০০ সশস্ত্র সৈন্য নিয়ে মদিনার পাঁচ মাইল পশ্চিমে ওহুদ উপত্যকায় সমবেত হয়। এদিকে মুহাম্মাদ ﷺ ১০০ জন বর্মধারী, ৫০ জন তীরন্দাজসহ মাত্র ১০০০ জন মুজাহিদ বাহিনী নিয়ে শত্রুর মুকাবিলা করার সিদ্ধামত্ম গ্রহণ করেন। পথিমধ্যে মুনাফিক নেতা আবদুল্লাহ বিন উবাই তার ৩০০ জন অনুচরসহ দল ত্যাগ করলে শেষ পর্যমত্ম ৭০০ জন মুসলিম এ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। মহানবী ﷺ ওহুদ পাহাড়ের গোলাকার অংশের বাইরে থেকে যুদ্ধ পরিচালনা করার মনস্থির করেন এবং সেভাবে প্রস্তুতি গ্রহণ করেন। মুসলিম শিবিরের পশ্চাতে বাম পাশে একটি গিরিপথ ছিল। আর এ পথে শত্রুদের আক্রমণের ব্যাপক আশঙ্কা ছিল। কেননা এ পথটি ছিল মুসলিমদেরকে আক্রমণ করে কাবু করার সবচেয়ে সহজ পথ। আর তাই রাসূল ﷺ এ আক্রমণ ঠেকানোর উদ্দেশ্যে আবদুল্লাহ ইবনে যুবারের (রাঃ) এর নেতৃত্বে ৫০ জন তীরন্দাজকে নিযুক্ত করেন এবং সুস্পষ্ট নির্দেশ না পাওয়া পর্যমত্ম এ স্থান ত্যাগ করতে নিষেধ করেন। অতঃপর যখন যুদ্ধ আরম্ভ হয়, তখন শুরু থেকেই মুসলিম বাহিনী একের পর এক সাফল্য লাভ করতে থাকে এবং কুরাইশ বাহিনী পলায়ন করতে থাকে। যুদ্ধের প্রাথমিক সাফল্যের উল্লাসে মুসলিম সৈন্যবাহিনী শৃঙ্খলা হারিয়ে ফেলে এবং গিরিপথের রক্ষণাবেক্ষণের পরিবর্তে গনিমতের মাল সংগ্রহে নিয়োজিত হয়। মুসলিম বাহিনীর বিশৃঙ্খলার সুযোগে কুরাইশ সেনাপতি খালিদ ইবনে ওয়ালীদ পেছন থেকে অতর্কিত হামলা করে তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করে দেয় এবং দ্রুত পলায়ন করতে বাধ্য করে। স্বয়ং মহানবী ﷺ প্রসত্মরাঘাতে আহত হন। তখন নবী ﷺ এর দু’টি দাঁত ভেঙ্গে যায়। এ যুদ্ধে বীর আমীর হামযা (রাঃ) সহ ৭০ জন মুসলিম যোদ্ধা শহীদ হন। ওহুদের যুদ্ধ ছিল মুসলিমদের জন্য ঈমান ও ধৈর্যের অগ্নি পরীক্ষা। বিজয়োল্লাসী বিধর্মী কুরাইশরা মুসলিম বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে সাময়িক জয়লাভ করলেও প্রকৃতপক্ষে তারা মানসিক ও শারীরিক শক্তি হারিয়ে ফেলে এবং এ কারণে তাদের বিজয় ছিল পরাজয়ের নামামত্মর। ওহুদের অগ্নি পরীক্ষা ইসলামের দৃঢ় সংকল্প ও আত্মনির্ভরশীলতার একটি জ্বলমত্ম উদাহরণ। বদরের প্রামত্মর ইসলামের সামরিক বিজয়ের প্রতীক ছিল; কিন্তু ওহুদের বিপর্যয় মুসলিমদের সুশৃঙ্খল সামরিক জাতিতে পরিণত করে। ওহুদের যুদ্ধের পরাজয় থেকে মুসলিমগণ যে শিক্ষা লাভ করেন, তা পরবর্তী সময়ের সকল যুদ্ধে তাদের বিজয় লাভের পথকে উন্মুক্ত করে দেয়।

নবী ﷺ মুসলিম সেনাদেরকে সঠিক স্থানে মোতায়েন করলেন :

وَاِذْ غَدَوْتَ مِنْ اَهْلِكَ تُبَوِّئُ الْمُؤْمِنِيْنَ مَقَاعِدَ لِلْقِتَالِؕ وَاللهُ سَمِيْعٌ عَلِيْمٌ

আর যখন তুমি তোমার পরিবার থেকে সকালে বের হয়েছিলে, তখন মুমিনদেরকে যুদ্ধের জন্য ঘাটিতে নিয়োজিত করেছিলে। আল্লাহ সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞানী। (সূরা আলে ইমরান- ১২১)

মুনাফিকদেরকেও যুদ্ধে যেতে বলা হলো :

وَقِيْلَ لَهُمْ تَعَالَوْا قَاتِلُوْا فِيْ سَبِيْلِ اللهِ اَوِ ادْفَعُوْا

তাদেরকে বলা হয়েছিল- এসো, আল্লাহর পথে সংগ্রাম করো অথবা তাদেরকে প্রতিরোধ করো। (সূরা আলে ইমরান- ১৬৭)

তারা মিথ্যা কথা বলে মাঝ পথ থেকে ফিরে এলো :

قَالُوْا لَوْ نَعْلَمُ قِتَالًا لَّاتَّبَعْنَاكُمْؕ هُمْ لِلْكُفْرِ يَوْمَئِذٍ اَقْرَبُ مِنْهُمْ لِلْاِيْمَانِۚ يَقُوْلُوْنَ بِاَفْوَاهِهِمْ مَّا لَيْسَ فِيْ قُلُوْبِهِمْؕ وَاللهُ اَعْلَمُ بِمَا يَكْتُمُوْنَ

সেদিন তারা ঈমানের চেয়ে কুফরীর অধিক নিকটবর্তী ছিল। আর তারা তাই বলে থাকে, যা তাদের অন্তরে নেই; তারা যে বিষয় গোপন করে, আল্লাহ সে সম্পর্কে অধিক পরিজ্ঞাত। (সূরা আলে ইমরান- ১৬৭)

এর ফলে বনু হারেসা ও বনু সালামা সাহস হারিয়ে ফেলে :

اِذْ هَمَّتْ طَّآئِفَتَانِ مِنْكُمْ اَنْ تَفْشَلَا وَاللهُ وَلِيُّهُمَاؕ وَعَلَى اللهِ فَلْيَتَوَكَّلِ الْمُؤْمِنُوْنَ

যখন তোমাদের দু’টি দল ভীরুতা প্রকাশের সংকল্প করেছিল, অথচ আল্লাহ ছিলেন তাদের পৃষ্ঠপোষক। আর মুমিনগণ যেন আল্লাহর উপরই নির্ভর করে থাকে। (সূরা আলে ইমরান- ১২২)

আল্লাহ তাদেরকে সাহস যোগালেন :

وَلَقَدْ نَصَرَكُمُ اللهُ بِبَدْرٍ وَّاَنْتُمْ اَذِلَّةٌ ۚ فَاتَّقُوا اللهَ لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُوْنَ

আল্লাহ তোমাদেরকে বদরে সাহায্য করেছিলেন, যখন তোমরা দুর্বল ছিলে। অতএব আল্লাহকে ভয় করো, যেন তোমরা কৃতজ্ঞ হও। (সূরা আলে ইমরান- ১২৩)

ফেরেশতাদের মাধ্যমে সাহায্য করার আশ্বাস দেয়া হলো :

اِذْ تَقُوْلُ لِلْمُؤْمِنِيْنَ اَلَنْ يَّكْفِيَكُمْ اَنْ يُّمِدَّكُمْ رَبُّكُمْ بِثَلَاثَةِ اٰلَافٍ مِّنَ الْمَلَآئِكَةِ مُنْزَلِيْنَ بَلٰۤى اِنْ تَصْبِرُوْا وَتَتَّقُوْا وَيَاْتُوْكُمْ مِّنْ فَوْرِهِمْ هٰذَا يُمْدِدْكُمْ رَبُّكُمْ بِخَمْسَةِ اٰلَافٍ مِّنَ الْمَلَآئِكَةِ مُسَوِّمِيْنَ

যখন মুমিনদেরকে বলেছিলে- এটা কি তোমাদের জন্য যথেষ্ট নয় যে, তোমাদের প্রতিপালক তিন হাজার ফেরেশতা প্রেরণ করে তোমাদেরকে সাহায্য করবেন? হ্যাঁ! যদি তোমরা ধৈর্যধারণ কর ও সংযমী হও। আর তারা যদি স্বেচ্ছায় তোমাদের উপর নিপতিত হয়, তবে তোমাদের প্রতিপালক পাঁচ সহস্র ফেরেশতার মাধ্যমে তোমাদেরকে সাহায্য করবেন। (সূরা আলে ইমরান- ১২৪, ১২৫)

আল্লাহ কাফিরদের অন্তরে ভয় সৃষ্টি করে দেন :

سَنُلْقِيْ فِيْ قُلُوْبِ الَّذِيْنَ كَفَرُوا الرُّعْبَ بِمَاۤ اَشْرَكُوْا بِاللهِ مَا لَمْ يُنَزِّلْ بِهٖ سُلْطَانًا

যারা অবিশ্বাস করেছে, আমি অতিসত্বর তাদের অন্তরে ভীতি সঞ্চার করব, যেহেতু তারা আল্লাহর সাথে সে বিষয়ে অংশীদার স্থাপন করেছে, যে বিষয়ে তিনি কোন প্রমাণ অবতরণ করেননি। (সূরা আলে ইমরান- ১৫১)

প্রথম দিকে মুসলিমরা ভালো করলেও শেষের দিকে হেরে যায় :

وَلَقَدْ صَدَقَكُمُ اللهُ وَعْدَهٗۤ اِذْ تَحُسُّوْنَهُمْ بِاِذْنِهٖۚ حَتّٰۤى اِذَا فَشِلْتُمْ وَتَنَازَعْتُمْ فِى الْاَمْرِ وَعَصَيْتُمْ مِّنْ ۢبَعْدِ مَاۤ اَرَاكُمْ مَّا تُحِبُّوْنَؕ مِنْكُمْ مَّنْ يُّرِيْدُ الدُّنْيَا وَمِنْكُمْ مَّنْ يُّرِيْدُ الْاٰخِرَةَۚ ثُمَّ صَرَفَكُمْ عَنْهُمْ لِيَبْتَلِيَكُمْۚ وَلَقَدْ عَفَا عَنْكُمْؕ وَاللهُ ذُوْ فَضْلٍ عَلَى الْمُؤْمِنِيْنَ

আল্লাহ তোমাদের জন্য স্বীয় অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করেছেন যখন তাঁর নির্দেশে তোমরা তাদেরকে হত্যা করছিলে, কিন্তু পরে তোমরা ছত্রভঙ্গ হয়েছিলে ও কর্তব্য স্থির করার ব্যাপারে বিবাদে লিপ্ত হয়েছিলে এবং তোমরা যা ভালোবেসেছিলে, তা তিনি তোমাদেরকে দেখানোর পর তাঁর আদেশের অবাধ্য হয়েছিলে। আর তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ দুনিয়া কামনা করেছিলে এবং কেউ কেউ আখিরাত কামনা করেছিলে। অতঃপর তিনি তোমাদেরকে তা হতে বিরত রাখলেন, যেন তিনি তোমাদেরকে পরীক্ষা করে নিতে পারেন। অতঃপর তিনি তোমাদেরকে ক্ষমা করে দিলেন; আর আল্লাহ বিশ্বাসীদের প্রতি খুবই অনুগ্রহশীল। (সূরা আলে ইমরান- ১৫২)

মুসলিমরা চরম দুঃখ-কষ্টের সম্মুখীন হয় :

اِذْ تُصْعِدُوْنَ وَلَا تَلْوُوْنَ عَلٰۤى اَحَدٍ وَّالرَّسُوْلُ يَدْعُوْكُمْ فِۤيْ اُخْرَاكُمْ فَاَثَابَكُمْ غَمًّا ۢبِغَمٍّ لِّكَيْلَا تَحْزَنُوْا عَلٰى مَا فَاتَكُمْ وَلَا مَاۤ اَصَابَكُمْؕ وَاللهُ خَبِيْرٌ ۢبِمَا تَعْمَلُوْنَ

যখন তোমরা ওপরের দিকে আরোহণ করে যাচ্ছিলে এবং কারো দিকে ফিরেও দেখছিলে না (ওহুদের যুদ্ধে কাফিরদের ভয়ে পাহাড়ে আরোহণপূর্বক পলায়ন করছিলে); আর রাসূল তোমাদেরকে পেছন হতে আহবান করছিলেন। অতঃপর আল্লাহ তোমাদেরকে দুঃখের উপর দুঃখ প্রদান করলেন, যাতে করে যা অতিক্রান্ত হয়েছে এবং তোমাদের উপর যা উপনীত হয়েছে সেজন্য তোমরা দুঃখ না করো। আর তোমরা যা করছ সে বিষয়ে আল্লাহ সম্মক অবগত। (সূরা আলে ইমরান- ১৫৩)

ব্যাখ্যা : এ দুঃখ ছিল পরাজয়ের, নবী ﷺ এর মৃত্যু সংবাদের, নিজেদের বিপুল সংখ্যক নিহত ও আহত হওয়ার জন্য। তাদের দুঃখ এ চিন্তায় যে, এখন নিজেদের বাড়ি-ঘরেরও নিরাপত্তা নেই। সুতরাং এখন শত্রু সৈন্য পরাজিত সেনাদলকে গুঁড়িয়ে শহরের অলি-গলিতে ঢুকে পড়বে এবং নগরীর সবকিছু ধ্বংস করে দেবে।

পরে নিদ্রাছন্ন করে তাদেরকে প্রশান্তি দেয়া হয় :

ثُمَّ اَنْزَلَ عَلَيْكُمْ مِّنْ ۢبَعْدِ الْغَمِّ اَمَنَةً نُّعَاسًا يَّغْشٰى طَآئِفَةً

অনন্তর তিনি দুঃখের পরে তোমাদের উপর শান্তি অবতীর্ণ করলেন; তা ছিল তন্দ্রা, যা তোমাদের একদলকে আচ্ছন্ন করেছিল। (সূরা আলে ইমরান- ১৫৪)

কিছু লোকের ভেতরে দুশ্চিন্তা ঢুকে পড়ে :

وَطَآئِفَةٌ قَدْ اَهَمَّتْهُمْ اَنْفُسُهُمْ يَظُنُّوْنَ بِاللهِ غَيْرَ الْحَقِّ ظَنَّ الْجَاهِلِيَّةِؕ يَقُوْلُوْنَ هَلْ لَّنَا مِنَ الْاَمْرِ مِنْ شَيْءٍ

একদল নিজের জীবনকে অধিক গুরুত্বারোপ করেছিল। তারা আল্লাহর ব্যাপারে সত্যের বিপরীতে অজ্ঞতার অনুরূপ ধারণা পোষণ করেছিল। তারা বলেছিল, এ বিষয়ে কি আমাদের কোন অধিকার নেই? (সূরা আলে ইমরান- ১৫৪)

এ দুশ্চিন্তার জবাব :

قُلْ اِنَّ الْاَمْرَ كُلَّهٗ لِلّٰهِؕ يُخْفُوْنَ فِۤيْ اَنْفُسِهِمْ مَّا لَا يُبْدُوْنَ لَكَؕ يَقُوْلُوْنَ لَوْ كَانَ لَنَا مِنَ الْاَمْرِ شَيْءٌ مَّا قُتِلْنَا هَاهُنَاؕ قُلْ لَّوْ كُنْتُمْ فِيْ بُيُوْتِكُمْ لَبَرَزَ الَّذِيْنَ كُتِبَ عَلَيْهِمُ الْقَتْلُ اِلٰى مَضَاجِعِهِمْۚ وَلِيَبْتَلِيَ اللهُ مَا فِيْ صُدُوْرِكُمْ وَلِيُمَحِّصَ مَا فِيْ قُلُوْبِكُمْؕ وَاللهُ عَلِيْمٌ ۢبِذَاتِ الصُّدُوْرِ

বলো, সব বিষয় আল্লাহর হাতে; তারা নিজেদের অন্তরে যা গোপন রাখে, তা তোমার নিকট প্রকাশ করে না। তারা বলে, যদি এ বিষয়ে আমাদের কোন অধিকার থাকত তবে আমরা এখানে নিহত হতাম না। তাদেরকে বলে দাও, যদি তোমরা তোমাদের গৃহের মধ্যে থাকতে, তবুও যাদের প্রতি হত্যা লিপিবদ্ধ হয়েছে তারা স্বীয় মৃত্যুস্থানে এসে উপস্থিত হতো। এটা এজন্য যে, তোমাদের অন্তরে যা আছে আল্লাহ তা পরীক্ষা করেন এবং তোমাদের হৃদয়ে যা আছে তা নির্মল করে থাকেন। আর আল্লাহ (সকলের) অন্তর্নিহিত ভাব সম্পর্কে সবিশেষ পরিজ্ঞাত। (সূরা আলে ইমরান- ১৫৪)

মৃত্যুর ভয়ে জিহাদ থেকে দূরে থাকা ভুল :

وَمَا كَانَ لِنَفْسٍ اَنْ تَمُوْتَ اِلَّا بِاِذْنِ اللهِ كِتَابًا مُّؤَجَّلًا ؕ وَمَنْ يُّرِدْ ثَوَابَ الدُّنْيَا نُؤْتِهٖ مِنْهَاۚ وَمَنْ يُّرِدْ ثَوَابَ الْاٰخِرَةِ نُؤْتِهٖ مِنْهَاؕ وَسَنَجْزِى الشَّاكِرِيْنَ

আল্লাহর আদেশে লিপিবদ্ধ নির্দিষ্ট সময় ব্যতীত কেউই মৃত্যুর মুখে পতিত হয় না। যদি কেউ দুনিয়ার প্রতিদান কামনা করে আমি তাকে তা হতে কিছু প্রদান করি। আর যদি কেউ পরকালের প্রতিদান কামনা করে, তবে আমি তাকে তা হতেই প্রদান করে থাকি। অচিরেই আমি কৃতজ্ঞদেরকে পুরস্কার প্রদান করব। (সূরা আলে ইমরান- ১৪৫)

ব্যাখ্যা : এ থেকে মুসলিমদের এ কথা বুঝানো হয়েছে যে, মৃত্যুর ভয়ে তোমাদের পালিয়ে যাওয়ার কোন অর্থ নেই। মৃত্যুর জন্য আল্লাহ যে সময় নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন তার আগে কেউ মরতে পারে না এবং তার পরেও কেউ জীবিত থাকতে পারে না।

নবী ﷺ মারা গেছেন- এ ভুল সংবাদের জবাব :

وَمَا مُحَمَّدٌ اِلَّا رَسُوْلٌۚ قَدْ خَلَتْ مِنْ قَبْلِهِ الرُّسُلُؕ اَفَاِنْ مَّاتَ اَوْ قُتِلَ انْقَلَبْتُمْ عَلٰۤى اَعْقَابِكُمْؕ وَمَنْ يَّنْقَلِبْ عَلٰى عَقِبَيْهِ فَلَنْ يَّضُرَّ اللهَ شَيْئًاؕ وَسَيَجْزِى اللهُ الشَّاكِرِيْنَ

মুহাম্মাদ একজন রাসূল ব্যতীত কিছুই নয়, নিশ্চয় তার পূর্বেও অনেক রাসূল বিগত হয়ে গেছে। অনন্তর যদি তিনি মৃত্যুবরণ করেন অথবা নিহত হন, তবে কি তোমরা পেছনে ফিরে যাবে? যে কেউ পেছনে ফিরে যায়, তাতে সে আল্লাহর কোন অনিষ্ট করবে না। অচিরেই আল্লাহ কৃতজ্ঞদেরকে পুরস্কার প্রদান করবেন।

(সূরা আলে ইমরান- ১৪৪)

ব্যাখ্যা : ওহুদ যুদ্ধে যখন মুসলিমগণ ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়েন এবং রাসূল ﷺ আহত হয়ে এক গর্তে পতিত হন, তখন শত্রুপক্ষ হতে সংবাদ রটল যে, রাসূল ﷺ শহীদ হয়েছেন। এ সংবাদ শ্রবণ করে অধিকাংশ সাহাবী মর্মাহত হয়ে পড়েন এবং কেউ কেউ পলায়ন করতে উদ্যত হন। অতঃপর যখন তাদেরকে এ কারণে তিরস্কার করা হয় তখন অজুহাত পেশ করল যে, আমরা রাসূল ﷺ এর নিহত হওয়ার সংবাদ শ্রবণ করে ভীত হয়ে পলায়ন করেছিলাম। তখন আল্লাহ তা‘আলা এ আয়াতটি নাযিল করেন। নবী ﷺ এর শাহাদাতের গুজব ছড়িয়ে পড়ার পর অধিকাংশ সাহাবী সাহস হারিয়ে ফেলেন। এ অবস্থায় মুনাফিকরা বলতে থাকে, চলো আমরা আমাদের নেতা আবদুল্লাহ ইবনে উবাই এর কাছে যাই। সে আমাদের জন্য আবু সুফিয়ানের কাছ থেকে নিরাপত্তা এনে দেবে। আবার কেউ কেউ এমন কথাও বলাবলি করতে থাকে যে, যদি মুহাম্মাদ ﷺ আল্লাহর রাসূলই হতেন, তাহলে তিনি নিহত হলেন কেমন করে? চলো, আমাদের বাপ-দাদাদের ধর্মের দিকে ফিরে যাই। এসব কথার জবাবে বলা হচ্ছে, তোমাদের সত্যপ্রীতি যদি কেবল মুহাম্মাদ ﷺ এর ব্যক্তিত্বের সাথে সম্পর্কিত হয়ে থাকে এবং তোমাদের ঈমান যদি এতই দুর্বল ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত হয়ে থাকে যে, মুহাম্মাদ ﷺ এর দুনিয়া থেকে বিদায় নেয়ার সাথে সাথেই তোমরা আবার সে কুফরীর দিকে ফিরে যাবে, যা থেকে তোমরা বের হয়ে এসেছিলে, তাহলে আল্লাহর দ্বীন তোমাদের কোন প্রয়োজন অনুভব করে না।

গনিমত বণ্টনের ক্ষেত্রে নবী ﷺ এর ব্যাপারে কুধারণার জবাব :

وَمَا كَانَ لِنَبِيٍّ اَنْ يَّغُلَّؕ وَمَنْ يَّغْلُلْ يَاْتِ بِمَا غَلَّ يَوْمَ الْقِيَامَةِۚ ثُمَّ تُوَفّٰى كُلُّ نَفْسٍ مَّا كَسَبَتْ وَهُمْ لَا يُظْلَمُوْنَ

কোন নবীর পক্ষে আত্মসাৎকরণ শোভনীয় নয়। যে ব্যক্তি আত্মসাৎ করেছে, সে যা আত্মসাৎ করেছে তা নিয়ে কিয়ামতের দিন হাজির হবে; অনন্তর প্রত্যেক ব্যক্তি যা অর্জন করেছে তা পূর্ণরূপে প্রদত্ত হবে এবং তারা নির্যাতিত হবে না। (সূরা আলে ইমরান- ১৬১)

নবী ﷺ কর্তৃক বদ্দু‘আ করার জবাব :

لَيْسَ لَكَ مِنَ الْاَمْرِ شَيْءٌ اَوْ يَتُوْبَ عَلَيْهِمْ اَوْ يُعَذِّبَهُمْ فَاِنَّهُمْ ظَالِمُوْنَ وَلِلّٰهِ مَا فِى السَّمَاوَاتِ وَمَا فِى الْاَرْضِؕ يَغْفِرُ لِمَنْ يَّشَآءُؕ وَيُعَذِّبُ مَنْ يَّشَآءُؕ وَاللهُ غَفُوْرٌ رَّحِيْمٌ

তিনি (আল্লাহ) তাদেরকে ক্ষমা করেন অথবা শাস্তি প্রদান করেন- এ ব্যাপারে তোমার কোন কর্তৃত্ব নেই; নিশ্চয় তারা অত্যাচারী। আর নভোমন্ডলে যা রয়েছে ও ভূমন্ডলে যা আছে তা আল্লাহরই; তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন এবং যাকে ইচ্ছা শাস্তি প্রদান করেন। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল ও পরম করুণাময়। (সূরা আলে ইমরান- ১২৮, ১২৯)

ব্যাখ্যা : ওহুদ প্রান্তরে যুদ্ধ আরম্ভ হলে প্রথম আক্রমণেই কাফিরদের পরাজয় ঘটল। মুসলিমরা পলায়নরত কাফিরদের আসবাবপত্র সংগ্রহ করতে লাগল এবং গিরিপথ রক্ষী সৈন্যগণও আবদুল্লাহ ইবনে যুবায়ের (রাঃ) এর নির্দেশ অমান্য করে চলে আসল। এদিকে গিরিপথ খালি পেয়ে কাফিররা পেছন দিক হতে প্রবল বেগে আক্রমণ করে বসল। ফলে হামযা (রাঃ) এর মতো বিশিষ্ট সাহাবীগণ শাহাদাতবরণ করেন এবং রাসূল ﷺ নিজেও আহত হন। অতঃপর প্রধান প্রধান সাহাবীগণ মুসলিম সৈন্যদেরকে দ্রুত একত্রিত করে বীর-বিক্রমে কাফিরদের উপর ঝাপিয়ে পড়েন এবং তাদেরকে রণাঙ্গণ থেকে পলায়ন করতে বাধ্য করেন। যুদ্ধ শেষে রাসূল ﷺ স্বীয় চাচা ও সাহাবীগণের লাশ দেখে অতিশয় মর্মাহত হয়ে কাফিরদের উদ্দেশ্যে বদ্দু‘আ করতে উদ্যত হলে এ আয়াতটি নাযিল হয়।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন